Prothomalo:
2025-04-30@23:46:26 GMT

রাজনীতির ব্যাকরণ

Published: 20th, April 2025 GMT

একটি টক শোতে বিএনপি নেত্রী ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানাকে যা বলতে শুনলাম, তার সারমর্ম এ রকম: বাংলাদেশে এখন একজন রাজনীতিকের ইমেজ হলো ক্লাস ফাইভ পাস, উঠতি লোকাল মাস্তান থেকে বড় মাস্তান, তারপর জাতীয় পর্যায়ের মাস্তান। চাঁদাবাজির রেট অনেক হাই। দুই নম্বরি ব্যবসা থেকে বিশাল টাকার মালিক। তারপর এমপি এবং একসময় হয়তো মন্ত্রী।

জানা কথা হলেও নতুন করে মন বিষণ্ন হলো। অথচ এই দেশেও একদা রাজনীতি ছিল শিক্ষিত, ত্যাগী ও মানবিক মানুষের ব্রত। কোথায়, কীভাবে হারিয়ে গেল সেই সব দিন? এমন চিন্তা থেকেই ‘রাজনীতিক’দের জন্য লিখতে ইচ্ছা হলো। জানি, প্লেটো-কাঙ্ক্ষিত ‘ফিলোসফার কিং’ আমাদের এ পোড়ার দেশে কখনোই হবে না। তবুও ভালো রাজনীতির কথা নিরন্তর বলে যেতে হবে, লিখে যেতে হবে।

বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ও তৃতীয় দশকে মানব ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাগুলো ঘটে, যেমন প্রথম বিশ্বযুদ্ধ, ভার্সাই চুক্তি, রুশ বিপ্লব ও সমাজতন্ত্রের সূচনা, ইতালিতে মুসোলিনির আবির্ভাব ও দুনিয়াব্যাপী ফ্যাসিজমের উত্থান, মহামন্দা, ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ক্ষয়িষ্ণু প্রবণতা যা ইন্ডিয়া অ্যাক্টে প্রতিফলিত, ব্রিটিশ রাজনীতিতে লেবার পার্টির উত্থান ও শ্রমিকের অধিকার রক্ষার দিকে মনঃসংযোগ। এরই প্রেক্ষাপটে ব্রিটিশ দার্শনিক ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানী হেরাল্ড লাস্কির চিন্তাজগতে ঘটে এক বিস্ময়কর বৈপ্লবিক পরিবর্তন। ১৯২৫ সালে লাস্কি রচিত মহাগ্রন্থ গ্রামার অব পলিটিকস এসব বৈশ্বিক ঘটনাবলির ও লাস্কি চিন্তাজগতের পরিবর্তনেরই প্রতিফলন।

লাস্কি এই গ্রন্থে রাষ্ট্র, সার্বভৌমত্ব, অধিকার, স্বাধীনতা এবং গণতন্ত্রের প্রকৃতি নিয়ে সমালোচনামূলক বিশ্লেষণ করেন। তিনি রাজনৈতিক কর্তৃত্বের একটি বহুবিধ ধারণা এবং এমন একটি সমাজতান্ত্রিক অর্থনৈতিক কাঠামোর পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করেন, যা সামাজিক ন্যায়বিচার ও অর্থনৈতিক সমতার ওপর গুরুত্ব দেয়।

লাস্কি রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্বের প্রচলিত ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেন। বলেন, ক্ষমতা রাষ্ট্রে কেন্দ্রীভূত না হয়ে বিভিন্ন সামাজিক প্রতিষ্ঠানের মধ্যে বণ্টিত হওয়া উচিত। তিনি হবস এবং অস্টিন উত্থাপিত আইনি সার্বভৌমত্বের ধারণার সমালোচনা করেন। এর পরিবর্তে তিনি সার্বভৌমত্বের একটি বহুত্ববাদী ধারণা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রের পাশাপাশি একাধিক কর্তৃত্বের কেন্দ্র (যেমন শ্রমিক ইউনিয়ন, পেশাগত সংগঠন, স্থানীয় সরকার এবং ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান) রাজনৈতিক জীবনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এসব কর্তৃত্বকেন্দ্রের সহাবস্থানের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন তিনি।

