ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকল কলেজে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সুলতান খানের (৬৫) মৃত্যু হয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় বরিশাল বিভাগে ১২৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) দুপুরে বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. শ্যামল কৃষ্ণ মন্ডল মৃত্যুর তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, মৃত সুলতান খান পটুয়াখালীর দুমকী উপজেলার বাসিন্দা।
আরো পড়ুন:
গোপালগঞ্জে পুকুরে ডুবে শিশুর মৃত্যু
নারায়ণগঞ্জে দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু
বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দুপুরে দেওয়া তথ্যানুযায়ী, গত ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ১২৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি বরগুনা হাসপাতালে ৫৪ জন, বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৫ জন, বরিশাল জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে চারজন, পটুয়াখালীতে ২৯ জন, ভোলায় পাঁচজন, পিরোজপুরে ১৭ জন ও ঝালকাঠিতে দুইজন রয়েছেন। বর্তমানে বরিশাল বিভাগের বিভিন্ন হাসপাতালে ৪৪০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত বিভাগের দুটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ১৫ হাজার ৮৯২ জন রোগী ভর্তি হয়েছেন। এরমধ্যে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন ১৫ হাজার ৪১৬ জন। বিভাগে ৩৬ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর মৃত্যু হয়েছে। এরমধ্যে বরিশাল শের-ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ জন, বরগুনায় ১৪ জন এবং পটুয়াখালীতে একজন রোগী মারা গেছে।
ঢাকা/পলাশ/বকুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল কল জ বর শ ল
এছাড়াও পড়ুন:
ট্রাম্পের চাটুকারিতা করেই কি পাকিস্তানের কূটনীতিকে এগিয়ে নিতে চাচ্ছেন শাহবাজ
গাজায় যুদ্ধবিরতি, উপত্যকার পুনর্গঠন এবং সংঘাতপরবর্তী কূটনীতি—এসব বিষয় নিয়েই ছিল মিসরের পর্যটন শহর শারম আল-শেখের সম্মেলনে আলোচনা। তবে সম্মেলনে যখন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ কথা বলতে যান, তখন হাওয়া বদলে যায়। গাজায় ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য একত্র হওয়া ঘরভর্তি বিশ্বনেতার সামনে তিনি যা বললেন, তা কূটনৈতিক কিছু নয়, বরং মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশংসার ফুলঝুরি।
ভাষণে ট্রাম্পকে ‘শান্তির মানুষ’ তকমা দেন শাহবাজ শরিফ। তাঁকে নোবেল পুরস্কার দেওয়ার কথা তোলেন। ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক যুদ্ধ এড়ানোর জন্য কৃতিত্বও দেন মার্কিন প্রেসিডেন্টকে।
এসব শুনে ট্রাম্প যখন আত্মতৃপ্তির হাসি হাসছিলেন, সম্মেলনকক্ষের বাকিদের দেখে মনে হচ্ছিল, তাঁরা অবিশ্বাস ও বিস্ময়ের মধ্যে আটকে গেছেন। তাঁরা করতালি দিয়েছিলেন, তবে তাতে সংকোচ ছিল। ট্রাম্পকে নিয়ে শাহবাজের প্রশংসাও অতি দ্রুত খবরের শিরোনাম হয়।
কূটনীতির যেসব প্রচলিত রীতিনীতি মেনে চলা হয়, তার ভিত্তিতে মিসরের সম্মেলনে শাহবাজ শরিফের বক্তব্য ছিল অযৌক্তিক। মিসরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি, ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান—সম্মেলনে যোগ দেওয়া কোনো নেতাই এমন অনিয়ন্ত্রিত তোষামোদের সুরে কথা বলেননি।
তাই গুরুগম্ভীর এই সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নাটকীয়ভাবে অপ্রাসঙ্গিক মনে হয়েছে, যা প্রায় হাস্যরসের শামিল। যদিও এই প্রশংসা কাজে লেগেছে, অন্তত যাঁকে উদ্দেশ করে এই প্রশংসা, সেই ট্রাম্পের ক্ষেত্রে হলেও।
ট্রাম্প এমন একজন মানুষ, যাঁর কাছে আদর্শের চেয়ে নিজের ভাবমূর্তিটা বড়। তাই শাহবাজের বক্তব্যের পর তিনি রাষ্ট্রনায়কের মতো নয়, বরং একজন তারকার মতো আচরণ করেছেন।অপমানজনক নাকি বিরল কৌশল
ট্রাম্পের রাজনীতি চলে আনুগত্যের ওপর। সেদিক দিয়ে বিবেচনা করলে শাহবাজের বক্তব্য মোটেও লজ্জাজনক ছিল না। সেগুলো ছিল ট্রাম্পকে উদ্দীপ্ত করার জন্য। ট্রাম্পের কূটনীতির লেনদেনের মঞ্চে তোষামোদ কোনো চাতুরী নয়, বরং অর্থের মতো।
নীতিকথার চেয়ে এক লাইনের অতিপ্রশংসার মাধ্যমে ট্রাম্পের কাছ থেকে বেশি সুনাম কামিয়ে নেওয়া যাবে। কারণ, আত্মকেন্দ্রিক একজন মানুষের কানে আনুগত্যই কূটনীতির মতো শোনায়।
রাজনৈতিক মনোবিদেরা একে ‘নার্সিসিসটিক রিওয়ার্ড লুপ’ বা ‘আত্মকেন্দ্রিক পুরস্কারচক্র’ বলে উল্লেখ করেছেন। এটি এমন একটি মনস্তাত্ত্বিক প্রতিক্রিয়ার চক্র, যেখানে বাস্তব কোনো না কোনো প্রশংসার মাধ্যমে সহযোগিতার সম্পর্ক জোরদার করা যায়।
মিসরের সম্মেলনে শাহবাজ শরিফ হয়তো পাকিস্তানের কৌশলগত স্বার্থগুলো তুলে ধরেননি, তবে একই গুরুত্বের অন্য কিছু অর্জন করেছেন। তিনি নিজেকে এবং আরও বড় পরিসরে বলতে গেলে পাকিস্তানকে ট্রাম্পের শান্তির বয়ানে প্রাসঙ্গিক করে তুলেছেন। এর ফলে ভাষণের অযৌক্তিকতাই সাফল্যে পরিণত হয়েছে।
সম্মেলনে ট্রাম্পের প্রশংসা করে বক্তব্য দেন শাহবাজ