ঠিক এক বছর আগে উচ্চ আদালত নির্দেশ দিয়েছিলেন সাতকানিয়ায় কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কাটায় জড়িতদের খুঁজে বের করতে। একই সঙ্গে কেটে নেওয়া মাটি দিয়ে ৩০ দিনের মধ্যে সেই জমি ভরাটের আদেশও দিয়েছিলেন আদালত। তবে ৯ মাসেও আদালতের নির্দেশনা বাস্তবায়ন হয়নি। বরং এখন মাটিখেকো সিন্ডিকেট অস্ত্রের মহড়া দিয়ে দিবারাত খননযন্ত্র দিয়ে কৃষিজমির মাটি কাটছে। এ বিষয়ে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
জানা যায়, ২০২৪ সালের মার্চ মাসে সাতকানিয়া উপজেলার বাজালিয়া ইউনিয়নের মনেয়াবাদ এলাকার বাসিন্দা আবদুল মুনাফ সাতকানিয়ায় কৃষিজমির উপরিভাগের মাটি (টপসয়েল) কাটার বিষয়ে ‘ইটভাটা মালিকদের জোরপূর্বক মাটি উত্তোলন, হুমকিতে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার রেললাইন ও গ্রামীণ অবকাঠামো’ শিরোনামে গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে হাইকোর্টে একটি রিট করেন। রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ১৯ মার্চ হাইকোর্ট রুল দিয়ে একটি ইটভাটার মাটিকাটার কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা দেন। আদেশের পরও সংশ্লিষ্ট কৃষিজমির টপসয়েল কাটা অব্যাহত থাকায় বিষয়টি গত বছরের ২২ এপ্রিল বিচারপতি মোস্তাফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো.
আদালতের নির্দেশের এক বছর পেরিয়ে গেলেও এখনও পর্যন্ত মাটিখেকো সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, ভরাট করা হয়নি খননকৃত কৃষিজমিও। অভিযোগ রয়েছে, ক্ষতিগ্রস্ত কৃষিজমির মালিক ও সাধারণ কৃষকদের হাইকোর্টের এসব নির্দেশনা প্রশাসন যথাযথভাবে অবহিত করেনি।
সাতকানিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের ৬ জানুয়ারি থেকে ৪ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এক মাসে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন-২০১০ অনুযায়ী ১০ বার ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করেন ইউএনও মিল্টন বিশ্বাস। এতে ১০টি খননযন্ত্র জব্দ করা হয়। অন্যদিকে, এসিল্যান্ড ফারিস্তা করিম সাড়ে ৮ লাখ টাকা জরিমানা আদায় এবং এক ব্যক্তিকে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন।
ইউএনও মিল্টন বিশ্বাস বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনার পরপর যারা মাটি কেটেছিল তাৎক্ষণিক তাদের দিয়ে অধিকাংশ জলাশয় ভরাট করে দেওয়া হয়েছিল। হঠাৎ বর্ষা চলে আসায় পুরো বিল পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়ে; ফলে বড় জলাশয়গুলো ভরাট করা সম্ভব হয়নি। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলাপ করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তবে মাটিকাটা বন্ধে দিনরাত অভিযান চলমান রয়েছে। মাটি খেকোদের কোনোমতেই ছাড় দেওয়া হবে না।’
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, উপজেলার কেঁওচিয়া, কালিয়াইশ, পশ্চিম ঢেমশা, এওচিয়া, ছদাহা, কাঞ্চনা, নলুয়া, মাদার্শা ও ধর্মপুর ইউনিয়নে নির্বিচারে টপসয়েল কাটা হচ্ছে। কেঁওচিয়া ইউনিয়নের তেমুহানী ও পাঠানিপুল এলাকা সংলগ্ন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের পাশের তিন ফসলি জমি বিশালাকৃতির জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। এসব কৃষিজমি থেকে ৩০ থেকে ৪০ ফুট গভীর করে মাটি খনন করা হয়েছে। মাটিখেকোরা চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়ক দিয়ে ডাম্পার ট্রাকে কৃষিজমির মাটি পরিবহন করেন। এতে মহাসড়ক
ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশ রেলওয়ে চট্টগ্রাম (পূর্ব) এর প্রধান ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা মো.মাহবুবুল করিম বলেন, ‘রেল লাইন এলাকা পরিদর্শন করে দেখা হবে, রেললাইনের কতদূর থেকে মাটি কাটা হচ্ছে। সে অনুযায়ী জেলা প্রশাসকসহ রেলওয়ের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে আলোচনা করে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
স্থানীয়রা জানান, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে দলীয় পদবীধারী এবং নামধারী অনেক নেতা কৃষিজমির টপসয়েল কাটার কাজে জড়িত ছিলেন। তাদের সাথে যুক্ত ছিল অন্য দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকরাও। এখন প্রভাবশালী একটি রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙিয়ে এই অপকর্ম চলছে।
সরেজমিন চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের মৌলভীর দোকান থেকে কেঁওচিয়া ইউনিয়নের কেরানিহাট রেলক্রসিং এলাকা ঘুরে দেখা যায়, একসময়ের তিন ফসলি কৃষিজমির মাঠ এখন বিরাট জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। কেঁওচিয়া ইউনিয়নের নয়াখাল, পাঠানিপুল ও আঁধার মানিক দরগাহর পশ্চিমে ঢেমশা এলাকায় সৃষ্ট জলাশয় থেকে পুনরায় মাটি কাটার জন্য পাম্প বসিয়ে পানি তোলা হচ্ছে। এতে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে মিটারবিহীন পানির পাম্পে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার অভিযোগ রয়েছৈ দোহাজারী বিদ্যুৎ বিভাগের বিরুদ্ধে।
এ ব্যাপারে দোহাজারী বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরণ কেন্দ্রের আবাসিক প্রকৌশলী মেহেদী হাসান বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘জলাশয়গুলো থেকে মাছ ধরার জন্য বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে, শুকিয়ে মাটি কাটার জন্য নয়।’ তবে, মোটা অংকের লেনদেনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন।
ঢেমশা বারি সিকদার পাড়ার কৃষক আবু জাহের সিকদার বলেন, ‘২০১৪ সালে রাজনৈতিক পরিচয় দিয়ে এক টাকাও না দিয়ে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে আমার পাঁচ কানি জমির মাটি কেটে নিয়ে গেছে দুর্বৃত্তরা। তখন অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে হুমকির কারণে জায়গায় যেতে পারিনি। গত ৫ আগস্ট সরকার পরিবর্তনের পরও আগের মতো একই কায়দায় চলছে ফসলি জমির মাটি কাটা। কোন জায়গায় বিচার পাচ্ছি না।’
কেঁওচিয়া ইউনিয়নের আবু সৈয়দ বলেন, ‘রেললাইন সংলগ্ন আমার মালিকানাধীন কৃষিজমির মাটি রাতের অন্ধকারে কেটে নিয়ে নিয়েছেন প্রভাবশালীরা। প্রথম দিকে মহাসড়কের দক্ষিণ পাশের জমির মাটি কেটে জলাশয়ে পরিণত করেছে। বর্তমানে উত্তর পাশের কৃষি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় নিয়ে যাচ্ছে। একই অভিযোগ করেছেন কালিয়াইশ ইউনিয়নের রসুলাবাদ এলাকার মো. ওসমান।
সাতকানিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.মোস্তফা কামাল খান বলেন, ‘আমি নিজে গিয়ে মাটি কাটা বন্ধে অবস্থান নিয়েছি।’ অস্ত্রের মহড়া দিয়ে মাটিকাটা প্রসঙ্গে ওসি বলেন, ‘এ ধরনের অভিযোগ কেউ করেননি, অভিযোগ পেলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ হাইকোর্টের আদেশের বিষয়ে তিনি অবগত নন বলে জানান।
সাতকানিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘ফসল উৎপাদনের জন্য টপসয়েল খুবই উপযোগী। মাটি কাটার কারণে প্রতিবছর আবাদি জমির পরিমাণ কমছে।’
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো.ইকবাল সরোয়ার বলেন, ‘প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে মাটি সবচেয়ে মূল্যবান। টপসয়েলের ৬ থেকে ১৮ ইঞ্চির মধ্যেই জৈব পদার্থ ও অনুজীবের ঘনত্ব সর্বাধিক এবং পৃথিবীর জৈবিক মাটির কার্যকলাপ বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ অংশে ঘটে থাকে। জমির জৈব উপাদান হ্রাস পেলে তা ফিরিয়ে আনতে ১৮ থেকে ২০ বছর সময় লাগে।’
জানতে চাইলে পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম জেলার উপপরিচালক মো. মোজাহিদুর রহমান বলেন, ‘কৃষিজমি থেকে মাটি কাটার বিষয়টি স্থানীয় প্রশাসন দেখে থাকে। মাটি কাটার ফলে জীববৈচিত্র্য ধ্বংসের বিষয়ে পরিবেশ অধিদপ্তর সচেতন।’
চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক (ডিসি) ফরিদা খানম বলেন, ‘মাটি কাটা বন্ধে ইউএনও ও এসিল্যান্ড দিন-রাত অভিযান চালাচ্ছেন। ইতোমধ্যে অনেককে শাস্তির আওতায়ও আনা হয়েছে।’ হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী কাটা জমি ভরাট করা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি নতুন যোগদান করেছি। ইউএনও’র সাথে আলাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন ‘আপনার কাছে হাইকোর্টের নির্দেশনার বিষয়ে কাগজ থাকলে দেন, দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।’
সাতকানিয়ার বাসিন্দা ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক শেখ মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘মাটি কেটে কৃষি জমি ধ্বংসের পাশাপাশি পরিবেশ বিপর্যয় বন্ধে প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রাম মহানগরীর আমীর ও চট্টগ্রাম-১৫ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহজাহান চৌধুরী বলেন, ‘আমি ব্যক্তিগতভাবে কৃষিজমির মাটি কাটার সম্পূর্ণ বিরোধী। পরিবেশ উপদেষ্টার উপস্থিতিতে চট্টগ্রামের একটি সভায় জলাবদ্ধতার একমাত্র কারণ হিসেবে আমি মাটি কাটাকে চিহ্নিত করেছিলাম। আমি ডিসি সাহেবকে বলেছি, অবৈধ ইটভাটা বিজ্ঞপ্তি দিয়ে বন্ধ করে দেওয়ার জন্য। আমি এজন্য পুলিশ প্রশাসনকে দায়ী করছি। প্রশাসন যদি ব্যর্থ হয় তাহলে আমার কর্মী দিয়ে হলেও ক্ষতিকর মাটি কাটা বন্ধ করা হবে।’
লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) সভাপতি, সাবেক সংসদ সদস্য ও মন্ত্রী কর্নেল (অব.) অলি আহমদ বীর বিক্রম বলেন, ‘কৃষিজমির টপসয়েল কেটে যারা জমির উর্বরতা শক্তি হ্রাস করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য জন্য আমি ডিসি ও ইউএনওকে বলে দেব। কোন অবস্থাতেই কৃষকের ক্ষতি করা যাবে না।’
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: কর মকর ত ব যবস থ পর ব শ ন বল ন র জন য ন ত কর ম বল ন র ট কর উপজ ল ইটভ ট ব ষয়ট
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করে ইউএনওকে ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা
রাজশাহীর বাগমারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) ‘ফ্যাসিবাদের দোসর’ আখ্যা দিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার তাহেরপুর পৌরসভার হরিতলা মোড়ে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে ইউএনওর অপসারণের দাবি জানানো হয়।