তাঁর মতে, রাষ্ট্রই একমাত্র কর্তৃত্বের উৎস নয়। রাষ্ট্র বরং এমন একটি প্রতিষ্ঠান, যা অন্যদের সঙ্গে মিলেই শাসনব্যবস্থায় অংশগ্রহণ করে। লাস্কির এই বহুত্ববাদী দৃষ্টিভঙ্গি জি ডি এইচ কোল এবং লিয়ন দুগুইয়ের মতো চিন্তাবিদদের দ্বারা প্রভাবিত। তাঁরা মনে করতেন সমাজের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ক্ষমতা বণ্টন করা জরুরি, যেন স্বেচ্ছাচারিতা ও দমন-পীড়ন ঠেকানো যায়।

লাস্কি জোর দিয়ে বলেন, সরকারের কাজ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করা নয়। সরকারের প্রধান কাজ হলো সবার জন্য কল্যাণ নিশ্চিত করা। তিনি বৈষম্য মোকাবিলায় অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ ও সামাজিক ন্যায়বিচারে রাষ্ট্রের সক্রিয় ভূমিকার পক্ষে মত দেন। লাস্কি বলেন, রাষ্ট্রের কর্তৃত্ব নিরঙ্কুশ নয় এবং তা সামাজিক ও অর্থনৈতিক বিবেচনার মাধ্যমে সীমাবদ্ধ হওয়া উচিত। তিনি সতর্ক করেন, একটি অনিয়ন্ত্রিত রাষ্ট্র সার্বভৌমত্বের নামে ব্যক্তিস্বাধীনতা দমন করতে পারে। এর পরিবর্তে তিনি এমন একটি বিকেন্দ্রীকৃত শাসনব্যবস্থার কথা বলেন, যেখানে একাধিক প্রতিষ্ঠান সম্মিলিতভাবে কর্তৃত্ব ভাগ করে নেয়। তিনি অনিয়ন্ত্রিত পুঁজিবাদ তথা বাজার অর্থনীতির সমালোচনা করেন। কারণ, এটি অর্থনৈতিক বৈষম্য ও সামাজিক অন্যায্যতার সৃষ্টি করে। তাঁর মতে, সরকারের উচিত শ্রমজীবী শ্রেণির স্বার্থ রক্ষার জন্য হস্তক্ষেপ করা।

লাস্কি তাঁর বইয়ে ব্যক্তিস্বাধীনতার একটি নতুন তত্ত্ব উপস্থাপন করেন। কেবলমাত্র রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের অনুপস্থিতিই ব্যক্তিস্বাধীনতা নয়; বরং ন্যায়ভিত্তিক সমাজে ব্যক্তির সম্ভাবনা বিকাশের সামর্থ্য হিসেবে তিনি ব্যক্তিস্বাধীনতাকে সংজ্ঞায়িত করেন। তিনি অর্থনৈতিক বৈষম্যকে স্বাধীনতার জন্য একটি মৌলিক হুমকি হিসেবে দেখেন এবং বলেন, অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ছাড়া রাজনৈতিক অধিকার অর্থহীন। কারণ, বৈষম্য গরিব ও শ্রমজীবী শ্রেণির জন্য সুযোগ সীমিত করে দেয়।

গণতন্ত্রের দৃঢ় সমর্থক লাস্কি পুঁজিবাদী গণতন্ত্রের সমালোচনা করেন। কারণ, পুঁজিবাদী গণতন্ত্রে অর্থনৈতিক ক্ষমতা অভিজাত ও পুঁজিপতি শ্রেণির হাতে কেন্দ্রীভূত থাকে, তাঁরা সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখে আর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ জীবনধারণের জন্য সংগ্রাম করে। এভাবে পুঁজিবাদ শ্রেণি বিভাজন সৃষ্টি করে। এ জন্যই তিনি এই ব্যবস্থাকে অন্যায্য মনে করেন এবং বিশ্বাস করেন, অর্থনৈতিক ক্ষমতার আরও ন্যায্য বণ্টন প্রয়োজন।

