গাজীপুরের কালিয়াকৈরে একটি অ্যাগ্রো ফুড তৈরির কারখানায় ডাকাতির অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাতে উপজেলার কালামপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। ওই কারখানার ১৯ জন শ্রমকিকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে জোর করে পানিতে মেশানো নেশাজাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অচেতন করার পর মালামাল লুট করা হয় বলে জানিয়েছেন ভুক্তভোগীরা।

কারখানা কর্তৃপক্ষ ও পুলিশ জানায়, উপজেলার কালামপুর এলাকায় সোহাগ অ্যাগ্রো ফুড লিমিটেড নামের অটো রাইস মিল কারখানায় রোববার দিবাগত মধ্যরাতে দেয়াল টপকে ২৫-২৬ জনের একদল ডাকাত প্রবেশ করে। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা পিস্তলসহ দেশীয় অস্ত্রের মুখে কারখানার নিরাপত্তাকর্মীকে জিম্মি করে হাত-পা ও মুখ বেঁধে একটি কক্ষে আটকে রাখে। অপর কক্ষে থাকা ১৯ জন শ্রমিককে গুলি করে হত্যার ভয় দেখিয়ে প্রথমে সবার হাত-পা বেঁধে মারধর করে।

পরে পানির সঙ্গে নেশাজাতীয় দ্রব্য মিশিয়ে জোর করে তাঁদের পান করানো হয়। কেউ পানি পান না করলে তাঁদের এলোপাতারি মারধর করা হয়। পরে ডাকাত দলের সদস্যরা কারখানার অফিস থেকে এক লাখ টাকা, দুটি কম্পিউটার, একটি ল্যাপটপ, মেশিনারি তার, কয়েল, মোটর, মূল্যবান মালামাল লুট করে পালিয়ে যায়। সোমাবর সকালে অন্য শ্রমিকেরা কারখানায় গিয়ে বিষয়টি টের পেয়ে ভুক্তভোগী শ্রমিকদের উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্যকমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।

কারখানার নিরাপত্তাকর্মী আবু হানিফ বলেন, রাত দুইটার দিকে দুজন লোক দেয়াল টপকে ভেতরে আসে। তিনি কারণ জিজ্ঞাসা করামাত্রই আরও ৫-৬ জন এসে তাঁর হাত-পা মুখ বেঁধে একটি কক্ষে আটকিয়ে রাখে।

কারখানার ভুক্তভোগী শ্রমিক সফিকুল ইসলাম বলেন, ‘ডাকাতদের দেওয়া পানি খেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে জ্ঞান হারিয়ে ফেলি। তারপর কিছু বলতে পারব না।’

সোহাগ ফুড অ্যাগ্রো লিমিটেডের ব্যবস্থাপক রাইসুল ইসলাম বলেন, ডাকাত দলের সদস্যরা নগদ টাকাসহ ৬৫ থেকে ৭০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে।

কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল মান্নান বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ডাকাতদের গ্রেপ্তার এবং লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারের চেষ্টা চলছে।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

টেকনাফে পাচারকারীর আস্তানা থেকে ৭ নারী-পুরুষ উদ্ধার, আটক ৩

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ার গহিন পাহাড়ে পাচারকারীদের আস্তানা থেকে ৭ নারী-পুরুষকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে তাঁদের ওই আস্তানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। গতকাল রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এ সময় পাচারের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া গ্রামের আবদুর রহমান (৩২), হামিদ হোসেন (২৮) এবং পার্শ্ববর্তী বড় ডেইল গ্রামের হেলাল উদ্দীন (৩০)।

অভিযানের বিষয়ে আজ সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে কোস্টগার্ড। টেকনাফের কেরনতলীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাউদ্দিন রশিদ তানভীর। তিনি বলেন, পুরুষদের চাকরি এবং নারীদের বিয়ের আশ্বাসে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য বাহারছড়ার ওই আস্তানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁদের আটকে রেখে টাকা আদায়ের চেষ্টা চলছিল। উদ্ধার হওয়া সবার বাড়ি উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং এলাকায়।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাউদ্দিন রশিদ তানভীর বলেন, অভিযানে জব্দ হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র এবং আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ভবিষ্যতেও সাগরপথে মানব পাচার রোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