সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে আমার শৈশব কেটেছে। গ্রামের নাম গাঁড়াদহ। এ গ্রামের আশির দশকের চিত্র আজও মন থেকে মুছতে পারি না। গ্রামের চারপাশে ছিল আমবাগান-বাঁশবাগান, কোথাও লতাগুল্মের ঘন জঙ্গল। কাঁচা রাস্তা ধরে গাঁড়াদহ বাজারে যাওয়ার সময় পথের দুই পাশে পড়ত বিশাল আকৃতির দুটি তেঁতুলগাছ। গাছের ডালে বাঁধা থাকত শত শত লাল রঙের গামছা, গোড়ায় জ্বলন্ত মোমবাতি। গাছ দুটি পার হলেই বাগদিদের বসতি। আদিবাসী সম্প্রদায়ের এই মানুষেরা বিয়েবাড়িতে ঢাকঢোল, করতাল বাজাত। বর-কনেকে পালকি করে ‘হেঁইয়ো’, ‘হেঁইয়ো’ সুর করে নিয়ে যেত দূর দূর গ্রামে।

গ্রামের উত্তর দিকেও একটি হাট বসত—বুধবারের হাট। এই হাট ছোট হলেও সাজানো গোছানো। করতোয়ার কোল ঘেঁষে ছিল বাসস্ট্যান্ড। যেখানে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত আশপাশের সব গ্রামের মানুষের যাতায়াত ছিল। গ্রামের ঠিক মাঝখানেই একটি খেলার মাঠ, পাশেই একটা বটগাছ। শতবর্ষী গাছটি মাঠের বহু ঘটনার সাক্ষ্য বহন করছে। গ্রামে ঢুকতেই কবরস্থান, উল্টো পাশে শ্মশানঘাট, পাশ দিয়ে গেলেই ছমছম করত গা। আর ছিল নারিনা বিল।

গাঁড়াদহ গ্রামের করোতোয়া.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

২৩৯ জন আরোহী নিয়ে নিখোঁজ বিমানের সন্ধান ফের শুরু করছে মালয়েশিয়া

মালয়েশিয়া  এয়ারলাইন্সের ফ্লাইট এমএইচ৩৭০ নিখোঁজ হওয়ার এক দশকেরও বেশি সময় পর আবারও শুরু হচ্ছে গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান। দেশটির পরিবহন মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ৩০ ডিসেম্বর থেকে নতুন করে অনুসন্ধান চালানো হবে। খবর বিবিসির। 

প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৪ সালে ৮ মার্চে কুয়ালালামপুর থেকে বেইজিং যাওয়ার পথে বোয়িং ৭৭৭ প্লেনটি হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। যাত্রা শুরু করার ৪০ মিনিটের মধ্যে সবধরনের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর বিমানটির কী হয়েছে, তা আজও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি।

আরো পড়ুন:

মালয়েশিয়া-থাইল্যান্ড সীমান্তে অভিবাসী নৌকাডুবি, শতাধিক নিখোঁজ

৫২৫ কোটি টাকা আত্মসাৎ, মামলা হচ্ছে ৬ রিক্রুটিং এজেন্সির বিরুদ্ধে

বিমানটিতে ছিলেন ২৩৯ জন যাত্রী ও ক্রু। তারা কোথায় বা বিমানটি কোথায়, আজ পর্যন্ত এই খোঁজ পাওয়া যায়নি। বিমান চলাচলের ইতিহাসে আজ পর্যন্ত এটি ‘সবচেয়ে রহস্যময়’ ঘটনাগুলোর মধ্যে একটি। 

বুধবার (৩ ডিসেম্বর) মালয়েশিয়ার পরিবহন মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানায়, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সামুদ্রিক রোবোটিক্স কম্পানি ওশান ইনফিনিটি ৩০ ডিসেম্বর থেকে অনুসন্ধান চালাবে। তারা সেই সব এলাকায় অনুসন্ধান করবে যেগুলোতে বিমানের ধ্বংসাবশেষ পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি।

৫৫ দিনের নতুন অনুসন্ধান অভিযানটি চলতি বছরের মার্চ মাসে শুরু হয়েছিল, কিন্তু খারাপ আবহাওয়ার কারণে কয়েক দিনের মধ্যেই তা স্থগিত করা হয়। বিমানে আরোহী ২৩৯ জনের বেশিরভাগই ছিলেন চীনা নাগরিক।

পরিবহন মন্ত্রণালয় বলেছে, ‘এই নতুন উদ্যোগ এমএইচ৩৭০ ট্র্যাজেডিতে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোর জন্য মালয়েশিয়া সরকারের চেষ্টাকে আরো দৃঢ়ভাবে তুলে ধরে এবং এ ঘটনার সমাপ্তি বা উত্তর পেতেও সাহায্য করবে।’

চলতি বছরের মার্চে মালয়েশিয়া সরকার ওশান ইনফিনিটিকে ‘নো ফাইন্ড, নো ফি (পাওয়া গেলে কোনো ফি নয়)’- এমন ভিত্তিতে নতুন অনুসন্ধানের অনুমোদন দেয়। ভারত মহাসাগরের ১৫ হাজার বর্গকিলোমিটার নতুন এলাকায় অনুসন্ধানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেলে কেবল তখনই কম্পানিকে ৭০ মিলিয়ন ডলার প্রদান করা হবে।

স্যাটেলাইট তথ্য অনুযায়ী, বিমানটি নিয়মিত পথ থেকে বিচ্যুত হয়ে দক্ষিণ দিকে ভারত মহাসাগরের দূরবর্তী এলাকায় চলে যায় এবং ধারণা করা হয় সেখানেই এটি বিধ্বস্ত হয়। বহু দেশের ব্যয়বহুল বহুজাতিক অনুসন্ধান অভিযান সত্ত্বেও বিমানটির অবস্থান সম্পর্কে স্পষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। যা বিমান চলাচলের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় অনুসন্ধানের সূত্রপাত করেছে। ২০১৮ সালে ওশান ইনফিনিটির চালানো ব্যক্তিগত অনুসন্ধানেও কোনো সাফল্য মেলেনি।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