লাস্কি স্বাধীনতাকে দুটি ভাগে ভাগ করেন—আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা ও বাস্তব স্বাধীনতা। আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতার মধ্যে রয়েছে আইনি ও রাজনৈতিক অধিকার। যেমন মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, ও আইনের সুরক্ষা। বাস্তব স্বাধীনতা এমন সামাজিক ও অর্থনৈতিক শর্তের কথা বলে, যা ব্যক্তিকে তাঁর অধিকারগুলো অর্থবহভাবে প্রয়োগ করতে সক্ষম করে। অর্থনৈতিক নিরাপত্তা না থাকলে আনুষ্ঠানিক স্বাধীনতা অর্থহীন হয়ে পড়ে। একটি উদাহরণ দিয়ে লাস্কি ধারণাটি ব্যাখ্যা করেন: ভোটাধিকার আছে এমন একজন দরিদ্র মানুষের যদি যথাযথ শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা বা ন্যায্য মজুরি না থাকে, তাহলে প্রকৃতপক্ষে তিনি স্বাধীন নন।

লাস্কির এই বক্তব্য বাংলাদেশের জন্য খুব প্রাসঙ্গিক। এখানে প্রত্যেক নাগরিকের ভোটাধিকার আছে। কিন্তু গরিব মানুষ নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন না। সামান্য টাকার বিনিময়ে তিনি তাঁর ভোট বিক্রি করে দিতে বাধ্য হন অথবা গ্রামের মাতবর বা এলাকার প্রভাবশালী নেতার পছন্দ অনুযায়ী তিনি ভোট দিতে বাধ্য হন। কারণ, সেই মাতবর বা প্রভাবশালী নেতা তাঁকে ‘বিপদে’ রক্ষা করেন, প্রয়োজনের সময় কিছু টাকাপয়সা দেন এবং এক সময় জমি বা ভিটা লিখে নেন।

৭৫ বছর পরে এসে অমর্ত্য সেন স্বাধীনতাকে নতুনভাবে ব্যাখ্যা করেছেন। নেগেটিভ ফ্রিডম, পজিটিভ ফ্রিডম। স্কুলে যাওয়ার অধিকারকে প্রফেসর সেন নেগেটিভ ফ্রিডম বলছেন। এখানে রাষ্ট্রের, সংগঠনের বা ব্যক্তির কাছে থেকে বাধা নেই, কিন্তু বাধা না থাকাই যথেষ্ট নয়। যাঁর স্কুলের বেতন দেওয়ার, বই কেনার টাকা নেই, সে এই স্বাধীনতা কী করবে? সে জন্য তিনি বলছেন, নেগেটিভ ফ্রিডম হলো প্রয়োজনীয় শর্ত; কিন্তু পর্যাপ্ত শর্ত নয়। পজিটিভ ফ্রিডমের মানে হলো আপনি যা মূল্যবান মনে করেন, তা করার বা হওয়ার বাস্তব সক্ষমতা থাকা। এটি শুধু স্বাধীনভাবে থাকতে পারার বিষয় নয়, এটি ক্ষমতায়নের বিষয়।

সেনের ক্যাপাবিলিটি অ্যাপ্রোচ তথা ক্ষমতাপদ্ধতিতে বিবৃত ‘ক্ষমতাসম্পন্ন স্বাধীনতা’র ধারণা আরও গভীর। এটা ব্যাখ্যা করতে তিনি ‘বাস্তব স্বাধীনতা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। ব্যক্তি যে ধরনের জীবনকে মূল্যবান মনে করে, সেই জীবনযাপন করার সক্ষমতাই বাস্তব তথা কার্যকর স্বাধীনতা। তিনি জোর দিয়ে বলেন, স্বাধীনতা কেবল অধিকার থাকার বিষয় নয়; বরং সেই অধিকারগুলোকে অর্থবহভাবে ব্যবহার করার উপায় ও পরিবেশ থাকাও জরুরি। যেমন শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং সামাজিক সহায়তা।

গণতন্ত্রের দৃঢ় সমর্থক লাস্কি পুঁজিবাদী গণতন্ত্রের সমালোচনা করেন। কারণ, পুঁজিবাদী গণতন্ত্রে অর্থনৈতিক ক্ষমতা অভিজাত ও পুঁজিপতি শ্রেণির হাতে কেন্দ্রীভূত থাকে, তাঁরা সম্পদের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখে আর সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ জীবনধারণের জন্য সংগ্রাম করে। এভাবে পুঁজিবাদ শ্রেণি বিভাজন সৃষ্টি করে। এ জন্যই তিনি এই ব্যবস্থাকে অন্যায্য মনে করেন এবং বিশ্বাস করেন, অর্থনৈতিক ক্ষমতার আরও ন্যায্য বণ্টন প্রয়োজন।

