আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল  বলেছেন, “দায়িত্ব শেষ করে যত তাড়াতাড়ি যেতে পারি বাঁচব।”

বৃহস্পতিবার (২৩ অক্টোবর) বিকেলে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমি মিলনায়তনে এক বিফ্রিংয়ে এই কথা বলেন তিনি।

আরো পড়ুন:

শ্রমজীবী মানুষের অধিকার আদায়ে স্মরণীয় দিন আজ: প্রধান উপদেষ্টা

প্রধান উপদেষ্টাকে বলেছি, এখনো গণভোটের সময় আছে

উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের বিষয়ে সম্প্রতি রাজনৈতিক দলগুলোর বক্তব্য নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নে আইন উপদেষ্টা বলেন, “উপদেষ্টা পরিষদে যারা এসেছেন তাদের প্রত্যেকের ব্যাপারে বিএনপি, জামায়াত এবং এনসিপির সম্মতি ছিল।”

হয়তো রাজনৈতিক কৌশলের অংশ হিসেবেই কিছু দিন পরপর রাজনৈতিক দলগুলো এমন অভিযোগ তোলে বলেন মন্তব্য করেন তিনি।

আসিফ নজরুল বলেন, “উনাদের সাথে যখন কথা বলি, আমাদের কার্যক্রমে উনারা খুশি আছেন, অ্যাট লিস্ট বিএনপি আর জামায়াতকে মনে হয়।”

আইন উপদেষ্টা জানান, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে শ্রম আইন অ্যামেন্ডমেন্ট ও নির্বাচন সংক্রান্ত আরপিও আইন চূড়ান্তভাবে পাস হয়েছে।

এছাড়া দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, জুলাই স্মৃতি জাদুঘর আইন ও সুপ্রিম কোর্ট সচিবালয় আইনের ব্যাপারে নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/সাইফ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর উপদ ষ ট ন উপদ ষ ট

এছাড়াও পড়ুন:

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে শিশুদের দূরে রাখতে পারবেন কি

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শিশুদের প্রবেশ নিষেধ করে আইন পাস করে বিশ্বে নজির গড়েছে অস্ট্রেলিয়া। তবে এই নিষেধাজ্ঞাকে বোকা বানিয়ে স্ন্যাপচ্যাটে ঢুকে পড়তে ১৩ বছর বয়সী ইসোবেলের ৫ মিনিট সময়ও লাগেনি।

ইসোবেলের মোবাইলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম স্ন্যাপচ্যাট থেকে একটি সতর্কবার্তা (নোটিফিকেশন) এসেছিল। বার্তাটি ছিল, তাকে প্রমাণ দিতে হবে যে তার বয়স ১৬ বছরের বেশি। না দিলে এই সপ্তাহে নতুন আইন কার্যকর হওয়ার পর তাকে স্ন্যাপচ্যাট থেকে বের করে দেওয়া হবে।

১০ ডিসেম্বর থেকে অস্ট্রেলিয়ায় নতুন আইন কার্যকর হতে চলেছে।

বিশ্বে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত ১০টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের একটি হচ্ছে স্ন্যাপচ্যাট।

ইসোবেল বিবিসিকে বলে, ‘আমি আমার মায়ের একটি ছবি নিয়ে এসে ক্যামেরার সামনে ধরতেই স্ন্যাপচ্যাট আমাকে ঢুকতে দিল। সে বলল, ‘আপনার বয়স যাচাই করার জন্য ধন্যবাদ।’

এই কিশোরী আরও বলে, ‘আমি শুনেছি, কেউ একজন বিয়ন্সের ছবি ব্যবহার করেছে।’

মা মেলকে দেখিয়ে ইসোবেল বলে, ‘আমি ওকে টেক্সট করি। বলি যে “এই মা, আমি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নিষেধাজ্ঞাকে পাশ কাটিয়ে গেছি। মা শুধু বলল “পাজি মেয়ে”।’

মেল বলেন, তিনি ইসোবেলকে কড়া নজরে রেখে টিকটক ও স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার করতে দেন। তিনি মনে করেন, লুকিয়ে ব্যবহার করার চেয়ে এটা ভালো। তবে নিষেধাজ্ঞাটি  বাবা–মায়েদের অনলাইনজগতের ঝুঁকি থেকে ছেলেমেয়েকে বাঁচাতে সাহায্য করবে বলে তাঁর আশা জেগেছিল।

