ক্রোমিয়াম ইকোসিস্টেম উন্নয়নে তহবিল চালু করল গুগল
Published: 12th, January 2025 GMT
ক্রোমিয়াম ইকোসিস্টেমে উন্মুক্ত প্রোগ্রামিং সংকেত বা ওপেন সোর্সভিত্তিক প্রকল্পগুলোর উন্নয়নে তহবিল সরবরাহের জন্য নতুন একটি উদ্যোগ চালু করেছে গুগল। লিনাক্স ফাউন্ডেশনের সহযোগিতায় চালু হওয়া এই তহবিলের নাম ‘সাপোর্টার্স অব ক্রোমিয়াম বেজড ব্রাউজার্স’। গত বৃহস্পতিবার গুগলের এক ঘোষণায় জানানো হয়, ‘নিরপেক্ষ’ এই মাধ্যমটি ক্রোমিয়াম প্রকল্পগুলোকে আর্থিক সহায়তা ও অবকাঠামোগত সমর্থন দেবে।
গুগল ২০০৮ সালে ক্রোম ব্রাউজারের পাশাপাশি ক্রোমিয়াম উন্মোচন করে। ওপেন সোর্সভিত্তিক এই অবকাঠামো মাইক্রোসফট এজ, অপেরা ও ব্রেভসহ অনেক ব্রাউজারের ভিত্তি হিসেবে ব্যবহৃত হয়। গুগলের পাশাপাশি মেটা, মাইক্রোসফট ও অপেরা এরই মধ্যে এই উদ্যোগে যুক্ত হয়েছে। মাইক্রোসফট এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, এই তহবিল কমিউনিটির প্রয়োজন অনুযায়ী তহবিল ব্যবস্থাপনা এবং বরাদ্দ নিশ্চিত করবে।
গুগল জানিয়েছে, ২০২৩ সালে তারা ক্রোমিয়ামে এক লাখের বেশি কমিট (কোডের আপডেট বা সংশোধনীকে বোঝায়) যুক্ত করেছে। প্রকল্পের টেকসই উন্নয়নে অবকাঠামোগত বিনিয়োগও অব্যাহত রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, প্রতিদিন হাজারো সার্ভার ব্যবহার করে কোটি কোটি টেস্ট চালানো হয়। শতাধিক বাগ রিপোর্টের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যাগুলো সমাধান করা হয়। পাশাপাশি কোডের স্থায়িত্ব নিশ্চিত করতে নিয়মিত মানোন্নয়নের কাজ চলছে।
এই তহবিল চালুর ঘোষণা এমন সময় এলো যখন মার্কিন বিচার বিভাগ গুগলকে একচেটিয়া বাজার আধিপত্য ভাঙতে ক্রোম ব্রাউজার বিক্রি করার নির্দেশ দিয়েছে। মার্কিন বিচার বিভাগের অভিযোগের জবাবে গুগল তিন বছরের জন্য মজিলা ও সাফারির মতো ব্রাউজারগুলোতে ডিফল্ট সার্চ ইঞ্জিন চুক্তি বাতিলের প্রস্তাব দিয়েছে।
সূত্র: দ্য ভার্জ
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।
‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।
সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।
সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।
এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।