2025-06-15@21:35:51 GMT
إجمالي نتائج البحث: 20

«হ ওরপ র র»:

    বাংলাদেশের দ্বিতীয় রামসার সাইট, সম্পদ আর সৌন্দর্যে ভরপুর টাঙ্গুয়ার হাওরের চিত্র আজ করুণ। ইজারাপ্রথা বাতিলের পর গত ২২ বছরে হাওরের উন্নয়নে বহু চেষ্টা করা হলেও তেমন কোনো ইতিবাচক ফল আসেনি; বরং হাওরপারের মানুষের জীবন-জীবিকা, পরিবেশ এবং জীববৈচিত্র্য এখন গভীর সংকটের মুখে। কার্যত প্রশাসনের নজরদারির অভাবে যে যেভাবে পারছে, এই হাওরের ক্ষতি করছে। হাওরে প্রবেশের মুখেই চোখে পড়বে সারি সারি শতাধিক বোটহাউস। বিকট শব্দে জেনারেটর চলছে, আর যত্রতত্র ফেলা হচ্ছে পলিথিনসহ নানা বর্জ্য। যে অভয়ারণ্যে ট্রলারচালিত নৌকা ঢোকাই নিষেধ, সেখানে অবাধে চলছে এসব কর্মকাণ্ড। এই হাওরে একসময় গড়ে দুই লাখ পাখির আনাগোনা ছিল, এবার পরিযায়ী পাখিও এসেছে ইতিহাসের সর্বনিম্ন। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, সুন্দরবনের পর জীববৈচিত্র্যসমৃদ্ধ জলাভূমি হিসেবে ঘোষিত টাঙ্গুয়ার হাওর রামসার ঘোষণার পরও সুরক্ষিত ব্যবস্থাপনার অভাবে আজ অভিভাবকহীন। সবাই মিলে ‘যেমন...
    বয়স যা–ই হোক, গাছভর্তি ফুলের দিকে তাকালে মনে হতে পারে আকাশে নীলের দেশে বেগুনি রঙের টুকরা মেঘ ভাসছে। গাছটি কত বছরের, এ প্রশ্ন হয়তো কারও মনেই আসে না। ‘আমার সকল গান তবুও তোমারে লক্ষ্য করে’—এ রকম ফুলের দিকে তাকিয়ে কারও কারও অনেকটা সময় কেটে যায়, বেলা বয়ে যায়। অনেক গাছের ভিড়ে আলাদা মর্যাদা নিয়ে একটি জারুলগাছ দাঁড়িয়ে আছে মানুষের ভালোবাসায়। এ রকমই একটি জারুলগাছ আছে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি হাওরপারের গ্রাম রক্তায়। যার বয়স অনেক বছর, দেড় শ পেরিয়ে গেছে। গ্রীষ্ম এলেই পাতাঝরা শাখাগুলো পূর্ণ হয়ে বেগুনি রঙের বন্যা আসে। অনেক দূরের মানুষকেও ‘দাঁড়াও পথিকবর’ বলে কাছে টানে।গ্রীষ্ম এলেই জারুলগাছে বেগুনি রঙের বন্যা আসে
    বর্ষা মৌসুম আসার আগেই সুনামগঞ্জের হাওর অধ্যুষিত তাহিরপুর উপজেলার বিভিন্ন নদীতে বাড়তে শুরু করেছে পানি। গত কয়েকদিনের বৃষ্টি আর পাহাড়ি ছরা হয়ে নেমে আসা ঢলের কারণে হু হু করে বাড়ছে পানি। এমন অবস্থায় বিভিন্ন হাওরসংলগ্ন এলাকার ফসল রক্ষা বাঁধগুলো ঝুঁকির মুখে পড়েছে।  তাহিরপুরের যাদুকাটা, বৌলাই, পা‌টলাই ও রক্তি নদীর পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রবল হচ্ছে স্রোত। এতে হাওরের স্থায়ী বাঁধগুলোর ওপর পানির চাপ বাড়ছে আশঙ্কাজনকভাবে। স্থানীয়রা বলছেন, দ্রুত এসব বাঁধ এলাকা পর্যবেক্ষণ করে হাওরে পানি ঢোকার পথ করে দিতে হবে। নইলে পানির চাপে বাঁধে ভাঙন ধরার আশঙ্কা রয়েছে। জেলার বৃহৎ বোরো ফসলের অঞ্চল তাহিরপুর উপজেলায় রয়েছে শনি, মাটিয়ান, মহালিয়া, হালিরসহ ২৩টি হাওর। এসব হাওরে ধান কাটা শেষ হয়েছে মাত্র কয়েকদিন আগে। এ বছর বৈশাখের শুরুতে ব্যাপক খরা থাকলেও গত কয়েকদিন ধরে বৃষ্টি...
