বান্দরবানের রোয়াংছড়িতে ইজিবাইক চালক অমন্ত সেন তঞ্চঙ্গ্যা (৪৬) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় রাজন্ত তঞ্চংগ্যা (২৩) নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। 

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার মো. শহিদুল্লাহ কাওছার জেলা পুলিশ কনফারেন্স রুমে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

পুলিশ জানায়, গত ১৪ সেপ্টেম্বর রাত ১১টার দিকে অমন্ত সেন শেষবারের মতো রোয়াংছড়ি বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এলাকায় ক্রিকেট খেলা দেখে বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেন। তবে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। পরদিন সকাল পর্যন্ত খোঁজ না পেয়ে তার পরিবার থানায় খবর দেয়। ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে নাতিং ঝিরি এলাকায় বাঁশঝাড়ের নিচ থেকে অমন্ত সেনের ব্যবহৃত ব্যাগ, মোবাইল ফোন, রক্তমাখা বাঁশের কঞ্চি এবং ভাঙা গাছের টুকরো উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরদিন ১৬ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় বান্দরবান পৌর এলাকার সাঙ্গু নদীর তীরে পানিতে ভাসমান অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

বান্দরবান জেলা পুলিশ সুপার মো.

শহিদুল্লাহ কাওছার জানান, রোয়াংছড়ি থানার অভিযানিক দল আসামি রাজন্ত তঞ্চঙ্গ্যাকে গ্রেপ্তার করে। জিজ্ঞাসাবাদে আসামি স্বীকার করেছে যে, পাওনা টাকা আদায়ের বিষয়ে তর্কের একপর্যায় তিনি অমন্ত সেন তঞ্চঙ্গ্যাকে হত্যা করেন এবং লাশ নদীতে ফেলে দেন। রোয়াংছড়ি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

ঢাকা/চাইমং/এস

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর স প ট ম বর অমন ত স ন

এছাড়াও পড়ুন:

বিক্ষোভ নিয়ে মুখ খুললেন নেপালের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী

চলতি মাসে নেপাল জুড়ে বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করেন কেপি শর্মা ওলি। ২০২৪ সালে শের বাহাদুর দেউবা সরকারের পতনের পর ফের ক্ষমতায় আসা ওলি এক বছরের মধ্যেই দেশে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েন। দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতি, সম্পদ অপব্যবহার ও কর্তৃত্ববাদী শাসনের অভিযোগে তার বিরুদ্ধে ক্ষোভ জমতে থাকে। তার সরকারের পতন ঘটে চলতি মাসে টানা কয়েক দিনের বিক্ষোভ থেকে, যেখানে নেতৃত্বে ছিল ‘জেন জি’ তরুণ প্রজন্ম। বর্তমানে ধীরে ধীরে শান্ত হচ্ছে নেপাল। আর এই আবহে নিরাবতা ভাঙলেন সদ্য সাবেক প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, শুক্রবার (২০ সেপ্টেম্বর) নেপালের সংবিধান দিবসে ফেসবুকে প্রকাশিত এক বিবৃতিতে ওলি দেশের সংবিধান প্রতিষ্ঠার ঐতিহাসিক সংগ্রামের কথা তুলে ধরেন। তিনি সংবিধানকে ‘নেপালি জনগণের নিজেদের জন্য লেখা একটি ভবিষ্যতের রেখা’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি দাবি করেন, “জেন-জির শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ চলাকালীন অনুপ্রবেশ ঘটেছিল। যেসব ষড়যন্ত্রকারীরা এতে অনুপ্রবেশ করেছিল, তারা সহিংসতা উস্কে দেয় এবং আমাদের তরুণদের হত্যা করে। সরকার বিক্ষোভকারীদের গুলি করার নির্দেশ দেয়নি। পুলিশের কাছে নেই- এমন স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি চালানোর ঘটনা তদন্ত করা উচিত।” 

৮ সেপ্টেম্বরের ওই সহিংসতায় ১৯ জন নিহত হন। ওলি দাবি করেন, বিক্ষোভে গোপন ষড়যন্ত্রকারীরা অনুপ্রবেশ করে হিংসাত্মক পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে, যার ফলেই এতগুলো প্রাণহানি ঘটেছে। ওলি বলেন, “প্রধানমন্ত্রী (পদ) থেকে আমার পদত্যাগের পর সিংহ দরবার পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, নেপালের মানচিত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, দেশের প্রতীক মুছে ফেলার চেষ্টা করা হয়েছে। সংসদ, আদালত, ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান এবং রাজনৈতিক দলের অফিস, তাদের নেতা ও কর্মীদের বাড়িঘর, ব্যক্তিগত সম্পত্তি ছাই করে দেওয়া হয়েছে।”

তিনি আরো বলেন, “ঘটনার পেছনের ষড়যন্ত্র নিয়ে আমি আজ বেশি কিছু বলব না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে অনেক কিছুই নিজে নিজেই প্রকাশ পাবে। কিন্তু আমাদের অবশ্যই জিজ্ঞাসা করতে হবে, আমাদের জাতি কী গড়ে উঠছিল, নাকি ভেঙে ফেলা হচ্ছিল? এই ক্ষোভ কী কেবল একটি মিথ্যা এবং বিভ্রান্তিকর বর্ণনা দিয়ে ফুটিয়ে তোলা হয়েছিল?” 

সাবেক প্রধানমন্ত্রী জানান, “আমাদের নতুন প্রজন্ম নিজেরাই সত্য বুঝতে পারবে। আর যারা দেশ ছেড়ে যাওয়া তরুণদের অবজ্ঞা করে, সময় তাদের মনে করিয়ে দেবে যে, তাদের সিদ্ধান্ত ভুল ছিল। অবশেষে নতুন প্রজন্ম সবকিছুই বাস্তবে দেখতে পাবে।” 

প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানিয়ে ওলি জনসাধারণকে রাজনৈতিক বিভাজনের ঊর্ধ্বে উঠে সংবিধান রক্ষার আহ্বান জানান। তিনি বলেন, “আমাদের, নেপালিদের সকল প্রজন্মকে, সার্বভৌমত্বের উপর আক্রমণ মোকাবিলা করতে এবং সংবিধান রক্ষা করতে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যদি সার্বভৌমত্ব আমাদের অস্তিত্ব হয়, তাহলে সংবিধান আমাদের স্বাধীনতার ঢাল।”

কাঠমাণ্ডু পোস্টের খবর অনুসারে, ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর নেপালের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অলি সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় ছিলেন। ব্যারাকে ৯ দিন কাটানোর পর গত বৃহস্পতিবার তিনি একটি ব্যক্তিগত জায়গায় চলে গেছেন।

নেপালের সেনা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, নেপালের কমিউনিস্ট পার্টির চেয়ারম্যান ৯ দিন সামরিক সুরক্ষায় থাকার পর তার ব্যক্তিগত বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