ক্যাম্পাসে সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি ট্যাগিংয়ের শিকার হয়: জাবি উপাচা
Published: 17th, March 2025 GMT
ক্যাম্পাসে সাংবাদিকরা সবচেয়ে বেশি ট্যাগিংয়ের শিকার হয় বলে মন্তব্য করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ড. কামরুল আহসান।
তিনি বলেছেন, “জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংবাদিকেরা অন্যদের থেকে ব্যতিক্রম। তারা যেকোনো অবস্থায় সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করেন। জুলাই আন্দোলনে আমরা সাংবাদিকদের অসীম সাহসী ভূমিকা দেখেছি। কিন্তু এই সাংবাদিকরাই ক্যাম্পাসে সবচেয়ে বেশি ট্যাগিংয়ের শিকার হয়। আমিও ট্যাগিংয়ের শিকার হই, কিন্তু সেটা সাংবাদিকদের থেকে কম।”
সোমবার (১৭ মার্চ) বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট হলে জাবি প্রেসক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
আরো পড়ুন:
জাবির সাহিত্য ও সংস্কৃতি ইনস্টিটিউটের স্থায়ী ভবন দাবি
জাবিতে শিবিরের ইফতারে শিক্ষার্থীদের ঢল
তিনি বলেন, “কারো বিরুদ্ধে নিউজ হলেই তারা সাংবাদিকদের অপমান-অপদস্তসহ ট্যাগ দেওয়া শুরু করেন। কিন্তু তবুও তারা সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশনে তৎপর থাকে। এটা আমাকে খুবই অনুপ্রাণিত করে।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, উপ-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক মাহফুজুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো.
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন, জাবি শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন মোহাম্মদ বাবর, সদস্য সচিব ওয়াসিম আহমেদ অনিক, ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব, গণতান্ত্রিক ছাত্রসংসদের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম, গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ জিতু, ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ইমন প্রমুখ।
অতিথিদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রেসক্লাবের সভাপতি ওয়াজহাতুল ইসলাম বলেন, “মাহে রমজানের মহান উপলক্ষকে সামনে রেখে জাবি প্রেসক্লাব এ ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেছে। প্রেসক্লাবের উদ্যোগে সব সামাজিক ও রাজনৈতিক সংগঠনের যে মিলনমেলা সৃষ্টি হয়েছে, তা উদাহরণ হয়ে থাকবে। আশা করি, আপনাদের সবার সহযোগিতায় প্রেসক্লাব বস্তুনিষ্ঠ সাংবাদিকতায় অনেকদুর এগিয়ে যাবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
জুলাই ডকুমেন্টরিতে ‘ফুটেজ’ না থাকায় জাবি ছাত্রদল নেতার হট্টগোল
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে নির্মিত দেশের প্রথম স্মৃতিস্তম্ভ ‘অদম্য ২৪’ উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রচারিত ডকুমেন্টরিতে ফুটেজ না থাকায় এক ছাত্রদল নেতার বিরুদ্ধে হট্টগোল করা অভিযোগ পাওয়া গেছে।
তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ৩৯তম ব্যাচের (২০০৯-১০ সেশন) সাবেক শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রদলের সাবেক সহ-সভাপতি।
বৃহস্পতিবার (৩১ জুলাই) বিকেল ৬টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন ফজিলাতুন্নেসা হলের সামনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে এ হট্টগোল করেন তিনি।
আরো পড়ুন:
জুলাই শহীদ পরিবারদের সংবর্ধনা দিল জাবি
জুলাই শহীদদের স্মরণে জাবি ছাত্রদলের বৃক্ষরোপণ
এ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অন্তবর্তীকালীন সরকারের শিল্প, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান।
ডকুমেন্টরি প্রদর্শন শেষে ওই ছাত্রদল নেতা উত্তেজিত কণ্ঠে বলতে থাকেন, “এই ডকুমেন্টরিতে ইতিহাস বিকৃতি করা হয়েছে। ডকুমেন্টরিতে ছাত্রদলের অবদানকে অস্বীকার করা হয়েছে। আমরাও আন্দোলন মাঠে ছিলাম, জেল-জুলুম, মামলা আমরাও খেয়েছি।”
এ সময় তার সঙ্গে শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কমিটির যুগ্ম-আহ্বায়ক রোমান রাশিদুল ও হাসান শাহরিয়ার রমিমকেও হট্টগোল করতে দেখা যায়।
অনুষ্ঠানের আয়োজকরা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের জন্য তাদের দুইদিন সময় দেওয়া হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে একটি মাত্র ক্যামেরা দিয়ে ২৫ থেকে ৩০ জনের ইন্টারভিউ নেওয়া খুবই কষ্টসাধ্য কাজ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে পর্যাপ্ত ইকুইপমেন্ট ও সময় না পাওয়ায় তাদের পূর্ণাঙ্গ ডকুমেন্টরি নির্মাণ কাজ বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
তবে এ ঘটনার পেছনে বিশ্ববিদ্যালয়ের গাণিতিক ও পদার্থবিষয়ক অনুষদের এক প্রভাবশালী শিক্ষকের হাত রয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক শিক্ষক।
তারা জানান, ডকুমেন্টরি নির্মাণের পূর্বে তারা জুলাই আন্দোলনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব ছবি ও ভিডিও ফুটেজ চেয়ে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিষ্ট সব পাবলিক ফেসবুক গ্রুপে পোস্ট করেছিলেন। তাদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষার্থীদের পাঠানো ও সাংবাদিকদের থেকে সংগৃহীত ছবি ও ফুটেজ দিয়ে ডকুমেন্টরি নির্মাণ করা হয়েছে। যে ব্যক্তি দাবি করেছেন তার ছবি বা ফুটেজ দেয়া হয়নি, তার ছবি বা ফুটেজ তাদের কাছে কেউ দেয়নি। এজন্য তারা ডকুমেন্টরিতে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেননি?
এ নিয়ে জাবি উপাচার্য অধ্যাপক মোহাম্মদ কামরুল আহসান বলেন, “আজ যে একটা বিশেষ পরিস্থিতি দেখেছি, এটাও জাহাঙ্গীরনগরের বৈশিষ্ট্য, এটাও ২৪ এর অর্জন। খারাপভাবে দেখার প্রয়োজন নেই। প্রত্যেকটি কাজের মধ্যে ভুল থাকতে পারে, এখানে শিক্ষার বিষয় রয়েছে। ঠিক একইসঙ্গে প্রতিবাদের যে ভাষা, সেখানেও শিক্ষিত হবার প্রয়োজন রয়েছে।”
তিনি বলেন, “আমি বিশ্বাস করি, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সমালোচনা ও কুৎসার পার্থক্য শিখবে। একইসঙ্গে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশংসা ও পূজার পার্থক্য শিখবে ও বুঝবে।”
ঢাকা/আহসান/মেহেদী