রায়পুরায় ‘মরার জন্য অপেক্ষা কর’ লিখে বিএনপি কার্যালয় ভাঙচুর
Published: 14th, February 2025 GMT
নরসিংদীর রায়পুরার চরসুবুদ্ধি ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ের দেয়ালে ‘মরার জন্য অপেক্ষা কর, জয় বাংলা’ লিখে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। গত বুধবার দিবাগত রাতে উপজেলার চরসুবুদ্দি ইউনিয়নের চরসুবুদ্দি বাজারের বিএনপির কার্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় আজ শুক্রবার বিকেলে চরসুবুদ্ধি ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. দানিশ মিয়া ৪০ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাতনামা ১৫০ জনকে আসামি করে রায়পুরা থানায় মামলা করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, গত বুধবার রাতে একদল দুর্বৃত্ত বিএনপি কার্যালয়ের তালা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে। ওই সময় কার্যালয়ের দেয়ালে কয়েক জায়গায় রং ব্যবহার করে ‘মরার জন্য অপেক্ষা কর, জয় বাংলা’ লিখে তারা। এ সময় চেয়ার, টেবিল, টেলিভিশনসহ বিভিন্ন আসবাব ভাঙচুর করে কার্যালয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় দুর্বৃত্তরা।
এ সময় স্থানীয় লোকজন বিএনপি কার্যালয়ে আগুন জ্বলতে দেখে এগিয়ে আসে পানি ও বালু ছিটিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলা পর্যায়ের নেতাদের নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন কেন্দ্রীয় বিএনপির বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সহসম্পাদক আশরাফ উদ্দিন বকুল।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আশরাফ উদ্দিন বকুল বলেন, জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় এনে বিচার করতে হবে।
রায়পুরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আদিল মাহমুদ জানান, এ ঘটনায় বিএনপির পক্ষ থেকে মামলা হয়েছে। জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা হবে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
অমর একুশে বইমেলা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক
অমর একুশে বইমেলা বাংলাদেশের মানুষের প্রাণের মেলা। মূলত প্রকাশকদের উদ্যোগে মুক্তিযুদ্ধ উত্তর বাংলাদেশে এই বইমেলার সূত্রপাত। সম্প্রতি এই বইমেলা নানা কারণে-অকারণে ডিসেম্বরে করার কথা শোনা যাচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে সুস্পষ্টভাবে বলতেই হচ্ছে -ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলা করা যাবে না। কারণ সেসময় সারাদেশে শিক্ষার্থীদের বার্ষিক পরীক্ষা চলবে।
বইমেলার প্রধান পাঠক আমাদের শিক্ষার্থী। তারা ডিসেম্বরে কিছুতেই মেলায় আসতে পারবে না। প্রধান পাঠকই যদি মেলায় আসতে না পারে তাহলে মেলা প্রাণহীন হয়ে পড়বে। বইমেলায় অংশগ্রহণকারি প্রকাশকরাও ভয়াবহ ক্ষতির মুখে পড়বে। তাছাড়া একুশের চেতনাকে ধারণ করে যে অমর একুশে বইমেলা, সেটা ফেব্রুয়ারিকে স্পর্শ করুক। ভাষা শহীদদরর প্রতি বইমেলার মাধ্যমে আমাদের যে শ্রদ্ধাঞ্জলি, তা অক্ষুন্ন থাকুক।
আরো পড়ুন:
রাজশাহীতে বইপড়ায় কৃতিত্বের পুরস্কার পেল ২৩০৩ শিক্ষার্থী
‘গল্পকারের পছন্দের ৫০ গল্প’ গ্রন্থ প্রকাশিত
সর্বোপরি ৫ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, এই সময়ে বইমেলা হতে কোন সমস্যা হওয়ার কথা নয়। অথবা তারিখ দুই একদিন এদিক-সেদিক করে নেয়া যেতে পারে। এ সময়ে রোজা নেই, নির্বাচনও নেই। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন চলবে। এই মাঠে বইমেলা চলাকালীন সর্বদলীয় সিদ্ধান্তে কেউ সভা-সমাবেশ না করার সিদ্ধান্ত নিলে অনায়াসে এই সময়টাতে বইমেলা করা যেতে পারে। আমার বিশ্বাস- সব দলই অমর একুশে বইমেলার জন্য এই ছাড়টুকু দেবেন।
প্রায় পঞ্চাশ বছরের অধিক সময়ের প্রচেষ্টায় অমর একুশে বইমেলা মহিরুহ হয়ে আমাদের কাছে আবির্ভূত, হঠকারি কোন সিদ্ধান্তে তা যেনো ধ্বংস হওয়ার উপক্রম না হয়। জেনে শুনে বাঙালির এতো বড় একটি সাংস্কৃতিক উৎসবকে ভয়াবহভাবে ক্ষতিগ্রস্থ না করে বরং তা যে কোন মূল্যে আমাদের রক্ষা করা উচিত।
জানুয়ারিতে বাণিজ্যমেলায়ও হয়ে থাকে। এতে অমর একুশে বইমেলার ওপর কোনো বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আমি তা মনে করি না। বইমেলার প্রধান পাঠক শিক্ষার্থী। তারা বইমেলায় আসার জন্য মুখিয়ে থাকে। বাণিজ্য মেলায় যাওয়ার লোকজন বেশির ভাগই আলাদা। তবে অনেকেই বইমেলা এবং বাণিজ্যমেলা দুটোতেই যান। এটা তারা ম্যানেজ করে নিতে পারবেন বলে আমার বিশ্বাস।
আমি বলেছি শুধুমাত্র মেলার মাঠ প্রাঙ্গনে সভা-সমাবেশ না করার মাধ্যমে যদি সর্বদলীয় একটা সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় তাহলে জানুয়ারি- ফেব্রুয়ারি মিলিয়ে বইমেলা করা সম্ভব।আমার মনে হয়, বইমেলা চলাকালীন এই মাঠ কোন দলকে সভা-সমাবেশের জন্য সরকার বরাদ্দ না দিলে, অথবা বইমেলা চলাকালীন দলগুলো নিজের থেকেই এই মাঠের বরাদ্দ না চাইলে সমস্যা আর থাকে না।
লেখক: প্রকাশক পাঞ্জেরী পাবলিকেশন্স লিমিটেড
ঢাকা/লিপি