স্বল্পোন্নত দেশ বা এলডিসি থেকে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ থাকলেও সুযোগ ও সম্ভাবনাকেই বড় করে দেখছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে সম্মিলিতভাবে এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
গতকাল বুধবার রাজধানীর মতিঝিলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশের রপ্তানি বাজারের বৈচিত্র্যকরণ: এলডিসি থেকে উত্তরণের পর চ্যালেঞ্জ এবং সুযোগ’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি এই আহ্বান জানান। সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন এফবিসিসিআইর প্রশাসক মো.
এফবিসিসিআইর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। বিশেষ অতিথি ছিলেন বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব মাহবুবুর রহমান, বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মইনুল খান, রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) ভাইস চেয়ারম্যান মো. আনোয়ার হোসেন।
সেমিনারে আরও উপস্থিত ছিলেন পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ড. এম মাসরুর রিয়াজ, প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের পরিচালক উজমা চৌধুরী, স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালের নির্বাহী পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, বিপিজিএমইএর সভাপতি শামীম আহমেদ, বিজেএমএর সদস্য ও ক্রিয়েটিং কানেকশনের স্বত্বাধিকারী মাশরেকা বিনতে মোশাররফ প্রমুখ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, এলডিসি উত্তরণ-পরবর্তী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য খাতভিত্তিক অ্যাসোসিয়েশনসহ ব্যবসায়ী সম্প্রদায়কে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। মনে রাখতে হবে, ব্যবসার ক্ষেত্রে কোনো দেশ আমাদের বন্ধু নয়, সবাই প্রতিযোগী। এটা মেনে নিয়ে নিজেদের মধ্যে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জের তুলনায় সামনে সুযোগ অনেক বড়। একসঙ্গে কাজ করতে পারলে সেই সুযোগ কাজে লাগানো সম্ভব।
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাজার প্রসঙ্গে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সব প্রতিষ্ঠান একসঙ্গে কাজ করায় বাজারে স্বস্তি ফিরেছে, অনেক পণ্যের দাম কমেছে। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে বক্তারা এলডিসি-পরবর্তী নীতি কাঠামোয় কীভাবে ব্যবসা পরিচালনা করতে হবে, সে বিষয়ে ব্যবসায়ীদের প্রস্তুতি নেওয়ার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তারা বলেন, এলডিসি উত্তরণের পর বাংলাদেশকে যেসব চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে, তার মধ্যে অন্যতম হলো পণ্য বৈচিত্র্যকরণ। এ ক্ষেত্রে কোন কোন পণ্য ও খাতকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন, তা খুঁজে বের করে অগ্রাধিকারভিত্তিক কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব ণ জ য উপদ ষ ট ক জ কর ব যবস এলড স
এছাড়াও পড়ুন:
বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন: আলী রীয়াজ
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেছেন, কমিশনের বর্ধিত মেয়াদের আগেই জুলাই সনদ বাস্তবায়নের পদ্ধতি চূড়ান্ত করতে চায় কমিশন। এর জন্য কোনো অবস্থাতেই এক মাস লাগবে বলে মনে করেন না তিনি। এ বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নেওয়া হয়েছে। তিনি আশা করছেন, এ ব্যাপারে দ্রুত একটি পরিণতি দেখা যাবে।
আজ বুধবার দুপুর ১২টায় রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকের সূচনা বক্তব্যে এসব কথা বলেন আলী রীয়াজ।
জুলাই সনদ বাস্তবায়নের প্রক্রিয়া নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে কমিশনের তৃতীয় ধাপের তৃতীয় দিনের বৈঠক হচ্ছে আজ।
কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়িয়ে গত সোমবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে কমিশনের মেয়াদ আগামী ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত করা হয়েছে। সে হিসাবে কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানোর পর আজ রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে প্রথম বৈঠক হচ্ছে। সূচনা বক্তব্যে আলী রীয়াজ কমিশনের মেয়াদ এক মাস বাড়ানোর কথা উল্লেখ করেন।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, কমিশনের সভাপতি হিসেবে প্রধান উপদেষ্টা সার্বিক বিষয় জানেন। জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগ দিতে ২১ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্ক যাবেন তিনি। এর আগেই সনদ বাস্তবায়নের অগ্রগতি বিষয়ে তাঁকে জানানো হবে।
সনদ বাস্তবায়নের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে কমিশন চূড়ান্ত খসড়া পাঠিয়েছে বলে উল্লেখ করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ছয়টি উপায়ের পরামর্শ দিয়েছে। কেউ বলছে বিশেষ সাংবিধানিক আদেশ বা গণভোটের মাধ্যমে কার্যকর করতে। আবার কেউ কেউ সংসদের ওপর ছেড়ে দেওয়ার পক্ষে।
আলী রীয়াজ বলেন, সংবিধানের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলো গণভোট ও বিশেষ সাংবিধানিক আদেশের মাধ্যমে করতে বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। আর যেগুলো অধ্যাদেশের মাধ্যমে করা যাবে, তা যেন সরকার দ্রুত সম্পন্ন করে, সে পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
সনদে স্বাক্ষর করার বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে দুজন করে প্রতিনিধির নাম পাঠানোর কথা বলা হয়েছিল বলে উল্লেখ করেন আলী রীয়াজ। তিনি বলেন, বেশির ভাগ দলই তা পাঠিয়েছে। তারা চায়, এ ব্যাপারে সরকার প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেবে।
আজকের বৈঠকে অংশ নিয়েছেন বিএনপি, জামায়াতে ইসলামী, এনসিপি, গণ অধিকার পরিষদ, গণসংহতি আন্দোলন, বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)-সহ ৩০টি রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিরা।
প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ঐকমত্য কমিশন) মনির হায়দারের সঞ্চালনায় আজকের বৈঠকে কমিশনের সদস্য হিসেবে উপস্থিত আছেন বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ইফতেখারুজ্জামান, বদিউল আলম মজুমদার।