কঠোরভাবে নীতিমালা বাস্তবায়ন করা হোক
Published: 22nd, May 2025 GMT
যশোরের ভবদহ অঞ্চলজুড়ে দীর্ঘদিনের জলাবদ্ধতা মানবিক সংকটে রূপ নিয়েছে। বছরের পর বছর ধরে হাজার হাজার পরিবার পানিবন্দী অবস্থায় দিন কাটাচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে কৃষি, ভেঙে পড়ছে জীবিকা ও জনজীবনের স্বাভাবিকতা। অথচ এই সংকটের কেন্দ্রে রয়েছে অব্যবস্থাপনাপূর্ণ মৎস্যঘেরশিল্প। এই শিল্প কার্যকরভাবে কোনো নীতিমালার আওতায় আসেনি। এটি ছাড়া কোনোভাবেই ভবদহের সংকট দূর করা সম্ভব নয়, তা আমাদের নীতিনির্ধারকদের বুঝতে হবে।
সরকার ২০১৯ সালে যথাযথভাবে একটি মৎস্যঘের স্থাপন ও ব্যবস্থাপনা নীতিমালা প্রণয়ন করেছিল। কিন্তু সেই নীতিমালা বাস্তবায়িত হয়নি বললেই চলে। সরকারি হিসাবেই দেখা যাচ্ছে, ভবদহ এলাকায় প্রায় ১৮ হাজার মাছের ঘেরের মধ্যে মাত্র ৩২টি ঘের নিবন্ধিত। অধিকাংশ ঘেরমালিক নীতিমালার অস্তিত্বই জানেন না। এটি শুধু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অক্ষমতা নয়, চরম উদাসীনতার প্রমাণও বটে।
নীতিমালায় বলা আছে, ঘেরের আয়তন সর্বোচ্চ ১৫ হেক্টর হবে (সমবায় ভিত্তিতে ৫০ হেক্টর)। বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, ঘেরের আয়তন ২০০ হেক্টরের বেশি। ঘেরের মাঝখানে পানিনিষ্কাশনের ব্যবস্থাও নেই, বরং একের পর এক বাঁধ দিয়ে প্রাকৃতিক জলপ্রবাহ রুদ্ধ করা হয়েছে। ঘেরমালিকেরা নদীর পাড়, সরকারি খাল—এমনকি সড়কের পাশে পর্যন্ত ঘেরের বাঁধ গড়ে তুলেছেন। এভাবে প্রাকৃতিক এবং কৃত্রিম উভয় ধরনের পানিনিষ্কাশনের পথ বাধাগ্রস্ত হওয়ায় ভবদহ অঞ্চলের জলাবদ্ধতা আরও ভয়াবহ রূপ নিয়েছে।
এই পরিস্থিতির জন্য শুধু ঘেরমালিকেরা নন, প্রশাসনের ব্যর্থতা এবং রাজনৈতিক প্রশ্রয়ও দায়ী। প্রশ্ন ওঠে, স্থানীয় প্রশাসন, পানি উন্নয়ন বোর্ড বা মৎস্য অধিদপ্তরের কাজটা কী? ভবদহের মানুষের দুর্দশা লাঘবে কতটা আন্তরিকতা তারা দেখাতে পেরেছে?
ভবদহের জলাবদ্ধতা নিয়ে প্রথম আলো একের পর এক প্রতিবেদন ও সম্পাদকীয় প্রকাশ করে গেছে বিগত কয়েক বছরে। রাষ্ট্র ও সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা ওই এলাকা অনেকবারই পরিদর্শন করেছেন। ভবদহের সংকটের বিষয়টি কারোরই অজানা নয়। এরপরও এ সংকটের নিরসন না হওয়াটা খুবই দুঃখজনক।
সরকারকে অবশ্যই কঠোরভাবে নীতিমালা বাস্তবায়ন করতে হবে। এ ক্ষেত্রে যা করণীয় তা হচ্ছে, অবিলম্বে অবৈধ ঘের চিহ্নিত করে অপসারণ করতে হবে, নিবন্ধনবিহীন ঘের বন্ধে অভিযান চালাতে হবে এবং প্রাকৃতিক জলপ্রবাহ পুনরুদ্ধারে নদী ও খালের বাঁধ সরাতে হবে।
সরকারের প্রতি জোর আহ্বান থাকবে, ভবদহকে উদ্ধার করুন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
গণতন্ত্রের পথে সংকট দেখছেন তারেক
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, জাতীয় নির্বাচন নিয়ে জনমনে সংশয় গণতন্ত্রের পথে সংকট তৈরি করতে পারে। নির্বাচনে অপপ্রচার ও অপকৌশল দৃশ্যমান হচ্ছে। দল ক্ষতিগ্রস্ত হলেও গণতন্ত্রের স্বার্থে ছাড় দিতে বিএনপি প্রস্তুত। ৩০০ আসনে দলীয় প্রার্থী মনোনয়ন প্রায় চূড়ান্ত। নারী ও শিশুদের নিরাপত্তাহীনতার বিষয়ে তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। প্রবাসে বিএনপির সদস্যপদ নবায়ন কার্যক্রমের অনলাইন পেমেন্ট গেটওয়ে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।