লাস্কির মতে, প্রকৃত গণতন্ত্র তখনই সম্ভব, যখন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা সমানভাবে বণ্টিত হয়। গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে অংশগ্রহণমূলক এবং শ্রমজীবী শ্রেণির চাহিদার প্রতি সাড়া দেওয়ার মতো হতে হবে। তিনি সতর্ক করেন, যদি না অর্থনৈতিক ক্ষমতার গণতন্ত্রীকরণ হয়, তবে রাজনৈতিক গণতন্ত্র কার্যকর হয় না। লাস্কি এমন এক অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলেন, যেখানে শ্রমিক ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বেশি অংশগ্রহণ থাকবে। তিনি বিশ্বাস করেন যে নির্বাচনের বাইরে গণতান্ত্রিক অনুশীলনের সম্প্রসারণ দরকার এবং কর্মক্ষেত্রে গণতন্ত্র ও ট্রেড ইউনিয়নের অংশগ্রহণ একটি ন্যায়সংগত সমাজ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ।

লাস্কি এমন একটি সমাজতান্ত্রিক কাঠামোর পক্ষে যেখানে অর্থনৈতিক সম্পদ ব্যক্তিগত স্বার্থের দ্বারা নয়; বরং গণতান্ত্রিকভাবে নিয়ন্ত্রিত হয়। তিনি পুঁজিবাদকে স্বভাবতই শোষণমূলক হিসেবে দেখেন এবং ন্যায় ও সমতা নিশ্চিত করতে প্রধান শিল্পগুলোর যৌথ মালিকানার প্রয়োজনীয়তা বিশ্বাস করেন। তিনি এমন একটি বিশ্বের রূপকল্প রচনা করেন, যেখানে রাষ্ট্রগুলো আন্তর্জাতিক সংস্থার মাধ্যমে সংঘাতের সমাধানে সহযোগিতা করে। তিনি যুদ্ধ ও অর্থনৈতিক শোষণ রোধে বৈশ্বিক শাসনকাঠামোর পক্ষে সমর্থন জানান।

রবীন্দ্রনাথের মতো হেরাল্ড লাস্কিও জাতীয়তাবাদের বিপদ সম্পর্কে আমাদের সতর্ক করেন। তাঁর পর্যবেক্ষণ হলো, জাতীয়তাবাদ প্রায়ই সংঘাত ও যুদ্ধের দিকে নিয়ে যায়। তিনি এমন একটি বিশ্ব কল্পনা করেন, যেখানে রাষ্ট্রগুলো বিরোধ মীমাংসা ও অর্থনৈতিক সমতা এবং শান্তির মতো যৌথ লক্ষ্য অর্জনের জন্য পারস্পরিক সহযোগিতা করবে। তিনি এমন আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাকে সমর্থন করেন, যেগুলো বাণিজ্য, শ্রমমান ও মানবাধিকারের নিয়মনীতি নির্ধারণ করবে। তাঁর মতে, শক্তিশালী দেশগুলোর অর্থনৈতিক শোষণকে আন্তর্জাতিক সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে চ্যালেঞ্জ করা প্রয়োজন।

সাম্রাজ্যবাদ-উপনিবেশবাদের কঠোর সমালোচক, প্রফেসর লাস্কি যখন বলেন ‘সাম্রাজ্যবাদ-উপনিবেশবাদ পুঁজিবাদী শোষণের সম্প্রসারিত রূপ', তখন তার মধ্যে মার্ক্সীয় তত্ত্বের প্রতিধ্বনি শোনা যায়। উপনিবেশমুক্তি ও নিপীড়িত জাতিগুলোর আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকারের পক্ষে লাস্কির জোরালো অবস্থান আমাদের প্রেরণা জোগায়।

লাস্কির গ্রামার অব পলিটিকস রাজনৈতিক তত্ত্বে একটি প্রভাবশালী রচনা হিসেবে বিবেচিত, যা রাষ্ট্রক্ষমতার সমালোচনা করে, বিকেন্দ্রীকৃত ও গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার পক্ষে মত দেয়, এবং সমাজতান্ত্রিক নীতির মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানায়। তাঁর চিন্তাধারা এখনো গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র এবং রাজনৈতিক বহুত্ববাদ নিয়ে আলোচনায় আমাদের উদ্দীপ্ত করে।

