সিলেটে ব্যাটে-বলে হতাশা, প্রথম দিনেই জিম্বাবুয়ের দাপট
Published: 20th, April 2025 GMT
সিলেট টেস্টের প্রথম দিনটা একেবারেই ভুলে যাওয়ার মতো কেটেছে বাংলাদেশের জন্য। বৃষ্টির চোখরাঙানি ও আলো স্বল্পতায় খেলা আগেভাগেই থামলেও, মাঠের পারফরম্যান্সে সফরকারী জিম্বাবুয়েরই জয়জয়কার। প্রথমে বাংলাদেশকে গুটিয়ে দেয় মাত্র ১৯১ রানে, এরপর বিনা উইকেটে ৬৭ রান তুলে দিনের খেলা শেষ করেছে তারা। বাংলাদশের বোলাররা খুব একটা ভাবাতে পারেননি জিম্বাবুয়ের দুই ওপেনার ব্রায়ান বেনেট (৪০) ও বেন কারেনকে (১৭)। ১০ উইকেট হাতে নিয়ে প্রথম ইনিংসে ১২৪ রানে পিছিয়ে সফরকারীরা। এখন পর্যন্ত চার জন বোলার ব্যবহার করেছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত।
বাংলাদেশের শুরুটা ছিল সতর্ক। টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। সাদমান ইসলাম ও মাহমুদুল হাসান জয় শুরুটা ধীরে সুস্থে করলেও ইনিংস বড় করতে পারেননি। উদ্বোধনী জুটিতে ৩১ রান যোগ করার পর পরপর দুই ওপেনারকে ফেরান ভিক্টর নিয়াউচি। সাদমান ১২ ও জয় ১৪ রানে বিদায় নেন।
এরপর শান্ত ও মুমিনুল হক মিলে লাঞ্চ পর্যন্ত চালিয়ে যান ইনিংস। দ্বিতীয় সেশনে দুজনের জুটি দাঁড়ায় ৬৬ রানে। তবে শান্ত ৪০ রান করে মুজারাবানির বলে বাউন্ডারিতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন। এরপর একে একে ধস নামে টাইগারদের ব্যাটিং লাইনে। মুশফিক (৪), মিরাজ (১), তাইজুল (৩) ব্যর্থ হন।
মুমিনুল ফিফটি তুলে নিলেও বেশিক্ষণ স্থায়ী হতে পারেননি। ১০৫ বলে ৫৬ রান করে ফেরেন তিনি। শেষ দিকে জাকের আলি অনিক (২৮) কিছুটা লড়াই করেন, হাসান মাহমুদ (১৯) ও নাহিদ রানার (০) বিদায়ের মধ্য দিয়ে ৭০ ওভারেই থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
জিম্বাবুয়ের পক্ষে দারুণ বোলিং করেছেন ব্লেসিং মুজারাবানি ও মাসাকাদজা, দুজনেই নিয়েছেন তিনটি করে উইকেট। নিয়াউচি ও মাধেভেরের ঝুলিতে গেছে দুটি করে উইকেট।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচের নিয়ম পাল্টাচ্ছে এমসিসি
বাউন্ডারি সীমানায় ক্যাচ নেওয়ার সময় কিংবা ছক্কা ঠেকাতে গিয়ে অনেক সময় শরীরের ভারসাম্য থাকে না। ফিল্ডাররা তাই বাধ্য হয়েই একটি কৌশল অবলম্বন করেন।
বলটি ওপরে ছুড়ে দিয়ে সীমানা পেরিয়ে যান। বাউন্ডারি সীমানার বাইরে থাকতেই লাফ দিয়ে বলটি হাতের ধাক্কায় আবারও ওপরে ছুড়ে দিয়ে সীমানার ভেতরে ফেরত পাঠান এবং তারপর ক্যাচটি নেন কিংবা ছক্কা বাঁচান। এই কাজ করতে গিয়ে কেউ কেউ বাউন্ডারি সীমানার বাইরে একাধিকবার শূন্যে লাফিয়েও বল হাত দিয়ে স্পর্শ করেন।
ক্রিকেটের আইনপ্রণেতা সংস্থা মেরিলিবোন ক্রিকেট ক্লাবের (এমসিসি) নতুন নিয়ম অনুযায়ী এভাবে ক্যাচ নেওয়া কিংবা ছক্কা বাঁচানো আর বৈধ থাকছে না।
আরও পড়ুনস্বপ্ন পূরণ হতে ৬৯ রান দরকার, এবার কি পারবে ‘চিরকালের চোকার’ দক্ষিণ আফ্রিকা১০ ঘণ্টা আগেইএসপিএনক্রিকইনফো জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষ দিকে নতুন এ নিয়ম কার্যকরের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হবে। আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনে নিয়মটি সংযুক্ত হবে চলতি মাসেই। এরপর এমসিসির বিধিমালায় অন্তর্ভুক্ত হবে আগামী বছরের অক্টোবরে।
