ইসরায়েলে বন্দুক হামলায় নিহত ৫, আহত ১৫
Published: 8th, September 2025 GMT
ইসরায়েলের জেরুজালেম শহরের রামোট জংশন প্রবেশমুখে বন্দুক হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় কমপক্ষে পাঁচজন নিহত এবং ১৫ জন আহত হয়েছেন। আহতদের মধ্যে সাতজনের অবস্থা গুরুতর।
স্থানীয় সময় সোমবার (৮ সেপ্টেম্বর) এ হামলা হয় বলে জানিয়েছে জরুরি সেবা সংস্থা মাগেন ডেভিড আদম (এমডিএ)। খবর টাইমস অব ইসরায়েলের।
আরো পড়ুন:
হামাসকে শেষবারের মতো সতর্ক করলেন ট্রাম্প
বেলজিয়াম ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি ও ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে
এমডিএ জানিয়েছে, ৬২ নম্বর বাসে উঠে যাত্রীদের ওপর গুলি চালাতে শুরু করে। পরে হামলায় জড়িত দুইজনকে নিষ্ক্রিয় করা হয়। এই ঘটনার পর জেরুজালেমের ভেতরে এবং বাইরের সব প্রবেশ ও বেরনোর পথ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
জেরুজালেমের উত্তর প্রবেশপথের একটি প্রধান মোড়ে, পূর্ব জেরুজালেমে অবস্থিত ইহুদি বসতিতে যাওয়ার পথে গুলি চালানোর ঘটনাটি ঘটে।
এমডিএ প্যারামেডিক নাদাভ তাইব বলেন, “আমরা গুলিবিদ্ধ হওয়ার খবর শোনার সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছি। আমরা যখন পৌঁছাই, তখন আমরা রাস্তায়, রাস্তার পাশে এবং বাস স্টপের কাছে ফুটপাতে অচেতন অবস্থায় মানুষ পড়ে থাকতে দেখেছি। প্রচুর ধ্বংসযজ্ঞ, মেঝেতে ভাঙা কাঁচ ছিল। আমরা আহতদের চিকিৎসা প্রদান শুরু করেছি এবং বর্তমানে আমরা আহতদের চিকিৎসা এবং হাসপাতালে স্থানান্তর অব্যাহত রেখেছি।”
চ্যানেল ১২-এর প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জেরুজালেমের রামোট জংশনে ভয়াবহ গুলি চালানো দুই সন্ত্রাসীকে একজন সৈন্য এবং সশস্ত্র এক তরুণ হারেদির গুলিতে হত্যা করা হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, জেরুজালেমের রামোট জংশনে ভয়াবহ গুলি চালানো দুই সন্ত্রাসীকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন নিরাপত্তা কর্মকর্তা এবং একজন বেসামরিক ব্যক্তি পাল্টা গুলি চালিয়ে হত্যা করেছে। হামলাকারীদের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এক বিবৃতিতে পুলিশ আরো জানিয়েছে, ডেপুটি পুলিশ প্রধান আভশালোম পেলেদ বিশাল পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন। সম্ভাব্য বিস্ফোরক পরীক্ষা করার জন্য পুলিশ স্যাপাররাও ঘটনাস্থলে কাজ করছেন।
ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আজ সকালে জেরুজালেমের রামোট জংশনে সন্ত্রাসী হামলার পর প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু বর্তমানে নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সাথে ‘পরিস্থিতি মূল্যায়ন’ করছেন।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ইসর য় ল ইসর য় ল
এছাড়াও পড়ুন:
নামতে গেলেই চালক বাস টান দিচ্ছিলেন, পরে লাফিয়ে নামেন
‘“এ সকল নষ্ট মাইয়াদের জন্য বাসের পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায়। যা যা বাস থেকে নেমে যা নষ্ট মাইয়াছেলে”—বাস কন্ডাক্টরের এই মন্তব্য শোনার পর নিজের ওপর আর নিয়ন্ত্রণ রাখতে পারিনি।’ কথাগুলো বলছিলেন বাসে হেনস্তার শিকার ওই তরুণী। আজ প্রথম আলোর সঙ্গে মুঠোফোনে দীর্ঘ আলাপে তিনি সেদিনের ঘটনার আদ্যোপান্ত জানান। বললেন, ঘটনার সময় বাসে একজন মানুষও প্রতিবাদ না করায় কষ্ট পেয়েছেন। যিনি এ ঘটনার ভিডিও করেছিলেন, তাঁর কাছ থেকেও কটু কথা শুনতে হয়েছিল। এমনকি তিনি বাস থেকে নামতে গিয়েও পারছিলেন না। যতবার নামার চেষ্টা করেন, চালক বাস টান দিচ্ছিলেন।
