গাজা যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপের আলোচনা শুরু করতে প্রস্তুত হামাস ও ইসরায়েল
Published: 8th, December 2025 GMT
গাজায় ইসরায়েলের ‘জাতিগতনিধন’ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে প্রস্তাবিত যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার দ্বিতীয় ধাপে অগ্রসর হতে প্রস্তুত ইসরায়েল ও হামাস।
তবে অবরুদ্ধ ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনীর ভূমিকা কী হবে, তা এখনো পরিষ্কার নয় এবং এ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে।
হামাসের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বাসেম নাঈম গতকাল রোববার বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের খসড়া প্রস্তাবে থাকা অনেক বিষয় নিয়ে স্পষ্ট ব্যাখ্যা প্রয়োজন।
নাঈম আরও বলেন, চলমান যুদ্ধবিরতির সময় অস্ত্র ব্যবহার না করা বা অস্ত্র জমা দেওয়া নিয়ে তারা আলোচনা করতে প্রস্তুত; কিন্তু নিরস্ত্রীকরণের দায়িত্ব কোনো আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা বাহিনী নেবে—এটি তাঁরা মেনে নেবেন না।
এ নিয়ে বাসেম নাঈম বলেন, ‘আমরা জাতিসংঘের বাহিনীকে স্বাগত জানাই, যারা সীমান্তের কাছাকাছি অবস্থান করবে, যুদ্ধবিরতি চুক্তি তদারক করবে, লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটলে তা জানাবে এবং যেকোনো ধরনের উত্তেজনা প্রতিরোধ করবে।’
কিন্তু হামাস ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে ওই বাহিনীর কোনো ধরনের কর্তৃত্ব মেনে নেবে না বলেও জানান নাঈম।
হামাস কর্মকর্তার এই বক্তব্যের আগে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, চলতি মাসের শেষ দিকে তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করবেন এবং গাজা যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনার নতুন ধাপে প্রবেশ নিয়ে আলোচনা করবেন।
রোববার নেতানিয়াহু আরও বলেন, (ট্রাম্পের সঙ্গে) বৈঠকের মূল লক্ষ্য হবে গাজায় হামাসের শাসন শেষ করা এবং এটা নিশ্চিত করা যে পরিকল্পনায় দেওয়া ‘অঙ্গীকার’ তারা পূরণ করবে।
আরও পড়ুন হামলার মধ্যেই গাজায় যুদ্ধবিরতির দ্বিতীয় ধাপ শুরুর পরিকল্পনা০৫ ডিসেম্বর ২০২৫ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় অবরুদ্ধ ভূখণ্ডের নিরস্ত্রীকরণ নিশ্চিত করার কথা বলা আছে।
হামাসের অস্ত্র ব্যবহার না করা বা অস্ত্র জমা রাখার বিষয়ে নাঈম হামাসের যে অবস্থানের কথা বলেছেন, তা ইসরায়েলের পূর্ণ নিরস্ত্রীকরণের দাবি পূরণ করবে কি না, তা স্পষ্ট নয়।
হামাস কর্মকর্তা বলেন, হামাসও প্রতিরোধ করার অধিকার রাখে।
নাঈম আরও বলেন, অস্ত্র নামিয়ে রাখা হতে হবে এমন একটি প্রক্রিয়ার অংশ, যা একটি ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার দিকে এগিয়ে যাবে এবং যেখানে সম্ভাব্য দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধবিরতি ৫ থেকে ১০ বছর স্থায়ী হতে হবে।
আরও পড়ুনগাজায় যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ শেষ, দ্বিতীয় ধাপ নিয়ে সংশয় ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫গাজার জন্য মার্কিন খসড়া যুদ্ধবিরতি পরিকল্পনায় স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার একটি পথ খোলা রাখা হয়েছে; কিন্তু নেতানিয়াহু দীর্ঘদিন ধরে এটি প্রত্যাখ্যান করে আসছেন। তাঁর দাবি, ফিলিস্তিন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করলে হামাসকে পুরস্কৃত করা হবে।
