ঢাকার আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কক্ষে গিয়ে ‘বিএনপি কার্যালয়ের পিয়ন’ পরিচয় দেওয়া সুমন মিয়া নামের এক যুবক চাঁদপুরে গ্রেপ্তার হয়েছেন। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের বরাত দিয়ে পুলিশ বলছে, সুমন পতিত সরকারের সময় আশুলিয়ায় শ্রমিকনেতা হিসেবে কাজ করতেন। বর্তমানে তিনি বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের পিয়ন পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করছেন।

বৃহস্পতিবার (৬ মার্চ) দুপুরে চাঁদপুর জেলার শাহরাস্তি উপজেলার চিতোষী পূর্ব ইউনিয়নের চান্দল গ্রাম থেকে সুমন মিয়াকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা পুলিশ। সুমন মিয়া শাহরাস্তির চান্দাইল গ্রামের বাসিন্দা। আশুলিয়া থানায় হওয়া বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তারের কথা জানিয়েছে পুলিশ।

এর আগে গত মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে আশুলিয়া থানার ওসির কক্ষে যান সুমন মিয়া। সেখানে কয়েকজন সংবাদকর্মীসহ অনেকে উপস্থিত ছিলেন। এ সময় সুমন নিজেকে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের পিয়ন পরিচয় দেন। একপর্যায়ে তিনি ওই কক্ষে উপস্থিত কয়েকজনকে আশুলিয়া থানায় সদ্য যোগ দেওয়া ওসি মোহাম্মদ মনিরুল ইসলামকে ‘ছাত্রলীগের ওসি’ উল্লেখ করেন। সুমন নিজেকে বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে পাঠানো হয়েছে বলেও দাবি করেন। এ নিয়ে শুরু হয় হট্টগোল।

ওই ঘটনার ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওসির কক্ষে উপস্থিত সাংবাদিকেরা সুমনের পরিচয় জানতে চাইলে তিনি নিজেকে বিএনপির পার্টি অফিসের পিয়ন পরিচয় দিয়ে বলেন, ‘ওসি সাহেবের সঙ্গে পরিচিত হতে এসেছি।’ এরপর একজন আগের একটি কথোপকথনের সূত্র ধরে ‘আপনি ওসি সাহেবের কোন বিষয়টি তদন্ত করতে এসেছেন’ জিজ্ঞেস করেন। উত্তরে সুমনকে বলতে শোনা ‍যায়, ‘দপ্তর স্যার বলছে ওসি নাকি ছাত্রলীগের, ছাত্রলীগের ওসি তাই আমাকে স্যার বলছে, তাই আসছি তার সাথে পরিচিত হতে।’

সেখানে উপস্থিত এক ব্যক্তি সুমনের দিকে তেড়ে গিয়ে ‘কে এসব শিখিয়ে দিয়েছে’ বলে জানতে চান। ভিডিওর এক পর্যায়ে সুমন নিজেকে বিএনপির কার্যালয়ের পিয়ন বলে পরিচয় দেন। অফিস থেকে কোনো কাজে নয়, তিনি পরিচিত হতে এসেছেন বলে জানান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের এক পর্যায়ে থানা থেকে সটকে পড়েন সুমন।

ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ার পর ওই দিনই যুবকের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানার ওসিকে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য আহ্বান জানান বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। বিএনপির ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে বলা হয়, আশুলিয়া থানার ঘটনা নিয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলে রুহুল কবির রিজভীর নজরে আসে বিষয়টি। তাৎক্ষণিক তিনি বিএনপির দপ্তরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, সুমন নামের ব্যক্তিটি ভুয়া পরিচয়ে থানায় গিয়ে বিএনপির নাম নিয়ে এমন অপকর্ম করেছেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আশুলিয়া থানার ওসিকে ফোন করে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা এবং ভুয়া পরিচয়ে পুলিশ কর্মকর্তার সঙ্গে অসদাচরণ করার জন্য আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানান।

এ ঘটনা নিয়ে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আশুলিয়া থানায় পুলিশের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করা হয়। সেখানে ঢাকা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সাভার সার্কেল) শাহীনুর কবির বলেন, গত মঙ্গলবার দুপুরে আশুলিয়া থানার ওসির কক্ষে প্রবেশ করে সুমন নিজেকে বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের পিয়ন পরিচয় দেন। তিনি বিএনপির দলীয় কার্যালয় থেকে পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করায় বৃহস্পতিবার বেলা পৌনে একটার দিকে চাঁদপুরের শাহরাস্তি থানার চিতোষী নামক স্থান থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে ঢাকা জেলা পুলিশ। গ্রেপ্তারের পর জিজ্ঞাসাবাদে সুমন মিয়া আশুলিয়া এলাকায় তৈরি পোশাক কারখানায় পতিত সরকারের সময় শ্রমিকনেতা হিসেবে কাজ করতেন বলে জানান।

