জেল সুপারের মানবিকতায় দেশে ফিরলেন নেপালী যুবক
Published: 11th, March 2025 GMT
সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে অবৈধভাবে অনুপ্রবেশ করেছিলেন নেপালী যুবক রাম রিশি চৌধুরী (২৩)। পাবনার ঈশ্বরদী থেকে তাকে আটক করে পুলিশ। এরপর পাবনা কারাগারে কাটতে থাকে দিন মাস বছর। বিষয়টি নজরে আসে জেল সুপার ওমর ফারুকের। অবশেষে তাঁর উদ্যোগে এক বছর আট মাস পঁচিশ দিন পর আদালতের মাধ্যমে নিজ দেশে ফিরে যান নেপালী যুবক।
রাম রিশি চৌধুরী নেপালের সরলাহি জেলার খার কাটোল গ্রামের মি.
পাবনা জেলা কারাগার থেকে প্রাপ্ত তথ্য থেকে জানা যায়, ঘুরতে ঘুরতে সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে পড়েছিলেন রাম রিশি। এরপর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে পাবনার ঈশ্বরদীতে গিয়ে পৌঁছান। এক পর্যায়ে ২০২৩ সালের ১১ জুন ঈশ্বরদী থানা পুলিশ অবৈধভাবে অনুপ্রবেশের দায়ে তাকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে পাবনা জেলা কারাগারে পাঠায়। সেখানেই ছিলেন এতদিন।
পাবনা জেল সুপার ওমর ফারুক বলেন, “আটকের পর প্রথমে তিনি নিজেকে ভারতীয় দাবি করেছিলেন। পরে জানান তিনি নেপালী। তিনি মানসিকভাবে বেশ অস্বাভাবিক ছিলেন। চিকিৎসা দিয়ে তাকে সুস্থ করা হয়। এরপর বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করি। ২০২৪ সালের ২৪ নভেম্বর পাবনার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আমলী আদালত-২ এ নেপালী যুবকের বক্তব্যসহ একটি আবেদন পাঠাই। আইনজীবীর মাধ্যমে নথি উপস্থাপনের পর যুবক নেপালী কি না তা যাচাই করার জন্য একজন দোভাষীর প্রয়োজন বলে জানান বিচারক।”
জেল সুপার বলেন, “তখন আমি ঢাকাস্থ নেপালী দূতাবাসে যোগাযোগ করি। সেখান থেকে রিয়া ছেত্রী নামের একজনকে দোভাষী হিসেবে আদালতে হাজিরার তারিখে পাঠায়। তার বয়ানে ও স্বাক্ষ্য প্রমাণ শেষে রাম রিশিকে নেপালী হিসেবে চিহ্নিত করেন আদালত। ২০২৫ সালের ২৩ জানুয়ারি আদালতের বিচারক মোস্তাফিজুর রহমান আদেশ দেন, ‘যেহেতু সে ভারতীয় নাগরিক নয়। সেহেতু অবৈধ অনুপ্রবেশের কারণে তাকে সাজা দেওয়া যাচ্ছে না। তাই সংশ্লিষ্ট জেল কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট বন্দিকে নেপালে প্রেরণের জন্য নির্দেশ দেওয়া হলো।”
এরপর সরকারি আদেশ, আদালতের অনুমোদনসহ আইনগত বিষয় শেষ করে চলতি বছরের ৬ মার্চ পাবনা কারাগার থেকে নেপালী দূতাবাসের সেকেণ্ড সেক্রেটারি ইয়োজানা বামজান-এর কাছে রাম রিশি চৌধুরীকে হস্তান্তর করা হয়।
এসময় জেল সুপার ওমর ফারুক, জেলার ইউনুস জামানসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। দূতাবাসের মাধ্যমে তিনি নিজ দেশে পরিবারের কাছে ফিরে যান। রাম রিশি পাবনা কারাগারে ছিলেন ১ বছর ৮ মাস ২৫ দিন।
এক প্রতিক্রিয়ায় জেল সুপার ওমর ফারুক বলেন, ‘‘এমন কাজ করতে পেরে নিজের কাছে অনেক শান্তি লাগে। মানসিকভাবে তৃপ্তি পাই। এটা আমার কাছে নতুন কোনো ঘটনা নয়। এনিয়ে আমার কাছে এটা ২৩তম প্রত্যাবাসন কাজ। এর আগে নেপালী ও ভারতীয় মিলিয়ে মোট ২২টি প্রত্যাবাসন করেছি। যতদিন চাকরি আছে ততদিন এমন কাজ করে যেতে চাই।”
