পনেরো বছর আগের কথা, শচীন টেন্ডুলকার-উত্তর সময়ে ভারতীয় ক্রিকেটের নতুন এক তারকার আগমন। তখনও বাংলাদেশের বিপক্ষে দেখা হয়নি তাঁর। অবশেষে ২০১০ সালের ৭ জানুয়ারি মিরপুরে ত্রিদেশীয় সিরিজে প্রথমবার তামিম ইকবালদের মুখোমুখি বিরাট কোহলি।
প্রথম ম্যাচেই ৩ নম্বরে নেমে ৯১ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় ম্যাচেও সেঞ্চুরির আক্ষেপ পূরণ করলেন ১০২ রানে অপরাজিত থেকে। তার পর থেকে এ পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে মোট ১৬ ওয়ানডে খেলেছেন কোহলি। রোহিত শর্মাও খেলেছেন মোট ১৭টি। আজ দুবাইয়ে বাংলাদেশের বিপক্ষে হয়তো শেষবারের মতো খেলতে নামবেন তারা। শেষবারের মতো তাদের মুখোমুখি হবেন হয়তো বাংলাদেশেরও দুই অভিজ্ঞজন– মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর মুশফিকুর রহিম।
কেননা, বয়সের কারণেই এই চার তারকা ক্রিকেটার হয়তো চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পরই ওয়ানডে থেকে নিজেদের সরিয়ে নেবেন। দুই দলের এই চার সিনিয়রের স্মৃতিতে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচের অনেক গল্প গাথা লেখা আছে। জয়-পরাজয়ের অনেক আলোচিত ঘটনার সাক্ষী তারা। আজ যখন তারা মাঠে নামবেন, সেসবের কিছুই কি মনে পড়বে না তাদের? অবশ্য ফাইনালে এই দুটি দল পৌঁছালে আবারও তাদের দেখা হতে পারে এই দুবাইয়ে।
ভারত ম্যাচের উত্তাপে প্রথম ম্যাচেই আগুন হয়ে উঠেছিলেন মুশফিকুর রহিম। ২০০৭ বিশ্বকাপে পোর্ট অব স্পেনের মাঠে সেই দিন ৩ নম্বরে নেমে চার ছক্কা হাঁকিয়ে রাহুল দ্রাবিড়দের হতবাক করে দিয়েছিলেন বছর উনিশের ছেলেটি। তার পর থেকে ভারত ম্যাচে দলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে শুরু করেন মুশফিক। ২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে ফতুল্লায় ধোনিদের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করেন। মজার ব্যাপার হচ্ছে, সর্বশেষ ভারতের বিপক্ষে তাঁর হাফ সেঞ্চুরি এসেছে এই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতেই। ২০১৭ সালের ১৫ জুন বার্মিংহামে সেমিফাইনালে ৬১ রান করেন তিনি। সেই ম্যাচে ৭ উইকেটে ২৬৪ রান করেও অবশ্য ৯ উইকেটের বিশাল ব্যবধানে হারতে হয়েছিল বাংলাদেশকে। ভারতের হয়ে দুই অভিজ্ঞ ব্যাটার ১২৩ আর বিরাট কোহলি খেলেছিলেন ৯৬ রানের ইনিংস।
ভারতের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর প্রথম ওয়ানডে ম্যাচ ছিল ২০০৮ সালের ১২ জুন। মিরপুরে সেই ম্যাচে ২৪ করেছিলেন রিয়াদ। এর পর অবশ্য ৬০ ও ৬৪ রানের দুটি অপরাজিত ইনিংস ছিল তাঁর সেই মিরপুরেই। সর্বশেষ ২০২৩ বিশ্বকাপে পুনেতে ভারতের বিপক্ষে ওয়ানডে খেলেছিলেন রিয়াদ। ৪৬ করেছিলেন তিনি সেই ম্যাচে। আজ দুবাইয়ে এই চার অভিজ্ঞ ব্যাটারের যে কেউ ম্যাচের নায়ক হতে পারেন।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে রহস্যময় মেঘের সন্ধান, অনুসন্ধানে নাসা
পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের আয়নোস্ফিয়ারের নিচের অংশে মেঘের মতো অদ্ভুত কাঠামোর সন্ধান পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। স্পোরাডিক–ই লেয়ার স্তরে থাকা উচ্চ উচ্চতার এই মেঘের মতো কাঠামোর তথ্য জানতে প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ থেকে রকেট উৎক্ষেপণের পরিকল্পনা করছে যুক্তরাষ্ট্রের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসা।
নাসার তথ্যমতে, স্পোরাডিক–ই লেয়ার স্তরের রহস্য জানার চেষ্টা চলছে। স্পোরাডিক-ই ইলেক্ট্রোডাইনামিকস বা সিড নামের এই মিশনের মাধ্যমে তিন সপ্তাহের মধ্যে মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের কোয়াজালিন অ্যাটল থেকে বৈজ্ঞানিক যন্ত্র বহনকারী সাবঅরবিটাল মহাকাশযান উৎক্ষেপণ করা হবে। বিজ্ঞানীরা আয়নোস্ফিয়ারের নিচের অংশে তৈরি স্পোরাডিক-ই লেয়ার স্তর সম্পর্কে জানার চেষ্টা করছেন। এই কাঠামোর কারণে আয়নোস্ফিয়ারের উচ্চ স্তরে পৌঁছানোর আগে রেডিও সংকেত পৃথিবীতে প্রতিফলিত হচ্ছে। এর ফলে এলোমেলো সংকেত গ্রহণ করছে রেডিও রিসিভার।
নাসার তথ্যমতে, স্পোরাডিক-ই লেয়ার স্তর ক্রমাগত তৈরি হচ্ছে। এই স্তর চলমান ও এই অঞ্চলের কারণে বিভিন্ন ব্যাঘাত অনুমান করা কঠিন হয়ে পড়ে। নাসার মিশন কর্মকর্তা আরোহ বরজাতিয়া বলেন, স্পোরাডিক-ই লেয়ার স্তর খালি চোখে দেখা যায় না। শুধু রাডারের মাধ্যমে প্যাঁচানো ও ফোলা মেঘের মতো দেখা যায়। আবার কিছু স্তর মেঘলা আকাশের মতো ছড়িয়ে পড়ে, যাকে আমরা কম্বলটিং স্পোরাডিক-ই লেয়ার স্তর বলি। এই স্তর যোগাযোগে হস্তক্ষেপ করে।
আয়নোস্ফিয়ার পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের একটি স্তর। এটি প্রায় ৬০ থেকে ১ হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত। এই এলাকা চার্জযুক্ত কণা বা আয়ন দ্বারা গঠিত। এই আয়নের মধ্যে কিছু আসে উল্কা থেকে। আয়নিত লোহা, ম্যাগনেশিয়াম, ক্যালসিয়াম, সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের চিহ্ন আছে এই স্তরে। এসব ভারী ধাতু আয়নোস্ফিয়ারের সাধারণ কণার তুলনায় বেশি থাকে। মাঝে মাঝে এসব কণা একসঙ্গে জমাট বেঁধে ঘন গুচ্ছ তৈরি করে, যা স্পোরাডিক-ই লেয়ার স্তর নামে পরিচিত। বিজ্ঞানীরা পৃথিবীর মধ্য অক্ষাংশের স্পোরাডিক-ই লেয়ার স্তর তৈরির কারণ ব্যাখ্যা করতে পারেন। তবে পৃথিবীর বিষুবরেখার কাছাকাছি থাকা স্পোরাডিক-ই লেয়ার স্তর সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত তথ্য জানা যায়নি।
সূত্র: এনডিটিভি