অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমে থাকা জিরো ডে ঘরানার ত্রুটি কাজে লাগিয়ে যেকোনো অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের লক খোলা সম্ভব। ত্রুটিটি কাজে লাগিয়ে এরই মধ্যে সার্বিয়ার আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্দিষ্ট ব্যক্তিদের অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন আনলক করেছে এবং এতে নজরদারি সফটওয়্যার স্থাপনের চেষ্টা করেছে বলে জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সিকিউরিটি ল্যাব। সংস্থাটির কাছে থেকে এ বিষয়ে জানার পর অ্যান্ড্রয়েডের মার্চ মাসের নিরাপত্তা হালনাগাদে এই ত্রুটিসহ মোট ৪৩টি নিরাপত্তা ত্রুটির সমাধান করেছে গুগল। সাইবার হামলার পাশাপাশি তথ্য চুরি ঠেকাতে দ্রুত অ্যান্ড্রয়েডের হালনাগাদ সংস্করণ ব্যবহারের পরামর্শও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।

গুগলের তথ্যমতে, সমাধান করা ত্রুটিগুলোর মধ্যে একটি ছিল ইউএসবি ভিডিও ক্লাস ড্রাইভারের নিরাপত্তা ত্রুটি, যা গত মাসে সমাধান করা হয়েছে। এ ছাড়া ইউএসবি সাউন্ড ড্রাইভারের একটি ত্রুটি ছিল, যা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের সিকিউরিটি ল্যাব শনাক্ত করেছে। এই ত্রুটিটি এ মাসের নিরাপত্তা হালনাগাদের মাধ্যমে সমাধান করা হয়েছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেমের ইউএসবি ড্রাইভার, ফার্মওয়্যার এবং কার্নেলে থাকা নিরাপত্তা ত্রুটিগুলো কাজে লাগিয়ে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের নিয়ন্ত্রণ নেওয়া সম্ভব। এ ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটির মাধ্যমে মেমোরি দুর্বলতা তৈরি, ক্ষতিকর কমান্ড ইনজেক্ট বা লক স্ক্রিন বাইপাসের মতো কাজ করা যায়। তবে এই ধরনের আক্রমণ চালাতে সরাসরি ডিভাইসের নিয়ন্ত্রণ নিতে হয়, যা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে সহজ। তারা সহজেই কোনো ব্যক্তিকে আটক করে তার ফোন জব্দ করতে পারে।

এ ধরনের নিরাপত্তা ত্রুটি থেকে নিরাপদ থাকতে হলে ব্যবহারকারীদের সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা। এ জন্য ফোনের ইউএসবি ডিবাগিং বন্ধ রাখার পাশাপাশি এনক্রিপশন সুবিধা ব্যবহার করতে হবে। এ ছাড়া নিয়মিত নিরাপত্তা আপডেট ইনস্টল করাসহ ইউএসবি ড্রাইভ ব্যবহারে সতর্ক থাকারও পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা।

সূত্র: ব্লিপিং কম্পিউটার

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র

এছাড়াও পড়ুন:

তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা

জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়নের মহব্বতপুর গ্রাম ঘেঁষে তুলশীগঙ্গা নদীর অদূরে সন্ন্যাসতলীর বটতলা। জায়গাটিতে প্রায় একশ বছর আগে থেকে বাংলা জ্যৈষ্ঠ মাসের শেষ শুক্রবার আয়োজন হয় ঘুড়ির মেলা। এবারও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অন্তত ৫০ গ্রামের হাজারো মানুষের উপস্থিতিতে শুক্রবার সন্ন্যাসতলী ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছে। 

মেলার দিনক্ষণ মনে রেখে সময়মতো দোকানিদের পাশাপাশি দর্শনার্থীরা ভিড় জমান নিভৃত পল্লীতে। আগে মেলার দিন বৃষ্টি হওয়া যেন নিয়ম হয়ে দাঁড়িয়েছিল। কিন্তু এবার ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটেছে। প্রচণ্ড গরম ও তাপপ্রবাহের মধ্যেই চলে এ আয়োজন। বৈরী পরিবেশের কারণে উৎসবের স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