নতুন নিয়ম অনুযায়ী, একজন ফিল্ডার বাউন্ডারি সীমানার বাইরে লাফিয়ে শুধু একবারই বল স্পর্শ করতে পারবেন। এরপর সীমানার ভেতরে ঢুকে তাঁকে ক্যাচ নিতে হবে। ২০২৩ সালে বিগ ব্যাশে সিডনি সিক্সার্সের জর্ডান সিল্কের ক্যাচ বাউন্ডারি সীমানার বাইরে (লাফিয়ে) দ্বিতীয়বার স্পর্শ করে সীমানার ভেতরে ফেরত পাঠান ব্রিসবেন হিটের মাইকেল নেসের। শূন্যে লাফিয়ে বলটি দ্বিতীয়বার স্পর্শ করে তিনি সীমানার বাইরেই পা রাখেন এবং দৌড়ে ভেতরে ঢুকে ক্যাচটি নেন। এমসিসির নতুন নিয়ম অনুযায়ী এমন ক্যাচ আর আইনসিদ্ধ হবে না।
নেসের সেই ক্যাচ নেওয়ার পর ম্যাচ শেষে বলেছিলেন, ২০২০ বিগ ব্যাশে ম্যাথু ওয়েডের ক্যাচ অনেকটা এভাবেই নিয়েছিলেন ম্যাট রেনশ—যেখান থেকে তিনি ওভাবে ক্যাচটি নেওয়ার প্রেরণা পান। সে সময় দুটি ক্যাচের বৈধতা নিয়েই বিতর্ক হয়েছিল। তখন অনেকেই বলেছিলেন, বাউন্ডারি সীমানার ক্যাচের নিয়ম পাল্টানো হোক, যেটা সর্বশেষ হালনাগাদ করা হয়েছে ২০১০ সালে।
আরও পড়ুনম্যাক্সওয়েল, ক্লাসেন, পুরান—জাতীয় দল ছাড়তেই ফ্র্যাঞ্চাইজি দলের অধিনায়ক১২ ঘণ্টা আগেচলতি বছরের শুরুতে ক্যাচ নেওয়ার প্রশ্নবিদ্ধ এই নিয়ম পুনরায় যাচাইয়ের জন্য এমসিসি কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছিল আইসিসির ক্রিকেট কমিটি। এরপর দুই পক্ষই এ নিয়ে একসঙ্গে কাজ করে এবার সেটি হালনাগাদ করল। এ বিষয়ে এমসিসির সংক্ষিপ্ত ব্যাখ্যা প্রতিটি সদস্যদেশের বোর্ডের কাছে পাঠিয়েছে আইসিসি। সেখানে বলা হয়েছে, বর্তমান নিয়মের অধীন ‘অসাধারণ’ ফিল্ডিং দেখা গেলেও সেটা ‘অস্বাভাবিক কিছু ক্যাচেরও জন্ম দিয়েছে, যা সিংহভাগ ক্রিকেট-সংশ্লিষ্টদের চোখে অবৈধ’।
নেসেরের ক্যাচের উদাহরণ টেনে এমসিসি বলেছে, ব্রিসবেন হিটের এই ফিল্ডার সীমানার ‘ভেতরে’ ক্যাচটি নেওয়া সম্পন্ন করার আগে ‘বানি হপড’ (ছোট্ট লাফ) করেছেন। ব্যাখ্যায় বলা হয়, ‘এমসিসি নতুন আইন করেছে, যেখানে সীমানার বাইরে “বানি হপড” পুরোপুরি নির্মূল করা হয়েছে। তবে এসব ক্যাচে ফিল্ডার সীমানার ভেতরে থেকে বল শূন্যে ছুড়ে দিয়ে বাইরে পা রাখার পর ক্যাচটি ধরতে ডাইভ দিয়ে ফিরতে পারবেন। আমাদের সমাধান হলো, সীমানার বাইরে চলে যাওয়া ফিল্ডারকে শূন্যে থাকতে একবারই বল স্পর্শ করতে দেওয়ার সীমারেখা বেঁধে দেওয়া এবং তারপর ডেলিভারিটির বাকি সময় সম্পন্ন করতে সীমানার ভেতরে থাকতে হবে।’
রিলে অর্থাৎ একাধিক ফিল্ডার মিলে ক্যাচের ক্ষেত্রেও একই নিয়ম কার্যকর হবে। বাউন্ডারি সীমানার বাইরে বল স্পর্শ করা ফিল্ডারকে সীমানার ভেতরে ফিরতে হবে তাঁর সতীর্থ ক্যাচ নিলেও।
১৭ জুন শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের মধ্যকার গল টেস্ট দিয়ে শুরু হবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের নতুন চক্র। এই ম্যাচের সঙ্গে আইসিসির প্লেয়িং কন্ডিশনও হালনাগাদ করা হবে। নতুন এই নিয়ম কার্যকর হবে আগামী বছরের অক্টোবর থেকে।