দক্ষিণ কোরিয়া: সন্তান লালন–পালনের চাপেও রেকর্ড কর্মসংস্থানে নারী
Published: 23rd, November 2025 GMT
বিয়ের পর সন্তান লালন–পালনের কারণে নারীদের শ্রমবাজার থেকে সরে যাওয়ার প্রবণতা কমছে দক্ষিণ কোরিয়ায়। দেশটিতে ২০২৫ সালের প্রথমার্ধে ১৮ বছরের নিচে সন্তান থাকা বিবাহিত নারীদের কর্মসংস্থানের হার সর্বোচ্চ হয়েছে। একই সময়ে ক্যারিয়ারবিরতি (চাকরি ছেড়ে দেওয়া) নেওয়া নারীর সংখ্যাও নেমেছে সর্বনিম্ন পর্যায়ে।
দেশটির জাতীয় ডেটা অফিস ২০ নভেম্বর প্রকাশিত এক জরিপে জানায়, চলতি বছরের প্রথমার্ধে নাবালক সন্তানসহ ১৫ থেকে ৫৪ বছর বয়সী বিবাহিত নারীদের ক্যারিয়ারবিরতির হার ২১ দশমিক ৩ শতাংশ, যা গত বছরের তুলনায় ১ দশমিক ৪ শতাংশ কম। ২০১৪ সালে এই পরিসংখ্যান অর্থাৎ তথ্য সংগ্রহ শুরুর পর এটি সর্বনিম্ন হার। চাকরি ছাড়ার কারণ হিসেবে বিবাহ, গর্ভধারণ, সন্তান জন্ম, শিশুর যত্নসহ পরিবারকেন্দ্রিক বিষয়গুলো ছিল।
সন্তান থাকুক বা না থাকুক—সব বিবাহিত নারী মিলিয়ে ক্যারিয়ারবিরতিতে থাকা নারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১১ লাখ ৫ হাজার, যা গত বছরের তুলনায় ১ লাখ কম। এ ক্ষেত্রে হার কমে ১৪ দশমিক ৯ শতাংশে নেমেছে, যা ২০১৪ সালের পর সর্বনিম্ন।
আরও পড়ুনজুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে বিশাল নিয়োগ, পদ ১১৫২১৩ ঘণ্টা আগেকোন বয়সে ক্যারিয়ারবিরতি সবচেয়ে বেশি ছবি: ফ্রিপিক.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
সাকিবকে ছাড়িয়ে উইকেট শৃঙ্গে তাইজুল
ঢাকা টেস্টে ৫ উইকেটের অপেক্ষায় ছিলেন তাইজুল ইসলাম। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন তাইজুল। দ্বিতীয় ইনিংসের শুরুতেই তার শিকার ২ উইকেট। সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ৭ উইকেট।
তাতেই বিরাট এক কীর্তি গড়েছেন বাঁহাতি স্পিনার। টেস্টে বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেটের তালিকায় সাকিব আল হাসানকে সরিয়ে এখন শীর্ষে তাইজুল। সাকিবের উইকেট ২৪৬টি। শৃঙ্গে উঠা তাইজুলের পকেটে ২৪৮ উইকেট।
আরো পড়ুন:
শততম টেস্ট: সেঞ্চুরি ও ফিফটিতে পন্টিংয়ের পাশে মুশফিকুর
৩ উইকেটে ৮৮ রান তুলে চা বিরতিতে আয়ারল্যান্ড
২০১৪ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজে তার টেস্ট অভিষেক। ক্যারিবীয়ান দ্বীপপুঞ্জে প্রথম ম্যাচেই বাজিমাত করে পেয়ে যান ফাইফার। অভিষেকের আগে ওই বছর ঘরোয়া ক্রিকেটে ২২.৭ গড়ে ৫৫ উইকেট নিয়েছিলেন তাইজুল। এছাড়া ‘এ’ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে দুটি চারদিনের ম্যাচে তার শিকার ছিল ৯ উইকেট।