এন এন তরুণ অর্থনীতির অধ্যাপক, ইনডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ, সাউথ এশিয়া জার্নালের এডিটর অ্যাট লার্জ [email protected]

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব শ ব স কর ন গণত ন ত র ক গণতন ত র র এমন একট র জন ত ক কর ত ত ব ব যবস থ ক ষমত র এমন এক র জন য আম দ র ন একট সরক র গ রহণ

এছাড়াও পড়ুন:

কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু

কোনও মহামানবকে বাংলাদেশের দায়িত্ব দেওয়ার জন্য দেশের মানুষ আন্দোলন-সংগ্রাম করেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।

সোমবার রাজধানীর গুলশানে চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে সমমনা দলগুলোর সঙ্গে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন।

তিনি বলেন, কোনও মহামানব কোনও দেশের গণতন্ত্রের সমাধান দেবে তার জন্য দেশের জনগণকে অপেক্ষা করতে হবে, এটা বিশ্বাস করার কারণ নেই।

এদিন বিকেল সাড়ে ৩টায় ন্যাপ ভাসানীর সঙ্গে বৈঠক করে বিএনপি। ন্যাপ ভাসানীর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলামের নেতৃত্বে ১০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত উপস্থিত ছিলেন।

পরে বিকাল ৪টা ২০ মিনিটে আমজনতার দলের সঙ্গে বৈঠকে করে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটি। আমজনতার দলের আহ্বায়ক কর্নেল অব. মিয়া মশিউজ্জামানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল বৈঠক উপস্থিত ছিলেন। এছাড়া বিকেল ৫টা ১০ মিনিটে বাংলাদেশ পিপলস পার্টির সঙ্গে বৈঠক করেন বিএনপির নেতারা।

বিএনপির পক্ষে বৈঠকে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু উপস্থিত ছিলেন।

আল জাজিরাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্যের বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে আমির খসরু বলেন, মানুষ বলতে কারা? আমার বুঝতে একটু অসুবিধা হচ্ছে। বাংলাদেশে প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি, যারা জনগণকে প্রতিনিধিত্ব করছে। যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে রাস্তায় লড়াই করেছে, আমাদের সঙ্গে যারা রাস্তায় ছিল, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০টি দল, পরিষ্কারভাবে ব্যক্ত করেছে ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচনের জন্য।

তিনি আরও বলেন, সংস্কারের জন্য যে কথাগুলো বলা হয়, সংস্কারের ব্যাপারে যেখানে ঐকমত্য হবে- সেই সংস্কারগুলো দ্রুত করে নির্বাচন কমিশনকে বলা হোক, নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করে রোডম্যাপ দিয়ে ভোটের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য। তো জনগণ বলতে কারা? 

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, এখন জনগণ বলতে যদি কোনও একটি বিশেষ গোষ্ঠী, সুবিধাভোগী- যারা গণতন্ত্রের বিরুদ্ধে গিয়ে, জনগণের ভোটাধিকারের বিরুদ্ধে গিয়ে গণতন্ত্রকে সংস্কারের মুখোমুখি করছে! এটা তো কারও বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কারণ নেই। ১৬ বছরের যুদ্ধটা ছিল গণতন্ত্রের জন্য, দেশে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের ভোটাধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য, জনগণের মালিকানা ফিরিয়ে আনার জন্য। যে সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হবে, তারা জনগণের কাছে দায়বদ্ধ থাকবে। সেটা যে সরকারই হোক।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ‘মিয়ানমারকে মানবিক করিডোর দেওয়া স্বাধীনতা সার্বভৌমত্বকে সংকট’
  • মিয়ানমারকে মানবিক করিডর দেওয়ার অধিকার অন্তর্বর্তী সরকারের নেই: সিপিবি
  • সাবেক বিচারপতি খায়রুল হককে গ্রেপ্তারের দাবিতে বিক্ষোভ 
  • কোনো মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমীর খসরু
  • কোনও মহামানবকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য মানুষ আন্দোলন করেনি: আমির খসরু
  • জনগণ গণতন্ত্রের জন‍্য রক্ত দিয়েছে, কোনো মহামানবের প্রতিষ্ঠার জন্য নয়: আমীর খসরু
  • নতুন কর্মসূচি দিল যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক ও ছাত্রদল