জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের আগের রাতে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশ করেন বিএনপিপন্থি অ্যাক্টিভিস্ট মারুফ মল্লিক ও ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি। 

এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে কমিশনে ছুটে আসেন শিক্ষার্থীরা। বহিরাগতদের ক্যাম্পাসে আসার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ ও প্রতিবাদ করেন তারা।

বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট ভবনে জাকসু নির্বাচন কমিশনের কার্যালয়ে আসেন এই দুজন।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে ভোটগ্রহণ হবে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদে (ডাকসু) ইসলামী ছাত্রশিবিরের জয়জয়কার অবস্থার এক দিন পরই জাকসুর ভোট হচ্ছে। ফলে জাকসুতেও চোখ রয়েছে সবার। অবশ্য সাবির্ক প্রস্তুতি নিয়ে ভোটগ্রহণের যাবতীয় আয়োজন সম্পন্ন করার তথ্য দিয়েছে জবি কর্তৃপক্ষ। বুধবার রাতে শেষ সময়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত ছিলেন তারা।

অবশ্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ভোটগ্রহণের আগের রাতে বিএনপিপন্থি অ্যাক্টিভিস্ট মারুফ মল্লিক এবং ঢাকা জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক নাজমুল হাসান অভি নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে প্রবেশ করছেন। তখন ওই কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ আব্দুর রব ও বিএনপিপন্থি শিক্ষক অধ্যাপক বোরহান উদ্দিনও ছিলেন।

সেখানে উপস্থিত জাকসুর কয়েকজন প্রার্থী এই ঘটনার তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ করেন। একজনকে প্রশ্ন করতে শোনা যায়, “স্যার এরা এখানে কী করেন? ভোট কি রাতে হচ্ছে নাকি?” 

জবাবে অধ্যাপক সোহেল আহমেদ বলেন, “আমি তো জানি না।”  

এরপর বহিরাগত দুজনসহ অধ্যাপক সোহেল আহমেদ কক্ষ ত্যাগ করে চলে যান।

এ ব্যাপারে উপ-উপাচার্য বলেন, “কয়েকটি অভিযোগ নিয়ে অনেকে আমাদের এখানে এসেছিলেন। আমরা সেগুলো নিয়ে আলোচনা করছিলাম।”

জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য অধ্যাপক মোহাম্মদ মাফরুহী সাত্তার অবশ্য বলেছেন, “এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

গত ৯ সেপ্টেম্বর ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড.

এ বি এম আজিজুর রহমানের সই করা নির্দেশনায় বলা হয়, ১০ সেপ্টেম্বর দুপুর ১২টা থেকে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আবাসিক হল ও ক্যাম্পাসে সাবেক শিক্ষার্থী, অতিথিসহ যেকোনো ধরনের বহিরাগত ব্যক্তি অবস্থান করতে পারবেন না। 

এই নির্দেশনা উপেক্ষার আরেক ঘটনা সামনে আসে বুধবার রাতে। ছাত্রদলের দুজন নেতা আচরণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচন কমিশন কার্য প্রবেশ করেন। তাদের ছবি ধারণ করায় সাংবাদিকের ফোন কেড়ে নিয়ে ছবি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জাকসু নির্বাচনের ব্যালট বাক্স পরিবহনের সময় ছাত্রদলের ওই দুই নেতা নির্বাচন কর্মকর্তাদের পাশাপাশি হেঁটে যাচ্ছিলেন। ভুক্তভোগী সাংবাদিক সেই দৃশ্য মোবাইলে ধারণ করেন; যে কারণে তার ফোন কেড়ে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে ক্যাম্পাসের সিনেট ভবনের নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে এই ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত দুই ছাত্রদল নেতা হলেন, জাবি ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর এবং যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রোজেন। 

জহির উদ্দিন মুহাম্মদ বাবর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯তম আবর্তনের (২০০৯-১০) রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও যুগ্ম আহ্বায়ক মশিউর রহমান রোজেন ৪০তম আবর্তনের (২০১০-১১) অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী। তারা দুজনেই ক্যাম্পাসের প্রাক্তন শিক্ষার্থী। জাবি প্রশাসনের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী, তারা দুজনই নির্বাচন চলাকালীন ক্যাম্পাসে অবস্থান করতে পারেন না।

ভুক্তভোগী সাংবাদিক ওসমান সরদার দৈনিক যায়যায়দিনের জাবি প্রতিনিধি। তার মোবাইল কেড়ে ছবি ডিলিট করার পর তিনি শঙ্কিত বলে অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেছেন। 

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প ট ম বর ছ ত রদল

এছাড়াও পড়ুন:

মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (চাকসু) মনোনয়নপত্র নিতে এসে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে এক শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তাঁর নাম সালমান রহমান। আজ মঙ্গলবার বেলা দেড়টার দিকে চাকসুর কার্যনির্বাহী সদস্যপদে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন তিনি।

নির্বাচনী আচরণবিধি–২ এর ক অনুযায়ী, মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও দাখিলের সময় কোনো প্রকার মিছিল বা শোভাযাত্রা করা যাবে না। প্রার্থী পাঁচজনের বেশি সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন না।

সরেজমিনে দেখা যায়, সালমান রহমান ৮ থেকে ১০ জন সমর্থক নিয়ে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে আসেন। মনোনয়নপত্র নেওয়ার পর চাকসু ভবনের ভেতরেই সালমানের নাম ধরে স্লোগান দেন সমর্থকেরা। স্লোগান দিতে দিতে চাকসু ভবনের দ্বিতীয় তলা থেকে নিচে নামেন তাঁরা। এ সময় সালমান রহমান সবার মাঝখানেই ছিলেন। তাঁকে বেশ উচ্ছ্বসিত দেখা যায়।

আচরণবিধি ভাঙার বিষয়টি স্বীকার করে সালমান রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দর্শন বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তিনি। স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে লড়বেন। তাঁর সমর্থকেরা না বুঝে স্লোগান দিয়েছেন। এ ধরনের ভুল আর হবে না।

জানতে চাইলে চাকসুর প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক মনির উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়টি তিনি শুনেছেন। এসব বিষয় দেখভালের জন্য চার সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেবে।

দীর্ঘ ৩৫ বছর পর আগামী ১২ অক্টোবর চাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এবার মোট ভোটার ২৭ হাজার ৬৩৭ জন। গত রোববার থেকে শুরু হয়েছে মনোনয়নপত্র বিতরণ। আজ মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করার শেষ দিন।

নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মনোনয়নপত্র বুধবার পর্যন্ত জমা দেওয়া যাবে। যাচাই-বাছাই হবে ১৮ সেপ্টেম্বর। প্রার্থীর প্রাথমিক তালিকা প্রকাশিত হবে ২১ সেপ্টেম্বর। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৩ সেপ্টেম্বর। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশিত হবে ২৫ সেপ্টেম্বর।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ছাত্রশিবিরের ভরসা ওএমআর মেশিনে, ছাত্রদল চায় হাতে ভোট গণনা
  • গকসু নির্বাচন: জিএস প্রার্থীর বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ
  • মনোনয়নপত্র নিতে এসে স্লোগান, আচরণবিধি ভাঙলেন এক শিক্ষার্থী