অনলাইনে জুয়ায় আসক্ত হয়ে বৃদ্ধাকে খুন
Published: 25th, January 2025 GMT
মাদারীপুরের শিবচরে অনলাইনে জুয়ায় আসক্ত হয়ে টাকার জন্য ফজিলাতুন্নেসা নামের এক বৃদ্ধাকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা রহস্য উদঘাটনসহ অভিযুক্ত সোহাগ হাওলাদার (২৮) নামে এক যুবককে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশ।
শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) রাতে পুলিশ সুপার কার্যালয় সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়।
এর আগে গত বুধবার (২২ জানুয়ারি) শিবচরের পাচ্চর ইউনিয়নের হোগলার মাঠ গ্রাম আকন বাড়ির পশ্চিম পাশে পরিত্যক্ত ভিটায় মেহগনি বাগানে নিহতের অর্ধ গলিত মরদেহ পাওয়া যায়। পরে নিহতের মেয়ে রেখা আক্তার অজ্ঞাত নামে মামলা দায়ের করলে পুলিশ ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনের রহস্য উদঘাটনসহ আসামিকে গ্রেপ্তার করেন।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত ১২ জানুয়ারি দুপুরে নিজ বাড়ি থেকে ছেলেকে বিকাশে টাকা পাঠানোর জন্য পাশের ছোট কুতুবপুর বাজারে যায় ফজিলাতুন্নেছা। এরপর থেকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিলো না। ৮০ বছর বয়সী এই নারী নিখোঁজের ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি করা হয়। নিখোঁজের ১০ দিন পর ২২ জানুয়ারি (বুধবার) বিকেলে স্থানীয়রা বাড়ির পাশের হোগলার মাঠে পাতা আনতে গেলে একটি বস্তার মুখ রশি বাঁধা অবস্থায় দেখলে সন্দেহ হয়। স্থানীয়রা থানা পুলিশকে খবর দেন। পরে পুলিশ এসে মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে।
পরে তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে সোহাগ হাওলাদার নামের যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। এরপর জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, সোহাগ বেশ কিছুদিন ধরে অনলাইনে জুয়া খেলায় আসক্ত ছিলেন। একপর্যায়ে জুয়ার টাকার জন্য ওই বৃদ্ধার গলায় থাকা স্বর্ণের চেন, কানের দুল, একটি মোবাইল চুরি করতে গিয়ে তাকে অজ্ঞান করার জন্য শ্বাসরোধ করেন। কিছুক্ষণ পর বৃদ্ধা মারা যায়। ঘটনাস্থল থেকে দ্রুত পালিয়ে যায় সোহাগ।
গ্রেপ্তারকৃত সোহাগ শিবচর উপজেলার বৈকণ্ঠপুর গ্রামের মো.
নিহতের মেয়ে রেখা আক্তার বলেন, “সামান্য গলার চেনের জন্য আমার মায়ের জীবন কেড়ে নিয়েছে। আমার মাকে যে খুন করেছে সেই দোষী সোহাগের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।”
মাদারীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলম বলেন, “সোহাগ আদালতে ১৬৪ ধারা মোতাবেক হত্যাকাণ্ডে সরাসরি সম্পৃক্ততার কথা স্বীকার করেছেন।”
তিনি আরো বলেন, “সোহাগ দীর্ঘদিন ধরে অনলাইনে জুয়ায় আসক্ত ছিলেন। জুয়ার টাকার জন্য বৃদ্ধাকে খুন স্বর্ণালঙ্কার ও মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে এইগুলো বিক্রি করে অনলাইনে জুয়া খেলে। নিহতের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন বিক্রি করেছিল। সেই মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাত্র ৫শ টাকায় মোবাইলটি বিক্রি করে। আর স্বর্ণালঙ্কার বিক্রি করে ৪০ হাজার টাকায়।”
ঢাকা/রিজভী/ইমন
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
যাত্রাবাড়ীতে বিদ্যুৎমিস্ত্রিকে পিটিয়ে হত্যা
রাজধানীতে হাত ও পা বেঁধে রড দিয়ে পিটিয়ে আনোয়ার হোসেন (৪৩) নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার সকালে যাত্রাবাড়ীর কাউন্সিল শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির একটি কারখানায় এ ঘটনা ঘটে।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) বিদ্যুৎমিস্ত্রি ছিলেন আনোয়ার হোসেন। তাঁর কর্মস্থল ছিল পুরান ঢাকার সদরঘাটে। পারিবারিক সূত্র জানায়, আনোয়ার হোসেন স্ত্রী ও দুই মেয়ে নিয়ে রাজধানীর মাতুয়াইলের মৃধাবাড়ি এলাকায় থাকতেন।
আনোয়ারের ভাই দেলোয়ার হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল ভোরে আনোয়ার বাসা থেকে নামাজ পড়ার উদ্দেশ্যে বের হন। পরে খবর পান, তাঁর ভাইকে কাউন্সিল উত্তর শরিফ পাড়ায় বাসের অবকাঠামো তৈরির গ্যারেজে নিয়ে হাত–পা বেঁধে রাখা হয়েছে। এরপর সেখানে গিয়ে আনোয়ারের হাত–পা বাঁধা ও রক্তাক্ত মুমূর্ষু অবস্থায় দেখতে পান তাঁর মা।
লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়েছে বলে মৃত্যুর আগের তাঁর মাকে জানিয়েছিলেন আনোয়ার। তাঁর ভাই এ কথা জানিয়ে বলেন, এর কিছুক্ষণ পরই ঘটনাস্থলেই আনোয়ারের মৃত্যু হয়। এরপর যাত্রাবাড়ীর থানা-পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায়।
গতকাল সন্ধ্যায় যাত্রাবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ভোরে সঙ্গী সুমনকে নিয়ে আনোয়ার বাসের কাঠামো তৈরির কারখানায় চুরি করতে যান। এ সময় সেখানে থাকা লোকজন তাঁকে পিটিয়ে হত্যা করে। তাঁর সঙ্গী সুমন পালিয়ে যান।