সংবাদপত্র, সংবাদ সংস্থা, টেলিভিশন ও অনলাইন নিউজ পোর্টালের সাংবাদিকদের জন্য নতুন ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ ঘোষণার দাবি জানিয়েছে ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন (ডিইউজে)। বুধবার এক বিবৃতিতে সংগঠনের সভাপতি সাজ্জাদ আলম খান তপু ও সাধারণ সম্পাদক  আকতার হোসেন এ দাবি জানান। 

তারা বলেন, ৫ বছর পর পর ওয়েজবোর্ড রোয়েদাদ ঘোষণার বাধ্যবাধকতা রয়েছে। ইতোমধ্যে সে সময় পার হয়েছে। কিন্তু কোনো ধরনের উদ্যোগ দেখা যাচ্ছে না। অর্থ উপদেষ্টা নতুন অর্থবছরে সরকারি কর্মচারীদের জন্য মহার্ঘ ভাতা চালুর উদ্যোগ নিতে যাচ্ছেন। কয়েক বছরে বাড়ি ও পরিবহন ভাড়া, নিত্যপণ্য ও সেবা মূল্য বিবেচনায় সাংবাদিক ও সংবাদমাধ্যমে কর্মচারীদের জন্য অবিলম্বে মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করা প্রয়োজন। তারা বলেন, নতুন অর্থবছরের শুরু থেকেই মহার্ঘ ভাতা প্রদানের ঘোষণা করতে হবে।

এদিকে, আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে সংবাদপত্র ৬ দিন বন্ধ রাখার দাবি জানিয়েছে ডিইউজে। এ বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য নিউজ পেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (নোয়াব) কাছে চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ছুটি ভোগ করা সাংবাদিকদের অধিকার। এবারের ঈদে সরকার ১০ দিনের ছুটি ঘোষণা করেছে। 

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ব দপত র ড ইউজ র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানির সহজ পথ বন্ধ, বাজার হাতছাড়ার শঙ্কা

ভারতে বাংলাদেশি পণ্য রপ্তানির ক্ষেত্রে সহজ পথ হলো স্থলপথ। এই পথে দ্রুত পণ্য পাঠানো যায়। খরচও কম হয়। এ কারণে বাংলাদেশ ভারতে যতটা তৈরি পোশাক রপ্তানি করে, তার ৭৬ শতাংশই যায় স্থলপথে। তবে গত শনিবার দেশটি স্থলপথে বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি নিষিদ্ধ করে। এতে সহজ পথটি বন্ধ হয়ে গেছে।

পোশাক রপ্তানিতে ভারত অবশ্য সমুদ্রপথে দুটি পথ খোলা রেখেছে—দেশটির পশ্চিমে মুম্বাইয়ের নভো সেবা ও পূর্ব-ভারতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা বন্দর। চট্টগ্রাম থেকে নভো সেবায় সরাসরি কনটেইনার জাহাজ চলাচল করে না। চট্টগ্রাম থেকে শ্রীলঙ্কার বন্দরের মাধ্যমে ঘুরপথে নভো সেবায় পণ্য পরিবহন হয়। চট্টগ্রাম-কলকাতায় ছোট দুটি কনটেইনার জাহাজ চলাচল করলেও বেশির ভাগ সময় অনিয়মিত থাকে।

তৈরি পোশাক ছাড়াও প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, কাঠের আসবাব, সুতা ও সুতার উপজাত, ফল ও ফলের স্বাদযুক্ত পানীয়, কোমল পানীয় প্রভৃতি পণ্য রপ্তানিতেও স্থলপথে বিধিনিষেধ দিয়েছে ভারত। বাংলাদেশ থেকে ভারতের চার রাজ্য আসাম, মেঘালয়, ত্রিপুরা ও মিজোরামের সব স্থলবন্দর দিয়ে এসব পণ্য রপ্তানি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের চেংড়াবান্ধা ও ফুলবাড়ী শুল্ক স্টেশনও নিষেধাজ্ঞার আওতায় রাখা হয়েছে। শুধু বেনাপোল, সোনামসজিদ ও ভোমরা স্থলবন্দরে নিষেধাজ্ঞা নেই। এই বন্দরগুলো দিয়ে মূলত পশ্চিমবঙ্গে রপ্তানি হয়। সেখানে অবশ্য বাংলাদেশের বাজার ছোট।

