‘আমার মতো কেউ কইরো না, মানুষ হয়ে বিয়ে কর। আমি গরীব। এটাই আমার দোষ। আমি কাউকে কোনো দোষ দিচ্ছি না, নিজের ইচ্ছায় আল্লাহর নামে জীবন ত্যাগ করলাম।’- চিরকুটে এমন লিখে আত্মহত্যা করেছেন মো. কাউসার হোসেন (২৫) নামের এক যুবক। 

ঢাকার মোহাম্মদপুরে তিনি শ্রমিকের কাজ করতেন। ধবার ১০ টার দিকে মোহাম্মদপুরে ভাড়া বাসায় আত্মহত্যা করেন তিনি। গত বুধবার রাতে পটুয়াখালীর বাউফলের মদনপুরা ইউনিয়নের মো.

কাওসার হোসেন লাশ দাফন করা হয়। তিনি মদনপুরা ইউনিয়নের প্রয়াত শাহ আলম মৃধার ছেলে।

নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, বাউফল সরকারি কলেজ থেকে ২০২৪ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কাজের সন্ধানে রাজধানীতে পাড়ি জমান। এর মধ্যে তিনি বিয়ে করেন। বেশ কিছুদিন ধরে চেষ্টা করেও কাজ যোগাতে না পেরে পরিবার পরিজন নিয়ে কোনভাবেই চলতে পারছিলেন না। একপর্যায়ে তিনি হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েন। 

নিহত কাওসারের বন্ধুরা জানান, গত বুধবার (১৪ মে) রাতে ঢাকার মোহাম্মদপুরের একটি বাসা থেকে তার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তার পাশে পাওয়া চিরকুটে লেখা ছিল— ‘আমার একটাই দোষ, আমি গরীব। আমি কাউকে কোনো দোষ দিচ্ছি না, নিজের ইচ্ছায় জীবন ত্যাগ করলাম।’

দীর্ঘসময় তার মরদেহ ঢাকার সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের মর্গে পরে ছিলো। আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে নিহতের মা মরদেহ আনতে ব্যর্থ হয়। পরে বিষয়টা জানার পরে বাউফল উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শফিকুল ইসলাম মাসুদ নিহতের মারদেহ গ্রামে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করেন এবং  দাফনের ব্যবস্থা করেন। তার মৃত্যুতে এলাকায় ও শিক্ষাঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। 

নিহত কাওসারের বাবা শাহ আলম জানান, ছেলেটা আমার বড় ভালো ছিল। বিয়ে করে বউ নিয়ে ঢাকায় চলে যায়। আল্লাহ মানুষকে যেভাবে রাখে খুশি থাকতে হবে। কিন্তু ও যে আত্মহত্যা করবে, তা ভাবতে পারিনি, বলে কান্নায় ভেঙে পড়েন।

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে ডিএমপি

পবিত্র আশুরা উপলক্ষে ঢাকায় শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলসহ অন্যান্য কর্মসূচির নিরাপত্তায় ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) সুসংহত নিরাপত্তাব্যবস্থা নিয়েছে বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) ও ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো. সরওয়ার।

আজ বৃহস্পতিবার পুরান ঢাকার হোসেনি দালান ইমামবাড়ায় শিয়া সম্প্রদায়ের নেতাদের উপস্থিতিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার মো. সরওয়ার এ কথা বলেন।

মো. সরওয়ার বলেন, আগামী রোববার আশুরা। ২৭ জুন থেকে ৬ জুলাই পর্যন্ত বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে শিয়া ও অনেক সুন্নি সম্প্রদায়ও শোক পালন করছে। পুরান ঢাকার হোসেনি দালান ইমামবাড়া, বড় কাটরা, মোহাম্মদপুরের বিহারি ক্যাম্প, শিয়া মসজিদ, বিবিকা রওজা, মিরপুর পল্লবী বিহারি ক্যাম্পসহ অন্যান্য যেসব স্থানে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের সঙ্গে আশুরা পালিত হয়, সেসব জায়গায় ইতিমধ্যে পর্যাপ্ত পুলিশি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

ডিএমপির ভারপ্রাপ্ত কমিশনার আরও বলেন, গুরুত্বপূর্ণ ইমামবাড়া সিসিটিভি (ক্লোজড সার্কিট) ক্যামেরার আওতায় থাকবে। এ ছাড়া যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডিএমপির বিশেষায়িত ইউনিটগুলো প্রস্তুত থাকবে। আশুরা উপলক্ষে সর্ববৃহৎ তাজিয়া মিছিল ৬ জুলাই সকাল ১০টার দিকে হোসেনি দালান ১ নম্বর গেট হয়ে বকশীবাজার লেন, লালবাগ চৌরাস্তা মোড়, শহীদ মাজার রোড, এতিমখানা মোড়, আজিমপুর চৌরাস্তা, নীলক্ষেত মোড়, মিরপুর রোড, ঢাকা কলেজ, সায়েন্স ল্যাবরেটরি, ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা, বিজিবির ৪ নম্বর গেট, সাত মসজিদ রোড হয়ে ধানমন্ডি লেক কারবালায় মিলিত হবে। তাজিয়া মিছিল চলাকালে যানজট এড়াতে বিকল্প রাস্তা ব্যবহার করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।

প্রেস ব্রিফিংয়ে ঢাকা ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস এন মো. নজরুল ইসলাম আশুরার ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট তুলে ধরেন এবং একই দিন সনাতন ধর্মাবলম্বীদের উল্টোরথযাত্রার অনুষ্ঠানও রয়েছে বিধায় সংশ্লিষ্ট সবাইকে পুলিশের নির্দেশনা অনুসরণ করতে অনুরোধ করেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