৭ ফেব্রুয়ারি রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭-এর মাইডাস সেন্টারে ৩০টি সৃজনশীল উদ্যোগের অংশগ্রহণে শুরু হয় কেয়ার অব ঢাকার স্প্রিং কার্নিভাল সিজন-২। কিউরেশন আর সাজসজ্জায় মুগ্ধ করার মতো পুরো আয়োজনটি শেষ হয় ৮ ফেব্রুয়ারি রাত ৮টায়। 
বসন্তের রঙের সমারোহের মিলনমেলা দেখা যায় ইট-কাঠের দেয়ালে। সেই যান্ত্রিকতায় কিছুটা বসন্তের রং ছড়িয়ে দেওয়ার ভাবনা থেকেই পপ-আপ শপ কেয়ার অব ঢাকার বসন্ত উৎসবের এবারের বিশেষ থিম রাখা হয় ‘কালার্স অব বাংলাদেশ’। এটি মূলত বার্ষিক আয়োজন হিসেবে প্ল্যাটফর্মটির তৃতীয় আসর হলেও, দ্বিতীয়বারের মতো তা এসেছে বসন্তের উৎসব নিয়ে। 
এটি আমাদের তৃতীয় প্রদর্শনী। এখানে আমরা ৩০টি সৃজনশীল উদ্যোগ নিয়ে কাজ করছি। প্রতিটি উদ্যোগ নিজস্ব ডিজাইনে দেশীয় পণ্য তৈরি করে বলে জানান এ আয়োজনের অন্যতম সমন্বয়কারী ও ফ্যাশন ব্র্যান্ড সরলার কর্ণধার মানসুরা স্পৃহা।
এ ছাড়া আরও দুই সমন্বয়কারী ফাতেমা তুজ জোহরা নুভিয়া ও মুসাররাত নওশাবা জানান, গতবার অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি। এবারও প্রত্যেক উদ্যোক্তা একটি বিশেষ থিমে কেয়ার অব ঢাকার জন্য একটি স্পেশাল পণ্য তৈরি করেছেন। দীর্ঘ ছয় মাসের বেশি সময় ধরে কাজ করেছেন তারা। 
কেয়ার অব ঢাকার এ প্রদর্শনীতে ছিল– পোশাক, গহনা, প্রসাধনী ও স্কিন কেয়ার, খাবার, ব্যাগ, আর্টস ও ক্র্যাফট, হোম ডেকোর— এই সাত ক্যাটেগরিতে ৩০টি দেশীয় উদ্যোক্তা ব্র্যান্ডের পণ্য। এখানে অংশগ্রহণকারী ব্র্যান্ডগুলোর মধ্যে ছিল– আর্টেমিস, বেক দ্য কেক বাই রুমানা, বেগম বাহার, বেনে ফুটওয়্যার, বেণী বুনন, চন্দ্রভান, চিত্রাঙ্গদা, কটন রুটস, দীঘল, দিশা’স রোড ব্লক-রঙের মানুষ, গুটিপা, হল্লা, খাদি বাই নুভিয়া, লিলিথ, মল্লিকা, এন’স কিচেন, অবনি, অহং, ঋতি, সরলা, শিল্পালোক, সিগনেট, সুতলি, সুরঞ্জনা, সুতন্তু, ট্যান, তানিস বাংলাদেশ, তাসা, দ্য হকার্স ও ইয়ামিন’স। নান্দনিক সজ্জায় সাজানো সেরা স্টলের জন্য ছিল বিশেষ পুরস্কার। 
এই প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে পরিবারের ছোট সদস্যদের জন্য আয়োজন করা হয়েছিল কিডস কার্নিভাল। তাদের ভাবনার জগৎকে ফুটিয়ে তুলতে এখানে ছবি আঁকা, ক্র্যাফটিং, সায়েন্স এক্সপেরিমেন্ট, খেলার সেশন ইত্যাদিতে অংশ নিতে পারবে ৪ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুরা। এ আয়োজনে কেয়ার অব ঢাকার সঙ্গে ছিল ‘শৈশব’ ফ্যাশন লিমিটেড। v

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক য় র অব ঢ ক র বসন ত

এছাড়াও পড়ুন:

প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 

পাহাড়ের আঁকাবাঁকা প্রায় দুই কিলোমিটারেরও বেশি উঁচুনিচু ঢালু পথ পাড়ি দিয়ে আলোক শোভাযাত্রা করে করলেন হাজারো খৃষ্ট ভক্ত। মা মারিয়ার আশীর্বাদপ্রাপ্ত শেরপুরের নালিতাবাড়ী উপজেলার গারো পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ‘বারোমারি সাধু লিওর খ্রিষ্টধর্মপল্লি’ তে ছিলো এ বছরের আয়োজন। 

বৃহস্পতিবার (৩০ অক্টোবর) সকাল থেকে শুরু হয় ক্যাথলিক খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব। দুই দিনব্যাপী এই তীর্থোৎসব শেষ হয়েছে গতকাল শুক্রবার জীবন্ত ক্রুশের পথ ও পবিত্র মহাখ্রিষ্টযাগের মধ্যে দিয়ে। 

এ উৎসবে শুধু ক্যাথলিক খ্রিষ্টানই নন, অন্য ধর্মাবলম্বীরাও প্রতিবছর অংশ নেন। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। উৎসবের উদ্বোধন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ভ্যাটিকান সিটির রাষ্ট্রদূত কেভিন এস র‌্যান্ডেল। 

এসময় জেলা প্রশাসক (ডিসি) তরফদার মাহমুদুর রহমান ও পুলিশ সুপার (এসপি) আমিনুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

