২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই থেকে মার্চ মেয়াদে দেশভিত্তিক রপ্তানি তথ্য থেকে জানা গেছে, এই সময়ে ৩০ দশমিক ২৫ বিলিয়ন ডলার পোশাক রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ; যা পোশাক খাতের স্থিতিস্থাপকতা এবং সম্ভাবনার পরিচায়ক।

এই তথ্য দিয়ে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সময়ে দেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ১০ দশমিক ৮৪ শতাংশ; যা প্রশংসনীয় বলে বর্ণনা করা হচ্ছে।

প্রতিবেদন অনুযায়ী, ইউরোপীয় ইউনিয়ন-ইইউ এখনো বাংলাদেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার। বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের মোট রপ্তানির ৪৯ দশমিক ৮২ শতাংশই রপ্তানি হয় ইইউতে; যার মোট বাজার মূল্য ১৫ দশমিক ৭ বিলিয়ন ডলার।

আরো পড়ুন:

ওয়ার্ল্ড এক্সপোতে বাংলাদেশ প্যাভিলিয়ন উদ্বোধন 

ছুটি শেষে বেনাপোল স্থলবন্দরে আমদানি-রপ্তানি শুরু

এরপরে বাংলাদেশের জন্য বড় বাজার যুক্তরাষ্ট্র। এই বাজারে মোট রপ্তানি হয়েছে ৫ দশমিক ৭৪ বিলিয়ন ডলারের তৈরি পোশাক; যা মোট রপ্তানির ১৮ দশমিক ৯৭ শতাংশ। কানাডার মোট বাজার অংশ ছিল ৯৬৩ দশমিক ৮৫ মিলিয়ন ডলার। যুক্তরাজ্যের বাজারও গুরুত্বপূর্ণ ছিল, যার রপ্তানি মূল্য ৩ দশমিক ৩৬ বিলিয়ন ডলার; যা মোট তৈরি পোশাক রপ্তানির ১১ দশমিক১০  শতাংশ ।

ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, প্রবৃদ্ধির দিক থেকে ইইউতে বাংলাদেশের তৈরি পোশাক রপ্তানি বছরের পর বছর উল্লেখযোগ্যভাবে ১১ দশমিক ৩১ শতাংশ  বৃদ্ধি পেয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মেয়াদে যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ দশমিক ২৩ শতাংশ এবং কানাডা ১৫ দশমিক ৬৬ শতাংশ রপ্তানি প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তবে যুক্তরাজ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি ৪ দশমিক ১৪ শতাংশের একটি সামান্য প্রবৃদ্ধির হার প্রদর্শন করেছে।

ইইউর মধ্যে জার্মানি একটি গুরুত্বপূর্ণ বাজার হিসেবে দাঁড়িয়েছে, যেখানে বাংলাদেশের রপ্তানির পরিমাণ ৩ দশমিক ৮০ বিলিয়ন ডলার, স্পেন ২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ফ্রান্স ১ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার, ইতালি ১ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ডলার, পোল্যান্ড ১ দশমিক ২৬ বিলিয়ন ডলার এবং নেদারল্যান্ডস ১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন ডলার।

প্রবৃদ্ধির হার বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য ছিল জার্মানি (১০ দশমিক ৭২ শতাংশ), ফ্রান্স (১০ দশমিক ৭৫ শতাংশ), নেদারল্যান্ডস (২৩ দশমিক ১৫ শতাংশ), পোল্যান্ড (১০ দশমিক ৩২ শতাংশ), ডেনমার্ক (১২ দশমিক ৮০ শতাংশ) এবং সুইডেনে (১৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ)।

বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতেও অপ্রচলিত বাজারে প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে; যা সামগ্রিকভাবে ৬ দশমিক ৬৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে মোট রপ্তানি ৫ দশমিক ১২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বাংলাদেশের মোট রপ্তানির ১৬ দশমিক ৯৩ শতাংশ দখল করেছে।

এই বাজারগুলোর মধ্যে জাপান মোট ৯৬০ দশমিক ৪৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে শীর্ষে রয়েছে। তারপরে অস্ট্রেলিয়া ৬৫৩ দশমিক ৬৪ মিলিয়ন ডলার এবং ভারত ৫৩৫ দশমিক ১৫ মিলিয়ন ডলার আমদানি করে।

তুরস্ক ও মেক্সিকোর মতো দেশগুলোতেও উল্লেখযোগ্য রপ্তানি হয়েছে। তুরস্কে ৩৫৭ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার এবং মেক্সিকোতে ২৫১ দশমিক ২২ মিলিয়ন ডলার রপ্তানি হয়েছে।

ইপিবি রপ্তানি বৃদ্ধির এই ধারাকে ‘প্রশংসনীয়’ বর্ণনা করেছে।

সংস্থাটির তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরের জুলাই-মার্চ মেয়াদে ভারতে ২০ দশমিক ৪৫ শতাংশ, জাপানে ১০ দশমিক ০৬ শতাংশ, মেক্সিকোতে ২৩ দশমিক ৪৪ শতাংশ এবং তুরস্কে ৩২ দশমিক ৫৪ শতাংশ হারে প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

ইপিবির প্রতিবেদনে দেখা গেছে, এই মেয়াদে জাপান, অস্ট্রেলিয়া, ভারত, তুরস্ক ও মেক্সিকোতে প্রবৃদ্ধি ইতিবাচক থাকলেও রাশিয়া, কোরিয়া, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং মালয়েশিয়ায় রপ্তানি হ্রাস পেয়েছে।

