Prothomalo:
2025-09-18@02:32:12 GMT

তেতো খাবারের যত গুণ

Published: 12th, April 2025 GMT

খাবার শুধু আমাদের শরীরের প্রাত্যহিক শক্তির উৎস নয়, আমাদের সংস্কৃতির অংশও বটে। চৈত্রসংক্রান্তিতে তেতো খাবারের সংস্কৃতি আমাদের শত বছরের ঐতিহ্য। এর পেছনে রয়েছে বহু বছরের প্রচলিত স্বাস্থ্যভাবনাও। 

করলা

করলায় মোমোর্ডিসিন নামক জৈব রাসায়নিক যৌগ থাকে। মোমোর্ডিসিন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উপাদান। এটি যেমন আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য ভালো, তেমনি করলাকেও বিভিন্ন কীটপতঙ্গ ও প্রাণীর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।

করলার তেতো স্বাদ হওয়ার কারণ এতে থাকে টেট্রাসাইক্লিক ট্রাইটারপেনয়েড নামের একটি রাসায়নিক যৌগ। এটা করলাকে তিতকুটে স্বাদের করে তোলে ও রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। করলার অন্যতম উপাদান এডিনোসিন মনোফসফেট অ্যাকটিভেটেড প্রোটিন কাইনেজ। এটি রক্তের শর্করা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে।

নিমপাতা

ঔষধি গুণের জন্য নিমপাতা বিশেষভাবে সমাদৃত। আয়ুর্বেদশাস্ত্রে নিমপাতাকে বলা হয় ‘ম্যাজিক পাতা’। নিমপাতায় থাকে নিম্বিন, নিম্বিডিন, টাপ্রিনিয়েড, গ্লাইকোসাইড, অ্যালকালয়েড ও ট্যানিন নামক উপাদান। এসব উপাদানের জন্যই নিমপাতার স্বাদ তেতো। নিমপাতা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়, কৃমিনাশক ও রক্ত পরিষ্কারে সাহায্য করে।

শুক্তা

তিক্ত রসের একধরনের বাঙালি খাবার শুক্তা। আহারের শুরুতে মুখশুদ্ধি হিসেবে এটি খাওয়া হয়ে থাকে। তেতো রসে রুচি বাড়ে। পলতা, নালতে, উচ্ছে, করলা, কচি নিমপাতা ইত্যাদি শুক্তার তিক্ত রসের প্রধান উপাদান। রুচি বাড়ানো ও হজমশক্তি বৃদ্ধিতে শুক্তা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

পাটশাক

কচি পাটশাক ভিটামিন ও মিনারেলের পাশাপাশি ক্যালসিয়ামের খুব ভালো উৎস। এ ছাড়া অ্যালকালয়েড, ফলিক অ্যাসিডসমৃদ্ধ পাটশাক শরীরে রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধি করে। পাটশাকে ক্যারোটিনের পরিমাণও থাকে অনেক বেশি। রুচি বাড়াতে ও মুখের স্বাদ ফেরাতে পাটশাক উপকারী।

শজনে ডাঁটা

শজনে ডাঁটা ও পাতার স্বাদ কিছুটা তেতো হলেও স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী। প্রস্রাবের সংক্রমণ দূর করতে শজনে ফুল খুব উপকারী। চিকেন পক্স হলে শজনে পাতার ভর্তা, ভাজি বা ফুল ভাজি উপকারী পথ্য। শজনে ডাঁটায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পটাসিয়াম ও ক্যালসিয়াম থাকে।

কালিজিরা

কালিজিরায় থাকা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট, ভিটামিন ও মিনারেল শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়ায়। নিয়মিত কালিজিরা খেলে ঠান্ডা, কাশি, জ্বর ইত্যাদি থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। এ ছাড়া কালিজিরা হজমশক্তি বাড়ায় ও লিভারের জন্য উপকারী।

সতর্কতা

করলায় কীটনাশক প্রয়োগের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে ওই করলার জুস খাওয়া নিরাপদ নয়। সে ক্ষেত্রে করলা ঝোল করে রান্না করে খাওয়া উত্তম।

কালিজিরা প্রতিদিন সর্বোচ্চ ২ গ্রামের বেশি খাওয়া উচিত নয়।

গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া অতিরিক্ত কালিজিরা বা কালিজিরার তেল খাওয়া উচিত নয়। তাতে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ে।

নিমপাতা গর্ভবতী নারী ও শিশুদের খাওয়ানো উচিত নয়। এতে থাকা এলকালয়েড তাদের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।

মো.