সুমন মিয়া বর্তমানে বিভিন্ন জায়গায় বিএনপির কেন্দ্রীয় অফিসের পিয়ন পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করে থাকেন উল্লেখ করে সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, অনৈতিক সুবিধা আদায়সহ গার্মেন্টস এলাকার অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরির জন্য একটি মহলের সঙ্গে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। মূলত আশুলিয়া থানার ওসিকে প্রশ্নবিদ্ধ করার লক্ষ্যে একটি স্বার্থান্বেষী মহলের পক্ষে অসৎ উদ্দেশ্যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিলেন সুমন। তাঁকে আদালতে হাজির করে রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহীনুর কবির প্রথম আলোকে বলেন, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের কোনো নেতার সঙ্গে সুমনের সম্পৃক্ততার বিষয়টি সত্য নয়। আশুলিয়া থানায় বিশেষ ক্ষমতা আইনের মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র ক ন দ র য় স মন ন জ ক স মন ম য় উপস থ ত ন পর চ ন স মন

এছাড়াও পড়ুন:

জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনে ১১৫২ পদে বড় নিয়োগ, চাকরি পেতে করুন আবেদন

জেলা জজ ও অধস্তন আদালত বা ট্রাইব্যুনালসমূহের রাজস্ব খাতভুক্ত ১৪ থেকে ২০তম গ্রেডের ১ হাজার ১৫২টি পদে নিয়োগে আবেদন চলছে। আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য আবেদনের সুযোগ আর দুই দিন। আবেদনের শেষ সময় ৯ ডিসেম্বর ২০২৫।

পদের নাম ও বিবরণ—

১. সাঁট মুদ্রাক্ষরিক-কাম-কম্পিউটার অপারেটর

পদসংখ্যা: ২৮৪

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: কোনো স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অন্যূন দ্বিতীয় শ্রেণি বা সমমানের সিজিপিএতে স্নাতক বা সমমানের ডিগ্রি; সাঁটলিপির সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ৭০ শব্দ এবং বাংলায় ৪৫ শব্দ; কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ৩০ শব্দ ও বাংলায় ২৫ শব্দ।

বেতন স্কেল ও গ্রেড: ১০,২০০-২৪,৬৮০ টাকা (গ্রেড-১৪)

আরও পড়ুনসামরিক ভূমি ও ক্যান্টনমেন্ট অধিদপ্তরে নিয়োগ, পদসংখ্যা ৪৫০৬ ডিসেম্বর ২০২৫

২. বেঞ্চ সহকারী

পদসংখ্যা: ৩৫

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড হতে ন্যূনতম উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে হবে।

বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৬)

৩. অফিস সহকারী-কাম-কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক

পদসংখ্যা: ২৫৩

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড হতে অন্যূন দ্বিতীয় বিভাগ বা সমমানের জিপিএতে উচ্চমাধ্যমিক সার্টিফিকেট বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; কম্পিউটার ব্যবহারে দক্ষতা; কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরে সর্বনিম্ন গতি প্রতি মিনিটে ইংরেজিতে ২০ শব্দ ও বাংলায় ২০ শব্দ।

বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৬)

৪. গাড়িচালক

পদসংখ্যা: ২২

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; ড্রাইভিংয়ের ব্যবহারিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ; মোটরগাড়ি চালানোর বৈধ লাইসেন্সধারী হতে হবে; অভিজ্ঞ প্রার্থীরা অগ্রাধিকার পাবেন।

বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৯,৩০০-২২,৪৯০ টাকা (গ্রেড-১৬)

আরও পড়ুনএআই যেভাবে ২০২৬ সালে ৮৯% চাকরিতে প্রভাব ফেলবে০৭ ডিসেম্বর ২০২৫

৫. জারিকারক

পদসংখ্যা: ১৫৭

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: কোনো স্বীকৃত বোর্ড হতে মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট পরীক্ষায় বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৮,৫০০-২০,৫৭০ টাকা (গ্রেড-১৯)

৬. অফিস সহায়ক

পদসংখ্যা: ৪০১

শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা: অষ্টম শ্রেণি বা সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ।

বেতন স্কেল ও গ্রেড: ৮,২৫০-২০,০১০ টাকা (গ্রেড-২০)

বয়সসীমা

১ নভেম্বর ২০২৫ তারিখে সর্বনিম্ন ১৮ বছর এবং সর্বোচ্চ ৩২ বছর হতে হবে। বিভাগীয় প্রার্থীর বয়সসীমা সর্বোচ্চ ৪০ বছর।

আবেদনের নিয়ম

পরীক্ষায় অংশগ্রহণে ইচ্ছুক ব্যক্তি এই ওয়েবসাইটে আবেদনপত্র পূরণ করতে পারবেন।

আরও পড়ুনইউরোপে ২০ লাখ দক্ষ কর্মীর ঘাটতি, স্টেম শিক্ষায় সংস্কারের তাগিদ১ ঘণ্টা আগেআবেদন ফি

১ থেকে ৪ নম্বর পদের জন্য আবেদন ফি বাবদ ১০০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ বাবদ ১২ টাকাসহ মোট ১১২ টাকা;

৫ ও ৬ নম্বর পদের জন্য আবেদন ফি বাবদ ৫০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ বাবদ ৬ টাকাসহ মোট ৫৬ টাকা।

*অনগ্রসর নাগরিকের (ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, শারীরিক প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের প্রার্থী) সব গ্রেডের জন্য আবেদন ফি বাবদ ৫০ টাকা ও টেলিটকের সার্ভিস চার্জ বাবদ ৬ টাকাসহ মোট ৫৬ টাকা।

আগ্রহী প্রার্থীদের জন্য আবেদনের শেষ সময় ৯ ডিসেম্বর ২০২৫।

সম্পর্কিত নিবন্ধ