মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী আবুল সরকারের সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। 

রবিবার (২৩ নভেম্বর) দলটির ধর্ম ও সম্প্রীতি সেল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানায়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যে বাউল, ফকির, সুফি, তাসাওফপন্থীসহ বিভিন্ন ধারার সমৃদ্ধ অবদান রয়েছে। এই বৈচিত্র্য রক্ষা করা মানে আমাদের মানবিক রাষ্ট্রচিন্তা ও ঐতিহাসিক সম্প্রীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। বাংলাদেশটা সবার—এখানে ভিন্নমতকে দমন নয়, বরং শোনা ও বোঝার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ধর্মীয় মত বা ব্যাখ্যা নিয়ে ভিন্নতা থাকতেই পারে, এবং কখনো কখনো তা বিতর্কের সৃষ্টি করতেও পারে। কিন্তু তার উত্তরের পথ কখনোই সহিংসতা বা প্রতিশোধ হতে পারে না। এ দেশের দায়িত্বশীল আলেমসমাজ যুগের পর যুগ যে শান্তিপূর্ণ দাওয়াত, ধৈর্য, প্রজ্ঞা ও সদাচরণের মাধ্যমে দ্বীনের শিক্ষা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে আসছেন, এটি আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য। সমাজে উত্তেজনা বা ভুল ব্যাখ্যা দেখা দিলে এই শান্তিপ্রিয় আলেমসমাজই মানুষকে সংযম, শান্তি ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধার পথে রাখার দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

ধর্ম ও সমাজের প্রশ্নে সহিংসতার কোনো স্থান নেই উল্লেখ করে আরো বলা হয়, এই নীতিতে যারা অবিচল থেকেছেন, আমরা তাদের এই অবস্থানের সাথে একাত্ম। শান্তিপূর্ণ দাওয়াত ও জ্ঞানভিত্তিক সংলাপই দ্বীনের প্রকৃত রাহবারি, এ কথাটি আজ আরও বেশি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন।

ঘটনাবলির নিরপেক্ষ, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করে হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে দাবি করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযোগ বা মতভিন্নতার সমাধান হবে আইন, ন্যায়বিচার ও শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে, কোনোভাবেই জনতা বা গোষ্ঠীর হাতে নয়। বাউল–ফকির–তাসাওফপন্থীসহ সকল সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করতে হবে। উসকানি, বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে—ধর্মীয় নেতা, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সম্প্রীতি, সংযম ও পারস্পরিক সম্মানের পথ আরও শক্তিশালী করতে হবে।

অন্যায়ের প্রতিকার কখনোই অন্যায় দিয়ে হয় না। সহিংসতা প্রতিস্থাপিত হয় ন্যায়, ধৈর্য ও মানবিক আচরণে।আমরা শান্তি, সংহতি ও আইনের শাসনের পক্ষে—সবসময়। বাংলাদেশটা সবার; এটিকে নিরাপদ, মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজে রূপান্তর করতে—সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। 

এর আগে গতকাল রবিবার মানিকগঞ্জে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের ধর্ম নিয়ে ‘কটূক্তি’র অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তি ও শাস্তির দাবিতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। 

তৌহিদী জনতা ও আলেম-ওলামারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করলে একই সময়ে আবুল সরকারের ভক্তরা মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে শহরের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের পাশে বাউল ভক্তদের ওপর হামলা চালায় তৌহিদী জনতার একটি অংশ।

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

বাউল আবুল সরকারের সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় এনসিপির নিন্দা

মানিকগঞ্জে বাউলশিল্পী আবুল সরকারের সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় নিন্দা জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। 