ইকবাল হোসেন, জ্যেষ্ঠ পুষ্টি কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম ডায়াবেটিক জেনারেল হাসপাতাল

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: উপ দ ন আম দ র র জন য উপক র

এছাড়াও পড়ুন:

ঋণ নেওয়ার আগে যে ১০টি বিষয় অবশ্যই জানা উচিত

নানা কারণে আপনার ঋণ নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে। অনেক সময় মানুষ ব্যক্তিগত ঋণ, গৃহঋণ নেয়। আবার গাড়ি কেনার জন্যও অনেকে ঋণ নেন। ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমেও ঋণ নেওয়া হয়।

কিন্তু অনেকেই ঋণের সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু মৌলিক শব্দ সম্পর্কে জানেন না। ব্যাংকের কর্মকর্তারা যখন এসব শব্দ বলেন, তখন অনেক কিছুই বোঝেন না ঋণ নিতে ইচ্ছুক গ্রাহকেরা। ফলে নিয়মকানুন না জেনেই ঋণ নেন। এতে নানা অপ্রত্যাশিত ঝামেলা তৈরি হয়। তাই ঋণ নেওয়ার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বোঝা খুব দরকার।

১. আসল টাকা (প্রিন্সিপাল)

আপনি যে পরিমাণ টাকা ঋণ নিচ্ছেন, সেটিই আসল। এর ওপরই সুদ ধরা হয়। কিস্তি পরিশোধের সঙ্গে আসল ধীরে ধীরে কমতে থাকে।

২. সুদের হার (ইন্টারেস্ট রেট)

ঋণ নেওয়ার আগে সবচেয়ে ভাবতে হয় সুদের হার নিয়ে। সুদের হার বেশি হলে খরচ বেড়ে যায়। ঋণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো সুদের হার। এটি স্থিরও হতে পারে, আবার বাজারদরের ওপর নির্ভর করে বাড়তে-কমতেও পারে।

৩. মাসিক কিস্তি (ইএমআই)

ঋণের সুদ ও আসল পরিশোধ বাবদ প্রতি মাসে যে নির্দিষ্ট টাকা আপনাকে দিতে হবে। সেটি হলো ইএমআই বা ঋণের কিস্তি।

৪. ঋণের মেয়াদ

কত বছরের মধ্যে ঋণ শোধ করতে হবে, সেটিই হলো ঋণের মেয়াদ। মেয়াদ বেশি হলে কিস্তি ছোট হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা বেড়ে যায়। ছোট মেয়াদে কিস্তি বড় হয়। কিন্তু মোট সুদের টাকা কমে।

৫. অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)

শুধু সুদ ও আসল নয়, বরং ঋণের সব খরচ (যেমন ফি, চার্জ) মিলিয়ে আসল ব্যয় কত হবে, তার হিসাব হলো অ্যানুয়াল পারসেন্টেজ রেট (এপিআর)। এটিই প্রকৃত খরচ বোঝায়।

৬. আগাম পরিশোধ (প্রিপেমেন্ট)

ঋণের বোঝা কমাতে অনেকে ঋণের সুদ ও আসলের টাকা আগেই শোধ করে দিতে চান। এতে সুদের খরচ কমে যায়।

৭. প্রসেসিং ফি

আপনি ঋণের জন্য কোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আবেদন করলেন। কিন্তু ঋণ আবেদন মঞ্জুর থেকে শুরু করে ছাড় কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কিছু মাশুল দিতে হয়। এটিই প্রসেসিং ফি। এটি কখনো ঋণের টাকা থেকে কেটে নেওয়া হয়, আবার কখনো আলাদা দিতে হয়।

৮. স্থগিতকাল (মোরাটোরিয়াম)

বিশেষ পরিস্থিতিতে কিছুদিনের জন্য কিস্তি বন্ধ রাখার সুযোগকেই বলে স্থগিতকাল। তবে এই সময়েও সুদ জমতে থাকে। অনেক সময় ঋণ পরিশোধের জন্য বিশেষ কিস্তি ভাগও করে দেওয়া হয়।

৯. জামানত (কোলেটারাল)

ঋণের নিরাপত্তা হিসেবে আপনার সম্পদ (যেমন বাড়ি, সোনা, জমি) ব্যাংকে বন্ধক রাখা হয়। কিস্তি না দিলে ব্যাংক ওই সম্পদ বিক্রি করে টাকা তুলে নেয়।

১০. লোন-টু-ভ্যালু রেশিও

আপনি যত টাকা ঋণ নিচ্ছেন আর জামানতের মূল্য কত—এই অনুপাতকে বলে লোন টু ভ্যালু রেশিও (এলটিভি)। এর অনুপাত যত কম হয়, ব্যাংকের ঝুঁকি তত কম।

সম্পর্কিত নিবন্ধ