চার দশক আগে বাণিজ্যিক রাজধানী চট্টগ্রামে গড়ে ওঠে দেশের প্রথম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকা (ইপিজেড)। গুটি কয়েক কারখানা ও মাত্র ৬২৪ জন শ্রমিক নিয়ে যাত্রা শুরু করে চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল (সিইপিজেড)। প্রথম অর্থবছরে (১৯৮৩-৮৪) সিইপিজেড থেকে রপ্তানি আয় আসে ১ লাখ ৬০ হাজার মার্কিন ডলার। প্রতিষ্ঠার প্রায় ৪২ বছর পর এসে সেই সিপিজেডের চিত্র পাল্টেছে।

শুরুতে কারখানা ১০টির কম থাকলেও এখন তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৪৪টিতে। প্রায় দেড় দশক আগেই চট্টগ্রাম ইপিজেডের সব প্লট শেষ হয়ে গেছে। তারপরও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে এখনো আগ্রহের কেন্দ্রে সিইপিজেড। বিদেশি বিনিয়োগকারীদের সেই আগ্রহে বড় হচ্ছে সিইপিজেড। তবে সেটি পাশে নয়, বড় হচ্ছে ওপরের দিকে। অর্থাৎ বাড়ানো হচ্ছে ভবনের উচ্চতা। এতে রপ্তানি ও বিনিয়োগ বৃদ্ধির সম্ভাবনাও দেখছে দেশের ইপিজেডগুলোর নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেপজা)।

বেপজা বলছে, প্রায় ৪৫৩ একর জমির ওপর গড়ে ওঠা সিইপিজেডে মোট প্লট ৫০১টি। বর্তমানে সিইপিজেডে প্লটের সংখ্যা বাড়ানোর সুযোগ নেই। তাই কারখানা ভবনের উচ্চতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত দুই বছরে একতলা বা দোতলা ভবনের মোট ১০টি কারখানা ভেঙে ওপরের দিকে বাড়ানো হয়েছে। এর মধ্যে অধিকাংশ চার থেকে আটতলা করা হয়েছে।

কারখানার পরিধি বাড়ানোর কারণে সিইপিজেডে শ্রমিকসংখ্যাও বেড়েছে। গত ৯ মাসে সিইপিজেডের বিভিন্ন কারখানায় শ্রমিক বেড়েছে প্রায় ৩৫ হাজার। এ সময় চারটি নতুন কারখানা চালু হয়েছে। তবে শুরুতে এমন ছিল না সিপিজেডের চিত্র। শুরুতে তৈরি পোশাক কারখানার সংখ্যা ছিল বেশি, এখনো তা–ই। তবে সময়ের পরিক্রমায় তৈরি পোশাকের গণ্ডি পেরিয়ে তাঁবু, ইলেকট্রনিকস, বাইসাইকেল, ফেব্রিকস, জুতা, ক্রীড়া সামগ্রীসহ বিভিন্ন পণ্যের কারখানা গড়ে উঠেছে। স্থায়ী–অস্থায়ী মিলিয়ে বর্তমানে সিইপিজেডে শ্রমিকসংখ্যা এখন প্রায় দুই লাখ। শুরুর দিকের একতলা কারখানাগুলো এখন সুউচ্চ বহুতল ভবনে পরিণত হয়েছে।

সিইপিজেডের পুরোনো বেশ কয়েকটি কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, শুরুর ২০ বছরে সিইপিজেডের চিত্র ছিল ভিন্ন। রাজনৈতিক পরিস্থিতি কিংবা অন্য কোনো কিছুর প্রভাব পড়ত না এখানকার শিল্পকারখানায়। তবে সম্প্রতি ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ ও শ্রমিক বিক্ষোভের প্রভাব পড়েছে এখানকার কারখানাগুলোতে।

সিইপিজেডের শুরুর দিকের প্রতিষ্ঠান আলিটা (বাংলাদেশ) লিমিটেড। ১৯৯৪ সালে বাইসাইকেল উৎপাদন শুরু করে মালয়েশিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠানটি। কারখানাটির মহাব্যবস্থাপক এ এইচ এম ফেরদৌস বলেন, আগে বাইরে ঘটে যাওয়া কোনো ঘটনার প্রভাব সিইপিজেডের ভেতরে দেখা যেত না। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বাইরের বড় বড় সব ঘটনার প্রভাব পড়তে দেখা যাচ্ছে। শুরুতে এখানকার কারখানাগুলো ছোট ও একতলা আধা পাকা ছিল। এখন চিত্র পাল্টে গেছে। এখন অনেক কারখানা ওপরের দিকে বড় হচ্ছে। তাতে কর্মসংস্থানও বাড়ছে।