আরও পড়ুনযুদ্ধবিরতি ভেঙে গাজায় ইসরায়েলের হত্যাযজ্ঞ ১৮ মার্চ ২০২৫.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিজয় দিবসে কলকাতায় যাচ্ছেন সেনা-মুক্তিযোদ্ধাসহ ২০ সদস্যের প্রতি
ভারতের আমন্ত্রণে সাড়া দিয়েছে বাংলাদেশের সেনাবাহিনী। আগামী ১৬ ডিসেম্বর কলকাতায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের বিজয় উৎসবে যোগ দেবেন বাংলাদেশের সেনা ও মুক্তিযোদ্ধাদের ২০ সদস্যের প্রতিনিধি দল। ইস্টার্ন কমান্ডের হেড কোয়ার্টার ফোর্ট উইলিয়ামে (বিজয় দূর্গ) রবিবার সাংবাদিক সম্মেলন করে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মেজর জেনারেল ভানগুরু রঘু।
প্রতিবছরই বিজয় দিবস উদযাপনে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের একটি প্রতিনিধি দল বাংলাদেশে পাড়ি দেন। অন্যদিকে বাংলাদেশ থেকে সেনাদের একটি প্রতিনিধি দল আসে কলকাতার ফোর্ট উইলিয়ামে আয়োজিত অনুষ্ঠানে। যা দু’দেশের মধ্যে সামরিক সম্পর্ক ও ঐতিহাসিক বন্ধনকে আরও দৃঢ় করে। ডিসেম্বরের এই বিশেষ দিনে প্রতিবারই যেন জীবন্ত হয়ে ওঠে দুই দেশের বছরের সম্পর্ক। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক আবহাওয়া সেই বাতাবরণ অনেকটাই বদলে দিয়েছে। তবে উল্লেখযোগ্য বিষয় দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে সেই বিষয়টা কখনোই লক্ষ্য করা যায়নি। ২০২৪ সালের ডিসেম্বরেও কলকাতায় বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে বড় প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছিল বাংলাদেশ সেনাবাহিনী।
আরো পড়ুন:
ভারতে নাইটক্লাবে অগ্নিকাণ্ডে নিহত ২৩
ভারতে অবস্থানের ব্যাপারে শেখ হাসিনাই সিদ্ধান্ত নেবেন: জয়শঙ্কর
মেজর জেনারেল ভানগুরু রঘু জানান, ভারতীয় সেনাবাহিনীর আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে এবছরও বাংলাদেশের সেনাবাহিনী বিজয় দিবসের অনুষ্ঠানে তাদের প্রতিনিধি দল পাঠানোর সিদ্ধান্ত ফোর্ট উইলিয়ামকে নিশ্চিত করেছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর দুজন শীর্ষ কর্মকর্তা, ৮ জন মুক্তিযোদ্ধা ও তাদের পরিবার-সহ মোট ২০ জন উপস্থিত থাকবেন ফোর্ট উইলিয়ামের অনুষ্ঠানে। পাশাপাশি, এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসকেও।
অনুষ্ঠানের সূচী অনুযায়ী, বাংলাদেশের এই প্রতিনিধি দল কলকাতায় আসবে ১৪ ডিসেম্বর। বিমানবন্দরে তাদের আমন্ত্রণ জানাবেন ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ডের কর্মকর্তারা। ১৫ ডিসেম্বর ব্যারাকপুরের মঙ্গল পান্ডে মিলিটারি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে সেনাবাহিনীর ‘মিলিটারি টাট্টু’ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। ওইদিন রাজভবনে গিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে পারেন তারা। ১৬ ডিসেম্বর সকাল ও সন্ধ্যায় বিজয় দিবস উপলক্ষে বিজয় স্মারকে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন-সহ একাধিক অনুষ্ঠানেও উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধারা।
উল্লেখ্য, ভারতীয় নৌবাহিনীর ইস্টার্ন কমান্ড ‘বিজয় মাস’ উদযাপনের অংশ হিসেবে প্রতিবছর বিজয় র্যালি ও বাইক মিছিলের আয়োজন করে, যা গোটা মাস ধরে চলে। সবমিলিয়ে, ‘বিজয় দিবস’ স্মরণে কলকাতায় ভারতীয় সেনাবাহিনী ও নৌবাহিনীর উদ্যোগে একটি বর্ণাঢ্য সামরিক ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়ে থাকে, যেখানে বাংলাদেশও সক্রিয়ভাবে অংশ নেয়। এবারেও তার তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না।
ঢাকা/সুচরিতা/ফিরোজ