চর গঙ্গামতি সৈকতে ভেসে আসছে অজস্র মৃত ঝিনুক
Published: 12th, March 2025 GMT
পটুয়াখালীর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটার চর গঙ্গামতি সৈকতে প্রতিনিয়ত ভেসে আসছে অজস্র ছোট ছোট মৃত সাদা ঝিনুক। সৈকতের বিশাল এলাজুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে এসব ঝিনুকের খোলস।
শুধু চর গঙ্গামতি সৈকতই নয়, দীর্ঘ ২২ কিলোমিটার সৈকতের বিভিন্ন পয়েন্টে মৃত ঝিনুকের দেখা মিলেছে। সৈকতের ধুধু বালুচরের উপর এসব ঝিনুকের সাদা আস্তরণ সৌন্দর্য ছড়াচ্ছে। তবে, বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর বেশি পরিমাণে মৃত ঝিনুকের খোলস ভেসে আসায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন গবেষকসহ পরিবেশ কর্মীরা।
চর গঙ্গামতি এলাকার জেলে আবজাল হোসেন বলেন, “এক দশক আগেও সৈকতে বড় সাইজের ঝিনুক ভেসে আসত। সেসব ঝিনুক সংগ্রহ করে খোলস বিক্রি করা যেত। কিন্তু গত কয়েকদিন পর্যন্ত সৈকতে একেবারে গুঁড়ি গুঁড়ি ঝিনুকের খোলস ভেসে এসেছে। বিশাল এলাকাজুড়ে এসব খোলস পড়ে থাকায় দেখতে ভালোই লাগছে। তবে ভেসে আসা খোলসগুলো মাটির সঙ্গে মিশে যাচ্ছে অথবা সমুদ্রের ঢেউয়ে ফের গভীরে চলে যাচ্ছে।”
একই এলাকার অপর জেলে মাশারেফ হোসেন বলেন, “আমরা আগে এতো বেশি পরিমাণে ঝিনুকের খোলস পড়ে থাকতে দেখিনি। এবছর একটু বেশিই মনে হচ্ছে। সাইজে ছোট হওয়ায় এগুলো কোন কাজে আসে না।”
কলাপাড়া উপজেলায় পরিবেশ-প্রতিবেশ নিয়ে কাজ করা পরিবেশ কর্মী সাংবাদিক মেজবাহ উদ্দিন মাননু বলেন, “প্রতি বছরই সৈকতে মৃত ঝিনুক ভেসে আসে। তবে এবছর প্রচুর পরিমাণে ছোট ছোট মৃত ঝিনুক ভেসে এসেছে। এটা নিয়ে আমরা পরিবেশ কর্মীরা অনেকটা চিন্তিত। তবে কেন এভাবে প্রতিবছর ঝিনুক ভেসে আসে বৈজ্ঞানিক ভিত্তিতে তার কারণ অনুসন্ধান করার দাবি জানাচ্ছি। পাশাপাশি ঝিনুকের খোলস সৈকতের পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর কিনা বা এসব খোলস সংগ্রহ করে কাজে লাগানো যায় কিনা সে বিষয়ে ক্ষতিয়ে দেখার অনুরোধ জানাচ্ছি।”
বাংলাদেশ মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউট পরিচালিত খেপুপাড়া নদী উপকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অভিজিৎ বসু বলেন, “সমুদ্রের পানিতে কয়েকটা স্তর থাকে। এর মধ্যে শামুক এবং ঝিনুক একেবারে নিচের স্তরে থাকে। সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া ও পানিতে লবণাক্ততা বৃদ্ধিসহ পরিবেশ গত নানা কারণে ঝিনুক মরে তীরে ভেসে আসতে পারে। তবে ল্যাব গবেষণা ছাড়া কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে মৃত ঝিনুক ভেসে আসার কারণ বলা যাচ্ছে না।”
ঢাকা/ইমরান/এস
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ঝ ন ক র খ লস স কত র পর ব শ
এছাড়াও পড়ুন:
অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে, দুই বন্ধু নিহত
রাজধানীতে অটোরিকশার ধাক্কায় ছিটকে বাসের নিচে পড়ে দুই মোটরসাইকেল আরোহী নিহত হয়েছেন। গতকাল বুধবার বনশ্রীর এফ ব্লক সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এদিন মতিঝিলের ফকিরাপুল মোড়ে প্রাইভেট কারের চাপায় আব্দুল মতিন (৩৬) নামে এক রিকশাচালক নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া পাঁচ জেলায় সড়ক দুর্ঘটনায় ছয়জন প্রাণ হারিয়েছেন।