নিষেধাজ্ঞার কারণে ঘুরপথে পণ্য নিতে যে সময় ও খরচ লাগবে তাতে এই রপ্তানি বাজার ধরে রাখা কঠিন হবে বলে জানিয়েছেন রপ্তানিকারকেরা।

এ নিয়ে বাংলাদেশ থেকে পণ্য রপ্তানিতে প্রায় এক মাসের কাছাকাছি সময়ে দুই দফায় অশুল্ক বাধা আরোপ করল ভারত। এর আগে ৯ এপ্রিল ভারতের কলকাতা বিমানবন্দর ব্যবহার করে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানির সুবিধা প্রত্যাহার করেছিল দেশটি। অন্যদিকে ১৫ এপ্রিল বাংলাদেশের জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) স্থলপথে ভারত থেকে সুতা আমদানি নিষিদ্ধ করে।

বাংলাদেশের রপ্তানি বাণিজ্যে নতুন এই বাধার কারণে প্রভাব কেমন হবে তার ধারণা পাওয়া যায় বাংলাদেশ রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্যে। দেখা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ভারতে রপ্তানি হয় প্রায় ১৫৭ কোটি ডলারের পণ্য। এনবিআরের হিসাবে, একই অর্থবছরে ভারতে রপ্তানির পরিমাণ আরেকটু বেশি। প্রায় ১৫৯ কোটি ডলার। এর মধ্যে স্থলপথে যেসব পণ্য রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে, তা গত অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছিল প্রায় ৫০ কোটি ডলারের। অর্থাৎ বাংলাদেশ থেকে ভারতে মোট রপ্তানির ৩১ শতাংশ পণ্য এই বাধার মুখে পড়েছে।

শুধু বেনাপোল, সোনামসজিদ ও ভোমরা স্থলবন্দরে নিষেধাজ্ঞা নেই। এই বন্দরগুলো দিয়ে মূলত পশ্চিমবঙ্গে রপ্তানি হয়। সেখানে অবশ্য বাংলাদেশের বাজার ছোট।ভারতে রপ্তানি কমার শঙ্কা

ইপিবির হিসাবে, বাংলাদেশ প্রায় সাড়ে চার হাজার কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করে। এর মধ্যে ভারতে যায় মোট রপ্তানির ৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ পণ্য। ভারত বাংলাদেশের শীর্ষ রপ্তানি গন্তব্যের মধ্যে ৯ নম্বর। অন্যদিকে ভারত থেকে বাংলাদেশ আমদানি করে প্রায় ৯০০ কোটি ডলারের পণ্য, যা মোট আমদানির ১৪ শতাংশের কিছু বেশি। ভারত থেকে শিল্পের কাঁচামাল বেশি আসে। দেশটির বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, ভারতের শীর্ষ ১০ রপ্তানি গন্তব্যের মধ্যে ৮ নম্বর বাংলাদেশ।

ইপিবির হিসাবে, ভারতে বিধিনিষেধের আওতায় পড়া পণ্যের মধ্যে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয় ৫৫ কোটি ডলারের (২০২৩-২৪)। প্রক্রিয়াজাত কৃষিপণ্য রপ্তানি করে ১৬ কোটি, প্লাস্টিক পণ্যে ৪ দশমিক ৪০ কোটি, তুলা ও তুলার সুতার ঝুটে ৩ দশমিক ১৩ কোটি এবং আসবাবে ৬৫ লাখ ডলার আয় হয়েছে।