এলাকার সচেতন নাগরিক, ব্যবসায়ী মহল, অভিভাবক, ছাত্রছাত্রী, কর্মচারী-শিক্ষকমণ্ডলীর ব্যানারে এ মানববন্ধন করা হয়। এতে এলাকাবাসী ছাড়া তাহেরপুর কলেজের অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধন থেকে কলেজের সম্পত্তি অন্যত্র ইজারা দেওয়ার চেষ্টার প্রতিবাদ জানানো হয়।
তাহেরপুর পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মাহাবুর রহমানকে সঙ্গে নিয়ে মানববন্ধন করা হয়। পৌরসভার নির্মিত দোকানঘর থেকে তাহেরপুর কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ায় এ কর্মসূচি পালন করা হয় বলে অভিযোগ। আওয়ামী লীগের নেতার দাবি, তিনি দলীয় পরিচয়ে নয়, কলেজশিক্ষক হিসেবে মানববন্ধনে যোগ দিয়েছেন। তবে ব্যানারে ফ্যাসিবাদ শব্দটি প্রথমে দেখেননি। পরে দেখেছেন।
মানববন্ধনে তাহেরপুর কলেজের শিক্ষক রইচ আহমেদ, সুরাইয়া আক্তার, তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ইসমাইল হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন। বক্তারা বাগমারার ইউএনওকে ফ্যাসিবাদের দোসর ও চব্বিশের চেতনাবিরোধী অভিযোগ তুলে তাঁদের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেওয়ার নিন্দা জানান।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তাহেরপুর কলেজ–সংলগ্ন স্থানে পৌর কর্তৃপক্ষ দোকানঘর নির্মাণ করেছে। পৌরসভার পক্ষে নিয়মিত ভাড়া আদায় করা হয় ওই প্রতিষ্ঠান থেকে। ৫ আগস্টের পর থেকে কলেজের পক্ষ থেকে ৪১টি দোকানঘর নিয়ন্ত্রণে নিয়ে সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করা হয়।
পৌরসভার প্রশাসক হিসেবে বাগমারার ইউএনও দোকানঘর থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষের ভাড়া আদায় বন্ধ করে দেন। দোকানঘরগুলো পৌরসভার হওয়ায় তারাই সেখান থেকে ভাড়া আদায় করবে বলে জানানো হয়। সেখান থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ আর ভাডা আদায় করবে না জানিয়ে ২২ এপ্রিল পৌরসভার প্রশাসককে লিখিতভাবে জানান কলেজের অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম। এর পর থেকে কর্তৃপক্ষ ইউএনওর ওপর ক্ষুব্ধ হয়।
তাহেরপুর কলেজের সহকারী অধ্যাপক সুরাইয়া আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, কলেজের জায়গায় তাহেরপুর পৌরসভার সাবেক মেয়ব ও সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ দোকানঘর নির্মাণ করে মোটা অঙ্কের টাকায় ভাড়া দেন। ৫ আগস্টের পর তাঁরা (কলেজ কর্তৃপক্ষ) সেগুলো নিয়ন্ত্রণে নেন। তবে ২২ এপ্রিল ইউএনও সাদা কাগজে কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের কাছ থেকে ভাড়া আদায় বিষয়ে একটি লিখিত নিয়েছেন। এর প্রতিবাদে মূলত তাঁদের এই কর্মসূচি।
পৌরসভার দোকানঘর থেকে কেন পৌরসভা ভাড়া আদায় করবে না জানতে চাইলে সুরাইয়া আক্তার বলেন, ‘জায়গাগুলো কলেজের ছিল।’ ব্যানারে ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে বক্তব্য রাখা হলেও কেন আওয়ামী লীগের নেতাকে নিয়ে মানববন্ধন করলেন, জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘কলেজের স্বার্থে আমরা এক।’
জানতে চাইলে ইউএনও মাহাবুবুল ইসলাম বলেন, দোকানগুলো তাহেরপুর পৌরসভার। সেগুলো থেকে ভাড়া আদায় করে পৌরসভার কোষাগারে জমা করা হয়। তিনি প্রশাসক হিসেবে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নিয়েছেন। কলেজের অধ্যক্ষ নিজেই জানিয়েছেন, এখন থেকে কলেজ কর্তৃপক্ষ ভাড়া আদায় করবে না।