সংস্কারের তিনটি ন্যূনতম শর্ত পূরণ হলে অন্তর্বর্তী সরকারের ঘোষিত রূপরেখার মধ্যে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে বিবেচনা করবে। কোনো সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে ৫ আগস্টের গণ–অভ্যুত্থানের জন–আকাঙ্ক্ষার প্রতি বরখেলাপ করার শামিল হবে। জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার আজ শনিবার বান্দরবান জেলা শহরে আয়োজিত এক কর্মী ও সুধী সমাবেশে এ কথা বলেছেন।

মিয়া গোলাম পরওয়ার তিনটি শর্ত ব্যাখ্যা করে বলেন, সংবিধান সংশোধন করে প্রথমত নির্বাচন কমিশন, বিচারব্যবস্থাসহ রাষ্ট্রের সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানগুলো সংস্কার করতে হবে। দ্বিতীয়ত, শেখ হাসিনাসহ ফ্যাসিস্ট সরকারের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের গ্রেপ্তার করে বিচারের দৃশ্যমান অবস্থায় নিয়ে আসতে হবে। তৃতীয়ত, সংখ্যানুপাতিক নির্বাচন পদ্ধতির প্রবর্তন। আগামী ডিসেম্বর অথবা আগামী বছরের জুনের মধ্যে ঘোষিত নির্বাচনের সময়ের মধ্যে এসব শর্ত ন্যূনতম হলেও পূরণ হলে জামায়াতে ইসলামী নির্বাচনে যাওয়ার ব্যাপারে বিবেচনা করবে।

আজ বেলা ৩টায় বান্দরবান জেলা শহরের রাজার মাঠে জেলা জামায়াতে ইসলামী কর্মী ও সুধী সমাবেশের আয়োজন করে। এতে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান, কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদের সদস্য আহসান উল্লাহ, চট্টগ্রাম মহানগরী আমির শাহজাহান চৌধুরী প্রমুখ। এ ছাড়া চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও তিন পার্বত্য জেলার আমিররা ছিলেন। সভাপতিত্ব করেন বান্দরবান জেলার আমির এস এম আব্দুচ ছালাম আজাদ। সমাবেশ থেকে বান্দরবান ৩০০ নম্বর সংসদীয় আসনে জেলা নায়েবে আমির ও জেলা পরিষদের সদস্য মুহাম্মদ আবুল কালামকে দলীয় প্রার্থী ঘোষণা করা হয়।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব ন দরব ন ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

৮% জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য হয়, প্রশ্ন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনসহ কোনো সংস্কার কমিশনে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি দেখা যায়নি বলে মন্তব্য করেছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন। তাদের প্রশ্ন, ঐকমত্য কমিশনে কোনো রাজনৈতিক দলকেও প্রশ্ন করতে দেখা গেল না যে ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীর কোনো প্রতিনিধি না থাকলে বা তাদের বাদ দিয়ে কীভাবে ঐক্য গঠন হয়।

‘অভ্যুত্থান পরবর্তী এক বছরে ৮% জনগোষ্ঠীর অবস্থা’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এমন প্রশ্ন তোলা হয়েছে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের লিখিত বক্তব্যে। আজ শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে সংগঠনটি।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক (উত্তরাঞ্চল) তরুণ রায়। লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের আগে হোক বা পরে, রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে এখনো ৮ শতাংশ শুধু রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করার জায়গা। তাদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট হতে দেখা যাচ্ছে না কোনো রাজনৈতিক দলকে। সে ক্ষেত্রে এমন অবস্থা চলমান থাকলে ৮ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে নিজেদের অস্তিত্বের জানান দিতে ভবিষ্যতে নির্বাচনের সময় ভোটকেন্দ্র বয়কটের সিদ্ধান্তও নিতে হতে পারে।

সংবাদ সম্মেলন থেকে বলা হয়, গণ-অভ্যুত্থানের পর দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানুষেরা আক্রান্ত হতে থাকেন। তাৎক্ষণিকভাবে গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে সংখ্যালঘুরা জোরালো আন্দোলন গড়ে তোলেন। সেই আন্দোলন থেকে সংখ্যালঘু সুরক্ষা আইন প্রণয়ন, সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় গঠনসহ ৮ দফা দাবি তোলা হয়। সেসব দাবি বাস্তবায়নে তখন অন্তর্বর্তী সরকার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল। কিন্তু গত ১ বছরে ৮ দফা দাবি বাস্তবায়নে অন্তর্বর্তী সরকারের আশানুরূপ কোনো দৃশ্যমান পদক্ষেপ পরিলক্ষিত হয়নি।

সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলন লিখিত বক্তব্যে আরও উল্লেখ করেছে, বিগত ৫৩ বছরে কোনো সরকারই সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারেনি। আগামী দিনের নিরাপত্তা ও অধিকার রক্ষায় ৮ দফার বাস্তবায়ন করতে হবে। ৮ দফা যে দেশের ৮ শতাংশ সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের প্রত্যেকের মনের কথা জানান দিতে ২২ আগস্ট ‘জাতীয় সংখ্যালঘু সম্মেলন-২০২৫’ আয়োজন করা হবে।

এক প্রশ্নের জবাবে সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের আহ্বায়ক সুস্মিতা কর বলেন, সরকারের ঐকমত্য কমিশনে সংখ্যালঘু প্রতিনিধি নেই। দেশের একটি নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীকে নিয়ে তো ঐকমত্য গঠন হতে পারে না। গত বছরের ৯ আগস্ট থেকে দেশের সংখ্যালঘু সম্প্রদায় নিজেদের অধিকার নিয়ে সচেষ্ট আছে। সংখ্যালঘুদের সব সংগঠন আট দফা দাবিতে একাত্ম। যদি নির্বাচন–পূর্ববর্তী সময়ে সরকার কিংবা রাজনৈতিক দলগুলো থেকে এসব দাবি বাস্তবায়নে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করতে না দেখা যায়, তাহলে হয়তো সংখ্যালঘুরা ভোট বয়কট লড়তে পারে।

এই সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন সংখ্যালঘু অধিকার আন্দোলনের প্রচার সম্পাদক সুব্রত বল্লভ। এ সময় উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটির আদিবাসী সংগঠক সুমন ত্রিপুরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