ইপিবির হিসাবের সঙ্গে এনবিআরের তথ্যের কিছুটা পার্থক্য আছে। কোন বন্দর দিয়ে কত পণ্য রপ্তানি হয়, তা পাওয়া যায় এনবিআরের তথ্য থেকে। দেখা যায়, গত অর্থবছরে ভারতে তৈরি পোশাক রপ্তানি হয়েছে ৫৫ কোটি ৫৭ লাখ ডলারের। এই রপ্তানির ৪২ কোটি ২৯ লাখ ডলার রপ্তানি হয়েছে স্থলবন্দরগুলো ব্যবহার করে। অর্থাৎ ৭৬ শতাংশই যাচ্ছে স্থলবন্দর দিয়ে। গত বছর ৫৩০টি প্রতিষ্ঠান স্থলবন্দর দিয়ে পোশাক রপ্তানি করেছে। ভারতের স্থানীয় প্রতিষ্ঠান ছাড়াও মার্কস অ্যান্ড স্পেন্সার, লেভি স্ট্রসের মতো প্রতিষ্ঠান ভারতের বাজারের জন্য বাংলাদেশ থেকে পোশাক আমদানি করেছে।

স্থলপথে এক-দুই দিনে পণ্য রপ্তানি করা যেত। এখন সমুদ্রপথে রপ্তানি করতে হলে ২১ দিন সময় লাগবে। কারণ, প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে নিতে হবে। এরপর সেখান থেকে নভো সেবা বন্দরে নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। এতে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।একেএইচ গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কাশেম

স্থলপথে শীর্ষ পর্যায়ের রপ্তানিকারকদের একটি প্রতিষ্ঠান হলো একেএইচ গ্রুপের একেএইচ ফ্যাশন লিমিটেড। প্রতিষ্ঠানটি গত অর্থবছরে স্থলপথ দিয়ে ১ কোটি ২২ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করেছে।

জানতে চাইলে একেএইচ গ্রুপের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আবুল কাশেম প্রথম আলোকে বলেন, স্থলপথে এক-দুই দিনে পণ্য রপ্তানি করা যেত। এখন সমুদ্রপথে রপ্তানি করতে হলে ২১ দিন সময় লাগবে। কারণ, প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে নিতে হবে। এরপর সেখান থেকে নভো সেবা বন্দরে নিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হবে। এতে রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।

তৈরি পোশাক ছাড়াও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা স্থলবন্দর দিয়ে গত অর্থবছর ৭ কোটি ৬৬ লাখ ডলারের প্রক্রিয়াজাত খাদ্য, প্লাস্টিক, আসবাবপত্র, সুতার উপজাত, ফল-ফলের স্বাদযুক্ত পানীয় রপ্তানি করা হয়েছে। রপ্তানিকারকের সংখ্যা ছিল ১৬৬। এসব প্রতিষ্ঠান মূলত ভারতের উত্তরাঞ্চলের সাত রাজ্যের পাঁচটিতে বেশি রপ্তানি করে। বাংলাদেশের রপ্তানি বাজার হয়ে ওঠা এই পাঁচ রাজ্যে ঘুরপথে রপ্তানি বড় বাধা হিসেবে দেখছেন রপ্তানিকারকেরা।

ভারতের এই রাজ্যগুলোতে প্রাণের বড় বাজার তৈরি হয়েছিল। এখন এই বাজার ধরে রাখা খুব কঠিন হবে। আমরা চাই না, ভারতীয় বা বাংলাদেশি ব্যবসায়ী কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হোক। দুই দেশের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা উচিত।প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী

এই পাঁচ পণ্যের বড় রপ্তানিকারক প্রাণ-আরএফএল গ্রুপ। অনেক বছর ধরে ভারতের উত্তরাঞ্চলের সাত রাজ্যে প্রাণের বড় বাজার তৈরি হয়েছে। গত অর্থবছরে গ্রুপটি ভারতে পাঁচ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে। এর মধ্যে ৬৮ শতাংশ বা ৩ কোটি ৩৮ লাখ ডলারের পণ্য নেওয়া হয়েছে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা স্থলপথ দিয়ে। নিষেধাজ্ঞার পর গতকাল রোববার বুড়িমারী-চেংড়াবান্ধা স্থলপথে প্রাণের ১৭ ট্রাক পণ্যের চালান আটকে গেছে।