একনজরে সিইপিজেড
* যাত্রা শুরু- ১৯৮৩
* আয়তন- ৪৫৩ একর
* প্লটের সংখ্যা ৫০১, সব কটিই বরাদ্দ দেওয়া
* কারখানার সংখ্যা ১৪৪
* কর্মসংস্থান- ২ লাখের বেশি
* রপ্তানি- চলতি অর্থবছরের প্রথম ৯ মাসে ১৮০ কোটি ডলার

উৎপাদনে নতুন চার কারখানা

সিইপিজেড সূত্রে জানা গেছে, গত দুই বছরে প্যাসিফিক গ্রুপের প্যাসিফিক অ্যাটায়ার্স, কেবি আউটডোরস, টেকনিক্যাল অ্যাপারেলস ও গুয়াংডং ঢাকা নিটিং নামে চারটি প্রতিষ্ঠান নতুন করে তাদের কারখানা স্থাপন করেছে। আগে সব কটি কারখানা এক বা দোতলা ভবনের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে সেগুলো চার থেকে আটতলা। নতুন কারখানাগুলোর মধ্যে গত বছর থেকে সীমিত পরিসরে উৎপাদনে গেছে প্যাসিফিক অ্যাটায়ার্স ও টেকনিক্যাল অ্যাপারেলস। দুটি কারখানাই পোশাক তৈরি করে।

টেকনিক্যাল অ্যাপারেলসে বর্তমানে প্রায় এক হাজার শ্রমিকের কর্মসংস্থান হয়েছে। এ বছর পুরোপুরি উৎপাদন শুরু করবে কারখানাটি। এতে কর্মসংস্থানের পাশাপাশি রপ্তানি আয়ও বাড়বে সিইপিজেডের।

প্যাসিফিক অ্যাটায়ার্স এখনো পুরোপুরি উৎপাদনে যায়নি। সিইপিজেডের পাঁচ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত কারখানাটি আগে ছিল একতলা আধা পাকা ঘরে। এখন সেটি ৯ তলা ভবনের কারখানা। ভবনের একটি অংশে উৎপাদন শুরু হয়েছে। ফরমালওয়্যার (কোট, প্যান্ট) তৈরি হচ্ছে সেখানে। ২০২৪ সালে চালু হওয়া এই কারখানায় কর্মসংস্থান হয়েছে দুই হাজার শ্রমিকের।

জানতে চাইলে প্যাসিফিক অ্যাটায়ার্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোহাম্মদ তানভীর প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিইপিজেডে এখন নতুন করে প্লট বাড়ানোর সুযোগ নেই। আমাদের একটি কারখানার পরিধি আমরা বাড়িয়েছি উচ্চতায়। সেখানে একটি অংশে উৎপাদনও শুরু হয়েছে। উৎপাদিত পণ্য রপ্তানিও হচ্ছে। আরেকটি অংশ এ বছরের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে চালু হবে।’

এ ছাড়া কেবি আউটডোরস ও গুয়াংডং ঢাকা নিটিংয়ে ২০২৩ সালে উৎপাদন শুরু হয়েছে।

কর্মসংস্থান ও রপ্তানি বৃদ্ধির আশা

সিইপিজেড কর্তৃপক্ষ নিজেদেরই সাতটি একতলা ভবন ভেঙে প্রতিটি ছয়তলা করেছে। আরও চারটির নির্মাণকাজ চলছে। এর মধ্যে কারখানা, গুদাম ও বাণিজ্যিক ভবনও রয়েছে। এসব ভবনের পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় বাড়বে কর্মসংস্থানও। সিইপিজেডে চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছর শেষে শ্রমিকের সংখ্যা ২ লাখ ২০ হাজার ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

বেপজার তথ্য অনুযায়ী, ১৯৮৩-৮৪ অর্থবছরে সিইপিজেডে শ্রমিক ছিলেন ৬২৪ জন। ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে তা বেড়ে হয় ২০ হাজার ৮১৪ জনে। ২০০৩-০৪ অর্থবছরে ৮৫ হাজার ৬৯৮, ২০১৩-১৪ অর্থবছরে ১ লাখ ৮২ হাজার ৬২১ জন ও ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ লাখ ৮৫ হাজার জনে। চলতি অর্থবছরে এখন পর্যন্ত স্থায়ী-অস্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা ২ লাখ ছাড়িয়েছে।

