সানবিডি২৪ এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি ফলো করুন

গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করতে বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল ভারতে গেছে। আলোচনার আগে আজ মঙ্গলবার ফারাক্কা ব্যারেজ পরিদর্শনে গেছেন বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল।

গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি পর্যালোচনা এবং নদীসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে ঢাকার ১১ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল পাঁচ দিনের সফরে সোমবার কলকাতায় পৌঁছায়। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে অভিন্ন নদীর ন্যায্য পানির দাবির পাশাপাশি গঙ্গা চুক্তি নবায়নের কথা জানানো হবে।

ভারত বাংলাদেশের মধ্যে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তির মেয়াদ শেষ হবে আগামী বছর ডিসেম্বরে। মেয়াদ শেষ হওয়ার আগে চুক্তি নবায়নের ক্ষেত্রে উভয় দেশ নতুন করে চলমান বাস্তবতা যাচাই করতে চাচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে বুধবার কলকাতায় ভারত এবং বাংলাদেশের যৌথ নদী কমিশনের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হচ্ছেন দুই দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

বৈঠকে গঙ্গার পানি বণ্টন চুক্তি নবায়ন, তিস্তা ধরলাসহ অভিন্ন ৫৪টি নদীর ন্যায্য পানির দাবি জানাবে বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল বলে আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

কলকাতায় দুদিনের বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট প্রতিনিধিরা সরেজমিনে ফারাক্কার বাঁধ পরিদর্শন করবেন। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দল এরইমধ্যে ফারাক্কা পৌঁছেছেন। মঙ্গলবার ভারতের কেন্দ্রীয় সরকারের পানিসম্পদ বিষয়ক দফতরের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।

বাংলাদেশের সঙ্গে গঙ্গার পানি বন্টন চুক্তি নবায়ন নিয়ে আলোচনাকে স্বাগত জানিয়েছেন ফারাক্কার বিধায়ক। ৩০ বছরের এই চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর।

বিএইচ

.

উৎস: SunBD 24

এছাড়াও পড়ুন:

দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার

দেশের প্রতি চারজনের একজন মানুষ এখনো বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) বিষয়ক এক সেমিনারে এ তথ্য তুলে ধরা হয়। আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের পরিকল্পনা কমিশনে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) পক্ষ থেকে ‘বাংলাদেশের জাতীয় বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক’ শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী অধ্যাপক আনিসুজ্জামান চৌধুরী। এতে সভাপতিত্ব করেন জিইডির সদস্য (সচিব) মনজুর হোসেন। আলোচক ছিলেন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান এবং বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) মহাপরিচালক এ কে এনামুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব আলেয়া আখতার এবং বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি রানা ফ্লাওয়ার্স।

বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো বিবিএসের ২০১৯ সালের মাল্টিপল ইন্ডিকেটর ক্লাস্টার সার্ভের (এমআইসিএস) তথ্য ব্যবহার করে বহুমাত্রিক দারিদ্র্য সূচক (এমপিআই) নিরূপণ করা হয়েছে।  বহুমাত্রিক দারিদ্র্য হলো দারিদ্র্য পরিমাপের একটি বিস্তৃত পদ্ধতি, যা শুধু আয় বা ভোগের মতো একক মাত্রার বাইরে গিয়ে দারিদ্র্যকে তার বিভিন্ন দিক থেকে বুঝতে সাহায্য করে। বাংলাদেশের এ সূচকে তিনটি মাত্রা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। যাতে জীবনযাত্রার মান, শিক্ষা এবং স্বাস্থ্যবিষয়ক অবস্থা পর্যালোচনা করা হয়েছে। এই মাত্রাগুলোকে ১১টি আলাদা সূচকে ভাগ করা হয়েছে। যেমন জীবনযাত্রার মানের মধ্যে রয়েছে—বিদ্যুৎ, স্যানিটেশন, খাওয়ার পানি, বাসস্থান, রান্নার জ্বালানি, সম্পদ এবং ইন্টারনেট সংযোগ।

এমপিআই প্রতিবেদনে দেখা গেছে, দেশে ২৪ দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যে রয়েছে, যা সংখ্যায় প্রায় ৩ কোটি ৯৮ লাখ। গ্রামীণ এলাকায় এই হার ২৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ, আর শহরে ১৩ দশমিক ৪৮ শতাংশ। সিলেট বিভাগে এই দারিদ্র্যের হার সর্বোচ্চ, ৩৭ দশমিক ৭০ শতাংশ। আর পাঁচটি জেলায় ৪০ শতাংশেরও বেশি মানুষ বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার। জেলাগুলো হলো—বান্দরবান, কক্সবাজার, সুনামগঞ্জ, রাঙামাটি ও ভোলা। শিশুদের মধ্যে দারিদ্র্যের হার ২৮ দশমিক ৭০ শতাংশ। প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে এ হার ২১ দশমিক ৪৪ শতাংশ।

প্রধান অতিথি আনিসুজ্জামান চৌধুরী তাঁর বক্তব্যে এমপিআই-কে দারিদ্র্য দূরীকরণের একটি নতুন ও উদ্ভাবনী কৌশল হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, এই পদ্ধতি সর্বাধিক ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে চিহ্নিত করতে সহায়তা করবে। তিনি এ সূচককে নীতিনির্ধারণ ও পরিকল্পনা প্রক্রিয়ায় সংযুক্ত করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেন। এ ছাড়া কিছু জেলায় দারিদ্র্যের হার বেশি হওয়ার পেছনের কারণ অনুসন্ধানে আরও গবেষণা করার আহ্বান জানান।

অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, এমপিআই ব্যবস্থাটি আয়ভিত্তিক দারিদ্র্য মাপকাঠিকে সম্পূরকভাবে সহায়তা করবে এবং এসডিজি লক্ষ্য অর্জনে নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে। সভাপতির বক্তব্যে মনজুর হোসেন জানান, জিইডি ভবিষ্যতেও নিয়মিত এই সূচক প্রকাশ করবে এবং নীতিনির্ধারণে এটি গুরুত্বপূর্ণ সহায়ক হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