শনিবার (১৫ মার্চ) সারা দেশের মতো সিলেটে জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন অনুষ্ঠিত হবে। ক্যাম্পেইনে সিলেট মহানগর এলাকায় ৩৬৮টি কেন্দ্রে মোট ৭৮ হাজার ২৪১ জন শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। বুধবার দুপুর ১২টায় নগর ভবনে প্রিন্ট, ইলেকট্রনিক ও অনলাইন মিডিয়ার সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় এসব তথ্য জানানো হয়। সিসিকের সভাকক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন সিটি কর্পোরেশনের সচিব মো.

আশিক নূর। 

সভায় সিটি কর্পোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. মো. জাহিদুল ইসলাম জানান, ক্যাম্পেইনে ৬ মাস থেকে ১১ মাস বয়সী শিশুদের একটি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। আর ১২ মাস থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের একটি করে লাল রঙের ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।  

তিনি আরও জানান, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৪২টি ওয়ার্ডে স্থায়ী, অস্থায়ী, ইপিআই ও অতিরিক্ত মিলিয়ে সর্বমোট ৩৬৮টি টিকাদান কেন্দ্রে ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন পরিচালিত হবে। এর মধ্যে ইপিআই স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র ১টি, ইপিআই নিয়মিত টিকাদান কেন্দ্র ২৭টি, অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র ২৫৯টি, ভিটামিন ‘এ’ অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্র ৬০টি এবং অতিরিক্ত কেন্দ্র রয়েছে ২১টি। এই ক্যাম্পেইন সফল করতে ৮৪ জন সুপারভাইজারের অধীনে মাঠ পর্যায়ে কাজ করবেন ৭৩৬ জন স্বেচ্ছাসেবী। 

সভায় সিটি কর্পোরেশনের সচিব আশিক নূর ভিটামিন ‘এ’ এর অভাবে শিশুদের মধ্যে কি ধরনের প্রভাব পড়ে তা তুলে ধরেন এবং ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন সফলে সবার সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, শিশুদের ভবিষ্যত সুরক্ষিত করতে যে কোনো মূল্যে এই ক্যাম্পেইন সফল করা প্রয়োজন। ভিটামিন ‘এ’ পাওয়ার যোগ্য কোনো শিশু যাতে বাদ না পড়ে সে ব্যাপারে সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি। 

মতবিনিময় সভায় সিলেট প্রেসক্লাবের সভাপতি ইকরামুল কবীর, সিনিয়র সহসভাপতি এম এ হান্নান, সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম, সিলেট জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মো. নাসির উদ্দিন, কোষাধ্যক্ষ আনন্দ সরকার, ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো. ইউসুফ আলী, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মোহাম্মদ গোলজার হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সাইফুর রহমান তালুকদার, সিসিকের স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. সুলতানা সিরাজী, জনসংযোগ কর্মকর্তা নেহার রঞ্জন পুরকায়স্থ, সিনিয়র স্বাস্থ্য পরিদর্শক ভূপাল রঞ্জন চন্দ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ক য ম প ইন

এছাড়াও পড়ুন:

নড়াইলে সরকারি গাছ বিক্রির অভিযোগে চেয়ারম্যানসহ ১৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ ইউনিয়নে সড়কের পাশে সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাতে শাহবাদ ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা মশিউর রহমান বাদী হয়ে সদর থানায় মামলাটি করেন।

মামলায় ওই ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমানসহ ১৩ জন আসামি করা হয়েছে। অন্য আসামিরা হলেন প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকা ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন ও প্রশিকার গঠিত সংগঠন প্রভাতী যুব সংঘের সভাপতি নড়াইল সদর উপজেলার তুজরডাঙ্গা এলাকার মুজিবুর রহমান, সদস্য একই এলাকার জরিনা বেগম, রজব আলী, মো. আজিবর, মো. ইলিয়াছ, ইমান আলী, মো. ওমর, মো. হায়দার, আবু সাঈদ, মো. এনামুল ও মো. শরিফুল।