কর্মসংস্থানের পাশাপাশি রপ্তানিও বাড়বে বলে জানিয়েছে সিইপিজেড কর্তৃপক্ষ। সিইপিজেড কর্তৃপক্ষের তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবছরের ৯ মাসে (জুলাই-মার্চ) সিইপিজেড থেকে ১ দশমিক ৮০ বিলিয়ন বা ১৮০ কোটি ডলারের সমমূল্যের পণ্য রপ্তানি হয়েছে। ধাপে ধাপে তা আরও বাড়বে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

জানতে চাইলে সিইপিজেডের নির্বাহী পরিচালক মো.

আবদুস সোবহান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের নিজেদের নির্মিত অন্তত ১০টি ভবন ওপরের দিকে বা উচ্চতায় বড় করা হয়েছে। এসব ভবনে কারখানাও গড়ে উঠছে। এতে কর্মসংস্থানও বাড়বে, রপ্তানিও বাড়বে। ২০২৪-২৫ অর্থবছরে আমাদের রপ্তানির লক্ষ্য ২ দশমিক ৫০ বিলিয়ন বা ২৫০ কোটি ডলার। বিনিয়োগকারীরাও বিনিয়োগের আগ্রহ দেখাচ্ছেন।’

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ওপর র দ ক নত ন ক উৎপ দ ভবন র প রথম

এছাড়াও পড়ুন:

গ্যাস অপচয়ে বছরে ক্ষতি ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি: পেট্রোবাংলা

কারিগরি ক্ষতির (সিস্টেম লস) নামে গ্যাস অপচয় বাড়ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্যাস বিতরণ লাইনে অপচয় হয়েছে গড়ে ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ গ্যাস। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। আর গত অর্থবছরের (২০২৪-২৫) মার্চ পর্যন্ত অপচয় হয়েছে ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এতে আর্থিক ক্ষতি ৩ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। এর বাইরে সঞ্চালন লাইনে অপচয় হয়েছে ২ শতাংশ।

‘দেশের জ্বালানিনিরাপত্তা: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়; গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এতে বলা হয়, ২ শতাংশ অপচয় গ্রহণযোগ্য, তাই ওইটুকু সমন্বয় করেই আর্থিক ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে। গ্যাসের অপচয় রোধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ছয়টি গ্যাস বিতরণ সংস্থা।

পেট্রোবাংলা বলছে, গ্যাস অপচয়ের জন্য দায়ী হচ্ছে পুরোনো, জরাজীর্ণ পাইপলাইন; গ্যাস সরবরাহ লাইনের গ্যাসস্টেশন রাইজারে লিকেজ (ছিদ্র); তৃতীয় পক্ষের উন্নয়নকাজে পাইপলাইন ছিদ্র হওয়া এবং আবাসিক খাতে প্রচুর অবৈধ সংযোগ। তবে এসব অপচয় রোধে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় পেট্রোবাংলা। এর মধ্যে রয়েছে গ্যাস সরবরাহব্যবস্থায় মিটারিং/ মনিটরিং ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা; লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কারিগরি ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে রাখা; অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও উচ্ছেদ কার্যক্রম জোরদার করা এবং আবাসিক গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা।

দেশের গ্যাস খাতের চিত্র তুলে ধরে সেমিনারে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমতে কমতে ১৫ বছর আগের জায়গায় চলে গেছে। গ্যাস অনুসন্ধান জোরদারের কোনো বিকল্প নেই। গ্যাস চুরি ও অপচয় কমাতে হবে। সঞ্চালন ও বিতরণ মিলে কারিগরি ক্ষতি প্রায় ১০ শতাংশ, যা অনেক বেশি। সঞ্চালন লাইনে কারিগরি ক্ষতি কোনোভাবেই ২ শতাংশ হওয়ার কথা নয়। এটা ভালো করে দেখা উচিত।

