বিসিএসে ১০০ নম্বরের ভাইভা, কার্যকর কোন বিসিএসে
Published: 27th, April 2025 GMT
৪৭তম বিসিএস থেকে ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা নেওয়ার বিধান কার্যকর হবে বলে জানিয়েছে সরকারি কর্ম কমিশন। গতকাল শনিবার পিএসসি সংস্কারে চাকরিপ্রার্থীদের ৮ দফা দাবির বিষয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছে পিএসসি। সেখানে ১০০ নম্বরের মৌখিক পরীক্ষা এবং প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ করার বিষয়টি জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, প্রার্থীদের দাবি ছিল ৪৫তম বিসিএস থেকে ভাইভার নম্বর ১০০ করতে হবে। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার মার্ক প্রকাশ করা এবং লিখিত পরীক্ষার ন্যূনতম দুই মাস আগে পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করা হবে।
এ তিনটি দাবির বিষয়ে পিএসসি জানিয়েছে, ৪৫তম বিসিএস থেকেই বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষার নম্বর ২০০–এর পরিবর্তে ১০০ নির্ধারণ করার প্রস্তাব ২০২৪ সালের নভেম্বরে কমিশন কর্তৃক সরকারের কাছে প্রদান করা হয়েছিল। কিন্তু সরকারের বিবেচনায় ৪৭তম বিসিএস থেকে এটি বাস্তবায়ন করার সিদ্ধান্ত হয়েছে। কারণ সরকারের মতে যেহেতু ৪৫তম বিসিএসের বিজ্ঞপ্তি আগেই (২০২২ সালে) জারি করা হয়েছে যেখানে ভাইভার নম্বর ২০০ মর্মে ঘোষণা করা হয়েছিল, সেহেতু, এখন ভাইভার নম্বরে রদবদল করা হলে তা আইনের দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য হতে পারে।
আরও পড়ুনমে মাসে ছুটির পর ছুটি পাচ্ছেন সরকারি চাকরিজীবীরা১৪ ঘণ্টা আগেলিখিত পরীক্ষার ন্যূনতম দুই মাস আগে পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, রুটিনও ঘোষণা করা হয়েছিল।প্রিলিমিনারি, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার নম্বর প্রকাশ করার জন্য কমিশন ইতোমধ্যেই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। প্রিলিমিনারি, লিখিত ও ভাইভার নম্বর প্রকাশ করার জন্য সরকার কর্তৃক বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (বযস, যোগ্যতা ও সরাসরি নিযোগের জন্য পরীক্ষা) বিধিমালা, ২০১৪, সংশোধন করার প্রয়োজন হবে, এবং পিএসসির কিছু অবকাঠামোগত সুবিধা বৃদ্ধি করতে হবে। এসব বিষয়ে পিএসসি ইতোমধ্যেই বাস্তবায়নমূলক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুননেদারল্যান্ডসে স্কলারশিপ, আইইএলটিএস ৬.৫ বা টোয়েফলে ৯০ থাকলে আবেদন২ ঘণ্টা আগে
লিখিত পরীক্ষার ন্যূনতম দুই মাস আগে পরীক্ষার রুটিন ঘোষণা করার ব্যাখ্যায় বলা হয়েছে, ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা ২০২৪ সালের ২৮ আগস্ট অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল, রুটিনও ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু তখন সেটি হয়নি। বর্তমান কমিশন ২০২৫ সালের ২৩ মার্চ ঘোষণা দিয়েছিল যে ৮ মে থেকে ৪৬তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ২৩ মার্চ থেকে ৮ মে মোটি ৪৫ দিন হয় অর্থাৎ ছয় সপ্তাহেরও বেশি সময়। কমিশন মনে করে, প্রস্তুতির জন্য ৪৬তম বিসিএস পরীক্ষার্থীরা যথেষ্ট সময় পেয়েছেন।
