১৯৯৪ সালের মিস ওয়ার্ল্ড জিতে পাদপ্রদীপের আলোয় চলে আসেন ঐশ্বরিয়া রাই। অভিনয় শুরু আরও তিন বছর পর। এরপর পেরিয়ে গেছে দুই যুগের বেশি সময়। আজ অভিনেত্রীর ৫২তম জন্মদিন। ১৯৭৩ সালের আজকের দিকে কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোরে জন্ম হয় তাঁর। জন্মদিন উপলক্ষে সাবেক বিশ্বসুন্দরী, বলিউডের অভিনেত্রী ও প্রভাবশালী বচ্চন পরিবারের বউ ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন সম্পর্কে চমকপ্রদ কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে এনডিটিভি।

স্কুলজীবনেই বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল
স্কুলে পড়ার সময়ই বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হিসেবে ক্যামেরার সামনে দাঁড়িয়েছিলেন ঐশ্বরিয়া রাই বচ্চন। ক্যামলিন পেনসিলের বিজ্ঞাপনচিত্রের মাধ্যমে মডেল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছিলেন তিনি। তখন তিনি ক্লাস নাইনে পড়তেন।

তুখোড় ছাত্রী
শৈশবে পাঁচ বছর ধ্রুপদি নৃত্য ও সংগীতের ওপর তালিম নিয়েছেন ঐশ্বরিয়া। পাশাপাশি তুখোড় ছাত্রী হিসেবেও নিজেকে প্রমাণ করেছেন তিনি। এইচএসসি পরীক্ষায় তিনি ৯০ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন। স্থপতি হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে রাহেজা কলেজে স্থাপত্য বিভাগে ভর্তি হলেও মডেলিং হিসেবে ক্যারিয়ার শুরুর জন্য পড়ালেখা ছেড়ে দেন তিনি। ১৯৯১ সালে ফোর্ড আয়োজিত একটি সুপার মডেল প্রতিযোগিতায় বিজয়ীর মুকুট মাথায় তোলেন ঐশ্বরিয়া। এই সাফল্যের রেশ ধরে ভোগ ম্যাগাজিনের মার্কিন সংস্করণে প্রচ্ছদ-কন্যা হওয়ার সুযোগ মেলে তাঁর।

তারকা হওয়ার আগেই রেখার আশীর্বাদ
তখন মডেলিং–জগতে সবে যাত্রা শুরু করেছেন ঐশ্বরিয়া। হঠাৎ একদিন মুম্বাইয়ের একটি মার্কেটে তাঁকে দেখে চিনতে পারেন বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেত্রী রেখা। তিনি ঐশ্বরিয়ার দিকে এগিয়ে গিয়ে তাঁর কাঁধে হাত রাখেন। ঐশ্বরিয়ার জীবনের সর্বাঙ্গীণ মঙ্গল কামনা করেন রেখা। এভাবে তারকা হওয়ার আগেই রেখার আশীর্বাদ লাভ করেন ঐশ্বরিয়া।

মুম্বাই দাঙ্গার রাতেই বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিং শেষ
১৯৯২-৯৩ সালে মুম্বাইয়ে ভয়াবহ সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়েছিল। সেই দাঙ্গায় প্রায় ৯০০ মানুষ নিহত হয়েছিলেন। সেই অস্থির সময়ের মধ্যেও কাজ থামিয়ে দেননি ঐশ্বরিয়া। ‘মিস্টার পারফেকশনিস্ট’ তারকা আমির খানের সঙ্গে কোমল পানীয় পেপসির একটি বিজ্ঞাপনচিত্রের মডেল হয়েছিলেন তিনি। টানা কাজ করে এক রাতের মধ্যেই বিজ্ঞাপনচিত্রটির শুটিং শেষ করেছিলেন তাঁরা। এই দুই তারকা পেপসির পাশাপাশি কোকের বিজ্ঞাপনচিত্রেরও মডেল হয়েছেন। বলিউডের আর কোনো তারকাই একসঙ্গে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী দুই কোম্পানি পেপসি ও কোকের মডেল হননি।

প্রিয় চলচ্চিত্র ‘ক্যাসাব্লাঙ্কা’
ঐশ্বরিয়ার প্রিয় চলচ্চিত্রের তালিকায় সবার ওপরে রয়েছে অস্কারজয়ী হলিউডের ছবি ‘ক্যাসাব্লাঙ্কা’র নাম। হামফ্রে বোগার্ট ও ইনগ্রিড বার্গম্যান অভিনীত ছবিটি মুক্তি পেয়েছিল ১৯৪২ সালে। হলিউডের ইতিহাসে অন্যতম সফল ছবি ‘ক্যাসাব্লাঙ্কা’।

গয়নাবিদ্বেষী
ঐশ্বরিয়ার অন্যতম প্রিয় একটি শখ হলো ঘড়ি সংগ্রহ করা। হরেক রকমের ঘড়ি আছে তাঁর সংগ্রহে। ঘড়ি সংগ্রহের বাতিক থাকলেও গয়না নাকি একদমই পছন্দ করেন না তিনি।

ঐশ্বরিয়ার বারবি পুতুল
২০০৫ সালে ঐশ্বরিয়ার অল্প কিছু বারবি পুতুল যুক্তরাজ্যের বাজারে ছাড়া হয়েছিল। সব কটি পুতুল বিক্রি হতে সময় লেগেছিল মাত্র কয়েক মিনিট।

হেফনারকে না
২০০৫ সালে প্লেবয় ম্যাগাজিনের ভারতীয় সংস্করণ বের করার পরিকল্পনা করেছিলেন এর প্রতিষ্ঠাতা হিউ হেফনার। আর প্রচ্ছদ-কন্যা হিসেবে তিনি চেয়েছিলেন ঐশ্বরিয়াকে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে পারেননি হেফনার।

জর্জ ডব্লিউ বুশের মধ্যাহ্নভোজের নিমন্ত্রণ
২০০৬ সালে ভারত সফরে গিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশ। তখন বুশের সঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের নিমন্ত্রণ পেয়েছিলেন ঐশ্বরিয়া ও আমির খান। কিন্তু শুটিংয়ের ব্যস্ততার কারণে লোভনীয় এ সুযোগটি হারাতে হয়েছিল ঐশ্বরিয়াকে। তিনি তখন ব্রাজিলে ‘ধুম ২’ ছবির শুটিং করছিলেন।

দুবাইতে দিনভর ট্রাফিক জ্যা
ঐশ্বরিয়া ভারতের সীমানা পেরিয়ে অনেক আগেই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পরিচিতি পেয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যেও রয়েছে ঐশ্বরিয়ার অগুনতি ভক্ত। তিনি একবার সাবানের বিজ্ঞাপনচিত্রের শুটিংয়ে দুবাই গিয়েছিলেন। তখন তাঁকে কাছ থেকে একনজর দেখার জন্য ভিড় করতে থাকেন তাঁর ভক্তরা। এ জন্য দুবাইয়ের বেশ কয়েকটি রাস্তায় ট্রাফিক জ্যাম বেধে গিয়েছিল। সেই জ্যাম ছুটতে সারা দিন সময় লেগে যায়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব জ ঞ পনচ ত র র ম ই ব জ ঞ পনচ ত র হয় ছ ল হওয় র

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