গানে গানে স্মরণ করা হলো বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিমকে। তাঁর ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকীতে এ উপলক্ষে শুক্রবার সন্ধ্যায় সংস্কৃতি চর্চাকেন্দ্র ছায়ানট আয়োজন করে শ্রোতার আসর। অনুষ্ঠান শুরু হয় সন্ধ্যা ৭টায় ধানমন্ডির ছায়ানট মিলনায়তনে।

সংগীত পরিবেশনার আগে অনুষ্ঠানের তাৎপর্য ও শাহ আবদুল করিম সম্পর্কে বক্তব্য দেন ছায়ানট সভাপতি সারওয়ার আলী। বর্তমান বাস্তবতা ও প্রাসঙ্গিকতায় শাহ আবদুল করিমের কর্মজীবন নিয়ে কথা বলেন তিনি।

সারওয়ার আলী বলেন, শতবর্ষ ধরে বাংলার যে বদ্ধ গ্রামীণ সমাজ, সেখানে ধর্মে বিভক্তি ছিল, বিত্তে ভিন্নতা ছিল, বর্ণ ছিল। তাই বৈষম্য, বঞ্চনা, রক্ষণশীলতা ও কুসংস্কারও ছিল। তারপরও গ্রামীণ সমাজ যে সম্প্রীতির বাঁধনে বেঁধে ছিল, এর পেছনে বৈষ্ণববাদের প্রভাব ছিল। তবে বড় ভূমিকা রেখেছিলেন বাংলার গীতিকারেরা। লালন থেকে শাহ আবদুল করিম সেই পরম শ্রদ্ধার মানুষ। তাঁরাই বাংলায় সম্প্রীতির সমাজ গড়ে তুলেছেন। যেটি আজ লুপ্তপ্রায়।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন জয়ন্ত রায়। তিনি উল্লেখ করেন, শাহ আবদুল করিম তাঁর পরিচয় দিয়েছিলেন গানে গানে। এই বাউল সাধক প্রায় দেড় হাজার গান রচনা করেছেন, যার অনেকগুলো মানুষের মুখে মুখে জনপ্রিয় হয়ে আছে।

ছায়ানট আয়োজিত শ্রোতার আসরে শিল্পী ছিলেন রণেশ ঠাকুর (সুনামগঞ্জ), চন্দনা মজুমদার, আবুল কালাম আজাদ, বিমান চন্দ্র বিশ্বাস, নাজমুল আহসান তুহিন, মো.

সোহেল রানা ও ফারজানা আফরিন। শিল্পীরা মোট ১৬টি গান পরিবেশন করেন।

আয়োজনের শুরুতে শিল্পী ফারজানা আফরিন ‘কথা রাখো কাছে থাকো যাইওনাগো দূরে’, ‘তোমারও পিরিতে বন্ধু গো’ গান পরিবেশন করেন। বাউল শাহ আবদুল করিমের জনপ্রিয় গান ‘কেন পিরিতি বাড়াইলায় রে বন্ধু ছেড়ে যাইবায় যদি’ গানটি পরিবেশন করেন শিল্পী বিমান চন্দ্র বিশ্বাস। ‘আমি কুলহারা কলঙ্কিনী, আমারে কেউ ছুঁইও না গো সজনি’ পরিবেশন করেন বাউল রণেশ ঠাকুর। শিল্পী চন্দনা মজুমদার শোনান ‘তুমি বিনে আকুল পরান’সহ তিনটি গান।

শ্রোতার আসরে দোতারা বাজিয়েছেন রতন কুমার রায়, মন্দিরায় ছিলেন প্রদীপ কুমার রায়, ঢোল বাজিয়েছেন দশরথ দাশ, তবলায় ছিলেন স্বরূপ হোসেন এবং বাঁশিতে মামুনুর রশীদ।

১৯১৬ সালে সিলেটের সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় জন্ম নেওয়া বাউল সম্রাট প্রয়াত হন ২০০৯ সালের ১২ সেপ্টেম্বর।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: শ হ আবদ ল কর ম ছ য় নট

এছাড়াও পড়ুন:

