মিয়ানমার থেকে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিতে এসে বিজিবির হাতে আটক হয়েছেন মিয়ানমারের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ৫ সদস্য। এর মধ্যে চারজন মিয়ানমারের বর্ডার গার্ড পুলিশ (বিজিপি) এবং একজন মিয়ানমার সেনাবাহিনীর সদস্য।

রবিবার (২৩ নভেম্বর) বেলা ১টার দিকে নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের গাছবুনিয়া পাড়ায় সীমান্ত পিলার ৪২ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার ভেতরে তারা আশ্রয় নেন। স্থানীয়দের মাধ্যমে খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের আটক করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়।

আটককৃতরা হলেন, মিয়ানমারের শান রাজ্যের মোমেকে শহরে বাসিন্দা কোকো সেইন (৩৫), আয়াওয়ার্দি রাজ্যের প্যান তানাউ শহরের বাসিন্দা সোয়েথু রা (৩৮), আওয়ার্দি রাজ্যের মাগাতুতাও শহরের বাসিন্দা অং সান হতু (২৫), আয়াওয়ার্দি রাজ্যের বাসিন্দা কিয়াও জায়ের লিন (৩২), এবং দেশটির ইয়াঙ্গুন রাজ্যের বাসিন্দা মিন মিন উ (৪১)।

স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুপুরের দিকে বাংলাদেশ সীমান্ত হয়ে মিয়ানমারের ৫ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাংলাদেশে প্রবেশ করে। ঘুমধুম সীমান্তবর্তী লাগোয়া গাছবুনিয়া পাড়ায় তারা আশ্রয় নিয়েছিলেন। খবর পেয়ে বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করে।  

নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাজহারুল ইসলাম চৌধুরী এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘‘বাংলাদেশ সীমান্তে প্রবেশ করে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া মিয়ানমারের ৫ সদস্য বিজিবির হেফাজতে আছে।’’  
নাইক্ষ্যংছড়ি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাসরুরুল হক বলেন, ‘‘বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে এমন খবরের ভিত্তিতে বিজিবি সদস্যরা তাদের আটক করেছে। তবে এখনও তাদের থানায় হস্তান্তর করা হয়নি। থানায় হস্তান্তর করা হলে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’’

ঢাকা/চাইমং//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর সদস য

এছাড়াও পড়ুন:

ঢাকা ও সিরাজগঞ্জে ডিবি হেফাজতে দুজনের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি

ঢাকা ও সিরাজগঞ্জে ডিবি পুলিশের হেফাজতে দুই নাগরিকের মৃত্যুকে কেন্দ্র করে গভীর উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে আইন ও সালিশ কেন্দ্র (আসক) এবং মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। ঘটনাগুলোকে মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে উল্লেখ করে দুই ঘটনার নিরপেক্ষ বিচার বিভাগীয় তদন্ত ও জবাবদিহি নিশ্চিতের দাবি জানিয়েছে মানবাধিকার সংগঠন দুটি। আজ রোববার গণমাধ্যমে এ–সংক্রান্ত বিবৃতি পাঠিয়েছেন সংগঠন দুটির নেতারা।

বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি আসকের

আইন ও সালিশ কেন্দ্র তাদের বিবৃতিতে জানিয়েছে, গণমাধ্যমের সূত্রে ঢাকা ও সিরাজগঞ্জ জেলায় ডিবি পুলিশের হেফাজতে মুক্তার হোসেন ও শাহাদত হোসেন নামের দুই নাগরিকের মৃত্যুর খবর জানা গেছে। এ ঘটনায় আসক গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।

আসক মনে করে, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা ব্যক্তিদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দায়িত্ব ও সাংবিধানিক কর্তব্য। এ ধরনের মৃত্যু আমাদের জাতীয় মানবাধিকার অঙ্গীকার, সংবিধান এবং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সামঞ্জস্য রক্ষার প্রয়াসে নতুন করে আলোচনা ও মূল্যায়নের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে।