    অন্ধকার কাটতে শুরু করেছে, সকালের নরম আলো গা এলিয়ে ধীরে ধীরে ফুটছে। তখনো রাঙা ভোর, তখনো পাখির ডাকে কেঁপে উঠছে গাছের পাতারা, ভাঙছে নৈঃশব্দ্য। পথে মানুষের চলাচল খুব সামান্য, অনেকেরই তখনো ঘুম ভাঙেনি। আচমকা এক–দুজন বাড়ির বাইরে বেরিয়ে ভেজা ঘাসে পা ডুবিয়ে হাঁটছেন। কেউ হয়তো মাঠে যাবেন, খেতের আলপথে নেমে পড়ছেন। পথের পাশে মাঝেমাঝেই আগুনের দোলা, ঢেউ। ‘আগুনের মতো রাঙা ফুলের ঝরনায়/ কৃষ্ণচূড়া–গাছের সবুজ পাতা ঢাকা পড়ে গেছে সব...।’ শুধু কৃষ্ণচূড়া কেন, কিছু পরপরই মাঠের আলে, খালের পাড়ে, বাড়ির কাছে জারুলের ঘুমভাঙা ফুলকন্যারাও নির্দোষ হাসিতে ঢলে পড়ছে।গাঁথা মালার মতো দুলে আছে হিজল ফুল। মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরপারের অন্তেহরিতে
    গ্রামটির এ মাথা থেকে ও মাথা পর্যন্ত ঘুমভাঙা শান্ত পরিবেশ। ‘পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকিতেছে হিজলের বনে’—জীবনানন্দ দাশের কবিতার পঙ্‌ক্তির মতো ওখানে হয়তো পৃথিবীর সব ঘুঘু ডাকছে না, তবে থেমে থেমে দু-একটি ঘুঘুর ডাক শোনা যাচ্ছে, ডাকছে আরও কিছু পাখি।গ্রামটির পথের পাশে, খালের পাড়ে, বাড়ির সীমানায় ফুল-কুমারী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে হিজলের একেকটি গাছ। খুব বেশি নয়, তারপরও এই গ্রীষ্মে নিজেদের আলাদা পরিচিতি নিয়ে বিক্ষিপ্তভাবে অন্য সব গাছের ভিড়ে মিলেমিশে আছে এই হিজলেরা। গাছে গাছে বেণিতে ঝোলানো মালার মতো দুলছে হিজল ফুলের ঝুমকা লতা। গাছ থেকে টুপ টুপ করে ঝরে পড়ছে এসব ফুল। গাছতলায় ঝরা ফুল লালচে, গোলাপি একপশলা চাদর হয়ে আছে। হাওয়ায় সেই ফুলের মৃদু ঘ্রাণ ভাসছে।গত শুক্রবার এমন দৃশ্যের দেখা মিলল মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার কাউয়াদীঘি হাওরপারের অন্তেহরি গ্রামে।হিজলের গাছ। গত...
    নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো ধরনের দুর্যোগ-দুর্বিপাক ছাড়াই চলতি বোরো মৌসুমের ফসল ঘরে তুলতে পেরেছেন তাহিরপুরের কৃষকরা। এবার ভরা বর্ষার আগে গবাদি পশুর খাদ্য জোগানে ব্যস্ত সময় পার করছেন তারা। জলবায়ু পরিবর্তন, প্রাকৃতিক বৈরিতা এবং ভূমি দখলের জেরে তাহিরপুরসহ সুনামগঞ্জ জেলার অনেক এলাকাতে কমে গেছে গোচারণভূমি। কান্দা নষ্ট হওয়ায় গবাদি পশুর খাদ্যের প্রাকৃতিক উৎসও নষ্ট হয়ে গেছে। এমন অবস্থায় প্রতি মৌসুমে বোরো আবাদ ও ধান সংগ্রহের ব্যস্ততা শেষে গোখাদ্যের মজুত নিশ্চিত করতে খড়ের জোগান দেন স্থানীয় কৃষকরা। এর ওপরে নির্ভর করে বছরজুড়ে তাদের গবাদি পশু পালনের সাবলম্বিতা। ভরা বর্ষার আগে তাই পাকা ধান গাছ থেকে পাওয়া খড়ের মজুত নিশ্চিত করেন কৃষক। বর্ষাকালে তাহিরপুর উপজেলাতে পানিতে ভরপুর থাকে। চারদিকে পানি থাকায় এ অঞ্চলের কোথাও গবাদি পশু চরানোর জন্য ভূমি পাওয়া যায় না।...
    মাথার ওপর কাঠফাটা রোদ, চাতালতলায় আগুনে উত্তাপ। এর মাঝেই ধান শুকানোর কাজ করে যাচ্ছেন স্থানীয় কৃষক পরিবারের সদস্যরা। তাহিরপুরসহ সুনামগঞ্জ জেলার সবখানে এখন বোরো ধান ঘরে তোলার ব্যস্ততা। তাই রুক্ষ প্রকৃতিকে উপেক্ষায় করেই কাজ করে যাচ্ছেন বোরোচাষি ও তাদের পরিবারের সদস্যরা। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তাদেরই একজন বলেন, ‘গরিবের আছে খালি ক্ষুধা। ঠান্ডা-গরম বইলা কিছু নাই। জমির ধান গোলায় গেলে খাওন জুটবো। অভাব-অনটন থাকব না। এই ফসলের কাছে গরম কিছুই না।’ হাওরাঞ্চলে এবার বোরোর প্রত্যাশিত ফলন হয়েছে। এতে স্থানীয় কৃষকের চোখেমুখে খুশির ঝিলিক। যত্নে ফলানো সোনার ফসল ঘরে তোলায় ব্যস্ত এসব কৃষকের কাছে বাকি সব কষ্টই উপেক্ষিত। শনির হাওর, মাটিয়ান হাওর, মহালিয়াসহ উপজেলার ২৩টি হাওরের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে এমন দৃশ্যই চোখে পড়েছে। হাওরপারের কৃষকরা ধান কাটা, মাড়াই, ঝাড়া, খড় শুকানোর...