কখনো সাকিবের অনুপস্থিতিতি, কখনো সাফল্যের পার্শ্ব-বোলার হিসেবে তাইজুল বিবেচিত হয়ে আসছিলেন। নায়ক হয়েও থাকতেন আড়ালে। পাদপ্রদীপের আলো বাইরে। সাবেক কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংকে তো একবার বলেওছিলেন, ‘‘আমাদের আরেকজন ওয়ার্ল্ড ক্লাস স্পিনার আছে সাকিব, যে তাইজুলের আগে থাকে। তাই তাইজুল সবসময় সামনে থাকে না। কিন্তু রেকর্ড তার পক্ষ কথা বলছে। আপনারা হয়ত সে ভালো করলেই শুধু কথা বলেন।’’
২০১৪ থেকে ২০২৫ সময় গড়িয়েছে অনেক। তাইজুলও নিজের অবস্থান করেছেন শক্তপোক্ত। তবে আড়াল থেকে তাইজুল আলোতে আসতে পেরেছেন শেষ কয়েক বছরই হলো। বিশেষ করে ২০১৭ সালের পর থেকে সাকিব যখন টেস্টে অনিয়মিত, তাইজুল প্রধানতম স্পিনার হিসেবে নিয়মিত খেলে আসছিলেন।
তাইজুলের অভিষেকের আগে সাকিব ৩৪ টেস্ট খেলেছেন। তার নেওয়া ২৪৬ উইকেটের ১২২টিই ওই সময়ে পেয়েছিলেন। তাইজুলের আগমণের পর বাকি ১২৪ উইকেট পেয়েছেন ৩৭ টেস্টে। সেই সাকিবকে এখন টেস্টে ছাড়িয়ে উইকেট-পর্বতের চূড়ায় তাইজুল।
বাংলাদেশের তিন স্পিনার টেস্টে ২০০ উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন। ২০০ উইকেট পেতে সাকিবের লেগেছিল ৫৪ টেস্ট, তাইজুল সেটা ছুঁয়েছেন ৪৮ টেস্টেই। মিরাজের লেগেছিল ৫২ টেস্ট। সাকিব থাকায় কম্বিনেশনের কারণে টেস্টের একাদশে তাইজুল সুযোগ পেতেন না অনেক সময়। দেশের মাটিতে সুযোগ হলেও বাইরে একেবারে কালেভাদ্রে।
সাকিবের সঙ্গে ৭১ টেস্টে মাত্র ২৬টিতে ছিলেন তাইজুল। যার ২২টি দেশের মাঠে। ৪টি বাইরে। যেই ৪টি দেশের বাইরে তার মধ্যে ২টি ভারতে এবং ১টি করে শ্রীলঙ্কায় ও ওয়েস্ট ইন্ডিজে। পারফরম্যান্সের বিচারে দুইজন কাছাকাছি অবস্থান করছেন। একসঙ্গে খেলা ২৬ টেস্টে সাকিবের উইকেট সংখ্যা ১০২টি। তাইজুলের ৯৪টি। দেশে সাকিবের উইকেট ৮৪টি। তাইজুলের ৮৫টি। অ্যাওয়েতে সাকিবের শিকার ১৮টি। তাইজুলের ৯টি।
সাকিবের সঙ্গে খেলায় তাইজুল যতটা কার্যকারী ভূমিকা রাখেন, অনুপস্থিতিতে বাড়তি দায়িত্ব নিয়ে তাইজুল ততটাই ধ্রুপদী। ৩১ ম্যাচে ৫৩ ইনিংসে ১৫৪* উইকেট পেয়েছেন ২৯.১২ গড়ে। ক্যারিয়ারের ১৭ ফাইফারের ১৩টিই পেয়েছেন সাকিববিহীন ম্যাচে। পরিসংখ্যানই বলে দেয়, সাকিবের ছায়া থেকে বেরিয়ে তাইজুল হয়ে উঠেন আরো দ্যোদিপ্যমান। দায়িত্বের মশাল থাকে তার হাতেই। হতে হয় স্পিন আক্রমণের নেতা। এখন পর্বতের চূড়ায়।
ঢাকা/আমিনুল