টাঙ্গাইলে সালিশে ধর্ষণের মূল্য দেড় লাখ টাকা!
Published: 9th, March 2025 GMT
টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে নানিবাড়ি বেড়াতে গিয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ুয়া মাদরাসা শিক্ষার্থী ধর্ষণের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ঘটনা ঘটলে সম্প্রতি বিষয়টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। এরপর স্থানীয় মাতব্বররা গ্রাম্যসালিশের আয়োজন করে অভিযুক্তকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করেন।
অভিযুক্ত ফিরোজ (৪৫) মির্জাপুরের কুড়িপাড়া গ্রামের নওশের আলীর ছেলে। তিনি পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশা চালক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ঘটনার পর ভুক্তভোগী ওই শিশু এবং তার পরিবার ভয়ে মুখ না খুললেও সম্প্রতি ঘটনাটি জানাজানি হয়। ধর্ষণের অভিযোগ ধামাচাপা দিতে স্থানীয় মাতব্বররা গ্রাম্যসালিশের আয়োজন করে। সালিশে অভিযুক্ত ধর্ষককে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এর মধ্যে ৯২ হাজার টাকা ভুক্তভোগী পরিবার পেয়েছে। ঘটনাটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে শনিবার (৮ মার্চ) দুপুরে পুলিশ ভুক্তভোগী পরিবারকে থানায় ডেকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে। এরপর ভুক্তভোগীর মা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেন।
মামলা ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ ফেব্রুয়ারি ফিরোজ শিশুটির নানিবাড়ির পাশের জমিতে সার দিচ্ছিল। এ সময় শিশুটি বড়ই কুড়াচ্ছিল। তখন অভিযুক্ত ফিরোজ কৌশলে শিশুটিকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ করে। এরপর ঘটনার কথা কাউকে বললে মোবাইলে ধারণ করা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়াসহ শিশুটিকে প্রাণে মেরে ফেলার ভয় দেখায়। ঘটনার পর বাড়ি ফিরে শিশুটি চুপচাপ থাকায় পরিবারের সন্দেহ হয়। কারণ জানতে চাইলে এক পর্যায়ে শিশুটি পরিবারকে বিষয়টি জানায়। ঘটনাটি জানাজানি হলে স্থানীয় আব্দুল মালেক, ইউনূস, বাবলু, নূরুল ইসলামসহ কয়েকজন মাতব্বর দ্রুত গ্রাম্যসালিশের আয়োজন করে। সালিশে অভিযুক্ত ধর্ষক ফিরোজকে দেড় লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। মাতব্বরদের চাপের মুখে সালিশ মেনে নেয় অসহায় পরিবার। তবে জরিমানার পুরো টাকা এখনও তারা পায়নি। এদিকে ঘটনার পর থেকেই ফিরোজ আত্মগোপনে রয়েছে।
ভুক্তভোগী শিশুটির মা জানান, তার স্বামী সৌদি প্রবাসী। তিনি পোশাক শ্রমিক। শুরুতে ঘটনার কথা কাউকে ভয়ে প্রকাশ করতে পারেননি। লোকলজ্জার কারণে মাতব্বরদের করা বিচার তিনি মেনে নিয়েছেন। কিন্তু ঘটনা থানা পর্যন্ত গড়ালে তিনি সাহস পেয়ে মামলা করেছেন। এখন তিনি অপরাধীদের উপযুক্ত বিচার চান।
মির্জাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোশারফ হোসেন বলেন, ‘‘অভিযুক্ত ফিরোজকে প্রধান করে পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তরা পলাতক। তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।’’
কাওছার//
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর পর ব র ঘটন র
এছাড়াও পড়ুন:
টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।