স্থানীয় প্রবীণ বাসিন্দারা বলছেন, সন্ন্যাসতলীর এ ঘুড়ি উৎসব শুরুর দিন বিকেলে বটতলায় স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায় সন্ন্যাস পূজা পালন করেন। তাদের এ পূজা-অর্চনা ঘিরেই মূলত এ মেলার উৎপত্তি। তবে শুরুর কথা কেউ বলতে পারেননি। প্রবীণরা শুধু জানেন, একশ বছরের বেশি সময় ধরে তারা এ মেলার আয়োজন দেখে আসছেন।

মেলার নিজস্ব জায়গা না থাকলেও এর ব্যাপ্তি প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেই এক দিনের এ মেলা ঘিরেই জেলার জামালগঞ্জ চারমাথা থেকে ঐতিহাসিক আছরাঙ্গাদীঘি পর্যন্ত রকমারি পণ্যের দোকান বসে। এখান থেকে সংসারের প্রয়োজনীয় বিভিন্ন আসবাব থেকে শুরু করে ছোট মাছ ধরার বাঁশের তৈরি পণ্য খলসানি, টোপা, ডালা, চালুন কিনে নেন অনেকে।

সুতার তৈরি তৌরা জাল, গৃহস্থালি কাজে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি, বিভিন্ন ধরনের খেলনা, মিষ্টান্ন, প্রসাধনী, মাটির তৈজসপত্রসহ বিভিন্ন সামগ্রী বিক্রি হয়। শিশুদের বিনোদনের জন্য ছিল নাগরদোলার ব্যবস্থাও। আর মেলার বড় আকর্ষণ ঘুড়ি ওড়ানো ও বিক্রি। পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা থেকে ব্যবসায়ীরা এসেছিলেন ঘুড়ি বিক্রি করতে।

প্রচণ্ড গরমের পাশাপাশি তেমন হাওয়া-বাতাস না থাকায় এবার ঘুড়ি ওড়ানোর প্রতিযোগিতা সেভাবে জমে ওঠেনি। তবে ঘুড়ি বেচাকেনা ও শিশু-কিশোরদের উচ্ছ্বাস ছিল চোখে পড়ার মতো। এ উপলক্ষে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীর নিরাপত্তার জন্য মেলায় সার্বক্ষণিক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল।

আদমদীঘির শিববাটি গ্রামের ঘুড়ি ব্যবসায়ী সালাম হোসেনের ভাষ্য, সন্ন্যাসতলীর মেলা বড় হওয়ায় তিনি এসেছেন ঘুড়ি বিক্রির জন্য। মেলায় প্রত্যাশা অনুযায়ী ঘুড়ি বিক্রি করতে পেরে তিনি খুশি। জয়পুরহাটের পার্বতীপুর এলাকার ঘুড়ি ব্যবসায়ী মফিজ উদ্দিন ও মজনু সরদার বলেন, পূর্বপুরুষের আমল থেকে এ মেলার কথা শুনে আসছেন তারা।

মেলা উদযাপন ও পূজা কমিটির সদস্য মহব্বতপুর গ্রামের মন্টু মণ্ডল বলেন, মেলাটি হিন্দু সম্প্রদায়ের হলেও এটি আসলে সব ধর্মালম্বীর মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে। 

মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিলন হোসেনের ভাষ্য, এক দিনের আয়োজনে যে এত লোকের সমাগম হতে পারে, তা চোখে না দেখলে বিশ্বাস করা কঠিন। মেলায় যেন অনৈতিক কর্মকাণ্ড না হয়, সে ব্যাপারে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ক্ষেতলাল থানার ওসি মোহাম্মদ ফরিদ হোসেন বলেন, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে এবং মেলায় আসা দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পুলিশ প্রশাসন সতর্ক আছে। মেলায় অনৈতিক আচরণ লক্ষ্য করা গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে কোনো বাংলাদেশি থাকলে উপযুক্ত চ্যানেলে পাঠাতে হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচনের জন‌্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রস্তুত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রস্তুতি রয়েছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • গাজীপুরে ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদে কারখানার কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে মারধর, আটক ৪৩
  • তুলশীগঙ্গার তীরে সন্ন্যাসতলীর শতবর্ষী ঘুড়ির মেলা
  • বিএনপি ও গণ অধিকারের মধ্যে উত্তেজনার জেরে পটুয়াখালীর ২ উপজেলায় ১৪৪ ধারা জারি
  • দীর্ঘ ছুটি শেষে জীবিকার তাগিদে ঢাকায় ফিরছে মানুষ