জানতে চাইলে প্রাণ-আরএফএল গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আহসান খান চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘ভারতের এই রাজ্যগুলোতে প্রাণের বড় বাজার তৈরি হয়েছিল। এখন এই বাজার ধরে রাখা খুব কঠিন হবে। আমরা চাই না, ভারতীয় বা বাংলাদেশি ব্যবসায়ী কেউ ক্ষতিগ্রস্ত হোক। দুই দেশের মধ্যে গঠনমূলক আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যার সমাধান করা উচিত।’

আসবাব উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান হাতিলের ভারতে আসবাবের শোরুম রয়েছে। গত অর্থবছরে বেনাপোল ও বুড়িমারী স্থলপথে ভারতে সাড়ে ছয় লাখ ডলারের কাঠের আসবাব রপ্তানি করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে রপ্তানি করেছে ৮৭ শতাংশ। ভারতের নিষেধাজ্ঞায় রয়েছে বুড়িমারী-চেংড়াবান্ধা পথ।

হাতিলের চেয়ারম্যান সেলিম এইচ রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ভারতের বিধিনিষেধের কারণে আসবাব রপ্তানি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ, বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহন খরচ বেড়ে যাবে। তিনি আরও বলেন, গত ফেব্রুয়ারিতে ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয় আসবাব রপ্তানিতে ব্যুরো অব ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডের (বিআইএস) সনদ নেওয়া বাধ্যতামূলক করে। আগামী আগস্ট থেকে এটি কার্যকর হবে। এভাবে একের পর এক অশুল্ক বাধা যুক্ত হলে রপ্তানি কঠিন হয়ে পড়বে।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) সাবেক সদস্য ও বাণিজ্য বিশ্লেষক মোস্তফা আবিদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত ভারতের সাত রাজ্যে কোনো সমুদ্রবন্দর নেই। ভারতের বিধিনিষেধের কারণে ওই সব রাজ্যে কার্যত বাংলাদেশের রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে।বিকল্প পথে সময় ও খরচ বাড়বে

ভারতের সঙ্গে বৈদেশিক বাণিজ্যে স্থলপথই সবচেয়ে সুবিধাজনক। এ জন্য গত অর্থবছরে মোট রপ্তানির ৮১ শতাংশ স্থলপথ ব্যবহার করে নেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ট্রেড অ্যান্ড ট্যারিফ কমিশনের (বিটিটিসি) সাবেক সদস্য ও বাণিজ্য বিশ্লেষক মোস্তফা আবিদ খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত ভারতের সাত রাজ্যে কোনো সমুদ্রবন্দর নেই। ভারতের বিধিনিষেধের কারণে ওই সব রাজ্যে কার্যত বাংলাদেশের রপ্তানি বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ, বাংলাদেশের পক্ষে সমুদ্রবন্দর দিয়ে এবং পরে সড়কপথে ওই সব রাজ্যে রপ্তানি কঠিন।

ভারতের অরুণাচল প্রদেশ, আসাম, মণিপুর, মেঘালয়, মিজোরাম, নাগাল্যান্ড ও ত্রিপুরা ‘সেভেন সিস্টার্স’ নামে পরিচিত। এসব রাজ্য ভূবেষ্টিত। ভারতের মূল ভূখণ্ড থেকে পণ্য পরিবহনে জটিল ও দীর্ঘ পথ পাড়ি দিতে হয়। তবে বাংলাদেশের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে এসব রাজ্যের ভৌগোলিক অবস্থান। ফলে বাংলাদেশের জন্য ওই সব রাজ্যে পণ্য পাঠানো সহজ ও সাশ্রয়ী।

ভারতের নিষেধাজ্ঞার কারণে নভো সেবা বন্দর দিয়ে পণ্য রপ্তানি করতে হলে প্রথমে চট্টগ্রাম থেকে শ্রীলঙ্কার কলম্বো বন্দরে নিতে হবে। সেখান থেকে আরেক জাহাজে নভো সেবা বন্দরে নিতে হবে। কলম্বো বন্দরে জট থাকায় এখন এই পথে কনটেইনার পরিবহনে স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণের বেশি সময় লাগে। খরচ বেশি হলে ভারতের ক্রেতারা বাংলাদেশ থেকে পণ্য নিতে নিরুৎসাহিত হতে পারেন বলে রপ্তানিকারকেরা জানিয়েছেন।