    সকাল থেকেই ধূসর রঙের মেঘ ভাসছিল আকাশে। হাওরের পথে যেতে দু-চার ফোঁটা বৃষ্টিও ঝরেছে। হঠাৎ ঝলমলে রোদ বুকে নিয়ে হেসে ওঠে নীল আকাশ। বেলা বাড়লে বৈশাখের তপ্ত রোদে ঘামে ভিজে ওঠে শরীর। একসময় মনে হয়, চামড়া পুড়ে যাচ্ছে। তবে কৃষক পরিবারের সদস্যদের কারও চোখেমুখে ক্লান্তি নেই, আছে কেবল তৃপ্তির রেশ। তাঁরা জানান, এবার বেশ ভালো ফলন হয়েছে হাওর এলাকায়। ঝড়বৃষ্টি না থাকায় ঝামেলা ছাড়াই এসব ফসল ঘরে তোলার আয়োজন চলছে এখন।গত রোববার সকালের ওই গরমে মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরপারের কাদিপুর এলাকায় ধান শুকানোর কাজ করছিলেন ময়না রানী সরকার। তিনি বলেন, ‘দিন খুব ভালা। ঝড়বিষ্টি নাই।’কাউয়াদীঘি হাওরপারের কাদিপুর এলাকাটি তুলনামূলকভাবে নিচু। সেখানে তৈরি করা হয়েছে ধানের খোলা। এই খোলায় ধানমাড়াই, ঝাড়াই, সেদ্ধ থেকে শুকানো সবই করা হয়। পাশাপাশি খড়ও শুকানো হয় সেখানে।...
    অতিমাত্রার প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রভাব না থাকায় বোরোর উৎপাদন ঘিরে স্বপ্ন জেগেছিল তাহিরপুরের হাওরে। মৌসুমের শুরু থেকে সবই ছিল ঠিকঠাক। মাঠের ফসল গোলায় তোলার সময় যখন ঠিক, সে সময় একের পর এক ধাক্কা খাচ্ছে এখানকার প্রান্তিক কৃষকের স্বপ্ন। সুনামগঞ্জের সবচেয়ে বড় ধান ও চালের জোগানদাতা হাওরবেষ্টিত তাহিরপুর উপজেলা। বোরো-আমন দুটিতেই অন্য এলাকাগুলোর তুলনায় অধিক জমি আবাদ করেন এখানকার কৃষক। তাই ধান ও চালের জোগানও তারাই দেন বেশি। চলতি বোরো মৌসুমের শুরু থেকে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বোরো জমি প্রস্তুত ও আবাদ শুরু করতে বেগ পেতে হয়নি চাষিদের। যখন জমির ধান ঘরে তোলার সময়, তখন  সংকট যেন ঘিরে ধরেছে বোরোর বাড়ি তাহিরপুরকে। উপজেলার হাওরাঞ্চলের চাষিদের পিছু ছাড়ছে না দুর্যোগ। এর মাঝে সবচেয়ে বিপাকে আছেন তাহিরপুরের বোরোচাষিরা। অনাবৃষ্টির কারণে হাওরের প্রাকৃতিক উৎসগুলো শুকিয়ে আছে।...
    সুনামগঞ্জের দেখার হাওরপারের একটি গ্রামের দরিদ্র মানুষদের ঈদ নিয়ে প্রথম আলোর অনলাইনে সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্যসামগ্রী ও ঈদ উপহার পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অতীশ দর্শী চাকমা ওই গ্রামে গিয়ে পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেন এবং ঈদ উপহার হিসেবে খাদ্যসামগ্রী ও শাড়ি তুলে দেন।সুনামগঞ্জের দেখার হাওরপারের কান্দাহাটি গ্রামের দরিদ্র মানুষের ঈদের আনন্দ-বেদনা নিয়ে সোমবার প্রথম আলোর অনলাইনে ‘হাওরপারের ঈদ: বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু, ইলাই আমরার ঈদ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এতে গ্রামের দরিদ্র সবুরা, জহুরা, রংমালা বিবির পরিবারের ঈদের প্রস্তুতি, ভাবনা ও দুঃখকষ্ট তুলে ধরা হয়।প্রতিবেদনটি সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস মিয়ার নজরে এলে তিনি প্রথম আলোর এই প্রতিবেদকের মাধ্যমে ওই পরিবারগুলোর খোঁজখবর নেন। মঙ্গলবার দুপুরে সদরের ইউএনও অতীশ...