শিল্পে নতুন সংযোগে গ‍্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে

পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান বলেন, সঞ্চালন লাইনে কারিগরি ক্ষতির বিষয়টি গভীরভাবে দেখা হচ্ছে। অবৈধ সংযোগ বন্ধে পেট্রোবাংলা তৎপর আছে, খোঁজ পেলেই বিচ্ছিন্ন করা হবে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিল্পে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ‍্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, যেহেতু তারা বেশি দাম দেবে। তাই অগ্রাধিকার বিবেচনা করে তিনটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের তালিকায় থাকছে, যেসব কারখানায় এখনই সংযোগ দেওয়া যাবে। এগুলো পরিদর্শন প্রায় শেষের দিকে, আগামী সপ্তাহে শেষ হয়ে যাবে।

সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহ করতে নতুন টার্মিনাল নির্মাণে অগ্রাধিকার পাচ্ছে স্থলভাগের টার্মিনাল। মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকায় এটি করা হবে। এটি হলে কম দামের সময় বাড়তি এলএনজি কিনে মজুত করা যাবে। তবে এগুলো রাতারাতি করা যায় না, পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে।

জাতীয় গ্রিডে নতুন করে দিনে ৭৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হয়েছে

তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে উৎপাদন অংশীদারত্ব চুক্তি (পিএসসি) নিয়ে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) মো. শোয়েব। তিনি বলেন, স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য তৈরি পিএসসির খসড়া জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।

গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ নিয়ে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৫০টি কূপ সংস্কার, উন্নয়ন ও খননের প্রকল্পে ইতিমধ্যে ১৮টির কাজ শেষ হয়েছে। জাতীয় গ্রিডে নতুন করে দিনে ৭৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হয়েছে। ৪টি কূপের কাজ চলমান। এ ছাড়া পেট্রোবাংলার বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম তুলে ধরেন সংস্থাটির পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. আবদুল মান্নান পাটওয়ারী।

সবচেয়ে বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ খাতে

পেট্রোবাংলার আর্থিক দিক তুলে ধরেন সংস্থাটির পরিচালক (অর্থ) এ কে এম মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে পেট্রোবাংলার রাজস্ব আয় ৫৪ হাজার ১১৭ কোটি টাকা, এর মধ্যে অর্ধেক বকেয়া। গত মে পর্যন্ত গ্যাস বিল বকেয়া ২৭ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। এটি ধীরে ধীরে কমে আসছে। ১৩–১৫ হাজার কোটিতে বকেয়া নেমে এলে সন্তোষজনক। সবচেয়ে বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ খাতে ১৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এরপর সার কারখানায় বকেয়া আছে ৯৬৪ কোটি টাকা। তবে বিদেশি কোনো কোম্পানির কাছে বিল বকেয়া নেই পেট্রোবাংলার। সব বিল শোধ করা হয়ে গেছে।

গত অর্থবছরে প্রতি ইউনিটে লোকসান হয়েছে ৪ টাকা

পেট্রোবাংলা বলছে, এলএনজি আমদানি শুরুর পর থেকে লোকসান শুরু হয় সংস্থাটির। প্রতিবছর সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নিচ্ছে পেট্রোবাংলা। ২০১৮-১৯ সালে এলএনজি আমদানি শুরু হয়, ওই বছর ভর্তুকি ছিল ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এরপর এলএনজি আমদানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভর্তুকিও বাড়তে থাকে। গত অর্থবছরে তারা ভর্তুকি নিয়েছে ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত পেট্রোবাংলা মোট ভর্তুকি নিয়েছে ৩৬ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। পেট্রোবাংলার হিসাবে গত অর্থবছরে প্রতি ইউনিট গ্যাস সরবরাহে পেট্রোবাংলার খরচ হয়েছে ২৭ টাকা ৫৩ পয়সা। তারা বিক্রি করেছে ২২ টাকা ৯৩ পয়সায়। এর মানে প্রতি ইউনিটে লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ৬০ পয়সা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • নীতি সুদহার অপরিবর্তিত, বেসরকারি খাতের জন্য সুখবর নেই
  • জুলাইয়ের ৩০ দিনে রেমিট্যান্স ২৩৬ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে
  • নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা, নীতি সুদহার অপরিবর্তিত
  • সবজির দামে স্বস্তি, মজুরি বৃদ্ধির হার এখনো কম
  • ক্যাপিটেক গ্রামীণ ব্যাংক গ্রোথ ফান্ডের লভ্যাংশ ঘোষণা
  • গ্যাস অপচয়ে বছরে ক্ষতি ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি: পেট্রোবাংলা
  • সার আমদানি ও জমি হস্তান্তরের প্রস্তাব অনুমোদন