জানতে চাইলে সুইজারল্যান্ডভিত্তিক জাহাজ কোম্পানি মেডিটেরানিয়ান শিপিং কোম্পানির হেড অব অপারেশন অ্যান্ড লজিস্টিকস আজমীর হোসেন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে চট্টগ্রাম থেকে কলম্বো হয়ে নভো সেবা বন্দরে কনটেইনার পরিবহনে এক সপ্তাহ সময় লাগার কথা। তবে কলম্বোতে জট থাকায় এখন দুই থেকে তিন সপ্তাহ সময় লাগছে।

নভো সেবা ছাড়া কলকাতা বন্দর দিয়ে বাংলাদেশের পণ্য রপ্তানির সুযোগ রাখা হয়েছে। চট্টগ্রাম-কলকাতা পথে খুবই ছোট দুটি কনটেইনার জাহাজ চলাচল করে। এর মধ্যে একটি অনিয়মিত। এমভি শ্যামায়েল নামের আরেকটি জাহাজ অনিয়মিত চলাচল করে বলে জানিয়েছেন জাহাজটির স্থানীয় প্রতিনিধি আলভী লাইন লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাহাঙ্গীর হোসেন।

হঠাৎ করেই ভারত থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে, সাফটাসহ দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতার যেসব প্ল্যাটফর্ম রয়েছে সেগুলোতে সংলাপ হয় না। এসব প্ল্যাটফর্ম কার্যকর করা গেলে এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জগুলো নিষ্পত্তি করা সহজ।পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ ‘দুই দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে’

জানতে চাইলে নীতি গবেষণা সংস্থা পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান এম মাসরুর রিয়াজ প্রথম আলোকে বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের বাণিজ্যে শুল্ক ও অশুল্ক বাধা দুই দেশের জন্যই ক্ষতিকর। ভারত এখন বাংলাদেশ থেকে আমদানিতে যে বিধিনিষেধ আরোপ করেছে তাতে শুধু বাংলাদেশই নয়, ভারতীয় আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ও দেশটির বাংলাদেশি পণ্যের ভোক্তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। রপ্তানি বৈচিত্র্যের জন্য ভারতের বাজারও বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, ‘দুই দেশের নিজ নিজ স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বাণিজ্য বজায় রাখা এবং দ্বিপক্ষীয় ও আঞ্চলিক বাণিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ সম্প্রসারণ করা উচিত। আমরা আশা করব, ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করবে। কারণ, দেশ দুটি একে অপরের প্রতিবেশী, যা পরিবর্তন করার সুযোগ নেই।’

মাসরুর রিয়াজ আরও বলেন, হঠাৎ করেই ভারত থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত প্রমাণ করে, সাফটাসহ দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতার যেসব প্ল্যাটফর্ম রয়েছে সেগুলোতে সংলাপ হয় না। এসব প্ল্যাটফর্ম কার্যকর করা গেলে এ ধরনের পরিস্থিতিতে বাণিজ্যিক চ্যালেঞ্জগুলো নিষ্পত্তি করা সহজ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • কর ও দাম বাড়িয়ে তামাক করনীতি সংস্কারের দাবি
  • রাজ্যের পাওনা আটকে রাখায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তামিলনাড়ুর মামলা
  • চা রপ্তানির বাজারে বড় ব্র্যান্ড ‘সিলন’
  • সঠিক বরাদ্দ ও বাস্তবায়নই কৃষির ভবিষ্যৎ
  • যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রবাসী আয় পাঠাতে বসছে ৫ শতাংশ কর, কী প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে
  • ভারতের আমদানি বিধিনিষেধ: বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে কারা
  • আগামী বাজেটে করমুক্ত আয়সীমা বাড়ছে, শেয়ারবাজারে করছাড় আসতে পারে
  • ভারতের নিষেধাজ্ঞা: আখাউড়া স্থলবন্দরে রপ্তানি কমবে ৩০ শতাংশ
  • ভারতে বাংলাদেশের রপ্তানির সহজ পথ বন্ধ, বাজার হাতছাড়ার শঙ্কা