    দলা পাকানো চালের গুঁড়া চ্যাপটা করে ছোট ছোট বড়া বানানোর পর সেগুলো কড়াইয়ে দিচ্ছিলেন লাভলী বেগম (২৫)। চুলায় খড়ের আগুন কমে আসছিল বারবার। মাথা নিচু করে চুলার নিচ দিকে ফুঁ দিতে দিতে ধোঁয়ায় নাস্তানাবুদ অবস্থা। কুলায় যে পরিমাণ চালের গুঁড়া, তাতে ২০ থেকে ৩০টা বড়া হবে।ঈদের আয়োজন বলতে কি শুধু এই কয়টি বড়া? লাভলী বলেন, ‘মাইয়ে (মা) কিছু গুড় আনছিলা। গুড়ের হান্দেশ (সন্দেশ) করছি। আর কিতা করমু। সকালে বাইচ্চান্তরে লইয়া বড়া ও হান্দেশ খাইমু। ইলাই আমরার ঈদ।’ কথা শেষের সঙ্গে সঙ্গে লাভলী বেগমের একটা দীর্ঘশ্বাস যেন হাওরের বাতাসে মিশে গেল। তাঁর পাশে তখন পাখির ছানার মতো বসা দুই সন্তান সাহানা (৫) ও আবির (৩)। তাদের চোখ কড়াইয়ে, তেলের ওপর ভাসতে থাকা বড়ার দিকে।লাভলী বেগমের বাড়ি সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার দেখার হাওরপারের...
    হাওর, বিল এবং নদীর পারে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা উঁচু ভূমিকে বলা হয় কান্দা। হাওরের জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে কান্দার। সম্প্রতি সুনামগঞ্জের হাওরাঞ্চলে উদ্বেগজনক হারে কমছে কান্দার অস্তিত্ব। এতে করে হুমকির মুখে পড়েছে জীববৈচিত্র্য। সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় গেল দুই দশকে কান্দার বন-বাদালি এবং মাটি কেটে সর্বনাশ করা হয়েছে। ক্ষতির মুখে পড়েছে হাওরের স্থলজ ও জলজ প্রাণী। হাওর বিধ্বংসী ভেকু মেশিনের তাণ্ডবে একের পর এক কান্দা রূপ নিচ্ছে ডোবা-নালায়। হাওরের প্রাণপ্রকৃতি ও পরিবেশ বিপর্যয়ের এই বিধ্বংসী কর্মকাণ্ড বেড়েই চলছে। অপরিকল্পিতভাবে কান্দা কাটার মাটিতে বাঁধ নির্মাণ করে সাময়িক ফসল রক্ষা হলেও গোটা হাওর অঞ্চলকে বিপন্ন করা হচ্ছে। সরকারের অপরিকল্পিত প্রকল্প বাস্তবায়নের পাশাপাশি ব্যক্তি স্বার্থেও তছনছ করা হচ্ছে হাওরের বুক। স্থানীয় কৃষক ও পরিবেশ সচেতন ব্যক্তিরা বলছেন, অবাধে কান্দা কাটার...
    গ্রামের পশ্চিমে বিস্তৃত কাউয়াদিঘি হাওর। সেই হাওরের পাড় ঘেঁষে গড়ে উঠেছে গ্রামটি। বর্ষায় হাওরের পানিতে গ্রামের খাল-নালা, পথঘাট ডুবে যাওয়াই নিয়ম। এখন শুকনো মৌসুম, হাওরে পানি নেই। যত দূর চোখ যায় ধু ধু ফাঁকা দিগন্ত, বোরো ফসলের সবুজ। ফসলের দিকে তাকালে কারও মনে হতে পারে, কেউ হয়তো সবুজ চাদর বিছিয়ে রেখেছে মাঠে। নিভৃত এই গ্রামটির ভেতরে সবার চোখের আড়ালে ব্যক্তিগত উদ্যোগে নির্মাণ করা চুন-সুরকির একটি মসজিদ আছে, যার বয়স ১৫০ বছর পেরিয়ে গেছে।এই মসজিদের অবস্থান মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলার পাঁচগাঁও ইউনিয়নের রক্তা গ্রামে। মসজিদটিকে স্থানীয় মানুষ চেনে তিন গম্বুজ রক্তা জামে মসজিদ নামে। মসজিদটিতে স্থান সংকুলান না হওয়ায় কয়েক বছর আগে নতুন করে সম্প্রসারণ করা হয়েছে। কিন্তু পুরোনো মসজিদে হাত দেওয়া হয়নি, পুরোনো মসজিদটিকে অবিকল রেখে দেওয়া হয়েছে।রক্তা গ্রামে একটি পুরোনো...
