মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেনকে কাঙ্ক্ষিত টমাহক ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র সরবরাহ করতে প্রস্তুত নন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ অবস্থায় প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি হোয়াইট হাউস থেকে খালি হাতে ফিরেছেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

গতকাল শুক্রবার দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি বলেন, তিনি ও ট্রাম্প দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র নিয়ে কথা বললেও এ বিষয়ে কোনো বিবৃতি না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কারণ, পরিস্থিতি আরও খারাপ হোক, যুক্তরাষ্ট্র তা চায় না।’
বৈঠকের পর ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কিয়েভ এবং মস্কোকে তারা ‘যেখানে আছে সেখানে থামার’ এবং যুদ্ধ শেষ করার আহ্বান জানান।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার এক দিন পর জেলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। পুতিনের সঙ্গে ফোনে আলোচনায় দুই নেতা হাঙ্গেরিতে বৈঠকে বসতে রাজি হন।

জেলেনস্কি মনে করেন, টমাহক ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে রাশিয়ার তেল ও জ্বালানি স্থাপনাগুলোতে আঘাত হানলে পুতিনের যুদ্ধ অর্থনীতি মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে।

ট্রাম্প অবশ্য ইউক্রেনকে এ ক্ষেপণাস্ত্র দেওয়ার বিষয়টি একেবারে উড়িয়ে দেননি। তবে শুক্রবার জেলেনস্কির সঙ্গে হোয়াইট হাউসের বৈঠকে তাঁর বক্তব্য ছিল অস্পষ্ট।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আশা করি তাদের এটি লাগবে না। আশা করি, আমরা টমাহক নিয়ে না ভেবেই যুদ্ধ শেষ করতে পারব। আমার মনে হয়, আমরা যুদ্ধ শেষ করার বেশ কাছাকাছি আছি।’

ট্রাম্প এই অস্ত্রটিকে ‘বড় ব্যাপার’ হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের নিজেদের প্রতিরক্ষার জন্য এই ক্ষেপণাস্ত্রের প্রয়োজন। ইউক্রেনকে টমাহক সরবরাহ করলে সংঘাত আরও বাড়তে পারে, তবে সেগুলো পাঠানোর বিষয়ে আলোচনা চলবে।

টমাহক ক্ষেপণাস্ত্রের বিষয়টি পুতিনকে ট্রাম্পের সঙ্গে দেখা করতে উৎসাহিত করেছে কি না, বিবিসির এমন প্রশ্নে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, সেই হুমকি (ক্ষেপণাস্ত্রের) ভালো, তবে সেই হুমকি সব সময়ই আছে।

ইউক্রেনের নেতা ইঙ্গিত দেন, টমাহকের বিনিময়ে তাঁর দেশ ড্রোন দিতে পারে। এতে ট্রাম্পের মুখে হাসি ও তাঁকে সম্মতিসূচক মাথা নাড়তে দেখা যায়।

জেলেনস্কি মধ্যপ্রাচ্যে যুদ্ধবিরতির প্রথম ধাপ সুরক্ষিত করার ক্ষেত্রে ট্রাম্পের ভূমিকার প্রশংসা করে ইঙ্গিত দেন, মার্কিন নেতা ইউক্রেনে রাশিয়ার যুদ্ধ শেষ করতে সেই গতিকে কাজে লাগাতে পারেন।

বৈঠকের পর হোয়াইট হাউসের বাইরে একজন সাংবাদিক জেলেনস্কির কাছে জানতে চান, পুতিন কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে চান নাকি বুদাপেস্টে ট্রাম্পের সঙ্গে পরিকল্পিত বৈঠকের মাধ্যমে শুধু সময় নিচ্ছেন—এ বিষয়টি তিনি কীভাবে দেখছেন।

জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি জানি না।’ তবে তিনি যোগ করেন, ইউক্রেনের টমাহক পাওয়ার সম্ভাবনা রাশিয়াকে ‘ভীত’ করেছে। কারণ, এটি একটি শক্তিশালী অস্ত্র।

ইউক্রেন টমাহক পাবে কি না, ওয়াশিংটন ছেড়ে যাওয়ার সময় তিনি বিষয়টি নিয়ে আরও আশাবাদী কি না, জানতে চাইলে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমি বাস্তববাদী।’

ইউক্রেনীয় নেতা আরও ইঙ্গিত দেন, বর্তমান যুদ্ধরেখা বরাবর যুদ্ধ থামানোর ট্রাম্পের পরামর্শে তিনি রাজি হতে পারেন।

জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা যেখানে আছি, সেখানে থামতে হবে। তিনি ঠিক, প্রেসিডেন্ট ঠিক।’ তিনি যোগ করেন, এর পরের পদক্ষেপ হবে ‘কথা বলা’।

পরে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট এক্স-এ (সাবেক টুইটার) এক পোস্টে লিখেছেন, তিনি ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকের আলোচিত বিষয় সম্পর্কে  জানাতে ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে ফোন করেছেন। এখন প্রধান অগ্রাধিকার হচ্ছে যতটা সম্ভব জীবন রক্ষা করা, ইউক্রেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং ইউরোপে সবাইকে শক্তিশালী করা।

যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে এই আলোচনাকে ‘ফলপ্রসূ’ বলে অভিহিত করেন। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, ইউকে মানবিক সহায়তা ও সামরিক সমর্থন পাঠানো অব্যাহত রাখবে।