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য বাস সার্ভিস চালু

৪৭তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালুর উদ্যোগ নিয়েছে মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) শাখা ছাত্রদল। বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস থেকে ঢাকা ও ময়মনসিংহের পরীক্ষা কেন্দ্রে শিক্ষার্থীদের নির্বিঘ্নে পৌঁছানোর লক্ষ্যে এ বিশেষ যাতায়াত সুবিধার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

বুধবার (১৭ সেপ্টেম্বর) রাতে শাখা ছাত্রদলের কর্মী নাফিস ইকবাল পিয়াল বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি ফেসবুক গ্রুপে এ তথ্য জানিয়ে পোস্ট দেন। একইসঙ্গে শাখা সভাপতি সাগর নাইম ও সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপুও তাদের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে পোস্ট দিয়ে পরীক্ষার্থীদের এ সুবিধা গ্রহণের আহ্বান জানান।

আরো পড়ুন:

ভাসানী বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচনী রোডম্যাপের দাবিতে মানববন্ধন

বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জন ও বিতরণের জায়গা: ইউজিসি চেয়ারম্যান

ছাত্রদল জানিয়েছে, ক্যাম্পাস থেকে দুটি বাস ছাড়বে। একটি ঢাকা রুটে এবং অপরটি ময়মনসিংহ রুটে যাবে। প্রতিটি বাসে ৫০ জন করে মোট ১০০ জন শিক্ষার্থী এই ফ্রি সার্ভিসের আওতায় যাতায়াত করতে পারবেন। এজন্য শিক্ষার্থীদের অবশ্যই আগাম রেজিস্ট্রেশন করতে হবে। বৃহস্পতিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত গুগল ফর্মের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করা যাবে। রেজিস্ট্রেশন ছাড়া কেউ এই সার্ভিসের সুবিধা নিতে পারবেন না।

শিক্ষার্থীদের জন্য এ উদ্যোগ ইতোমধ্যেই বিশ্ববিদ্যালয়জুড়ে প্রশংসা কুড়িয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেক শিক্ষার্থী পোস্ট দিয়ে ছাত্রদলের এ পদক্ষেপকে ‘শিক্ষার্থীবান্ধব ও সময়োপযোগী উদ্যোগ’ হিসেবে অভিহিত করেছেন।

শাখা সভাপতি সাগর নাইম তার পোস্টে বলেন, “প্রতি বছর বিসিএসে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সাফল্যের আলো ছড়িয়ে দেন। আমরা চাই এ সুনাম আরো দূরে ছড়িয়ে পড়ুক, আরো উজ্জ্বল হোক। এ ধারাবাহিক সাফল্যের পথে আপনাদের পাশে থাকতে, ভালোবাসা ও সম্মান জানাতে মাভাবিপ্রবি ছাত্রদল ৪৭তম বিসিএস পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বিশেষ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছে।”

এ বিষয়ে শাখা সাধারণ সম্পাদক সাজিদ ইসলাম দীপু বলেন, “জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল সবসময়ই শিক্ষার্থীদের কল্যাণে কাজ করে থাকে। গত বিসিএসে আমাদের বড় ভাই বিসিএস প্রশাসনে প্রথম হয়েছেন। এটি শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য নয়, সারা দেশের জন্যই গর্বের বিষয়। সেই সাফল্যের ধারা অব্যাহত রাখতে এবং শিক্ষার্থীদের কল্যাণে আমরা এবার পরীক্ষার্থীদের জন্য ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করেছি।”

তিনি বলেন, “বিশেষ করে অনেক নারী শিক্ষার্থী আছেন, যারা ক্যাম্পাস থেকে পরীক্ষাকেন্দ্র অনেক দূরে হওয়ায় অংশ নিতে পারেন না। আবার অনেকে যানবাহন না পেয়ে দেরিতে কেন্দ্রে পৌঁছান। আমরা চাইনি কেউ যেন যাতায়াত সমস্যার কারণে বিসিএস পরীক্ষায় পিছিয়ে পড়েন। তাই বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভাইয়ের সহায়তায় আমরা এ বাস সার্ভিসের ব্যবস্থা করেছি।”

ঢাকা/আবিদ/মেহেদী

সম্পর্কিত নিবন্ধ