নির্মাণের দুই মাসেই কেন সীতাকুণ্ডের ফেরিঘাট সড়কের এই হাল
Published: 2nd, June 2025 GMT
নির্মাণের মাত্র দুই মাসের মাথায় ঢেউয়ের আঘাতে বিধ্বস্ত হয়েছে চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া ফেরিঘাটের অ্যাপ্রোচ সড়কের একাংশ। ৭০০ মিটার দীর্ঘ এই সড়কের প্রায় ১০০ মিটারই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সড়কটি এখন যান চলাচলের অনুপযোগী।
বঙ্গোপসাগরের নিম্নচাপের প্রভাবে তিন দিন ধরেই সাগর উত্তাল। বড় বড় ঢেউ এসে আছড়ে পড়ছে সড়কে। ঢেউয়ের ধাক্কায় ৭০০ মিটার সড়কের সাগরের দিকের বেশির ভাগ অংশ জোয়ারের পানিতে ডুবে গেছে। ঢেউয়ের প্রবল আঘাতে সড়কটির পশ্চিমাংশের ইট খুলে পড়েছে। সরে গেছে বিভিন্ন স্থানে ব্লক। জোয়ারের প্রচণ্ড ঢেউয়ে ডুবে গেছে ঘাটের ২ নম্বর পন্টুন।
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) জানিয়েছে, সাগরের নিম্নচাপ সৃষ্টির পর তিন দিন ধরে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এখন সড়কের উপরিতল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় সেটি সংস্কার করা পর্যন্ত ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হবে।
গত ২৪ মার্চ সরকারের পাঁচজন উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টার দুই বিশেষ সহকারীকে সঙ্গে নিয়ে বাঁশবাড়িয়া-গুপ্তছড়া ফেরিঘাটের উদ্বোধন করেন নৌপরিবহন উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.
সরেজমিনে দেখা যায়, ফেরিঘাটের অ্যাপ্রোচ সড়কের এক মাথায় দুটি পন্টুন দিয়ে দুটি ঘাট তৈরি করা হয়েছে। ফেরিঘাট দুটির নাম দেওয়া হয়েছে ফেরিঘাট-১ ও ফেরিঘাট-২। ১ নম্বর ঘাট থেকে ২ নম্বর ঘাটমুখী সড়কের ব্লক সরে গেছে। উপরিতলের ইট সরে গিয়ে মাটি ধুয়ে গেছে। অ্যাপ্রোচ সড়কের মোট ১০০ মিটারের বেশি সড়ক ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে জিও ব্যাগ দৃশ্যমান হয়েছে। সড়কটির উপরিতলে ইট এমনভাবে ছড়িয়ে–ছিটিয়ে রয়েছে, গাড়ি চলাচলের কোনো সুযোগ নেই।
সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর স্থানীয় বাসিন্দারা সড়কটি দেখতে যান। দুদিন আগে সেখানে পর্যটক ও সন্দ্বীপের মানুষের আনাগোনা ছিল। সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় অনেকেই ছবি ও ভিডিও তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিচ্ছেন।
বিআইডব্লিউটিএর উপপরিচালক মো. কামরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, প্রবল জোয়ারে তাদের একটি পন্টুন ডুবে গেছে। সেটি উদ্ধারের কাজ শুরু করেছেন। এ ছাড়া অ্যাপ্রোচ সড়কটি ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সেটি এখন গাড়ি চলাচলে উপযোগী নয়। সড়কের উপরিতলের ইট সরে গিয়ে কিছু অংশের মাটি ধুয়ে গেছে। ১ নম্বর ঘাটের পশ্চিম পাশের ব্লক সরে গেছে। সড়কটি সংস্কার করার পর ফেরি চলাচল শুরু হবে বলে জানান।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের চট্টগ্রামের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মোসলেম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, তিনি গত শুক্রবার ক্ষতিগ্রস্ত সড়ক পরিদর্শন করেছেন। সড়কটি নির্মাণ করেছে সেনাবাহিনীর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। সেনাবাহিনী কর্তৃপক্ষের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারাও সড়কটি পরিদর্শন করেছেন। বর্ষায় প্রবল ঢেউয়ের হাত থেকে কীভাবে সড়কটি টেকানো যায়, সে পরিকল্পনা করছেন। বিআইডব্লিউটিএ ও বিআইডব্লিউটিসি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে সড়কটি দ্রুত সংস্কার করবেন বলে জানান তিনি।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: সড়ক র
