রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সালেহ্ হাসান নকীব গত সেপ্টেম্বরে বলেছিলেন, পাঁচ মাসের মধ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (রাকসু) নির্বাচন আয়োজন করবেন। সেই সময়সীমা পেরোনোর এক মাস পর গত ফেব্রুয়ারির শেষ সপ্তাহে রাকসু নির্বাচনের পথনকশা প্রকাশ করা হয়। সেই পথনকশা অনুযায়ী ১৩ এপ্রিল রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ করার কথা থাকলেও তা হয়নি।

তবে রাকসু ও বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য কর্তৃপক্ষ ইতিমধ্যে সাত সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। যদিও পথনকশা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ না হওয়ায় জুনে নির্বাচন নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছে ছাত্রসংগঠনগুলো।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রায় এক দশক পর ১৯৬২ সালে রাকসু প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এরপর মোট ১৪টি নির্বাচন হয়। সর্বশেষ রাকসু নির্বাচন হয়েছিল ১৯৮৯ সালে। এরপর ৩৬ বছর ধরে রাকসু নির্বাচন হয়নি। জুলাই অভ্যুত্থানের পর পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে বিভিন্ন ছাত্রসংগঠন, শিক্ষার্থী প্রতিনিধি, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন রাকসু নির্বাচনের দাবি জানায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে গত ২৭ ফেব্রুয়ারি রাকসু নির্বাচনের পথনকশা (রোডম্যাপ) প্রকাশ করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

পথনকশা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশিত না হওয়ায় আগামী জুনে রাকসুর নির্বাচন আয়োজন করা যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা।

পথনকশা অনুযায়ী, গত ২৮ মার্চ রাত ১২টা পর্যন্ত শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অনলাইনে রাকসু বিধিমালার খসড়া সংশোধনী সম্পর্কে পরামর্শ ও মতামত দিয়েছেন। ১৩ এপ্রিল রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ করার কথা ছিল। তবে সেটি গতকাল পর্যন্ত প্রকাশ করা হয়নি। যদিও ১৬ এপ্রিল রাকসুর গঠনতন্ত্র অনুমোদন এবং রাকসু ও বিশ্ববিদ্যালয় সিনেটের ছাত্র প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য সাত সদস্যের নির্বাচন কমিশন গঠন করার সিদ্ধান্ত অনুমোদন দেয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম সিন্ডিকেট।

রাকসু নির্বাচনের পথনকশায় উল্লেখ করা হয়েছে, ২৮ এপ্রিল রাকসুর খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ, ৩০ এপ্রিল ভোটার তালিকা বিষয়ে আপত্তি গ্রহণ ও ১৩ মে চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হবে। এ ছাড়া ১৫ মে মনোনয়নপত্র বিতরণ করা হবে, মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন ১৯ মে। ২০ মে মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে। ২২ মে প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রকাশ এবং ২৫ মে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন নির্ধারণ করা হয়েছে। পথনকশায় বলা হয়েছে, প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৭ মে। আর জুন মাসের তৃতীয় থেকে চতুর্থ সপ্তাহে রাকসুর নির্বাচন হবে।

পথনকশা অনুযায়ী ১৩ এপ্রিল রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশ করতে না পারার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন বলেন, এটা করতে না পারলেও পথনকশার পরের তারিখগুলো ঠিক রাখার চেষ্টা আছে কর্তৃপক্ষের।

পথনকশা অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ে রাকসুর চূড়ান্ত বিধিমালা ও নির্বাচনের আচরণবিধি প্রকাশিত না হওয়ায় আগামী জুনে রাকসুর নির্বাচন আয়োজন করা যাবে কি না, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ে সক্রিয় বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতারা। রাকসু নির্বাচন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তাঁরা।

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব প্রথম আলোকে বলেন, রাকসু নির্বাচনের যে পরিবেশ দরকার, সে পরিবেশ ক্যাম্পাসে বিদ্যমান। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। যদিও রোডম্যাপ অনুযায়ী এখনো নির্বাচনী আচরণবিধি প্রকাশ করা হয়নি, এটি দুঃখজনক। তিনি আশা করেন, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই রাকসু নির্বাচন হবে।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র পথনকশ অন য য় স গঠন

এছাড়াও পড়ুন:

এবারের নির্বাচনে কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না: সিইসি

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দীন।

বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে এ হুঁশিয়ারি দেন তিনি।

আরো পড়ুন:

ভোট ১২ ফেব্রুয়ারি

প্রবাসী ভোটার নিবন্ধন ছাড়াল ৩ লাখ

সিইসি বলেন, “আগামী ২০২৬ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ৩০০ আসনের ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি জুলাইয়ে গ্রহণকৃত জাতীয় সংবিধান সংশোধন বাস্তবায়ন আদেশ ২০২৫-এর ওপর গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের জন্য মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ ডিসেম্বর। মনোনয়নপত্র বাছাই হবে ৩০ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত।”

তিনি বলেন, “রিটার্নিং অফিসারের আদেশের বিরুদ্ধে কমিশনে আপিল দায়েরের শেষ তারিখ ১১ জানুয়ারি। কমিশনে দায়েরকৃত আপিল নিষ্পত্তি হবে ১২ থেকে ১৮ জানুয়ারি। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ তারিখ ২০ জানুয়ারি। রিটার্নিং অফিসার কর্তৃক চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ ও প্রতীক বরাদ্দ হবে ২১ জানুয়ারি। নির্বাচনি প্রচারণা চলবে ২২ জানুয়ারি থেকে ভোটগ্রহণ শুরুর ৪৮ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত, অর্থাৎ ১০ ফেব্রুয়ারি মঙ্গলবার সকাল ৭টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত।”

বিটিভি ও বেতারে জাতির উদ্দেশে ভাষণের মাধ্যমে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফশিল ঘোষণা করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এ এম এম নাসির উদ্দিন। এবার সংসদ নির্বাচনের সঙ্গে একই দিনে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। এ দুটি নির্বাচনের তফসিল একই সঙ্গে ঘোষণা করা হলো।

এর আগে বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিকেল ৪টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে বাংলাদেশ টেলিভিশন ও বাংলাদেশ বেতারে সিইসি এ এম এম নাসির উদ্দিনের ভাষণ রেকর্ড করা হয়।

ঢাকা/আসাদ/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঋণখেলাপি, সরকারি বিল বকেয়া থাকলে নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না
  • নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা হওয়ায় জামায়াতের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচিগুলো স্থগিত
  • নিজের হাতে নিজের পোস্টার ছিড়লেন শিশির মনির
  • তফসিলকে স্বাগত জানিয়ে গোপালগঞ্জে বিএনপির মিছিল
  • অসত্য তথ্য ছড়ানোও শাস্তিযোগ্য অপরাধ: সিইসি
  • তফসিল ঘোষণা করায় নির্বাচন কমিশনকে প্রধান উপদেষ্টার শুভেচ্ছা
  • নির্বাচন আচরণবিধি অনুসারে মাসুদুজ্জামানের ব্যানার-পোস্টার অপসারণ
  • প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২০ জানুয়ারি
  • এবারের নির্বাচনে কোনো গাফিলতি সহ্য করা হবে না: সিইসি
  • ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগে জনপ্রশাসনকে চিঠি পাঠালো ইসি