বনশ্রীতে নিহত দু’জন হলেন– আব্দুল্লাহ আল নোমান (২১) ও পাভেল মিয়া (২০)। নোমানের মামা আব্দুল হামিদ জানান, নিহতরা পরস্পর বন্ধু। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে ঢাকায় ঘুরতে যাওয়ার সময় দু’জন দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছেন। তারা রূপগঞ্জের নামারমুসুরি এলাকায় থাকতেন। নোমান মুড়াপাড়া ডিগ্রি কলেজের এইচএসসি প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। পাভেল তেমন কিছুই করতেন না। এ ঘটনায় নোমানের পরিবারের পক্ষ থেকে সড়ক নিরাপত্তা আইনে খিলগাঁও থানায় মামলা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী মোটরসাইকেল চালক টিপু সুলতান বলেন, সড়কটি যানবাহনে ঠাসা ছিল। এ কারণে গাড়ি চলছিল ধীরগতিতে। হঠাৎ একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা পাশ থেকে এসে নোমানের মোটরসাইকেলে ধাক্কা দেয়। এতে দু’জন সড়কের ওপর ছিটকে পড়েন। পরে মিয়ামি পরিবহনের একটি বাস তাদের চাপা দেয়। নোমান ঘটনাস্থলেই মারা যান। মোটরসাইকেল আরোহী পাভেলকে গুরুতর আহত অবস্থায় ফরাজী হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
খিলগাঁও থানার ওসি দাউদ হোসেন জানান, বাসটি জব্দ করা হয়েছে। চালক ও তার সহকারী পালিয়ে গেছে। অটোরিকশা চালককেও আটক করা যায়নি। মরদেহ দুটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) মর্গে পাঠানো হয়েছে।
গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ফকিরাপুল মোড়ে প্রাইভেটকারের চাপায় প্রাণ হারান রিকশাচালক আব্দুল মতিন। তাঁর বাড়ি রংপুরে। তিনি মুগদার মাণ্ডা এলাকায় একটি রিকশার গ্যারেজে থাকতেন। মতিঝিল থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মোহাইমিনুল ইসলাম জানান, প্রাইভেটকারের চালক আল আমিনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। প্রাইভেটকার জব্দ করা হয়েছে। ময়নাতন্ত শেষে পরিবারের কাছে মতিনের মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে।
এদিকে মঙ্গলবার রাতে বিমানবন্দর থানার সিভিল এভিয়েশন কোয়ার্টার গেটের (সি-টাইপ) সামনের ফুটপাত থেকে অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার বয়স আনুমানিক ২৫ বছর। বিমানবন্দর থানার এসআই আমিনুল ইসলাম বলেন, ওই যুবকের পরিচয় শনাক্তের চেষ্টা চলছে। মরদেহ ঢামেক মর্গে রাখা হয়েছে।
সড়কে ঝরল আরও ছয় প্রাণ
খুলনার ডুমুরিয়ায় তেলবাহী লরির চাপায় দুই নারী নিহত হয়েছেন। গতকাল বিকেলে উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের নরনিয়া মহিলা মাদ্রাসার কাছে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন– রোকেয়া বেগম (৫৫) ও রশিদা বেগম (৪৫)।
গতকাল সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাছে সেলফি পরিবহনের বাসের ধাক্কায় শামসুল হক নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। তিনি গাজীপুরের শ্রীপুরে গণস্বাস্থ্য উপকেন্দ্রের নিরাপত্তাকর্মী ছিলেন। সাভার থেকে অবসরের পাওনাদি নিয়ে ফেরার পথে তিনি প্রাণ হারান। শামসুলের বাড়ি চাঁদপুরে। ঘটনার পর গণস্বাস্থ্য মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থী ও গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের কর্মচারীরা সেলফি পরিবহনের পাঁচটি বাস আটক করেন।
এদিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অটোরিকশা ও পিকআপ ভ্যানের সংঘর্ষে নয়ন মিয়া (৩৭) নামে এক যুবক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১০ জন। গতকাল বিকেলে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের মোগড়াপাড়া ইউনিয়নের রতনদী এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে দুই মোটরসাইকেলের মুখোমুখি সংঘর্ষে শান্ত ইসলাম (১৮) নামে এক তরুণ নিহত হয়েছেন। গতকাল উপজেলার কুষ্টিয়া-প্রাগপুর সড়কে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শান্ত মথুরাপুর পশ্চিমপাড়া গ্রামের রিপন মণ্ডলের ছেলে।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার মৃগী বাজারে মোটরসাইকেল নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কে ছিটকে পড়ে স্বপন শীল নামে এক স্যালুন ব্যবসায়ী নিহত হয়েছেন। গতকাল ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানের নিমন্ত্রণপত্র বিলি করতে বেরিয়ে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান তিনি।