গতকাল শুক্রবার একজন সাংবাদিক ট্রাম্পকে প্রশ্ন করেছিলেন, পুতিন নতুন একটি শীর্ষ সম্মেলনের জন্য সম্মত হয়ে সময় নষ্ট করছেন কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, ‘আমি উদ্বিগ্ন।’

আরেক সাংবাদিক যখন জিজ্ঞেস করেন, বুদাপেস্টে সম্ভাব্য আলোচনায় জেলেনস্কি থাকবেন কি না, তখন ট্রাম্প বলেন, পুতিন ও জেলেনস্কির মধ্যে ‘খারাপ সম্পর্ক’ আছে।
ট্রাম্প বলেন, ‘আমরা সবার জন্য স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করতে চাই। আমাদের তিনজনের অংশগ্রহণে থাকবে, তবে এটি আলাদা হতে পারে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য দ ধ শ ষ কর ইউক র ন র

এছাড়াও পড়ুন:

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় রাবিতে দোয়া

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় বিশেষ দোয়ার আয়োজন করে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় (রাবি) শাখা ছাত্রদল। আজ মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) বাদ আছর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে দোয়া অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।  

দোয়া অনুষ্ঠানে রাবি জিয়া পরিষদের সভাপতি প্রফেসর ড. হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, ‘‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া দেশের মানুষের জন্য অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। তিনি ক্রান্তিলগ্নেও দেশ ছেড়ে যাননি। উনার এক ছেলে যখন মারা যান এবং আরেক ছেলে জেল হাজতে, তখন তাকে বিদেশে চলে যেতে বলা হয়েছে কিন্তু তিনি যাননি। ফ্যাসিস্ট আমলে তাকে সামান্য সম্মানটুকুও দেওয়া হয়নি। আল্লাহর কি কুদরত, তাকে এখন ভিভিআইপি পারসন ঘোষণা করা হয়েছে। দেশের এই ক্রান্তিলগ্নে দলমত নির্বিশেষে সকলে বুঝতে পেরেছে, তাকে এখন কতটা প্রয়োজন। আমরা তার জন্য আল্লাহর কাছে প্রাণ খুলে দোয়া চাই।’’  

আরো পড়ুন:

চবি ক্যাম্পাসে ভুয়া শিক্ষার্থী আটক

বেরোবিতে শিক্ষার্থীকে ছাত্রদল নেত্রীর মামলার হুমকি

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাইন উদ্দীন বলেন, ‘‘একটা দেশ, একটা জাতিকে যদি শেষ করতে হয়; তাহলে ওই জাতির লিডারশিপ শেষ করে দিলে জাতি পঙ্গু হয়ে যায়। বর্তমানে দেশে এমন একটা নেতৃত্ব দরকার, যেখানে জাতি ঐক্যবদ্ধ হবে। বেগম খালেদা জিয়া সেরকম একজন মানুষ। এ জাতি ওনাকে একজন কমন নেতৃত্ব হিসেবে মানে, উনি যদি দাঁড়ান তাহলে জাতি ওনার পিছনে দাঁড়িয়ে যান। এমন একজন নেতৃত্ব বাংলাদেশের জন্য খুবই প্রয়োজন। পুরো দেশ তার জন্য দোয়া করছে। আমরাও দোয়া করব, আল্লাহ যেন তাকে দ্রুত সুস্থ করে দেন।’’   

সভাপতির বক্তব্যে শাখা ছাত্রদলের সভাপতি সুলতান আহমেদ রাহী বলেন,  ‘‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মহান আল্লাহ যেন সুস্থ করে আমাদের মাঝে ফিরিয়ে দেন। বেগম জিয়ার এই সংকটময় সময়ে শিশু থেকে শুরু করে সবাই তার জন্য দোয়া করছে এবং অনেকে তার সুস্থতার জন্য রোজা রেখেছেন ও দান-সদকা করে যাচ্ছেন।’’  

দোয়া অনুষ্ঠানে আরো উপস্থিত ছিলেন জিয়া পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. ফরিদুল ইসলাম, জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের নেতা ও শাখা ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা। 
 

ঢাকা/ফাহিম/বকুল

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সব খাবারে কি কারও অ্যালার্জি হতে পারে?
  • আসিম মুনির: পাকিস্তানের নতুন ‘সুলতান’
  • জামালপুরে সারের দাবিতে কৃষকদের সড়ক অবরোধ
  • খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় রাবিতে দোয়া
  • রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার অপেক্ষায় আছেন উদ্যোক্তারা: জিইডির প্রতিবেদন
  • নারায়ণগঞ্জে পানি সরবরাহ খাতে আসবে বৈপ্লবিক পরিবর্তন 
  • ছাত্র সংসদ নির্বাচন হঠাৎ স্থগিত, উপাচার্যের দপ্তরের সামনে শিক্ষার্থীদের অবস্থান  
  • সরকার কড়াইল বস্তির বাসিন্দাদের অধিকারের তোয়াক্কা করছে না: জোনায়েদ সাকি
  • মুক্তিযুদ্ধের সরল গল্পের বাইরের গল্প
  • এবার পদ্মা ও মেঘনা কোম্পানিতে ডিজেল ‘গায়েব’, দেড় লাখ লিটার গেল কোথায়