বিবৃতিতে আসক বলেছে, রাষ্ট্রের হেফাজতে থাকা কোনো ব্যক্তির মৃত্যু অত্যন্ত গুরুতর বিষয়। এটি সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদে বর্ণিত জীবন ও ব্যক্তি স্বাধীনতার অধিকারকে লঙ্ঘন করে। একই সঙ্গে এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সনদের মৌলিক নীতির পরিপন্থী। যেখানে হেফাজতে থাকা ব্যক্তির নিরাপত্তা নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের আইনগত ও নৈতিক বাধ্যবাধকতা হিসেবে স্পষ্টভাবে উল্লেখ রয়েছে।

আসকের হিসাবে চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে ২২ নভেম্বর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন থানা হেফাজতসহ, র‍্যাব, পিবিআই ও ডিবির হেফাজতে রাখা অবস্থায় দেশে কমপক্ষে ১৫ নাগরিকের মৃত্যু ঘটেছে। এটা কেবল পরিসংখ্যান নয়, এটি দায়িত্বহীনতা, জবাবদিহির অভাব ও প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতার সংকটকে আরও স্পষ্ট করে তুলে ধরে।

হেফাজতে মৃত্যুর প্রতিটি ঘটনার স্বাধীন, নিরপেক্ষ ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত করার দাবি জানিয়ে আসক বলেছে, সংশ্লিষ্ট ঘটনাগুলোতে দায়ী ব্যক্তিদের দায় নিরূপণ করে আইনগত জবাবদিহি নিশ্চিত করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। পাশাপাশি ভুক্তভোগী পরিবারের নিরাপত্তা, ন্যায়বিচারের অধিকার এবং আইনগত সহায়তা নিশ্চিত করাও অত্যাবশ্যক।

মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশনের তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ

একইভাবে ডিবি হেফাজতে দুই ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনায় তীব্র নিন্দা, ক্ষোভ ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন (এমএসএফ)। নিহত ওই দুই ব্যক্তি অভিযুক্ত আসামি ছিলেন উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, স্বজনদের অভিযোগ, ডিবি হেফাজতে থাকা অবস্থায় নির্যাতনে তাঁদের মৃত্যু হয়েছে।

বিবৃতিতে মানবাধিকার সংস্কৃতি ফাউন্ডেশন মনে করে, গোয়েন্দা পুলিশের বিরুদ্ধে আনীত নির্যাতনে মৃত্যুর অভিযোগের বিষয়টি অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। যা মানবাধিকারের লঙ্ঘন এবং কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। দুটি মৃত্যুর বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খ তদন্তের দাবি রাখে। কারণ, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা অবস্থায় মৃত্যু জনমনে নানা প্রশ্নের উদ্রেক করে।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, রাষ্ট্রীয় হেফাজতে থাকা যেকোনো ব্যক্তির সুরক্ষা নিশ্চিত করা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর আইনি দায়িত্ব। এমএসএফ মোক্তার ও শাহাদতের মৃত্যুর প্রকৃত ঘটনা উদ্‌ঘাটনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে পরিবারের অভিযোগের বিষয়টি অনতিবিলম্বে গুরুত্ব দিয়ে নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়ার জোর দাবি জানিয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ঢাকা ও সিরাজগঞ্জে ডিবি হেফাজতে দুজনের মৃত্যুর বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি
  • ভোটের আগে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতির শঙ্কা নেই: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নির্বাচনের আগে আইনশৃঙ্খলায় অবনতির শঙ্কা দেখছেন না স্বরাষ্ট্র উপদে
  • ভূমিকম্প সতর্কতা অ্যাপের বিষয়ে ভাবছে সরকার: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
  • নাশকতাকারীদের ঢাকায় ‘অবাঞ্ছিত’ করতে চান ডিএমপি কমিশনার