আয়োজক কমিটি জানায়, প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ বৃহস্পতি ও শুক্রবারে এই তীর্থযাত্রার আয়োজন করা হয়। প্রধান পৌরহিত্যকারী ন্যুনসিওকে বরণ, তীর্থের জুবিলী উদজাপন, পুর্নমিলন সংস্কার, পবিত্র খিষ্টযাগ, জপমালার প্রার্থন, আলোক শোভাযাত্রা, সাক্রান্তের আরাধনা, নিরাময় অনুষ্ঠান, ব্যক্তিগত প্রার্থনা ও নিশি জাগরণের মধ্য দিয়ে প্রথম দিনের অনুষ্ঠান শেষ হয়। শুক্রবার সকাল আটটায় জীবন্ত ক্রুশের পথ অতিক্রম এবং সকাল ১০টায় মহাখ্রিষ্টযোগের মধ্য দিয়ে শেষ হয় এবারের তীর্থোৎসব। 

১৯৪২ সালে ৪২ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত হয় বারোমারি সাধু লিওর ধর্মপল্লি। ১৯৯৮ সালে প্রয়াত বিশপ ফ্রান্সিস এ গোমেজ স্থানটিকে ‘ফাতেমা রানীর তীর্থস্থান’ হিসেবে ঘোষণা করেন। তখন থেকেই প্রতিবছর আয়োজিত হয়ে আসছে এই ধর্মীয় উৎসব। এ বছর প্রায় ৩০-৪০ হাজার দেশি-বিদেশি রোমান ক্যাথলিক তীর্থযাত্রী অংশ নিয়েছেন উৎসবে। সার্বিকভাবে উৎসব এলাকা ছিল আলো, প্রার্থনা ও শান্তির আবহে মোড়ানো।

রংপুর থেকে আসা তীর্থযাত্রী রিপন আরেং বলেন, “সবাই যখন মোমবাতি প্রজ্বলন করে প্রার্থনা করতে করতে পাহাড়ি আকাঁবাঁকা পথ অতিক্রম করছিলেন, তখন পাহাড় আলোয় আলোকিত হয়ে উঠেছিল। তীর্থে আমরা মা মারিয়ার কাছে প্রার্থনা করতে এসেছি।”

চট্টগ্রাম থেকে আসা রীতা নকরেক বলেন, “পুত্রবধূর সন্তান হচ্ছিল না। গতবার মানত করার পর এবার নাতী পেয়েছি। তাই এবার নাতীকে নিয়ে আবার এসেছি।”

গাজীপুর থেকে পরিবারের সঙ্গে আসা শিক্ষার্থী ঝর্ণা আরেং বলেন, “মারিয়ার কাছে এলে মনে একধরনের শান্তি পাই। আমরা প্রার্থনা করি যেন জীবনের দুঃখ-কষ্ট দূর হয়। প্রতিবছর এই সময়টার অপেক্ষায় থাকি।”

শেরপুরের পুলিশ সুপার মো. আমিনুল ইসলাম বলেন, “আমরা এই তীর্থযাত্রাকে নিরাপদ ও ঝুঁকি মুক্ত রাখতে তিন স্তর বিশিষ্ট নিরাপত্তা ব্যবস্থায় রেখেছি। পাঁচ শতাধিক পুলিশ পোশাকে এবং সাদা পোশাকে দ্বায়িত্ব পালন করেছেন। এছাড়াও র‌্যাব, বিজিবি, এপিবিএন ও সেচ্ছাসেবক কাজ করছেন। যে কোন ঝুঁকি মোকাবেলায় আমরা প্রস্তুত আছি।”

শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান বলেন, “উৎসবটি দেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির অনন্য উদাহরণ। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ব্যবস্থাপনায়। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন দীর্ঘ ১৫ দিন ধরে সহযোগীতা করে আসছে। এবারের তীর্থযাত্রায় সারাদেশের মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে তাদের উৎসব পালন করেছে।”

ময়মনসিংহ ধর্মপ্রদেশের বিশপ পনেন পল কুবি সিএসসি বলেন, “এ উৎসবের মাধ্যমে বিশ্ব মানবতার কল্যাণে প্রার্থনা করা হয়েছে। ধর্মীয় চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে এ তীর্থে দেশ-বিদেশের হাজারো মানুষ সমবেত হয়েছেন। তাঁরা দুই দিনব্যাপী তীর্থে নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। মা ফাতেমা রানীর কাছে দেশ ও মানবজাতির কল্যাণে প্রার্থনা শেষে যার যার বাড়ি ফিরে যাবেন।”

ঢাকা/তারিকুল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • শেফালি আর দীপ্তিতে নতুন মুম্বাইয়ে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন ভারত
  • ‘মবের’ পিটুনিতে নিহত রূপলাল দাসের মেয়ের বিয়ে আজ
  • এবারও কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে নেই বাংলাদেশ
  • ডাইনির সাজে শাবনূর!
  • প্রার্থনার সুরে শেষ হলো ‘ফাতেমা রানীর’ তীর্থোৎসব 
  • টগি ফান ওয়ার্ল্ডে উদযাপিত হলো হ্যালোইন উৎসব
  • উদ্ভাবন–আনন্দে বিজ্ঞান উৎসব
  • নবীনদের নতুন চিন্তার ঝলক
  • বিজ্ঞান উৎসব উদ্বোধন করল রোবট নাও
  • ‘ফাতেমা রানীর তীর্থোৎসবে’ আলোয় ভাসল গারো পাহাড়