ঘড়িতে তখন সকাল ১০টা ৪০ মিনিট। নেত্রকোনা শহরের রাস্তায় হঠাৎ থেমে যায় অসংখ্য যানবাহন। কাজ ফেলে রাস্তায় নামেন বাসিন্দারা। এভাবে স্তব্ধ নগরীর বাসিন্দারা শ্রদ্ধা জানান ২০ বছর আগে উদীচী শিল্পীগোষ্ঠীর নেত্রকোনা কার্যালয়ে বোমা হামলায় নিহত ব্যক্তিদের।

আজ ৮ ডিসেম্বর, নেত্রকোনা ট্র্যাজেডি দিবস। ২০০৫ সালের এই দিনে উদীচীর নেত্রকোনা কার্যালয়ের সামনে আত্মঘাতী বোমা হামলা ঘটায় জঙ্গি সংগঠন জেএমবি। এতে নিহত হন আটজন। আহত হন অর্ধশতাধিক। তাঁদের স্মরণে আজ সোমবার ১০টা ৪০ মিনিট থেকে ৩ মিনিট ধরে স্তব্ধ ছিল নেত্রকোনা শহর।

উদীচী সূত্রে জানা গেছে, ৯ ডিসেম্বর নেত্রকোনা হানাদারমুক্ত দিবস উপলক্ষে ২০০৫ সালের ৮ ডিসেম্বর সকালে উদীচী কার্যালয়ের সামনে চলছিল শিল্পীগোষ্ঠীটির মহড়ার প্রস্তুতি। এ সময় আত্মঘাতী বোমা হামলা চালানো হয়েছিল। হতাহত ব্যক্তিদের স্মরণে প্রতিবছর ৮ ডিসেম্বর শহরের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন ‘নেত্রকোনা ট্র্যাজেডি দিবস’ পালন করে আসছে।

দিনটি উপলক্ষে আজ সকালে কালো পতাকা উত্তোলন ও কালো ব্যাজ ধারণ করে শহরের উদীচী ট্র্যাজেডি স্মৃতিস্তম্ভে পুষ্পস্তবক অর্পণ করা হয়। সেখানে দাঁড়িয়ে গাওয়া হয় ‘মানব না এই বন্ধনে’, ‘তীর হারা এ ঢেউয়ের সাগর’, ‘কারা মোর ঘর ভেঙেছে’, ‘এ লড়াই বাঁচার লড়াই’, ‘প্রিয় ফুল খেলবার দিন নয় অদ্য’ ইত্যাদি গণসংগীত। আয়োজনের ফাঁকে ফাঁকে ট্র্যাজেডি দিবস উদ্‌যাপন কমিটির আহ্বায়ক বীর মুক্তিযোদ্ধা হায়দার জাহান চৌধুরীর সভাপতিত্বে ও উদীচীর সাধারণ সম্পাদক মো.

আলমগীরের পরিচালনায় বক্তব্য দেন জেলা উদীচীর সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোজাম্মেল হক, প্রবীণ সাংবাদিক শ্যামলেন্দু পাল, বোমা হামলায় আহত সংস্কৃতিকর্মী তুষার কান্তি রায়, জেলা উদীচীর সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান খান, গবেষক আলী আহাম্মদ খান, জাতীয় রবীন্দ্রসঙ্গীত সম্মিলন পরিষদ নেত্রকোনা শাখার সভাপতি পূরবী কুণ্ডু, কবি এনামূল হক, নারীনেত্রী কোহিনূর বেগম, নারী প্রগতির কেন্দ্র ব্যবস্থাপক মৃণাল চক্রবর্তী প্রমুখ।

পরে ‘৩ মিনিট স্তব্ধ নেত্রকোনা’ কর্মসূচি পালন শেষে সন্ত্রাস, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী মানববন্ধন হয়। শেষ পর্যায়ে শহীদদের কবর জিয়ারত, শ্মশানের স্মৃতিফলকে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও শহীদদের পরিবারের খোঁজখবর নেওয়া হয়।

উদীচী ট্র্যাজেডি স্মৃতিস্তম্ভে দাঁড়িয়ে গণসংগীত পরিবেশন করেন শিল্পীরা

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ড স ম বর ন ত রক ন উদ চ র

এছাড়াও পড়ুন:

