গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে ১,৭৬০ ফিলিস্তিনি নিহত: জাতিসংঘ
Published: 16th, August 2025 GMT
জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, মে মাসের শেষের দিক থেকে এখন পর্যন্ত গাজায় ত্রাণ নিতে গিয়ে কমপক্ষে ১ হাজার ৭৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। খবর আরব নিউজের।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস এক বিবৃতিতে এ তথ্য জানায়। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘২৭ মে থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত আমরা রেকর্ড করেছি যে, গাজায় সাহায্য চাইতে গিয়ে অন্তত ১ হাজার ৭৬০ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ৯৯৪ জন জিএইচএফের সাইটের আশেপাশে এবং ৭৬৬ জন বিভিন্ন ত্রাণ সরবরাহ রুটে নিহত হয়েছে। এই হত্যার অধিকাংশ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হাতে ঘটেছে।
গত ১ আগস্ট জাতিসংঘের প্রতিবেদনে নিহতের সংখ্যা ১ হাজার ৩৭৩ জন বলা হয়েছিল। তবে এ সংখ্যা প্রতিনিয়তই বাড়ছে।
আরো পড়ুন:
ইসরায়েলে সাবমেরিন সরবরাহের অনুমোদন দিল জার্মানি
গাজায় নিহতের সংখ্যা ৬১ হাজার ৭০০ ছাড়াল
গাজার বেসামরিক প্রতিরক্ষা সংস্থা জানিয়েছে, শুক্রবারই কমপক্ষে ৩৮ জন নিহত হয়েছে, যাদের মধ্যে ১২ জন মানবিক সহায়তার জন্য অপেক্ষা করছিলেন।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা হামাসের সামরিক ক্ষমতা নষ্ট করতে কাজ করছে এবং বেসামরিক ক্ষয়ক্ষতি কমাতে সতর্কতা অবলম্বন করছে।
সামরিক প্রধান জানান, নতুন আক্রমণের পরিকল্পনা অনুমোদিত হয়েছে, যার লক্ষ্য হামাসকে পরাজিত করা এবং বাকি জিম্মিদের মুক্ত করা।
ইসরায়েলি সেনাবাহিনী গাজা শহর এবং আশেপাশের শরণার্থী শিবির নিয়ন্ত্রণে নিতে চাইছে, যা এই ভূখণ্ডের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলগুলোর মধ্যে একটি। গাজায় উপত্যকায় সংঘাত প্রায় দুই বছর ধরে চলছে।
ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী শুক্রবার জানিয়েছে, তাদের সৈন্যরা শহরের উপকণ্ঠে অভিযান চালাচ্ছে। যুদ্ধ সম্প্রসারণের ইসরায়েলি সরকারের পরিকল্পনা আন্তর্জাতিকভাবে ক্ষোভের পাশাপাশি ইসরায়েলের ভিতরেও বিরোধের মুখে পড়েছে।
জাতিসংঘ-সমর্থিত বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে বলেছেন, গাজায় ব্যাপক দুর্ভিক্ষ দেখা দিতে পারে, ইসরায়েল মানবিক সাহায্যের পরিমাণ ব্যাপকভাবে হ্রাস করেছে।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরায়েলি হামলায় কমপক্ষে ৬১ হাজার ৮২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। নিহতের এই সংখ্যাকে জাতিসংঘ বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে করে।
ঢাকা/ফিরোজ
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
চলতি অর্থবছরে ৫% জিডিপি প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস এডিবির; ৪ কারণে চাপে প্রবৃদ্ধি
চলতি অর্থবছর মোট দেশজ উৎপাদন (জিডিপি) কিছুটা বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এডিবির পূর্বাভাস অনুসারে, ২০২৫-২৬ অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৫ শতাংশ হতে পারে। গত অর্থবছরের জন্য জিডিপি প্রবৃদ্ধির প্রাক্কলন হলো ৪ শতাংশ।
এডিবি আরও বলেছে, তৈরি পোশাক রপ্তানি স্থিতিশীল থাকলেও রাজনৈতিক পরিবর্তন, ঘন ঘন বন্যা, শিল্প খাতে শ্রমিক অস্থিরতা এবং বিরাজমান উচ্চ মূল্যস্ফীতি কারণে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা দুর্বল হয়ে পড়েছে। এই চার কারণে প্রভাব পড়ছে সামগ্রিক প্রবৃদ্ধিতে।
আজ মঙ্গলবার এডিবি এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট আউটলুক (এডিও) সেপ্টেম্বর সংস্করণ প্রকাশ করেছে। প্রতিবেদনে বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি সম্পর্কে এমন পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে।
এডিবি আরও বলেছে, চলতি অর্থবছরে ভোগ্যব্যয় বাড়বে। কারণ, রেমিট্যান্সের প্রবৃদ্ধি পাবে। এ ছাড়া আসন্ন নির্বাচনসংক্রান্ত নানা ধরনের খরচের কারণেও ভোগব্যয় বাড়াবে।
বাংলাদেশে এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর হো ইউন জিয়ং বলেন, ‘ভবিষ্যৎ প্রবৃদ্ধিনির্ভর করবে ব্যবসায়িক পরিবেশ উন্নয়নের মাধ্যমে প্রতিযোগিতা বাড়ানো, বিনিয়োগ আকৃষ্ট করা এবং নির্ভরযোগ্য জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করার ওপর। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের বাণিজ্যে মার্কিন শুল্কের প্রভাব এখনো স্পষ্ট নয়। দেশের ব্যাংক খাতের দুর্বলতা অব্যাহত রয়েছে। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা টেকসই প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য জরুরি।
এডিবির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ২০২৬ অর্থবছরের জন্য কিছু ঝুঁকি রয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাণিজ্যসংক্রান্ত অনিশ্চয়তা, ব্যাংক খাতের দুর্বলতা এবং নীতি বাস্তবায়নের অনাগ্রহ প্রবৃদ্ধির অগ্রগতিতে বাধা হতে পারে। এ জন্য সঠিক সামষ্টিক অর্থনৈতিক নীতি বজায় রাখা এবং কাঠামোগত সংস্কার দ্রুততর করার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
প্রতিবেদনে জানানো হয়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি ছিল ৯ দশমিক ৭ শতাংশ। গত অর্থবছরের তা বেড়ে দাঁড়ায় ১০ শতাংশ। এর পেছনে রয়েছে পাইকারি বাজারে সীমিত প্রতিযোগিতা, বাজার তথ্যের ঘাটতি, সরবরাহ শৃঙ্খলে বাধা এবং টাকার অবমূল্যায়ন।
এডিবি বলছে, চলতি অর্থবছরে প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হবে ভোগব্যয়, যা শক্তিশালী রেমিট্যান্স প্রবাহ ও নির্বাচন-সংশ্লিষ্ট ব্যয়ের কারণে বাড়বে। তবে সংকোচনমূলক মুদ্রানীতি ও রাজস্বনীতি এবং বিনিয়োগকারীদের সতর্ক মনোভাব বিনিয়োগকে মন্থর করতে পারে। এ ছাড়া যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশের রপ্তানির ওপর ২০ শতাংশ শুল্ক আরোপ এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নে প্রতিযোগিতা বাড়ায় রপ্তানি খাত এবং এর প্রবৃদ্ধি চাপ বাড়াবে। ফলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে রপ্তানিকারকদের মূল্য কমাতে হতে পারে।