আর মেল বললেন, মেয়ের কাণ্ডে তাঁর খুব হাসি পেয়েছিল। তিনি বলেন, ‘আমি যা ভেবেছিলাম, ঠিক সেটাই ঘটেছে।’

মেল বলেন, তিনি ইসোবেলকে কড়া নজরে রেখে টিকটক ও স্ন্যাপচ্যাট ব্যবহার করতে দেন। তিনি মনে করেন, লুকিয়ে ব্যবহার করার চেয়ে এটা ভালো। তবে নিষেধাজ্ঞাটি বাবা–মায়েদের অনলাইনজগতের ঝুঁকি থেকে ছেলেমেয়েকে বাঁচাতে সাহায্য করবে বলে তাঁর আশা জেগেছিল।

সে আশা এখন অনেকটাই ফিকে হয়ে গেছে। কারণ, অনেক বিশেষজ্ঞ এই নীতিমালার বাস্তবায়নের যোগ্যতা ও নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন করছেন। এমনকি শিশুরাও এমন কথা বলছে।

নিষেধাজ্ঞা কাজে প্রয়োগ করবে যে প্রযুক্তি, তার নির্ভরযোগ্যতা নিয়ে উদ্বেগ আছে। পাশাপাশি ভয় আছে, এটা নাজুক শিশুদের কোণঠাসা, একাকী করে ফেলতে পারে। অন্যদেরও অনলাইনের অন্ধকার এবং কম নিয়ন্ত্রিত অংশের দিকে ঠেলে দিতে পারে।

রাজধানী ক্যানবেরার নীতিনির্ধারণী মহলে, দেশজুড়ে ঘরে ঘরে এবং দুনিয়াজুড়ে প্রযুক্তি কোম্পানিগুলোর বোর্ডরুমে একটি উদ্বিগ্ন প্রশ্ন ঘুরছে—এটা কি সত্যিই কাজ করতে চলেছে?

‘অনলাইনে শিশুদের নিরাপত্তা নিয়ে বাবা–মায়েরা খুবই উদ্বিগ্ন’

অস্ট্রেলিয়ায় এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া দুষ্কর, যিনি মনে করেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম কোম্পানিগুলো ব্যবহারকারীদের—বিশেষ করে শিশুদের—সুরক্ষার জন্য যথেষ্ট ব্যবস্থা নিচ্ছে; বরং ব্যবহারকারীদের প্রতিবাদে কেউই কান দেয় না।
পাঁচ সন্তানের বাবা এবং স্মার্টফোনবিরোধী আন্দোলনকর্মী ড্যানি এলাচি বিবিসিকে বলেন, ‘প্রযুক্তি কোম্পানিগুলো নিজেদের মুনাফা বাঁচানোর বাইরে আর কিছু করবে—এ বিশ্বাস আমাদের বিন্দুমাত্র নেই। শিশুদের কল্যাণকে তারা গুরুত্ব দেয়—এমনটা দেখিয়ে দেওয়ার অনেক সুযোগ তাদের ছিল। কিন্তু তারা প্রতিটি ক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে।’

এমা মেসন গত মাসে জাতিসংঘে বিশ্বনেতাদের কাছে বিস্তারিত বলেছেন, কীভাবে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হেনস্তা বা বুলিংয়ের শিকার হয়ে তাঁর ১৫ বছর বয়সী মেয়ে শেষ পর্যন্ত আত্মহত্যা করেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী বুলিং।

আমি শুনেছি, কেউ একজন বিয়ন্সের ছবি ব্যবহার করেছে।ইসোবেল

এমা বিশ্বনেতাদের প্রশ্ন করেছিলেন, ‘আর কত টিলিকে মরতে হবে?’

এদিকে অস্ট্রেলিয়ার অনলাইন নিরাপত্তাবিষয়ক প্রধান কর্মকর্তাসহ কয়েকজন বিশেষজ্ঞ বলছেন, শিশুদের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রবেশ নিষিদ্ধ করাটা কোনো সমাধান নয়।

২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ এ আইন প্রণয়নের ঘোষণা দেন। সে সময় তিনি প্রতিশ্রুতি দেন, শিশুদের কোনো ধরনের শাস্তি দেওয়া হবে না।

মেটা ও স্ন্যাপচ্যাট অপ্রাপ্তবয়স্ক সন্দেহভাজন ব্যবহারকারীদের শনাক্ত করতে ইতিমধ্যে ‘ফেস স্ক্যান’ পদ্ধতি চালু করেছে

সম্পর্কিত নিবন্ধ