ঢাকা/শাহীন/এস
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর জ ল স প র ওমর ফ র ক
এছাড়াও পড়ুন:
টাকার জন্য দেশে ছেড়েছি, এখন টাকা খরচের সময় নেই: পিয়া বিপাশা
লাক্স চ্যানেল আই সুপারস্টার প্রতিযোগিতার মাধ্যমে বিনোদন অঙ্গনে পা রাখেন পিয়া বিপাশা। এরপর অভিনয় করেছেন মিউজিক ভিডিও, নাটক ও সিনেমায়। কিন্তু হুট করেই নাই হয়ে গেলেন। পরে জানা গেল অভিনেত্রী আমেরিকায়। গেল পাঁচ বছর সেখানেই বাস করছেন তিনি। সম্প্রতি দেশের একটি গণমাধ্যমে প্রবাসজীবনসহ নানা বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন তিনি।
পিয়া বিপাশা জানান, একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিউইয়র্কে বসবাস শুরু করেন। এরপর যুক্তরাষ্ট্রের এক নাগরিকের সঙ্গে তাঁর প্রেম ও ভালোবাসা তৈরি হয়। তারপর তাঁরা বিয়ে করেন। দুজনে মিলে বিয়ে করলেও আনুষ্ঠানিকতা সারেননি। চলতি বছরের শেষ দিকে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সেরে নেওয়ার ইচ্ছা।
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘বাংলাদেশে ভালো লাগত না। কারণ, লবিং ছাড়া কাজ হতো না। ভালো একটা সিনেমা করার কথা ছিল। কিন্তু সেটা আর হয়নি। এরপর আমার মিডিয়ায় কাজ করার ইচ্ছাই নষ্ট হয়ে যায়। আমি আসলে কাজ করতে চেয়েছিলাম টাকা কামানোর জন্য। কাজ না করতে পারলে টাকা কামাব কী করে। তাই সিদ্ধান্ত নিই অন্য কিছু করার।’
বিপাশার কথায়, ‘টাকা রোজগারের জন্য আমি বিনোদন অঙ্গনে কাজ করেছিলাম। কারণ, আমার একটা মেয়ে ছিল। মেয়েকে নিয়ে টিকে থাকার বিষয় ছিল। পরে দেখলাম, যেভাবে কাজ হয়, আমাকে দিয়ে ইন্ডাস্ট্রিতে টিকে থাকা সম্ভব নয়। তাই সিদ্ধান্ত নিলাম, আমেরিকায় চলে আসার। এখানে এসে বাংলাদেশের সঙ্গে সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিই। অনেক টাকাও আয় করছি।’
পিয়া বিপাশা বলেন, ‘সত্যি বলতে এখন আমার এমন অবস্থা, টাকা ইনকাম না করলেও হয়। আমার এখন আর কোনো স্বপ্ন নেই। যা চেয়েছি, গত পাঁচ বছরে সবই পেয়েছি। টাকাপয়সা, সুন্দর জীবন, প্রতিষ্ঠিত হওয়া, ভালো স্বামী—সবই আমার হয়েছে। টাকা নিয়ে এখন কোনো চিন্তা নেই আমার—যা আয় করি, তা ব্যয় করার সময় পাই না।’
পিয়া বিপাশা জানান, ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে বিভিন্ন পণ্যের যেসব পোস্ট করেন, তার জন্য বেশ ভালো সম্মানী পান। তাঁর দাবি, এই সম্মানী কখনো দুই হাজার ডলার, আবার কখনো তিন হাজার ডলারের মধ্যে।
২০১৩ সালে ‘দ্বিতীয় মাত্র’ নাটকে তাহসান খানের বিপরীতে অভিনয় করেন। ছোটবেলায় রূপকথার বই পড়তে পছন্দ করতেন। বই পড়ার সময় গল্পের নায়িকার চরিত্রে নিজেকে কল্পনাও করতেন। বড় পর্দায়ও অভিনয় করেছিলেন। ‘রুদ্র: দ্য গ্যাংস্টার’ নামের সেই ছবি মুক্তি পায়। এরপর ‘রাজনীতি’ ছবিতে শাকিব খানের বিপরীতে অভিনয়ের কথা থাকলেও শেষ পর্যন্ত হয়ে ওঠেনি। পরে সেই ছবিতে পিয়া বিপাশার পরিবর্তে অপু বিশ্বাস অভিনয় করেন।