কালিয়াকৈরের বনে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা, ২ ডাকাত আটক
Published: 21st, March 2025 GMT
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার জামালপুর এলাকার সড়কে ডাকাতরা সজিব হোসেন (৩৮) নামে এক ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা করেছে। এ সময় এলাকাবাসী ধাওয়া করে দুইজনকে ধরে গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করেছে।
বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) রাত সাড়ে ৮টার দিকে বড়ইবাড়ী-জামালপুর সড়কের হাটুরিয়া চালা এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে।
নিহত সজিব হোসেন কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের গাবচালা এলাকার মুক্তার আলীর ছেলে। তিনি এলাকায় মাটি সাপ্লাইয়ের ব্যবসা করতেন। এসময় রয়েল মিয়া নামে আরেক ব্যবসায়ী আহত হয়েছেন।
এলাকাবাসী ও পুলিশ জানায়, মাটি ব্যবসায়ী সজিব হোসেন ও রয়েল মিয়া বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে মোটরসাইকেল যোগে টাকা আনতে হাটুরিয়া চালা বাজারে যাচ্ছিলেন। যাওয়ার পথে হাটুরিয়াচালা বাজারের আগেই বনের ভেতরের সড়কে তাদের মোটরসাইকেল একদল ডাকাত গতিরোধ করে। তারা মটরসাইকেল ফেলে পালানোর সময় ডাকাতদলের সদস্যরা সজিব হোসেনকে ধরে ফেলে কুপিয়ে জখম করে। এতে ঘটনাস্থলেই সজিব মারা যায়। এসময় অপর ব্যবসায়ী রয়েল দৌড়ে গিয়ে ডাকাত পড়েছে বলে ডাক চিৎকার করলে এলাকাবাসী এগিয়ে এসে ডাকাত দলের দুইজনকে ধরে গণপিটুনি দেয়। পরে পুলিশকে খবর দেয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে এই দু'জনকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে। এদের একজনকে সফিপুর মডার্ন হাসপাতালে অপরজনকে কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি রিয়াদ মাহমুদ বলেন, “ডাকাত দলের হামলায় একজন নিহত ও একজন আহত হয়েছে। এলাকাবাসী ডাকাত দলের দুই সদস্যকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেছে।”
ঢাকা/রেজাউল/টিপু
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর এল ক ব স ব যবস
এছাড়াও পড়ুন:
ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে হাতির তাণ্ডব
রাঙামাটির কাপ্তাই উপজেলার কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পাড়ে সীতা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত ওয়াগ্গাছড়া চা বাগানে বিগত এক মাস ধরে অবস্থান করছেন একদল বন্যহাতি। ১৭ (সতের) দলের এই বন্যহাতির তাণ্ডবে এরইমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগান শ্রমিকদের ঘরবাড়ি, গাছপালা এবং বাগানের অভ্যন্তরে অবস্থিত কাঁচা সড়ক।
এদের তাণ্ডবে বাগানের ২নং সেকশনে বসবাসকারী চা শ্রমিকরা এরইমধ্যে নিজ নিজ বসতবাড়ি ছেড়ে কর্ণফুলি নদীর উত্তর পাড়ে অবস্থান নিয়েছে। এই সেকশনে থাকা বহু ঘর হাতির আক্রমণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
ওয়াগ্গা টি লিমিটেডের পরিচালক খোরশেদুল আলম কাদেরী বলেন, “হাতির তাণ্ডবে মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাত ৩টায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাগানের নিজস্ব বোট চালক সানাউল্লাহর বসতবাড়ি। এসময় তিনিসহ তার স্ত্রী-সন্তানেরা ঘর হতে বের হয়ে কোনরকমে প্রাণে রক্ষা পেয়েছে।”
বোট চালক সানাউল্লাহ বলেন, “সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে আমি হাতির গর্জন শুনতে পাই। এসময় একটি বড় হাতি আমার ঘর ভাঙার চেষ্টা চালায়। আমি হতবিহ্বল হয়ে যাই। সেসময় স্ত্রী-পুত্রকে নিয়ে ঘরের পেছন দিয়ে কোন রকমে পালিয়ে বোটে করে এপারে চলে আসি।”
চা বাগানের টিলা বাবু চাথোয়াই অং মারমা বলেন, “বিগত এক মাস ধরে ১৭টি হাতির একটি দল বাগানে অবস্থান করছে। মাঝে মাঝে দলটি সীতা পাহাড়ে চলে গেলেও হঠাৎ বাগানে চলে এসে আসে এবং বাগানের গাছপালা, বসতবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত করে। আমাদের চা শ্রমিকরা আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।”
ওয়াগ্গা চা বাগানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিশিষ্ট প্রাবন্ধিক আমিনুর রশীদ কাদেরী বলেন, “বিগত এক মাস ধরে হাতির একটি দল ওয়াগ্গা চা বাগানে অবস্থান নিয়েছে। তাদের দলে সদস্য সংখ্যা সতেরো ১৭টি। সম্প্রতি দুটি নতুন শিশু জন্ম নিয়েছে। শিশু হস্তী শাবককে আশীর্বাদ করার জন্য সীতা পাহাড়ের গভীর অরণ্য থেকে আরো একদল হাতি যোগদান করেছে।”
হাতি খুবই শান্তিপ্রিয় জীব। নিরিবিলি পরিবেশ পছন্দ করে। অনেকে বলে থাকেন, মামারা বেরসিক বাদ্য বাজনা, বাঁশির সুর, গলাফাটা গান, গোলা বারুদ, ড্রামের শব্দ পছন্দ করে না। তারা কোলাহল এড়িয়ে চলে।
গতকাল সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) স্বচক্ষে দেখা হলো। আমাদের টিলা বাবু চাই থোয়াই অং মারমা শ্রমিকদের নিয়ে পাহাড়ের উপর বাঁশির সুর তুলেছে। সুর ও বাদ্য বাজনা এড়িয়ে মামারা (হাতি) চা বাগান পেরিয়ে সদলবলে বাঁশবনের গভীর থেকে গভীরে হারিয়ে গেলো। হয়তো আবার ফিরে আসবে।
কাপ্তাই বন বিভাগের কাপ্তাই রেঞ্জ অফিসার ওমর ফারুক স্বাধীন বলেন, “দিন দিন হাতির আবাসস্থল ধ্বংস হওয়ার ফলে হাতি খাবারের সন্ধানে প্রায়ই লোকালয়ে এসে হানা দিচ্ছে। আমাদের উচিত হাতির আবাসস্থল ধ্বংস না করা।”
ঢাকা/রাঙামাটি/এস