    তখন অনেক দূরে দিগন্ত পেরিয়ে কোনো এক গ্রামের ওপারে ঢলে পড়ছে সূর্য। দিনটা শেষ হতে চলেছে। পলাশ ফুলের রঙে তখন থালার মতো ঝুলে আছে সূর্যটা। খুব বেশি সময় নেই। চলে যেতে হবে অন্য কোথাও, অন্য কোনো দেশে। ওখানে অন্ধকার ঘোচানোর দায় ওই একই সূর্যের। বিদায়মুহূর্তের সেই রঙিন আলো ছড়িয়ে পড়েছে প্রান্তরের বুকে। দেখতে দেখতে মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরের পশ্চিম আকাশে সূর্য আরও লাল হয়ে উঠেছে। ‘ডানায় রৌদ্রের গন্ধ মুছে ফেলে চিল’ বাড়ি ফিরছে। রাখালের দল মেঠো পথে ধুলা উড়িয়ে হাওর থেকে গরু নিয়ে ছুটছে নিজেদের গ্রামের দিকে। কেউ ফিরছেন গবাদিপশুর জন্য ঘাস নিয়ে। সাদা বকের ঝাঁক রাত কাটাতে হাওরপারের কোনো বাড়ির আশ্রয়ের দিকে উড়ে চলছে। আর নির্জনতায় ডুবে আছে সবুজ ধানের দেশ, হাওরের দিলখোলা সবুজ হৃদয়।সন্ধ্যায় হাওরপারের একটি বাড়ির গাছে পাখিদের...
    মৌলভীবাজারের কাউয়াদীঘি হাওরপারের মাঠ সবুজ হয়ে উঠছে বোরো ধানে। গেল মৌসুমে বন্যার কারণে এসব মাঠ থেকে আমন ধান ঘরে তুলতে পারেননি হাওরপারের কৃষকেরা। বোরো চাষে আমনের সেই ক্ষতি হয়তো পূরণ হবে না। তবু ঘুরে দাঁড়াতে কৃষকের সব মনোযোগ এখন এই মাঠের দিকেই। কৃষকদের কেউ সেই জমিতে আগাছা পরিষ্কার করছেন, কেউ পোকা দমনে ওষুধ স্প্রে করছেন। কেউ খেতে ছিটিয়ে দিচ্ছেন সার। কেউ দিচ্ছেন সেচ। চলছে ধানখেতের নানামুখী পরিচর্যা। কাউয়াদীঘি হাওরপারজুড়ে এখন যত দূর চোখ যায়, সবুজের বিস্তৃতি। এই সবুজ সম্প্রতি রোপণ করা বোরো ফসলের। মৌলভীবাজার সদর ও রাজনগর উপজেলা নিয়ে বিস্তীর্ণ কাউয়াদীঘি হাওর ও হাওরপারের সব দিকেই স্থির, শান্ত সবুজভূমি অনেক দূর পর্যন্ত চলে গেছে। মাথা তুলে দাঁড়ানো বোরো ধানের গোছা মৃদু বাতাসে দুলছে। হাওরের দিগন্তজুড়ে চোখজুড়ানো ধুধু সবুজ প্রকৃতি, আর...