প্রথম আলো আজ শুধু পত্রিকা নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠান

নানা প্রতিকূলতা ও বাধা সত্ত্বেও প্রথম আলো কখনো সত্য প্রকাশে পিছপা হয়নি। সত্যই প্রথম আলোর সাহস ও শক্তি। সাহসী ও বস্তুনিষ্ঠ খবর প্রকাশের কারণে প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই প্রথম আলোর পথচলা ছিল স্রোতের বিপরীতে। প্রথম আলো আজ শুধু একটি পত্রিকা নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠান। সমাজের অসংগতি তুলে ধরার পাশাপাশি প্রথম আলো আরও বেশি ইতিবাচক খবর উপস্থাপন করবে—এটাই পাঠকদের প্রত্যাশা।

প্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কুমিল্লায় আয়োজিত সুধী সমাবেশে অংশ নিয়ে বক্তারা এসব কথা বলেন। আজ শুক্রবার বিকেল পৌনে চারটায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট কুমিল্লা কেন্দ্রের মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান। এতে কুমিল্লার শিক্ষাবিদ, রাজনীতিবিদ, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, গণমাধ্যমকর্মী, উদ্যোক্তা, লেখক, সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পদস্থ কর্মকর্তা, আইনজীবী, প্রকৌশলীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনেরা অংশ নিয়ে প্রথম আলো সম্পর্কে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন।

জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে সমাবেশের শুরু হয়। পরে প্রথম আলোর আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে রবীন্দ্রসংগীত ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে আয়োজন সহযোগী হিসেবে ছিল কুমিল্লার কোটবাড়ী এলাকায় প্রতিষ্ঠিত সিসিএন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

‘আমরা প্রথম আলোর পাশে রয়েছি’

সমাবেশে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মো. আবুল বাশার ভূঁঞা বলেন, ‘প্রথম আলো তার নিজস্বতা নিয়ে যে জায়গায় দাঁড়িয়েছে, সেটি অবশ্যই প্রশংসনীয়। দায়িত্বশীল সংবাদ পরিবেশনে বাংলাদেশে তারাই প্রথম বলে আমি মনে করি। অতীতের মতো আগামী দিনেও প্রকৃত সত্য তুলে ধরবে প্রথম আলো সব সময়—এটাই আমাদের প্রত্যাশা।’

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মো. আবদুল হাকিম বলেন, প্রথম আলো পত্রিকা সব সময় সত্যটাই প্রকাশ করে। এটাই তাঁদের শক্তি।

অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আলী রাজিব মাহমুদ বলেন, ‘২৭ বছর ধরে একটি পত্রিকা প্রকাশ হওয়া মানে এই পত্রিকা আমাকেও গড়ে তুলেছে। কারণ, এই পত্রিকার শিক্ষা পাতার নিয়মিত পাঠক ছিলাম আমি। গোটা দেশ ও গোটা বিশ্বকে হাতের মুঠোয় এনে দেওয়ার জন্য প্রথম আলোর প্রতি রইল কৃতজ্ঞতা।’

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. রাশেদুল হক চৌধুরী বলেন, ‘সকালে ঘুম থেকে ওঠে প্রথম আলো না পড়লে পত্রিকা পড়ার তৃপ্তি পাই না। প্রথম আলো ছাত্রজীবন থেকেই আমার আস্থায় রয়েছে। এখনো প্রতিদিনই প্রথম আলোর সঙ্গে আছি।’

আরও পড়ুনপ্রথম আলো বাংলাদেশের মানুষের বিজয়ের সঙ্গী২২ ঘণ্টা আগেপ্রথম আলোর ২৭তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে কুমিল্লায় আয়োজিত সুধী সমাবেশে মঞ্চে বিভিন্ন অঙ্গনের বিশিষ্টজনেরা। আজ শুক্রবার বিকেলে কুমিল্লায় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বিয়ে উপলক্ষে বসা সামাজিক বৈঠকে ছুরিকাঘাতে যুবকের মৃত্যু
  • প্রথম আলো সব সময় সত্যের সন্ধান দেয়
  • প্রথম আলো আজ শুধু পত্রিকা নয়, এটি একটি প্রতিষ্ঠান
  • নতুন প্রচারণা শুরু আকিজ সিমেন্টের