আন্দোলনে নিহত সাদিকুরের মরদেহ তুলতে দেয়নি পরিবার
Published: 5th, February 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত সাদিকুর রহমানের (২৭) মরদেহ উত্তোলন করতে দেয়নি পরিবার। ময়নাতদন্তের জন্য আদালতের আদেশে গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে পুলিশ ও ম্যাজিস্ট্রেট ময়মনসিংহের ধোবাউড়া উপজেলায় মরদেহ উত্তোলন করতে গেলে পরিবারের সদস্যরা আপত্তি করেন।
গত ৫ আগস্ট গুলিবিদ্ধ হয়ে সাদিকুর রহমানের নিহত হওয়ার ঘটনায় আশুলিয়া থানায় ২২ আগস্ট একটি মামলা করেন তাঁর স্ত্রী শাহিদা খাতুন। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে ময়নাতদন্তের অনুমতি চেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা আবেদন করেন। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা আশুলিয়া থানার উপপরিদর্শক সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘২৮ জানুয়ারি আদালত মরদেহ উত্তোলন করে ময়নাতদন্তের আদেশ দেন। পরে জেলা প্রশাসনের মাধ্যমে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে গতকাল বেলা আড়াইটার দিকে মরদেহ উত্তোলন করতে যাই। কিন্তু পরিবারের আপত্তির করণে মরদেহ উত্তোলন করা যায়নি।’
নিহতের বাবা আবদুল লতিফ বলেন, ‘আমার ছেলে ঢাকায় ছাত্র আন্দোলনে মারা গেছে, এলাকাবাসীসহ সবাই জানে। এটার তদন্তের জন্য লাশ উত্তোলন করতে চাই না। প্রয়োজনে আমার লিখিত সাক্ষী দিব।’
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, সাদিকুরের পরিবারের সদস্যরা লিখিতভাবে মরদেহ উত্তোলন না করতে অনুরোধ করেন। পরে মরদেহ উত্তোলন না করতে পেরে পুলিশ-ম্যাজিস্ট্রেটসহ অন্যরা নিহত সাদিকুর রহমানের কবর জিয়ারত করে ফিরে যান।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: তদন ত র পর ব র ন করত
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি