ছোটবেলা থেকে অভাব দেখে বড় হয়েছি। বাবা কাঠের কারখানায় ১৮০ থেকে ২০০ টাকা মজুরির কাজ করতেন। শুক্রবার কারখানা বন্ধ থাকত, সেদিন করতেন মাটি কাটার কাজ। আমরা অপেক্ষা করতাম, শনিবার অন্তত একটু ভালো খাবার পাব।

এমনও হয়েছে, একটুকরা মাছের জন্য পুরো সপ্তাহ অপেক্ষায় থেকেছি। নতুন জামার ঘ্রাণ কোনো দিন পাইনি। আত্মীয়স্বজনের পুরোনো জামা পরে বড় হয়েছি। এর মধ্যে বাবা স্ট্রোক করলেন।

বাবার চিকিৎসা, দুই বোনের পড়ালেখার খরচ সামলাতে দিশেহারা অবস্থা। মা যেহেতু নবম শ্রেণি পর্যন্ত পড়েছেন, তিনি প্রাইভেট পড়াতেন। সেই আয় আর হাঁস-মুরগি লালনপালন করে চলে কোনোরকম।

এরপরও বিপদের শেষ নেই। একবার গাড়ি দুর্ঘটনায় আমার পা ভাঙল, বিছানায় পড়ে থাকলাম তিন মাস।

আরও পড়ুন১৩০০ টাকা নিয়ে অচেনা চট্টগ্রাম শহরে পা রেখেছিলাম২১ ঘণ্টা আগে

মা বলতেন, ‘ভিক্ষা করে হলেও তোকে পড়াব। প্রয়োজনে মানুষের বাড়িতে কাজ করব।’ কারণ, মা বিশ্বাস করতেন, শিক্ষার কোনো মরণ নেই, জীবনে কোনো না কোনো সময় কাজে লাগেই।

কিন্তু আমাকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি করানোর ‘দুঃসাহস’ মায়েরও ছিল না। এর মধ্যে এইউডব্লিউর খোঁজ পেলাম। বাড়িতে কাউকে না জানিয়ে বোনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে পরীক্ষা দিয়ে ফেললাম। টিকেও গেলাম।

এখন আমার একটাই লক্ষ্য—বিদেশে উচ্চশিক্ষা নিতে চাই। বাবাকে কোনো দিন কোনো শার্ট কিনতে দেখিনি, মাকে কোনো দিন কোনো ভালো শাড়ি পরতে দেখিনি। জীবনে এমন কোনো চাকরি করতে চাই, যেন মা-বাবার জন্য দুই হাত খুলে খরচ করতে পারি।

আরও পড়ুনঘরবাড়ি, বইখাতা সব ডুবে গেল বন্যায়১৯ ঘণ্টা আগে.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবন থেকে ৭ জেলেকে অপহরণ, মুক্তিপণ দাবি

সুন্দরবন থেকে সাত জেলেকে অপহরণ করেছে জলদস্যুরা। রবিবার (৭ ডিসেম্বর) সকালে পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ মালঞ্চ নদীর হাঁসখালী খাল থেকে ডন বাহিনী পরিচয়ে তাদের অপহরণ করা হয়। এই জেলেদের মুক্তিপণ হিসেবে মাথাপিছু ৫০ হাজার টাকা করে দাবি করা হয়েছে বলে জানান অন্য জেলেরা। 

অপহৃত জেলেরা হলেন- সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের আব্দুল আজিজ (৫০), ইব্রাহিম হোসেন (৪৫), আনারুল ইসলাম (২২), নাজমুল হক (৩৪), শামিম হোসেন (৩৬), আনোয়ার হোসেন (৩২) ও হরিনগর জেলেপাড়ার মুজিবুল হোসেন (৩৫)।

আরো পড়ুন:

সুন্দরবনে ট্রলারডুবি: নিখোঁজ নারী পর্যটকের মরদেহ উদ্ধার

সুন্দরবনে রাসপূজায় যেতে বন বিভাগের ৫ রুট, মানতে হবে যেসব নির্দেশনা

সুন্দরবন থেকে ফেরত আসা জেলে ফজর আলী ও সবুজ মিয়া জানান, সাতক্ষীরা রেঞ্জের কদমতলা স্টেশন থেকে তিনদিন আগে অনুমতি (পাস) নিয়ে কাঁকড়া ধরার জন্য সুন্দরবনে যান জেলেরা। কাঁকড়া শিকারের জন্য তারা মালঞ্চ নদীর বিভিন্ন খালে অবস্থান করছিলেন।

গতকাল রবিবার সকাল ৮টার দিকে তিনটি নৌকায় ১০জন বন্দুকধারী জেলেদের ঘিরে ধরে। প্রতি নৌকা থেকে একজন করে উঠিয়ে নেয় তারা। চলে যাওয়ার সময় একটি নম্বর দিয়ে সেখানে মুক্তিপণের টাকা পাঠানোর নির্দেশ দেয়। তিন দিনের মধ্যে মুক্তিপণ না দিলে অপহৃত জেলেদের হাত-পা ভেঙে হত্যার পর নদীতে ফেলে দেওয়ার হুমকি দিয়েছে জলদস্যুরা।

পশ্চিম সুন্দরবনের সাতক্ষীরা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. ফজলুল হক বলেন, ‍“বনবিভাগের স্মার্ট পেট্রাল টিমের সদস্যরা সুন্দরবনের ভেতরে রয়েছে। সবকিছু নিশ্চিত হয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”

ঢাকা/শাহীন/মাসুদ

সম্পর্কিত নিবন্ধ