৪৮তম বিসিএসে দুই হাজার চিকিৎসকের বিজ্ঞপ্তি শিগগিরই, দ্রুত নিয়োগবিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬৬২সরকারি ব্যাংকে ষষ্ঠ-নবম-দশম গ্রেডে বড় নিয়োগ, পদ ৬০৮টিউৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল খ ত পর ক ষ ম খ ক পর ক ষ ব স এস থ ক পর ক ষ র ন ব স এস র র জন য ১০০ ন প এসস সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
৫ বছরে ঋণের স্থিতি বাড়বে ৫৩.৭৭ শতাংশ: অর্থবিভাগ
পাঁচ বছরে দেশের ঋণের স্থিতি বেড়ে দাঁড়াবে ৫৩ দশমিক ৭৭ শতাংশ। এর মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণের স্থিতি বেড়ে হবে ৫৬ দশমিক ৬ ০ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণের স্থিতি বৃদ্ধি পাবে ৫০ শতাংশ। অর্থ বিভাগের করা সাম্প্রতিক এক প্রক্ষেপণে এ তথ্য প্রকাশ করা হয়েছে।
প্রক্ষেপণে বলা হয়েছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে বাংলাদেশে মোট ঋণের স্থিতি ছিল আঠারো লাখ ৮১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। সেখানে ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে ঋণের এই স্থিতি বেড়ে দাঁড়াবে ২৮ লাখ ৯৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা। এই হিসেবে পাঁচ বছরের ব্যবধানে ঋণের স্থিতি টাকার অঙ্কে বৃদ্ধি পাবে ১০ লাখ ১১ হাজার ৯০০ কোটি টাকা।
গত ২ জুন অর্থ বিভাগ থেকে প্রকাশিত ‘মধ্যমেয়াদি সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বিবৃতি ২০২৫-২০২৬ হতে ২০২৭-২০২৮’ এ তথ্য প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ২০১৪-২০১৫ হতে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছর পর্যন্ত সময়ে অভ্যন্তরীণ ঋণ জিডিপি’র অনুপাত ধারবাহিকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এসময় ঋণ জিডিপি’র অনুপাত ১৫.৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ২১.৫২ শতাংশে উন্নীত হয়েছে।
অন্যদিকে, বৈদেশিক ঋণ জিডিপি’র অনুপাত ২০১৪-২০১৫ অর্থবছরের ১১ দশমিক ৫ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ১৬ দশমিক ১০ শতাংশে পৌঁছেছে।
পূর্বাভাষ অনুযায়ী, ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরে এটি জিডিপি’র ১৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ হবে। যদিও বাংলাদেশের ঋণ-জিডিপি’র অনুপাত বর্তমানে আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) নির্ধারিত নিরাপদ সীমার মধ্যে রয়েছে। তবে দীর্ঘমেয়াদি আর্থিক শৃঙ্খলা এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এক্ষেত্রে নিবিড় মনিটরিং ও সময়োপযোগী সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ আবশ্যক।
একটি স্থিতিশীল এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনীতি নিশ্চিত করার পথে লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় কম রাজস্ব সংগ্রহ এবং ক্রমবর্ধমান ঋণ পরিশোধ ব্যয়-বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
অর্থ বিভাগ থেকে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশে প্রবৃদ্ধি সহায়ক খাতে ঋণ গ্রহণকে অগ্রাধিকার দিলেও এটি মুদ্রার বিনিময় হার ঝুঁকি, ব্যয়বহুল অভ্যন্তরীণ ঋণ এবং অর্থনৈতিক প্রতিকূলতার চাপের মুখোমুখি হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) সংশ্লিষ্ট রাজস্ব আহরণ আশানুরূপ না হওয়ায় সরকারের ওপর অর্থায়নের চাপ থাকছে। অন্যদিকে, উচ্চ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বজায় রাখার জন্য দেশজুড়ে ভৌত ও সামাজিক অবকাঠামো তৈরির প্রয়োজন।