রবিবার (২৩ নভেম্বর) দলটির ধর্ম ও সম্প্রীতি সেল এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ নিন্দা জানায়।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যে বাউল, ফকির, সুফি, তাসাওফপন্থীসহ বিভিন্ন ধারার সমৃদ্ধ অবদান রয়েছে। এই বৈচিত্র্য রক্ষা করা মানে আমাদের মানবিক রাষ্ট্রচিন্তা ও ঐতিহাসিক সম্প্রীতির ধারাবাহিকতা রক্ষা করা। বাংলাদেশটা সবার—এখানে ভিন্নমতকে দমন নয়, বরং শোনা ও বোঝার সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠা করতে হবে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, ধর্মীয় মত বা ব্যাখ্যা নিয়ে ভিন্নতা থাকতেই পারে, এবং কখনো কখনো তা বিতর্কের সৃষ্টি করতেও পারে। কিন্তু তার উত্তরের পথ কখনোই সহিংসতা বা প্রতিশোধ হতে পারে না। এ দেশের দায়িত্বশীল আলেমসমাজ যুগের পর যুগ যে শান্তিপূর্ণ দাওয়াত, ধৈর্য, প্রজ্ঞা ও সদাচরণের মাধ্যমে দ্বীনের শিক্ষা মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে আসছেন, এটি আমাদের জাতীয় ঐতিহ্য। সমাজে উত্তেজনা বা ভুল ব্যাখ্যা দেখা দিলে এই শান্তিপ্রিয় আলেমসমাজই মানুষকে সংযম, শান্তি ও আইনের প্রতি শ্রদ্ধার পথে রাখার দায়িত্ব পালন করে থাকেন।

ধর্ম ও সমাজের প্রশ্নে সহিংসতার কোনো স্থান নেই উল্লেখ করে আরো বলা হয়, এই নীতিতে যারা অবিচল থেকেছেন, আমরা তাদের এই অবস্থানের সাথে একাত্ম। শান্তিপূর্ণ দাওয়াত ও জ্ঞানভিত্তিক সংলাপই দ্বীনের প্রকৃত রাহবারি, এ কথাটি আজ আরও বেশি দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন।

ঘটনাবলির নিরপেক্ষ, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত নিশ্চিত করে হামলাকারী ও উসকানিদাতাদের আইনের আওতায় আনতে হবে দাবি করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অভিযোগ বা মতভিন্নতার সমাধান হবে আইন, ন্যায়বিচার ও শান্তিপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে, কোনোভাবেই জনতা বা গোষ্ঠীর হাতে নয়। বাউল–ফকির–তাসাওফপন্থীসহ সকল সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও মতপ্রকাশের সাংবিধানিক অধিকার রাষ্ট্রীয়ভাবে নিশ্চিত করতে হবে। উসকানি, বিভাজন ও সহিংসতার রাজনীতি প্রত্যাখ্যান করে—ধর্মীয় নেতা, নাগরিক সমাজ ও রাজনৈতিক নেতৃত্বকে সম্প্রীতি, সংযম ও পারস্পরিক সম্মানের পথ আরও শক্তিশালী করতে হবে।

অন্যায়ের প্রতিকার কখনোই অন্যায় দিয়ে হয় না। সহিংসতা প্রতিস্থাপিত হয় ন্যায়, ধৈর্য ও মানবিক আচরণে।আমরা শান্তি, সংহতি ও আইনের শাসনের পক্ষে—সবসময়। বাংলাদেশটা সবার; এটিকে নিরাপদ, মানবিক ও ন্যায়ভিত্তিক সমাজে রূপান্তর করতে—সবাইকে দায়িত্বশীল হতে হবে বলেও এতে উল্লেখ করা হয়। 

এর আগে গতকাল রবিবার মানিকগঞ্জে বাউল শিল্পী আবুল সরকারের ধর্ম নিয়ে ‘কটূক্তি’র অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর তার মুক্তি ও শাস্তির দাবিতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। 

তৌহিদী জনতা ও আলেম-ওলামারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করলে একই সময়ে আবুল সরকারের ভক্তরা মানববন্ধনের আয়োজন করে। এতে শহরের বিভিন্ন স্থানে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় মাঠের পাশে বাউল ভক্তদের ওপর হামলা চালায় তৌহিদী জনতার একটি অংশ।

ঢাকা/রায়হান/ইভা 

সম্পর্কিত নিবন্ধ