সংযুক্ত আরব আমিরাত, মালয়েশিয়া এবং কোরিয়ায় নেতিবাচক প্রবৃদ্ধি এই বাজারগুলোতে আরো গুরুত্বসহকারে রপ্তানি বাজার দেখভাল করা দরকার বলে মনে করে ইপিবি।

নিটওয়্যার খাতে মোট ১১ দশমিক ২২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে ইপিবি। ওভেন সেক্টরেও ১০ দশমিক ৪০ শতাংশ প্রবৃদ্ধি দেখা গেছে, যুক্তরাজ্যে প্রবৃদ্ধি ধীর হলেও অপ্রচলিত বাজারে উল্লেখযোগ্য প্রবৃদ্ধি হয়েছে।

রপ্তানির চলমান প্রবৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য হারে ইইউ ও যুক্তরাষ্ট্রের ওপর নির্ভরশীল; যা দেশের প্রধান বাজার হিসেবে অব্যাহত রয়েছে।

বিজিএমইএর সাবেক পরিচালক ও বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং ডেনিম এক্সপার্ট লিমিটেডের অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেলের সঙ্গে এই বিষয়ে কথা বলেছে বাসস।

তিনি বলেছেন, “এটি আমাদের মোট রপ্তানি প্রবৃদ্ধিতে প্রধান ঐতিহ্যবাহী বাজারের তাৎপর্য প্রদর্শন করে।”

“অপ্রচলিত বাজারে মাঝারি প্রবৃদ্ধি; এই বিভাগে আরো গবেষণা এবং মনোযোগের গুরুত্বকে তুলে ধরে, কারণ এর যথেষ্ট প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে, যা ঐতিহ্যবাহী বাজারের ওপর নির্ভরতা ভারসাম্য বজায় রাখতেও সাহায্য করবে।”

মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, “স্থায়ী বৈশ্বিক বাণিজ্য উত্তেজনা ক্রমাগত বৈশ্বিক পরিবেশকে পুনর্গঠন করছে। এটি এমন সুযোগ তৈরি করছে, যার সুবিধা নিতে পারে বাংলাদেশ।”

ঢাকা/হাসান/রাসেল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রব দ ধ র ১০ দশম ক ১ দশম ক ত রস ক

এছাড়াও পড়ুন:

জ্বালানি তেলের দাম কমল লিটারে ১ টাকা

দেশের বাজারে এবার কমল জ্বালানি তেলের দাম। মে মাসে প্রতি লিটার জ্বালানি তেলে দাম কমেছে ১ টাকা। আজ বুধবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের জারি করা প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, প্রতি লিটার ডিজেল ও কেরোসিনের দাম ১০৫ টাকা থেকে কমিয়ে ১০৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পেট্রলের দাম প্রতি লিটার ১২২ টাকা থেকে কমিয়ে ১২১ টাকা ও অকটেনের দাম ১২৬ টাকা থেকে কমিয়ে ১২৫ টাকা করা হয়েছে। নতুন দাম ১ মে থেকে কার্যকর হবে।

এর আগে মার্চ ও এপ্রিল মাসে জ্বালানি তেলের দাম অপরিবর্তিত রাখা হয়। আর ফেব্রুয়ারিতে পেট্রল, অকটেন, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে বেড়েছিল ১ টাকা।

২০২৪ সালের মার্চ থেকে বিশ্ববাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণ শুরু করে সরকার। সে হিসেবে প্রতি মাসে নতুন দাম ঘোষণা করা হয়।

জ্বালানি তেলের স্বয়ংক্রিয় মূল্য নির্ধারণের সূত্র নির্ধারণ করে নির্দেশিকা প্রকাশ করা হয়েছে ২০২৪ সালের ২৯ ফেব্রুয়ারি। এতে বলা হয়, দেশে ব্যবহৃত অকটেন ও পেট্রল ব্যক্তিগত যানবাহনে বেশি ব্যবহৃত হয়। তাই বাস্তবতার নিরিখে বিলাসদ্রব্য (লাক্সারি আইটেম) হিসেবে সব সময় ডিজেলের চেয়ে অকটেন ও পেট্রলের দাম বেশি রাখা হয়।

জ্বালানি তেলের মধ্যে উড়োজাহাজে ব্যবহৃত জেট ফুয়েলের দাম বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) নির্ধারণ করবে। বিদ্যুৎকেন্দ্রে ব্যবহৃত ফার্নেস অয়েলের দাম নিয়মিত সমন্বয় করে বিপিসি। আর ডিজেল, কেরোসিন, পেট্রল ও অকটেনের দাম নির্ধারণ করে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ১ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা ৫ বছরে, অস্ট্রেলিয়ার বিনোদন বাজার বাড়ছে
  • বিদেশি ঋণ পরিশোধ বেড়েছে ২৪ শতাংশ
  • জ্বালানি তেলের দাম কমল লিটারে ১ টাকা
  • চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে বিদেশি ঋণ শোধ ৩০০ কোটি ডলার ছাড়াল
  • তৃতীয় প্রান্তিকে মুনাফা কমেছে স্কয়ার ফার্মার
  • ৯ মাসে ১৪ হাজার কোটি টাকার ব্যবসা
  • শিক্ষার মানোন্নয়নে জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ প্রয়োজন
  • ২০২৭ সালের জুনের পর ‘করছাড়’ থাকবে না
  • ৯ মাসে ৪,৬০০ কোটি টাকার ব্যবসা ওয়ালটনের
  • যমুনা অয়েলের মুনাফা বেড়েছে ৩৮ শতাংশ