এ প্রেক্ষাপটে, সরকার অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রেখে একটি মধ্যমেয়াদি ঘাটতি অর্থায়ন কৌশল অনুসরণ করছে। ঘাটতি অর্থায়নের অভ্যন্তরীণ উৎস হিসেবে ট্রেজারি বন্ড ও বিল এবং জাতীয় সঞ্চয় স্কিম প্রধান ভূমিকা পালন করছে। বৈদেশিক উৎসসমূহের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক উৎস থেকে নমনীয় ও অ-নমনীয় ঋণ উল্লেখযোগ্য।
ঋণ প্রোফাইলের এক চিত্র উপস্থাপন করে নীতি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের শেষে মোট সরকারি ঋণের পরিমাণ ছিল জিডিপি’র ৩৭ দশমিক ৬২ শতাংশ, যার মধ্যে ২১.৫২ শতাংশ এসেছে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে এবং ১৬ .১০ শতাংশ বৈদেশিক উৎস থেকে। ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত অভ্যন্তরীণ ঋণের সিংহভাগ (৫৮%) এসেছে ব্যাংকিং খাত থেকে, এরপর রয়েছে জাতীয় সঞ্চয় স্কিম যার অবদান ৩৪ শতাংশ।
অন্যদিকে, বৈদেশিক ঋণের মধ্যে সর্ব্বোচ্চ পাওয়া গেছে ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাজেন্সি (আইডিএ) থেকে, এরপর আছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং জাপান।
ঋণ স্থিতির মধ্যমেয়াদি প্রক্ষেপণ বিষয়ে বলা হয়েছে, মধ্যমেয়াদে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের পরিমাণ জিডিপি’র অনুপাতে স্থিতিশীল থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ২০২৭-২০২৮ অর্থবছরের শেষে মোট ঋণ জিডিপি’র ৩৭ দশমিক ৭২ শতাংশ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ঋণ হতে পারে জিডিপি’র ২১ দশমিক ৯৮ শতাংশ এবং বৈদেশিক ঋণ হতে পারে ১৫ দশমিক ৭৪ শতাংশ।
বিগত বছরগুলোর অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণের বন্টন পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, সরকার অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ঋণ নেওয়াকে অগ্রাধিকার দিয়েছে। বাংলাদেশ ২০১৫ সালে নিম্নমধ্য আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। ফলে বহুপাক্ষিক ও দ্বিপাক্ষিক উন্নয়ন অংশীদারদের কাছ থেকে অনুদান এবং নমনীয় ঋণ (কম সুদের হার, দীর্ঘ পরিশোধকাল) পাওয়ার সুবিধাদি ক্রমান্নয়ে হ্রাস পাচ্ছে।
সামনের দিনগুলোতে বাংলাদেশকে তুলনামূলক উচ্চ সুদের হার ও স্বল্পমেয়াদি বাণিজ্যিক ঋণের ওপর আরও বেশি নির্ভর করতে হতে পারে। যার ফলে ঋণ পরিশোধ ব্যয় বৃদ্ধি পাবে। এসময় বাংলাদেশের ঋণ পরিস্থিতির মধ্যমেয়াদী চিত্র অনেকটাই নির্ভর করবে সরকারের গৃহীত কার্যকর কৌশলগুলোর বাস্তবায়নের ওপর।
যদি রাজস্ব আহরণ, রপ্তানি বৈচিত্র্যকরণ এবং ঋণ ব্যবস্থপনায় কার্যকর সংস্কার না আনা যায়, তাহলে ঋণের স্থিতি এবং সংশ্লিষ্ট ঝুঁকি উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়তে পারে। তবে, মধ্যমেয়াদি ঋণ ব্যবস্থাপনা কৌশল সফলভাবে বাস্তবায়ন করা গেলে বাংলাদেশ এই উত্তরণের পথ দক্ষতার সাথে অতিক্রম করতে পারবে এবং উন্নত অর্থনৈতিক অবস্থানের সুফল গ্রহণের পাশাপাশি একটি টেকসই ঋণ পরিস্থিতি বজায় রাখতে সক্ষম হবে।
ঢাকা/এস