এছাড়াও পড়ুন:
মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প থেকে হবিগঞ্জকে ‘বাদ দেওয়ার চেষ্টার’ প্রতিবাদ
হবিগঞ্জ-লাখাই-নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়ক প্রশস্তকরণ প্রকল্প থেকে হবিগঞ্জ অংশ বাদ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে—এমন অভিযোগে মানববন্ধন করেছেন এলাকাবাসী। আজ মঙ্গলবার জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে এ কর্মসূচি পালিত হয়। এতে অংশ নেন হবিগঞ্জ সদর ও লাখাই উপজেলার ৮টি ইউনিয়নের শতাধিক বাসিন্দা।
হবিগঞ্জ সদর ও লাখাইবাসীর ব্যানারে বেলা একটার দিকে এই মানববন্ধন শুরু হয়।
এতে বক্তারা বলেন, সরাইল-নাসিরনগর-লাখাই-হবিগঞ্জ সড়ক প্রশস্তকরণে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে প্রায় ৬৬১ দশমিক ৮৮ কোটি টাকা ব্যয়ে একটি প্রকল্প নেওয়া হয়। কিন্তু নাসিরনগর থেকে সরাইল পর্যন্ত সড়কটির প্রশস্তকরণের কাজ শুরু হলেও হবিগঞ্জ অংশ প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়ার ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। অথচ সড়কটির উন্নয়ন হলে ঢাকা ও চট্টগ্রামের সঙ্গে সিলেট বিভাগের দূরত্ব কমবে প্রায় ৪০ কিলোমিটার। এতে যাতায়াত খরচ কমবে। এ ছাড়া সড়কের পাশে শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। কর্মসংস্থানের মাধ্যমে বেকারত্ব দূর হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে।
বক্তাদের দাবি, হবিগঞ্জ-লাখাই-নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়কটি হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কিশোরগঞ্জের কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যাতায়াত সহজ করেছে। প্রতিদিন ৫০ হাজারের বেশি যানবাহন ও কয়েক লাখ মানুষ এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেন। চার জেলার মধ্যে আর্থসামাজিক, কৃষি ও শিল্পসংশ্লিষ্ট যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ সড়কের উন্নয়ন হলে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের সঙ্গে বিকল্প ও কার্যকর সংযোগ গড়ে তোলার মাধ্যমে আঞ্চলিক অর্থনীতি বেগবান হবে। পণ্য পরিবহন সহজ হবে। স্থানীয় জনগণের ভ্রমণ ব্যয় ও সময় সাশ্রয়ী হবে। সেই সঙ্গে সড়কে নিরাপত্তাও বৃদ্ধি পাবে। কিন্তু সড়কটির নাসিরনগর-সরাইল অংশে কাজ শুরু হলেও হবিগঞ্জ-লাখাই অংশ প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়ার প্রক্রিয়ার চেষ্টা চলছে। যদি প্রকল্পের হবিগঞ্জ-লাখাই অংশ প্রকল্প থেকে বাদ দেওয়া হয়, তাহলে তীব্র আন্দোলন গড়ে তোলা হবে। প্রয়োজন ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও রেলপথ অবরোধ করে ঢাকার সঙ্গে সিলেট বিভাগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হবে।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন হবিগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মিজানুর রহমান চৌধুরী, ইসলাম তরফদার ও এনামুল হক, হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক গোলাম মোস্তফা রফিক, হবিগঞ্জ সদর উপজেলা বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান, হবিগঞ্জ পৌর বিএনপির সভাপতি তাজুল ইসলাম চৌধুরী, জেলা কৃষক দলের আহ্বায়ক মফিজুর রহমান, জেলা মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দা লাভলী সুলতানা, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি শাহ রাজীব আহমেদ প্রমুখ।