তবে দৃঢ়তার সঙ্গে এই তরুণী জানিয়েছেন, এই হেনস্তার ঘটনা তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারবে না। তিনি প্রতিবাদ করে যাবেন।
জুতা হাতে বাস কন্ডাক্টরের আচরণের প্রতিবাদ জানানোর ওই ঘটনা ঘটে গত ২৭ অক্টোবর। বাসের এক ব্যক্তি ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করলে তা নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়। গত বৃহস্পতিবার রমজান পরিবহন নামের বাসের হেনস্তাকারী কন্ডাক্টর নিজাম উদ্দিনকে (৪৫) গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় তরুণীর এজাহারের পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্র বাদী হয়ে গতকাল শুক্রবার মামলা করে। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১০ ধারায় (যৌন নিপীড়নের অভিযোগ) মামলাটি করা হয়েছে।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছিল, বাসের সামনের আসনে বসা এক ব্যক্তির কোনো একটি মন্তব্য নিয়ে এক তরুণী তীব্র ক্ষোভে ফেটে পড়লেন। তিনি তেড়ে যান লোকটির দিকে। ওই সময় লোকটি আসন ছেড়ে উঠে তরুণীকে চড় মারেন। একপর্যায়ে দুজন জুতা খুলে দুজনের দিকে তুলে ধরেন। সে সময় ওই ব্যক্তি তরুণীকে আঘাত করেন এবং ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। ওই ব্যক্তি এরপর বারবার তরুণীর গায়ে ধাক্কা মারেন ও আঘাত করার চেষ্টা করেন। তরুণী চিৎকার করে বলছিলেন, ‘তুই আমার পোশাক তুলে কেন কথা বলবি?’ এ সময় সামনের দিকে থাকা দুই নারী ও একজন পুরুষ যাত্রী ছাড়া আর কেউ আঘাত করা ব্যক্তিটিকে থামানোর চেষ্টা করেননি, প্রতিবাদ করেননি।
ওই তরুণী প্রথম আলোকে জানান, তাঁর মা–বাবা ও ভাই–বোনরা চাঁদপুরে থাকেন। বাবার দোকান রয়েছে। ভাই–বোনদের মধ্যে তিনি সবার বড়। চাঁদপুর থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পাস করার পর এখন ঢাকায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন বিভাগে পড়ছেন। পড়াশোনার খরচ চালানোর পাশাপাশি বাবাকে সহায়তা করতে নিজেও টুকটাক কাজ করেন। হাতের কাজ, ছবি আঁকার কাজ করেন, টেলিভিশন চ্যানেলে মাঝেমধ্যে কিছু অনুষ্ঠান উপস্থাপনাও করেন। রাজধানীর বছিলা এলাকায় কয়েকজন মিলে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে থাকেন।
‘শুরুতে আমি উত্তেজিত হইনি’
সেদিনের ঘটনা বলতে গিয়ে তরুণী বলেন, তিনি মুঠোফোন ঠিক করতে হাতিরপুলে মোতালিব প্লাজায় গিয়েছিলেন। বাসায় ফেরার জন্য সেখান থেকে ধানমন্ডি–১৫ নম্বর বাসস্ট্যান্ডে আসেন এবং রমজান পরিবহনের ওই বাসটিতে ওঠেন। তখন বেলা দুইটা কি আড়াইটা। তিনি বাসে উঠে মাঝামাঝি জায়গায় একটি আসনে বসেন। বাস কন্ডাক্টর তাঁর কাছে এসে ভাড়া চাইলে ‘স্টুডেন্ট’ (শিক্ষার্থী) জানিয়ে তিনি অর্ধেক ভাড়া দেন। তরুণী দাবি করেন, বাস কন্ডাক্টর তখন বলে ওঠেন, ‘চেহারা আর পোশাক দেখলে তো মনে হয় না স্টুডেন্ট!’ তখন তিনি রাগ হলেও কন্ডাক্টরকে ‘আপনি’ বলে সম্বোধন করে বলেন, ‘স্টুডেন্টের সঙ্গে পোশাকের কী সম্পর্ক? আপনি এসব কী ধরনের কথা বলছেন? ওই সময় কিছুটা কথা-কাটাকাটি হয়। শুরুতে আমি উত্তেজিত হইনি।’
রাজধানীর বছিলায় বাসের মধ্যে পোশাক নিয়ে কটূক্তির সাহসী প্রতিবাদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তরুণীর প্রশংসা করে এমন চিত্র ফেসবুকে পোস্ট করা হয়েছে