এ বিষয়ে আজ বৃহস্পতিবার সকালে নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাজেদুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারি গাছ চুরি করে বিক্রির অভিযোগে একটি মামলা হয়েছে। ঘটনার তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

মামলার এজহারে বাদী অভিযোগ করেছেন, গত ২৯ এপ্রিল নড়াইল সদর উপজেলার শাহাবাদ বাজার থেকে হাজির বটতলা পর্যন্ত সরকারি রাস্তার জায়গা থেকে গাছ কাটা ও চুরি করে বিক্রির সংবাদ পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। উপস্থিত হয়ে দেখেন, কাটা গাছবোঝাই একটি ট্রাক এবং নছিমন জব্দ করেছেন নড়াইল সদর উপজেলা ভূমি অফিসের সহকারী কমিশনার দেবাশীষ অধিকারী। তখন ঘটনাস্থলে শ্রমিকদের জিজ্ঞাসাবাদ ও খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, মামলার আসামিরা কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়াই খাসজমি থেকে গাছ কেটে বিক্রি করেছেন। এর আগেও একবার তাঁরা ওই জমি থেকে গাছ বিক্রি করেছিলেন। জব্দ করা গাছের লগ, ডালপালা এবং আগে কাটা গাছের অবশিষ্ট ভূমিসংলগ্ন গুঁড়ি পর্যবেক্ষণ করে বোঝা গেছে, ওই স্থান থেকে আনুমানিক পাঁচ লাখ টাকার অধিক গাছ চুরি করে কাটা ও বিক্রি হয়েছে।  

প্রশিকা নড়াইল উন্নয়ন এলাকার ব্যবস্থাপক শাহাব উদ্দিন বলেন, ২০০৯ সালে প্রশিকা, ইউনিয়ন পরিষদ ও প্রভাতী যুব সংঘের যৌথ উদ্যোগে একটি চুক্তির মাধ্যমে সড়কের পাশে গাছগুলো রোপণ করেছিল। সে সময় সড়কটি খাস খতিয়ানভুক্ত ছিল না। বর্তমানে তা সরকারের আওতায় পড়ায় গাছ কাটার অনুমতি চেয়ে ইউএনওর কাছে আবেদন করা হয়েছিল, তবে প্রশাসন কোনো সিদ্ধান্ত দেয়নি।  কিছুদিন আগে ইউপি সদস্য ইব্রাহিম তাঁকে ফোনে জানান, বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালা বিক্রি করতে চান চেয়ারম্যান। বিদ্যুৎ বিভাগের কাটা ডালপালাগুলো পড়ে থেকে নষ্ট হবে ভেবে তিনি বিক্রিতে সম্মতি দেন। পরে গাছ কীভাবে বা কারা কেটেছে, তা তিনি জানেন না।

মামলা করার আগে অবৈধভাবে গাছ কাটার অভিযোগের ব্যাপার জানতে চাইলে ইউপি চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান বলেছিলেন, প্রশিকার সঙ্গে চুক্তির একটি পক্ষ ছিল ইউনিয়ন পরিষদ। সেই হিসেবে গাছ কাটার অনুমতি নিতে ইউএনও বরাবর প্রশিকার আবেদন তিনি চেয়ারম্যান হিসেবে সুপারিশ করেছিলেন। তবে গাছ কেটেছে প্রশিকা আর তাদের সংগঠন। এখানে চেয়ারম্যান-মেম্বরের কিছু নেই।

নড়াইল সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) দেবাশীষ অধিকারী বলেন, প্রশিকার চুক্তির সময় সড়কটি ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে ছিল, পরে ২০১৫ সালে এটি খাস খতিয়ানভুক্ত হয়। খাসজমি থেকে গাছ কাটা বেআইনি। এ কারণে তাঁদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