ঘন কুয়াশার কারণে গোপালগঞ্জ ও ঝালকাঠির নলছিটিতে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে দু’জনের। গতকাল বৃহস্পতিবার ভোরে দুর্ঘটনা দুটি ঘটে। বুধবার রাতে গোপালগঞ্জে মোটরসাইকেল খাদে পড়ে দুই কলেজছাত্র মারা গেছেন। এ ছাড়া টাঙ্গাইলের কালিহাতী ও সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে ট্রাকচাপায় দু’জন এবং জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বাসচাপায় একজন নিহত হয়েছেন।

বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৭টার দিকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার ঘোষগাতি বাসস্ট্যান্ডে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এতে আলী রাজ (৩০) নামে কুরিয়ার সার্ভিসের একটি কার্গোভ্যান চালক মারা যান। তাঁর বাড়ি পিরোজপুরে। ভাটিয়াপাড়া হাইওয়ে থানার এসআই রুমান বলেন, ভোরে খুলনা থেকে ছেড়ে আসা টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের বাসটি ঘোষগাতি এলাকায় পৌঁছালে ট্রাকের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় ঢাকা থেকে গোপালগঞ্জগামী কুরিয়ার সার্ভিসের কার্গোভ্যানটি ওই দুই যানবাহনের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। একই সময় গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকাগামী এনা পরিবহনের বাস তিনটি যানবাহনের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই কুরিয়ার সার্ভিসের কার্গোভ্যানের চালক নিহত হন। আহত হন আরও ২০ জন।

বুধবার রাত সোয়া ৮টার দিকে সদর উপজেলার গোপীনাথপুরে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। সেখানেই প্রাণ হারান ওয়ালিদ খান (১৯) ও সিয়াম মোল্লা (১৯) দুই তরুণ। তাদের বাড়ি গোপীনাথপুর গ্রামে। দু’জনই রামদিয়া সরকারি শ্রীকৃষ্ণ কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়নের বরিশাল-কুয়াকাটা মহাসড়কের কাঠেরঘর এলাকায় দুর্ঘটনায় প্রাণ গেছে সেনাবাহিনীর সিভিল কর্মী মো.

বাকী মোল্লা। বৃহস্পতিবার ভোর ৫টার দিকে ঘন কুয়াশার কারণে সবজি বহনকারী থ্রি হুইলারের সঙ্গে ট্রাকের সংঘর্ষে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় আহত হন সেনাবাহিনীর পরিচ্ছন্নতাকর্মী আরিফুল ইসলাম ও থ্রি হুইলার চালক বাবু হাওলাদার। নিহত বাকী মোল্লা পরিচ্ছন্নতাকর্মী পদে লেবুখালি সেনানিবাসে কর্মরত ছিলেন। নলছিটি থানার ওসি আব্দুস ছালাম জানান, দুর্ঘটনাকবলিত গাড়ি আটক করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

টাঙ্গাইলের কালিহাতীতে ট্রাকচাপায় নিহত হয়েছেন ইব্রাহীম খলিল (৫০) নামের এক মাদ্রাসা শিক্ষক। সিরাজগঞ্জের চৌহালীতে ট্রাকচাপায় মোটরসাইকেল আরোহী শামীম হোসেন (৩৫) নিহত হন। জয়পুরহাটের আক্কেলপুরে বাসচাপায় নিহত হন আসলাম হোসেন (৫৫) নামের এক ব্যক্তি।  

[প্রতিবেদনে তথ্য দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধি ও সংবাদদাতারা]

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: সড়ক দ র ঘটন গ প লগঞ জ দ র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

অনুমোদনের প্রথম দিন সেন্ট মার্টিন যায়নি কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ

দীর্ঘ ৯ মাস পর শনিবার থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দিয়েছে সরকার। কিন্তু প্রথম দিন কোনো জাহাজ সেন্ট মার্টিনে না যাওয়ার কারণে পর্যটকেরা দ্বীপে যেতে পারেননি। হাজারো পর্যটক সেন্ট মার্টিনে যেতে না পেরে হতাশ হয়ে ফিরে গেছেন। অন্যদিকে জাহাজমালিকেরা বলছেন, সরকারের বিভিন্ন শর্তের কারণে পর্যটকদের আগ্রহ না থাকায় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল।

কক্সবাজার জেলা প্রশাসন সূত্র জানায়, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়েছে। ১ নভেম্বর থেকে সেন্ট মার্টিনে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচলে সরকারের কোনো বাধা নেই। লিখিতভাবে জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তবে দিনে গিয়ে দিনেই চলে আসতে হবে; রাতে থাকা যাবে না।

এদিকে রাতে থাকার সুযোগ না থাকায় পর্যটকেরা যেতে আগ্রহী হচ্ছেন না। কারণ, দীর্ঘ সময় ভ্রমণ করে দ্বীপে গিয়ে আবার সেদিনই চলে আসতে হবে। এ কারণে জাহাজমালিকেরাও জাহাজ চালাতে অনীহা প্রকাশ করছেন। তাঁদের দাবি, দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসার সিদ্ধান্ত বাস্তবসম্মত নয়।

কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) মো. শাহিদুল আলম বলেন, জাহাজমালিকেরা যদি জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখেন, সেটা তাঁদের ব্যাপার। সেন্ট মার্টিনের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকারের জারি করা ১২টি নির্দেশনা এবার কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করবে জেলা প্রশাসন।

শাহিদুল আলম বলেন, আগে টেকনাফ থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ চলাচল করলেও নিরাপত্তার কারণে এখন কক্সবাজার শহর থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ বঙ্গোপসাগর পাড়ি দিয়ে সেন্ট মার্টিনে যাতায়াত করবে।

সি ক্রুজ অপারেটরস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর বলেন, কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়া ঘাট থেকে জাহাজ ছেড়ে গেলে সেন্ট মার্টিন পৌঁছাতে সাত থেকে আট ঘণ্টা সময় লাগে। ফলে পর্যটকেরা কিছুই ঘুরে দেখতে পারবেন না। দিনে গিয়ে দিনে ফিরে আসা যেমন কষ্টসাধ্য, তেমনি ব্যবসার জন্যও তা অলাভজনক। এ কারণেই অনেক পর্যটক সেন্ট মার্টিন যেতে অনীহা প্রকাশ করেছেন।

হোসাইন ইসলাম আরও বলেন, রাতযাপন করার সুযোগ না থাকলে সেন্ট মার্টিনের পর্যটন মৌসুম জমে না। পর্যটকেরা রাতের সৈকত দেখতে চান, ঢেউয়ের শব্দ শুনতে চান। সেটাই তো সেন্ট মার্টিনের আসল আকর্ষণ।

পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মো. জমির উদ্দিন বলেন, সেন্ট মার্টিন দ্বীপে ভ্রমণের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা কঠোরভাবে কার্যকর করা হবে। এ লক্ষ্যে পরিবেশ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

আরও পড়ুনসেন্ট মার্টিনে নিষেধাজ্ঞা উঠছে কাল, তবে জাহাজ চলবে কি৩১ অক্টোবর ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