ফরিদপুরে বাক্‌ ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী তরুণীকে (২৩) ধর্ষণের দায়ে এক ব্যক্তিকে আমৃত্যু কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি তাঁকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক জেলা ও দায়রা জজ শামীমা পারভীন এই আদেশ দেন।

দণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম ইসমাইল শেখ (৪৭)। তিনি ফরিদপুর সদর উপজেলার বাসিন্দা। রায় ঘোষণার সময় তিনি আদালতে উপস্থিত ছিলেন। পরে তাঁকে পুলিশের পাহারায় কারাগারে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণ সূত্রে গেছে, ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে বাক্‌ ও বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী ওই তরুণীকে পাটখেতে নিয়ে ধর্ষণ করেন আসামি ইসমাইল শেখ, তবে ওই তরুণী বাড়িতে গিয়ে কিছুই জানাতে পারেননি। কয়েক মাস পরে পরিবারের সদস্যরা বুঝতে পারেন ওই তরুণী অন্তঃসত্ত্বা। এরপর ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করে দেখা যায়, তিনি সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। পরে ৬ জুন তিনি মৃত সন্তান প্রসব করেন। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় এক ব্যক্তির পাটখেতে নিয়ে ওই প্রতিবন্ধী তরুণীকে নিয়ে ধর্ষণ করেছিলেন ইসমাইল। ওই খেতের মালিক ঘটনাটি তরুণীর পরিবারকে জানান এবং ডিএনএ পরীক্ষার মাধ্যমে বিষয়টি প্রমাণিত হয়। এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে সালিস হলেও কোনো সুরাহা হয়নি।

পরে ২০২৩ সালের ৯ জুন প্রতিবন্ধী তরুণীর মা বাদী হয়ে ইসমাইলকে একমাত্র আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। চলতি বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি ইসমাইল শেখকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয় পুলিশ।

এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি (পিপি) গোলাম রব্বানী ভূঁইয়া বলেন, ‘ওই নারী কথা বলতে পারেন না। অপরাধী ভেবে ছিল, সে নিরাপদে থাকবে। কিন্তু অপরাধ করলে আইনের মাধ্যমে যে এর সাজা পেতেই হবে, তা এই রায়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রায়টি একটি দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

টেকনাফে পাচারকারীর আস্তানা থেকে ৭ নারী-পুরুষ উদ্ধার, আটক ৩

কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়ার গহিন পাহাড়ে পাচারকারীদের আস্তানা থেকে ৭ নারী-পুরুষকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড। সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের উদ্দেশ্যে তাঁদের ওই আস্তানায় নিয়ে আসা হয়েছিল। গতকাল রোববার রাতে অভিযান চালিয়ে তাঁদের উদ্ধার করা হয়। এ সময় পাচারের সঙ্গে জড়িত অভিযোগে একটি দেশীয় আগ্নেয়াস্ত্রসহ তিনজনকে আটক করা হয়েছে।

আটক ব্যক্তিরা হলেন টেকনাফের বাহারছড়া ইউনিয়নের মারিশবুনিয়া গ্রামের আবদুর রহমান (৩২), হামিদ হোসেন (২৮) এবং পার্শ্ববর্তী বড় ডেইল গ্রামের হেলাল উদ্দীন (৩০)।

অভিযানের বিষয়ে আজ সোমবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে কোস্টগার্ড। টেকনাফের কেরনতলীতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে অভিযানের বিস্তারিত তুলে ধরেন লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাউদ্দিন রশিদ তানভীর। তিনি বলেন, পুরুষদের চাকরি এবং নারীদের বিয়ের আশ্বাসে সাগরপথে মালয়েশিয়ায় পাচারের জন্য বাহারছড়ার ওই আস্তানায় নিয়ে আসা হয়। সেখানে তাঁদের আটকে রেখে টাকা আদায়ের চেষ্টা চলছিল। উদ্ধার হওয়া সবার বাড়ি উখিয়া উপজেলার জালিয়াপালং এলাকায়।

লেফটেন্যান্ট কমান্ডার সালাউদ্দিন রশিদ তানভীর বলেন, অভিযানে জব্দ হওয়া আগ্নেয়াস্ত্র এবং আটক ব্যক্তিদের বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। ভবিষ্যতেও সাগরপথে মানব পাচার রোধে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