কক্সবাজারের টেকনাফের হ্নীলা থেকে আজ বুধবার ভোর চারটায় লুলুয়ান মারজান নামের এক গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। মারজানের স্বজনদের অভিযোগ, তাঁকে যৌতুকের দাবিতে হত্যার পর আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছেন শ্বশুরবাড়ির লোকজন। এ ঘটনার পর থেকে মারজানের স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন পলাতক। মারজান টেকনাফ উপজেলার হ্নীলার পূর্ব সিকদারপাড়ার মীর কাশেমের মেয়ে।

নিহত গৃহবধূর পরিবারের দাবি, বিয়ের পর থেকে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিলেন মারজানের স্বামী আব্বাস উদ্দিন। তা দিতে অস্বীকার করায় মারজানকে নির্যাতন চালিয়ে হত্যা করা হয়।

আজ ভোর চারটার দিকে উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের রোজারঘোনা এলাকার শ্বশুরবাড়ি থেকে নিহত গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন।

পুলিশ ও মারজানের পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হ্নীলার মৌলভীবাজারের রোজারঘোনা এলাকার নুর আহাম্মদের ছেলে আব্বাস উদ্দিনের সঙ্গে একই ইউনিয়নের পূর্ব সিকদারপাড়ার মীর কাশেমের মেয়ে লুলুয়ান মারজানের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। চলতি বছরের ১৯ জানুয়ারি তাঁরা পালিয়ে বিয়ে করেন। বিয়ের কিছুদিন যেতে না যেতেই স্ত্রীর কাছে যৌতুক হিসেবে পাঁচ লাখ টাকা দাবি করেন স্বামী আব্বাস। এ নিয়ে দুজনের মধ্যে কয়েকবার ঝগড়াও হয়। এর জেরে গতকাল মঙ্গলবার রাতেই স্বামী আব্বাস মারজানকে মারধর করেন। এতে তাঁর মৃত্যু হয়েছে।

গৃহবধূর মেজ বোন আফরোজা আক্তার বলেন, স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন মিলে নির্যাতন ও মারধর করে মারজানকে হত্যা করেছেন। এখন তাঁরা বাঁচার জন্য আত্মহত্যা করেছেন বলে চালানোর চেষ্টা করছেন। এ ঘটনায় মামলায় প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।

মারজানের স্বামী আব্বাস উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাঁর কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে টেকনাফ মডেল থানার ওসি মুহাম্মদ গিয়াস উদ্দিন বলেন, আজ ভোরে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে একটি কক্ষ থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় লাশটি উদ্ধার করে। এরপর সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে লাশের ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে ওই সময় বাড়িতে স্বামীসহ কাউকে পাওয়া যায়নি। এ ঘটনায় আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: গ হবধ র কর ছ ন

এছাড়াও পড়ুন:

টেকনাফে পাচারকারীর আস্তানা থেকে ৭ নারী-পুরুষ উদ্ধার, আটক ৩

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ার গহিন পাহাড়ে পাচারকারীদের আস্তানা থেকে ৭ নারী-পুরুষকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে তাঁদের ওই আস্তানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। গতকাল রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এ সময় পাচারের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া গ্রামের আবদুর রহমান (৩২), হামিদ হোসেন (২৮) এবং পার্শ্ববর্তী বড় ডেইল গ্রামের হেলাল উদ্দীন (৩০)।

অভিযানের বিষয়ে আজ সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে কোস্টগার্ড। টেকনাফের কেরনতলীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাউদ্দিন রশিদ তানভীর। তিনি বলেন, পুরুষদের চাকরি এবং নারীদের বিয়ের আশ্বাসে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য বাহারছড়ার ওই আস্তানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁদের আটকে রেখে টাকা আদায়ের চেষ্টা চলছিল। উদ্ধার হওয়া সবার বাড়ি উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং এলাকায়।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাউদ্দিন রশিদ তানভীর বলেন, অভিযানে জব্দ হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র এবং আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ভবিষ্যতেও সাগরপথে মানব পাচার রোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