    হাওর-বাঁওড়ের জেলাখ্যাত মৌলভীবাজারে রয়েছে ছোট-বড় ২০টির বেশি হাওর। এর মধ্যে হাওর-জলাভূমি উন্নয়ন অধিদপ্তরের মাস্টারপ্ল্যানের তালিকায় রয়েছে এ জেলার মাত্র তিনটি হাওর। ফলে উন্নয়নবঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কায় জেলার ১৭টিরও বেশি হাওরপারের মানুষ। জানা গেছে, অধিদপ্তরের মাস্টারপ্ল্যানের তালিকা থেকে বাদ পড়া এসব হাওরপারের বসবাসকারীদের জীবনমান উন্নয়নের সম্ভাবনা নিয়ে শঙ্কিত স্থানীয়রা। যার কারণে তারা সবক’টি হাওরকে এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার জোর দাবি জানিয়েছেন। এশিয়ার বৃহত্তম হাকালুকি হাওর, সৌন্দর্যের লীলাভূমিখ্যাত হাইল হাওর বা বাইক্কা বিল ও হাওর কাউয়াদীঘি ছাড়াও জেলায় অন্তত ২০টির অধিক ছোট-বড় হাওর রয়েছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে সদরের বড় হাওর, খাইঞ্জার হাওর, রাজনগরের হাওর কড়াইয়া, গোয়ালিয়া, ভুরভুরিয়া, কমলগঞ্জের কেওলার ও হলদিয়ার হাওর। ২০১২ সালে হাওর-জলাভূমি উন্নয়নের মাস্টারপ্ল্যানে হাকালুকি, হাইল হাওর ও কাউয়াদীঘিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। তালিকা থেকে বাদ পড়েছে জেলার বাকি সব...
    মৌসুমের সঙ্গে বদলে যায় প্রকৃতির রূপ। তার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে হাওরপারের মানুষের সংগ্রামী জীবন। কখনও হাওরে পানি না থাকলে সমস্যা, কখনও আবার জলাবদ্ধতায় বিপত্তি। প্রকৃতির এমন বৈচিত্র্য মেনে নিয়ে এখানকার মানুষ জীবন ও জীবিকার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছেন। পুরুষরা যখন হাওরে মাছ শিকার এবং মৌসুমে আমন ও বোরো ফসলের আবাদে সবচেয়ে বেশি সময় দেন, তখন নারীরা সংসারের দৈনন্দিন কাজের পাশাপাশি সহায়ক উপার্জনের উৎস সৃষ্টি করেন সবজি চাষ ও গবাদি পশু পালনে। হাওরাঞ্চলের নারীদের এই গৎবাঁধা জীবনের প্রাচীর ডিঙিয়ে এগিয়ে যাওয়ার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে নারী শিক্ষার প্রসারে। এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে হাওরপারে নারীদের উচ্চশিক্ষার একমাত্র প্রতিষ্ঠান তাহিরপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজ। উপজেলাজুড়ে ব্যাপক সুনাম অর্জন করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। ১৯৮৮ সালে তাহিরপুর উপজেলা সদরে যাত্রা শুরু হয় তাহিরপুর নিম্ন মাধ্যমিক...
    তাহিরপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বিচক্ষণতায় জলাবদ্ধতার সংকট থেকে রক্ষা পেল পাঁচটি হাওর। এতে চাষাবাদের জন্য উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টির পাশাপাশি ফসলের নিরাপত্তা নিশ্চিত হলো। বুধবার ইউএনও মো. আবুল হাসেমের নির্দেশে বনুয়া হাওরের নাওটানা এলাকার দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রকল্প কমিটি এক্সক্যাভেটর দিয়ে বাঁধ কেটে নালা তৈরি করে দেয়। এতে করে সংশ্লিষ্ট এলাকার হাওরের পানি দ্রুত পাটলাই নদীতে নেমে যাচ্ছে। স্থানীয় কৃষক ও প্রশাসনিক দপ্তরের সংশ্লিষ্টদের ভাষ্যমতে, ইউএনওর বিচক্ষণ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে জলাবদ্ধতা সংকট থেকে উপজেলা-সংলগ্ন বনুয়া, পালই, কাটুয়াউরা, ছিরিয়ারগাঁও ও নানদিয়ার হাওর মুক্ত হয়েছে। তাঁর পরিকল্পনা মতো পানি অপসারণের ব্যবস্থা করায় কোনো অংশের ক্ষতিও হয়নি। স্থানীয় কয়েকজন বোরো চাষি জানান, জলাবদ্ধতার কারণে হাওরপারের কৃষকরা নিজেদের জমিতে বোরো চাষ করতে পারছিলেন না। পানির কারণে বোরো ধান রোপণের উপযুক্ত সময় পেরিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা বাড়ায় বিষয়টি ইউএনওকে অবগত...
    অনলাইনে পরিযায়ী পাখির মাংস বিক্রির উদ্দেশ্যে ফেসবুকে লাইভ করা সেই দেলোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। মৌলভীবাজারের সদর বন কর্মকর্তা মো. গোলাম সারোয়ার বাদী হয়ে সোমবার সুনামগঞ্জ বন আদালতে এ মামলা করেন।  সুনামগঞ্জ বন আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নির্জন কুমার মিত্র মামলাটি গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের নাজির এনামুল হক জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জ  বন আদালতে এটিই প্রথম অতিথি পাখি হত্যা মামলা। আদালত মামলাটি গ্রহণ করেছেন। আগামীকাল (বুধবার) এ মামলার বিষয়ে আদালত নির্দেশনা দেবেন।  মামলার বাদী গোলাম সারোয়ার বলেন, বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা আইনের ২০১২-এর ৩৮ (২) ধারায় তিনি এ মামলা করেছেন। একজনের নাম উল্লেখ করে মামলা হলেও অন্যান্য পাখি শিকারি ও বিক্রয়কারীর তথ্য সংগ্রহের কাজ করছেন তারা। উপযুক্ত প্রমাণ পেলে অন্যদের বিরুদ্ধেও আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।  বাদী আদালতকে জানিয়েছেন,...
    হাকালুকি হাওরপারে সম্ভাবনাময় ফসল হয়ে উঠেছে শর্ষের চাষ। বছরের দীর্ঘ সময় যে জমি পানির নিচে তলিয়ে থাকে, পানি সরে গেলেও যে জমির বেশির ভাগই একসময় পতিত পড়ে থাকত, অনুকূল পরিবেশ পেয়ে সেই জমিতে এখন প্রতিবছর শর্ষের চাষ বাড়ছে। শর্ষে চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছেন স্থানীয় কৃষকেরা। এখন সেই জমি হলুদ বন্যায় ভাসছে। শর্ষের হলুদ ফুল ঢেউ খেলছে হাওরের বিস্তীর্ণ জমিতে। মৌলভীবাজারের হাকালুকি হাওরের বড়লেখা উপজেলার হাওরপারের মাঠগুলো এখন শর্ষের আহ্লাদে আরেক রূপসী বাংলা হয়ে উঠেছে। চাষিদের দিন কাটছে শর্ষেখেতের পরিচর্যায়, শর্ষে ফুলের দিকে তাকিয়ে। এই শর্ষে চাষে অনেকে বাড়তি আয়ের সুযোগ পেয়েছেন। শর্ষেখেতে মৌ-চাষ করছেন অনেকে। মৌমাছিরা ফুল থেকে ফুলে উড়ছে, ঘটছে প্রাকৃতিক পরাগায়ন। ফসল ভালো হচ্ছে।গত বৃহস্পতিবার হাকালুকি হাওরের হাল্লা এলাকায় দেখা গেছে, হাওরপারের এলাকাটি হলুদ হয়ে আছে। পর্যটন টাওয়ারের...
۱